হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

রংপুরে হেযবুত তওহীদের উপর হামলার প্রতিবাদে উত্তাল জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ

default

ঢাকা, ৪ মার্চ ২০২৫:
রংপুরে হেযবুত তওহীদের উপর পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ ২০২৫) সকাল ১০টায় ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “হেযবুত তওহীদ সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক আন্দোলন, যা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা নিয়ে কাজ করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি কখনো আইনভঙ্গ করে নি। এটি বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন ও পরিশুদ্ধ ভাবমূর্তির একটি আন্দোলন। হেযবুত তওহীদের ইমামের বক্তব্য বিভিন্ন মাধ্যম, যেমন- সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন পোর্টাল, পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। এছাড়া সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী রচিত বইপত্র সাধারণ মানুষ পড়ে থাকেন। সুতরাং হেযবুত তওহীদের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই।”

বক্তারা আরও বলেন, “একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বারবার হামলার শিকার হচ্ছে। কারা এই হামলা চালাচ্ছে? তারা হলো সেই গোষ্ঠী, যারা ধর্মকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে এবং অপরাজনীতি চালিয়ে যায়। এরা হেযবুত তওহীদকে টার্গেট করেছে, কারণ আমাদের বক্তব্য তাদের স্বার্থের পরিপন্থী। হামলাকারীরা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ না করে ‘তওহীদি জনতা’, ‘মুসলিম জনতা’ বা ‘এলাকাবাসী’ নামে প্রচার চালায়। তারা কৌশলে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে সংঘর্ষ সৃষ্টি করে। রংপুরের ঘটনাতেও একই কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে।”

রংপুরের ঘটনা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, “সেখানে রংপুর বিভাগীয় আমির আবদুল কুদ্দুস শামীম তার গ্রামে একটি প্রীতিভোজের আয়োজন করেন। কিন্তু অনুষ্ঠানের আগের দিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পিতভাবে উগ্রবাদী গোষ্ঠীটি মিছিলসহ তার বাড়িতে হামলা চালায়। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলাকারীরা আবদুল কুদ্দুস শামীমের ও তার বাড়ি লগোয়া ৫টি বাড়িঘর তছনছ করে, ২০ জন নেতাকর্মীকে আহত করে। ২২-২৩টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও ফ্রিজ, টিভি, গবাদিপশুসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করা হয়। আমাদের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে অবহিত করা হলেও দুই ঘণ্টা পর সেনা সদস্যরা উপস্থিত হয়। কিন্তু তাদের সামনেই লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে উগ্রবাদীরা। বৃদ্ধদের হাত-পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়, তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়।”

হেযবুত তওহীদের নেতারা মানববন্ধনের মাধ্যমে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান। সরকারের কাছে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান তারা। হেযবুত তওহীদের নেতারা বলেন, “এটি কোনো সাধারণ হামলা নয়। এটি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে ও উগ্রবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করার একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। আজকের মানববন্ধনের মাধ্যমে আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং সরকারের কাছে দাবি জানাই, হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক। আমাদের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলেও এখনও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। বরং আমরা জানতে পেরেছি, মামলার প্রধান আসামির নেতৃত্বে আসামিরা এলাকায় উসকানিমূলক মিছিল-সমাবেশ করছে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে হুমকি দিচ্ছে।”

“রংপুরের পীরগাছার হেযবুত তওহীদের সদস্যরা শান্তিকামী নাগরিক, তারা কখনোই আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেননি। অথচ আজ তাদের ৪০ জন সদস্য উদ্বাস্তু অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক এবং তাদের নিরাপদে নিজ বাড়িতে ফেরার সুযোগ দেওয়া হোক। আমরা বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক এবং আমাদের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। আমরা সেনাবাহিনী, পুলিশ প্রশাসন ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই- বাংলাদেশকে কোনোভাবেই জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হতে দেওয়া যাবে না।”

এরআগে, এদিন সকাল থেকেই মানবন্ধনস্থল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আসতে থাকেন হেযবুত তওহীদের নেতাকর্মীরা। এসময় হাজারো নেতাকর্মীর স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ। তাদের মুখ থেকে ভেসে আসতে থাকে উগ্রবাদের ঠিকানা বাংলাদেশে হবে না, একজাতি একদেশ ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ, রংপুরে হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, পীরগাছায় হামলা কেন বিচার করো করতে হবে ইত্যাদি স্লোগান।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, আল আমিন সবুজ, এস এম সামসুল হুদা, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের সভাপতি আরিফ উদ্দিন, মোখলেছুর রহমান সুমন, আয়েশা সিদ্দিকা সহ আরও অনেকে।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...