হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

“হেযবুত তওহীদের মেয়েরা নব-সভ্যতার আলোকবর্তিকা”

 হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

গত মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন কমপ্লেক্স এর সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় হেযবুত তওহীদের নারী সম্মেলন ২০১৮। সম্মেলনে বক্তারা ইসলামের দৃষ্টি নারীর প্রকৃত অধিকার ও অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং নারীদেরকে সে আদর্শ মোতাবেক নতুন একটি সভ্যতা বিনির্মাণে ভূমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানান। হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তিনি সম্মেলনে আগত নারীদের উদ্দেশে বলেন, “আলোচনার বিষয়বস্তু হিসাবে পৃথিবীতে নারীর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আছে বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় না। হেযবুত তওহীদের সকল কার্যক্রমে নারী ও পুরুষের অংশীদরিত্ব থাকে। কোনো কাজে মেয়েরা বেশি অংশগ্রহণ করে, কোনো কাজে পুরুষরা। কোনো কোনো কাজে উভয়ের শ্রম মেধা শক্তি মিলেমিশে যায়। তবু আমাদের কথিত আলেম সমাজের চোখে হেযবুত তওহীদের নারীরাই প্রধান অপপ্রচারের ‘বস্তু’। আমরা তাদের এসব সমালোচনার তোয়াক্কা না করে কাজ করে যাচ্ছি, কারণ আমরা জানি আমরা কী করছি, কেন করছি। ধর্ম নারীদেরকে কোনো বহিরাঙ্গনের কাজে অংশ নিতে বারণ করে না, বারণ করে দেশাচার। এই দেশাচার শাস্ত্রসমর্থিত না হলেও মানুষ এর বির“দ্ধে দাঁড়াতে সাহসী হয় না।”

তিনি হেযবুত তওহীদের নারীদের সমাজ সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে প্রচলিত সমাজের ভুল ধারণাগুলো একে একে খণ্ডন করে বলেন, “আমরা কিছু মানুষ হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা মাননীয় এমামুয্যামানের অনুপ্রেরণায় এই দেশাচার বা প্রচলিত প্রথার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নারীদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ নিয়েছি। না, ধর্মকে লঙ্ঘন করে নয়, বরং ধর্মের প্রকৃত বিধানের আনুগত্য করেই এ কাজটি আমরা করে যাচ্ছি। এর ফলে ঐ শাস্ত্রকানাদের মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মুখোসটাও প্রকটিত হয়ে উঠছে অবলা বানিয়ে রাখা নারীদের চোখে।”

তিনি বর্তমানের দেশাচার ও ইসলামের প্রকৃত আদর্শের মধ্যে একটি তুলনামূলক আলোচনা করে বলেন, “রসুলাল্লাহর সময় মেয়েদের যে অবস্থান ছিল সেটাই যে ইসলামের নির্ধারিত ও কাম্য অবস্থান এ সত্যকে কেউ অস্বীকার করতে পারবেন কি? রসুলাল্লাহ কি নারীদেরকে পর্দাপ্রথার নামে গৃহবন্দী করেছিলেন? তিনি কি তাদের আপাদমস্তক আবৃত বোরকা পরিয়েছিলেন? তিনি কি নারীদেরকে সামাজিক কর্মকাণ্ডে নারীদের সম্পৃক্ততাকে নিরুৎসাহিত বা নিষিদ্ধ করেছিলেন? এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর হলো – না, করেন নি।

রসুলাল্লাহর সময় নারীরা কি মসজিদে যেতে পারতেন? একত্রে সালাত আদায় করতে পারতেন? তারা কি সকল সামাজিক ও সামরিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারতেন? তারা কি শালীনতার সঙ্গে পুরুষ সাহাবীদের সঙ্গে একত্রে আলোচনা-সভায়, পরামর্শ-সভায় নিজেদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারতেন? তারা কি গান গাইতে পারতেন, বাদ্য বাজাতে পারতেন? এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর হলো – হ্যাঁ, তারা পারতেন।

তাহলে আমাদের নারীরা মুসলিম দাবিদার হয়েও কেন রসুলাল্লাহর রেখে যাওয়া আদর্শের চর্চা করতে পারবেন না? কেন আজ তাদেরকে কথিত আলেমদের বানোয়াট ধর্মের চর্চা করতে হবে, যে বানোয়াট ধর্ম আজকে দেশাচার-লোকাচারের রূপ নিয়ে প্রকৃত ধর্মকে গলাটিপে হত্যা করছে?”

তিনি আরো বলেন, “উদ্বোধন শব্দটির মানে কেবল ফিতা কাটা নয়। উদ্বোধন শব্দটি অনেক বড় অর্থ প্রকাশ করে। উদ্বোধন আমার কাছে জাগরণ, আমার মনে হয় এর সঠিক ইংরেজি হলো রেনেসাঁ। হ্যাঁ, হেযবুত তওহীদের নারীদের দ্বারা একটি নতুন সভ্যতার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। কু-সংস্কার ও কু-প্রথায় বিদ্ধ নারী কখনও উন্নত জাতি প্রসব করতে পারে না। আমাদের নারীরা বিকৃত ফতোয়া ও পশ্চিমা প্রগতির নামে যাবতীয় কু-সংস্কার, অপসংস্কৃতি ও ধর্মান্ধতা থেকে মুক্ত হয়ে কথিত ধর্মব্যবসায়ীদের লালিত মিথ্যা ধর্মকে আঁস্তাকূড়ে নিক্ষেপ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইনশাল্লাহ।”

হেযবুত তওহীদের সহস্রাধিক নারী কর্মীর দৃপ্ত পদচারণায় মুখর ছিল কেআইবি মিলনায়তন। এতে আরো বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, তথ্য সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা, হেযবুত তওহীদের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আলী হোসেন ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হেযবুত তওহীদ নারী বিভাগীয় সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে হেযবুত তওহীদের কর্মীদের অংশগ্রহণে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...