হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

হৃদয়ে সঞ্চারিত হোক কোরবানির প্রকৃত শিক্ষা

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে হেযবুত তওহীদের অফিসিয়াল পেজে আন্দোলনের শীর্ষ নেতা ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম এক বাণীতে বলেন, আজ সমস্ত মুসলিম জাহানে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। বছরের অন্যান্য সকল দিনের থেকে এই দিনটি আমাদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ দিনটির একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে যা আমারা সকলেই জানি। প্রায় চার হাজার বছর আগে এই পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছিলেন মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহীম (আ.)। তিনি আল্লাহর নির্দেশে পুত্র ইসমাইলকে উৎসর্গ করতে উদ্যত হন। কিন্তু রহমানুর রহিম আল্লাহ প্রকৃতপক্ষে ইসমাইলের রক্তপাত চান নি, তিনি চেয়েছিলেন তাঁর নবী ইব্রাহীমের (আ.) ত্যাগ ও আনুগত্যের পরীক্ষা নিতে। সে পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হন এবং আল্লাহর প্রিয় বন্ধু, খলিল হিসাবে গৃহীত হন। এই ঘটনার পর থেকে প্রতিবছর মুসলিম জাতি ঐ দিনটিতে পশু কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা পালন করে থাকে। সমগ্র উম্মাহর জাগতিক ও আধ্যাত্মিক সম্মেলন হিসাবে হজ্বের প্রবর্তনও করেন ইব্রাহীম (আ.) যা আজও চালু আছে, এবং এই পশু কোরবানি মূলত হজ্বের একটি আনুষ্ঠানিকতা। এর উদ্দেশ্য বহুমাত্রিক। হাজিদের খাদ্যের যোগান দেওয়া যেমন এর একটি উদ্দেশ্য তেমনি কোরবানিকৃত পশুর দুই তৃতীয়াংশই অন্যদেরকে দান করার মধ্যে রয়েছে ত্যাগের শিক্ষা।

মক্কায় জন্ম নিয়েও রসুলাল্লাহ জীবনে মাত্র একবার হজ করেন। এর কারণ কী? কারণ ইব্রাহীম (আ.) এর আনীত ইসলাম যাকে দীনে হানিফ বলা হত, তা বিকৃত হয়ে গিয়েছিল এবং তাঁর জাতি জাতীয় জীবন থেকে আল্লাহর হুকুম বাদ দিয়ে নিজেদের মনগড়া বিধান দিয়ে সমাজ পরিচালনা করে আসছিল। তারা পবিত্র কাবায় ৩৬০ টি প্রতিমাও স্থাপন করেছিল। রসুলাল্লাহ কাবার প্রাঙ্গনে জীবনের ৫৩ বছর অতিক্রান্ত করেন, কিন্তু নিজ জাতির সাথে একটি হজেও অংশ নেননি। তিনি তাদের থেকে হেজরত করেছিলেন অর্থাৎ সকল শেরক কুফর থেকে হিজরত (বিচ্ছিন্নতা অবলম্বন) করেছিলেন। সেই সঙ্গে যারা শেরক-কুফরের অনুসারী তাদেরকেও হৃদয় থেকে পরিহার করেছিলেন। যখন তিনি মদিনায় হিজরত করলেন তারপর থেকে ঈদুল আজহার দিন ইব্রাহীম (আ.) এর সুন্নাহ অনুসরণ করে ১০ জিলহজ কোরবানি দিয়েছেন।

দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আজ সেই কোরবানির ঘটনার মূল শিক্ষাই হারিয়ে গেছে। বর্তমানে ত্যাগের চেয়ে ভোগের উদ্দেশ্যে, বিত্ত-বৈভবের প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যেই যেন বেশি পশু জবেহ করা হচ্ছে। কেউ ভাবছেন কোরবানি না দিলে মানসম্মান থাকবে না। ওদিকে গরুর ওজন বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীরা গরুকে এমন কিছু ওষুধ প্রয়োগ করছেন বা খাদ্য দিচ্ছেন যা ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ বলে প্রমাণিত হয়েছে। এভাবে কোরবানির প্রকৃত উদ্দেশ্য কেবল তত্ত্বকথা হিসাবেই থেকে যাচ্ছে, তার বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

এমন হাজারো বিকৃতির বেড়াজালে আজ ইসলাম ও মুসলিম জাতি জড়িয়ে গেছে। এ থেকে মুসলিম জাতিকে মুক্ত করার লক্ষ্যে এবং সমগ্র মানবজাতির সামনে ইসলামের গৌরব ও মহিমা প্রমাণ করার জন্য হেযবুত তওহীদ ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরছে। পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখেও আমাদের রয়েছে বিশেষ প্রচার কার্যক্রম। আমাদের হাজার হাজার কর্মী ঈদের বিশেষ পত্রিকা নিয়ে মাঠে থাকবে, সত্য ইসলামের বাণী, প্রকৃত কোরবানির শিক্ষা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করবে। সত্যের এই সংগ্রামকেই আমরা ঈদ-আনন্দ হিসাবে গ্রহণ করে নিয়েছি। পরিশেষে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সকল সত্যনিষ্ঠ মানুষের প্রতি জানাই আমার আন্তরিক ভালোবাসা, ঈদ মোবারক।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...