হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

এক প্রশ্নের জবাবে মাননীয় এমামুযযামান অন্যান্য দল না কোরে হেযবুত তওহীদ কেন কোরবো ?

Manonio-Amamuzzaman4-300x261

(৪র্থ পর্ব)

নবী করীম (দঃ) এর কিছু ভবিষ্যত বাণী আছে। তার মধ্যে একটা হোলো, (১৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৮ ঈসায়ী ইনকিলাব পত্রিকায় বেরিয়েছিলো) এটা আমি একটু পড়ে শুনাই। রসুলাল্লাহ (দ:) বোলছেন, ‘ইসলাম গরীব অবস্থায় আবির্ভূত হোয়েছে, সেই প্রাথমিক অবস্থায় পুনরায় শীঘ্রই ফিরে আসবে। সুতরাং তখনকার গোরাবাদের জন্য সুসংবাদ। (মোসলেম, ইবনে মাজাহ, কেতাব আল ফিতান)’ এখানে পত্রিকায় লিখছেন, সুসংবাদ তাদেরই জন্য যারা ধর্মে অবিচল। এ সম্বন্ধে ইনকিলাব আরো লিখছেন, এই হাদীসে গরীব শব্দটির শাব্দিক অর্থ হোচ্ছে অপরিচিত ও নতুন। আর ব্যবহারিক অর্থে গরীব সেই লোক যারা রসুলাল্লাহর অন্তর্ধানের পর তাঁর প্রতিষ্ঠিত আদর্শকে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রাণ উৎসর্গকারী এবং সে আদর্শের মাঝে যা কিছু বিপর্যয় দেখা দিয়েছে তার বিদূরণকারী। তারা আরো লিখছেন, (তারা কিন্তু বর্তমান যে ইসলাম চালু এদেরই এক জন, এদের আকীদা এবং হেযবুত তওহীদের আকীদা এক নয়, ধোরতে গেলে বিপরীতমুখী, তবুও তাদেরটা আমি পোড়ে শুনাচ্ছি, ইসলামী জীবন ব্যবস্থায় প্রাথমিক পর্যায়ে দুনিয়াবাসীর নিকট সম্পূর্ণ অপরিচিত মনে হোয়েছিলো, তৎকালীন সমাজে তা সম্পূর্ণ নতুন কিছু এবং অপরিচিত বোলেই প্রতিভাত হোয়েছিলো। তাই তারা ইসলামের বিরোধিতায় ছিলো বদ্ধপরিকর। রসুলাল্লাহর এর তেইশ বছরের নবুয়তের জিন্দেগিতে এই দিকটিই ছিলো প্রবল বাধার পাহাড়। কিন্তু এত কিছুর পরও একদল সত্যাশ্রয়ী অখ্যাত মানুষ ইসলামী জীবন বিধানের প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করেন। ফলে তারা হোয়ে ওঠেন অতি-পরিচিত ও খ্যাতিমান। ঠিক একই অবস্থা রসুলাল্লাহর অন্তর্ধানের পরও দেখা দিবে। তখন ইসলামী জীবনব্যবস্থা পরিপূর্ণরূপে কোথাও চালু থাকবে না। এরা লিখছেন, কোথাও পরিপূর্ণ রূপে চালু থাকবে না, কথাটা হবে কোথাও কিছুই নাই। ইসলাম উচ্ছেদের জন্য দুনিয়াজোড়া চোলবে নানা রকম ষড়যন্ত্র ও শক্তির ব্যবহার। ধর্মাশ্রয়ী ব্যক্তিরা হবেন ধিকৃত ও লাঞ্ছিত। শেষ যামানার এই সংকটময় মুহূর্তে একদল গোরাবা ইসলামকে পুনর্বার প্রতিষ্ঠিত কোরবার জন্য আত্মনিয়োগ কোরবেন। তারাও তখন সমাজে অপরিচিত ও অপ্রতিষ্ঠিত অবস্থায় কাজ শুরু কোরবেন। সকল প্রকার বাধা বিপত্তি ও লাঞ্ছনা অবমাননাকে বরদাস্ত কোরে অনমনীয়ভাবে কাজ কোরবেন এবং জয়যুক্ত হবেন। তাদের জন্য সুসংবাদ, ইহকাল ও পরকাল উভয় ক্ষেত্রের জন্য নিশ্চিত। তাদের ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগের ফলেই ইসলামী জীবনাদর্শ প্রতিষ্ঠিত হবে। তারাও অপরিচিত থাকবেন না। বিশ্বময় তাদের পরিচয় সেতুবন্ধন রচিত হোয়ে যাবে। বর্তমানে আমরা এই শ্রেণির গোরাবাদের স্বাগত জানাচ্ছি। এই হোলো ইনকিলাব পত্রিকার ভাষণ।
নবী বোলছেন, ইসলাম গরীব অবস্থায় আবির্ভূত হোয়েছে সেই প্রাথমিক অবস্থায় অর্থাৎ সেই গরীব অবস্থায় পুনরায় শীঘ্রই ফিরে আসবে। সুতরাং তখনকার গোরাবা, মানে যারা গরীব তাদেরকে বলে গোরাবা, তাদের জন্য সুসংবাদ। নবী করীম (দ:) সুসংবাদ দিচ্ছেন সেই সমস্ত গরীবদের। গরীব কী? এই হাদীস আমি অনেক আগে পড়েছিলাম, যখন বয়স কম ছিলো। ভেবেছিলাম গরীব মানে টাকা পয়সার গরীব, স্বাভাবিক। কারণ তখন (রসুলাল্লাহর সময়ের) লোকজন গরীব ছিলো। তো সেই গরীব আবার হবে তা চিন্তা কোরি নাই। আসলে গরীব শব্দের অর্থ হোচ্ছে Something strange (অদ্ভুত), আশ্চর্যজনক কিছু একটা দেখলে আমরা বোলি না? যে আরে এটা কি! মানে অদ্ভুত। এটা এখনো একদম পরিষ্কার চালু আছে। উর্দু ভাষায় যখন কোন একটা অদ্ভুত ঘটনা দেখে কেউ, তখন বলে, ‘ইয়ে কেয়া আজিব আউর গরীব বাত হ্যায়? গরীব ওয়াকেয়া হায়?’ ওয়াকেয়া মানে ঘটনা। আজিব মানে আজব, আর গরীব মানে অদ্ভুত। মানে টহপড়সসড়হ (বিরল)। এই হিসেবে এই হাদীসের এই গরীব শব্দটি।
রসুলাল্লাহ যখন এসে (মক্কার লোকদের ইসলামের দিকে, কলেমার দিকে) ডাক দিলেন, তখন তারা কী বোললো? তারা বোললো একি অদ্ভুত কথা বোলছ? তুমি একি অদ্ভুত কথা বোলছ? আমরা এব্রাহীমের মিল্লাত, অনুসারী, তাঁর উম্মাহ। আমরা তাঁকে নবী বোলে মানি, আল্লাহকে জানি, আল্লাহ আছেন, আল্লাহ এক, এই কা’বা তাঁর ঘর, আমরা কা’বার দিকে মুখ কোরে সালাহ কায়েম

কোরি, আমরা কা’বা তওয়াফ কোরি, মহাসম্মানে আল্লাহর ঘর তওয়াফ কোরি, আমরা এখানে হজ্ব কোরি প্রতি বছরে, আমরা এব্রাহীমের (আঃ) নির্দেশে রোজা কোরি, তাঁর নির্দেশ মোতাবেক আমরা খাতনা পর্যন্ত কোরি, তুমি একি অদ্ভুত কথা বোলছ যে, আমরা বিপথগামী? একি অদ্ভুত কথা! এই অদ্ভুত কথা হোচ্ছে এই গরীব। তখন রসুলাল্লাহ মোকাবেলা কোরছিলেন এই জিনিসটা। তিনিও তখন গোরাবা ছিলেন, তাঁর দলও গোরাবা। এই হাদীসটা যে ইসলাম প্রথম এসেছে তখন গরীব ছিল, আবার ভবিষ্যতেও গরীব হোয়ে আসবে। মাঝখানে বিকৃতি।
পৃথিবীতে যত সংগঠন আজ ইসলামের জন্য কাজ কোরছে, যাদের সম্পর্কে কথা হোচ্ছে যে, আমরা ওগুলোতে যোগদান কোরব না কেন? তাদের অবস্থা কী? যারা ইসলাম চায় না, তারা কী বলে? না, আমরা ইসলাম চাই না। কী চাই? কেউ এটা চাই, কেউ ওটা চাই, কেউ সমাজতন্ত্র চাই, কেউ কম্যুনিজম চাই, কেউ গণতন্ত্র চাই, কেউ ফ্যাসিবাদ চাই, কেউ রাজতন্ত্র চাই, ইত্যাদি চাই। তোমার ইসলাম এখন আর চোলবে না। তারা কিন্তু কাউকে বলে না যে, তুমি একি অদ্ভুত কথা বোলছ, কাউকে বলে? আমি প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম বোলবো না। আপনারা ধোরে নেন বা জেনে নেন, পৃথিবীতে বড় বড় সংগঠন আছে, যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা কোরছে। গত একশ, প্রায় দেড়শত বছর থেকে এই প্রচেষ্টা চালু হোয়ে গেছে। পৃথিবীর প্রত্যেক মোসলেম দেশগুলোতে আছে। বিরাট বিরাট বড় বড় এক একটা। কিছু মাঝারি আছে, কিছু ছোট আছে। এদের বিরোধিতা করে কারা? যারা ইসলাম চায় না। যারা চায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক, তারা এদের সঙ্গে আছে, কেউ এই সংগঠনে, না হয় ঐ সংগঠনে, না হয় কেউ ঐ সংগঠনে আছে। যারা চায় না, তারা তাদের বিরোধিতা করে। বলে, না, এখন ইসলাম দিয়ে চলা সম্ভব না। একেক জনের একেকটা যুক্তি আছে। ১৩০০/১৪০০ বৎসরের পুরাতন আইন-কানুন চোলতে পারে না, তাই বলে না? এটা এখন আর চলে না, ঐ সময়ের জন্য ঠিক ছিল। কিন্তু কাউকেই বলে না, একি অদ্ভুত কথা বোলছো।
কেবলমাত্র হেযবুত তওহীদকে বলে। বলে কী! আমরা কাফের মোশরেক! আমরা ইসলামে নাই! একি অদ্ভুত কথা!’ এই সেই ‘গরীব’। এদের সম্বন্ধে নবী করীম (দ:) এর এই হাদীস। আমরা এটা বহু জায়গায় এই কথার মুখোমুখি হোই যে, একি বলো, আমরা সবাই কাফের মোশরেক! একি অদ্ভুত কথা! এটা পৃথিবীর আর কোনো সংগঠন ঋধপব করে না, এক হেযবুত তওহীদ ছাড়া। এই হাদীস মোতাবেক এই গোরাবা এনশাআল্লাহ আমরা। এই গোরাবা, যাদের সম্বন্ধে আল্লাহর রসুল সুসংবাদ দিচ্ছেন।

রসুলের ডাকে আরেকটি কথা কাফের মোশরেকরা বোলতো। ওরা মোশরেক ছিলো, বোলতো যে, আমাদের বাপ দাদা যেটা কোরে আসছেন, এটাই আমরা কোরবো। তোমাদেরটা নেবো না। এটা কোর’আনে বহুবার আছে। আমি মাত্র চারটা জায়গা থেকে বোলবো। একটা, সুরা বাক্বারা ১৭০ এ আল্লাহ বোলছেন, ‘যখন তাহাদিগকে বলা হয়, আল্লাহ যাহা অবতীর্ণ কোরিয়াছেন, তাহা তোমরা অনুসরণ করো’, এ অনুসরণটা সর্বজীবনে অনুসরণ, ‘তাহারা বলে, না, আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদিগকে যাহাতে পাইয়াছি, তাহারই অনুসরণ কোরবো’। আল্লাহ বোলছেন, ‘তাহাদের পিতৃপুরুষগণ যদিও কিছু বুঝিতো না এবং তাহারা সৎপথে (সৎপথে এখানে হেদায়াহ) পরিচালিত ছিলো না তথাপিও?” এটা আল্লাহর প্রশ্ন। তারা কী বোললো? আমাদের বাপ দাদা যেটা কোরে আসছেন আমরা সেটা কোরবো। সুরা লোকমানের ২১-এ আল্লাহ বোলছেন, ‘উহাদিগকে যখন বলা হয়, আল্লাহ যাহা অবতীর্ণ কোরিয়াছেন তাহা অনুসরণ করো।’ ঐ একই কথা আল্লাহর। ‘উহারা বলে, বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদিগকে যাহাতে পাইয়াছি তাহারই অনুসরণ কোরিবো।’ এখানে আল্লাহ বোলছেন, ‘শয়তান যদি উহাদিগকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহ্বান করে, তবুও কি?’ দু’টি। ঐটাও Question (প্রশ্ন) আল্লাহর, এটাও ছঁবংঃরড়হ [আল্লাহর]। কথাটা এক, পূর্বপুরুষ। ‘উহারা বলে, আমরাতো আমাদের পূর্বপুরুষদিগকে পাইয়াছি, এক মতাদর্শের অনুসারী। আমরা তাহাদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ কোরছি’। অর্থাৎ তোমারটা নেবো না। আমাদের বাপদাদা চৌদ্দপুরুষ যেটা কোরে আসছে, আমরা সেটা কোরবো। ইসলাম প্রতিষ্ঠার ডাকে অন্য কোনো সংগঠনকে এই কথা বলে? কখনই না। কোর’আন শরীফে আরো আছে, আমি তো কয়েকটা বোললাম, আরো আছে। এটা শুধুমাত্র হেযবুত তওহীদকে বলে। বহুবার বহু লোকে বোলেছে, যেটা কোরে আসছি বাপদাদা চৌদ্দ পুরুষ কোরেছে, এটাই ঠিক। তুমি যে ডাকছ, আজব, অদ্ভুত, এক কথার দিকে, আমরা যাবো না। এটা হেযবুত তওহীদকে ছাড়া আর কাউকে বলে না এবং রসুলের ডাকে যে কথাটা বোলত, হেযবুত তওহীদকে আলহামদুলিল্লাহ সেই কথা বোলছে। আর কোনো সংগঠনকে এই কথা তারা জবাব দেয় না যে, তোমাদের ডাকে আমরা যাবো না, আমাদের বাপদাদা চৌদ্দ পুরুষ যেটা কোরে আসছে, আমরা সেটা কোরবো। একমাত্র হেযবুত তওহীদ। বহু জায়গা থেকে এই কথা আমি পেয়েছি, তাই নয় শুধু, আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের মধ্য থেকে আমি এই জবাব পেয়েছি। অতি নিকটতম আপনজনের কাছে থেকে এই জবাব আমি পেয়েছি যে, না বাপদাদা যা কোরে আসছেন ঐটা বাদ দিয়ে ভাইয়ার কথা শুনবো? বা ঐ লোকটার কথা শুনবো? না। এটা কত বড় একটা ঝরমহ (চিহ্ন)?
আরেকটা চিহ্ন আছে। সমস্ত পৃথিবীতে যত সংগঠন আছে, ঐ যে আমি আজকে বোললাম যে তারা বলে, না, আমরা ইসলাম চাই না, আমরা ইসলাম চাই না। কিন্তু তাদেরকে কি মুরতাদ বলে? বলে না। তাদেরকে ধর্মত্যাগী বলে না। মুরতাদ মানে ধর্মত্যাগী, যারা নাকি একটা ধর্ম থেকে চোলে গেছে বের হোয়ে। আজ যদি এই ইসলাম থেকে কেউ হিন্দু হোয়ে যায়, খ্রিস্টান হোয়ে যায়, বৌদ্ধ হোয়ে যায়, বা ইহুদি হোয়ে যায়, তখন বলা হয়, এ মুরতাদ, এ ইসলাম ত্যাগ কোরে বাহির হোয়ে চোলে গেছে। নবীকে বলা হতো মুরতাদ, এই লোক মুরতাদ হোয়ে গেছে। এটা ইতিহাস, হাদীসও ইতিহাসও। মক্কার কাফের-মোশরেকরা বোলত, ‘আমাদের যে ধর্ম, আমরা যেটা পালন কোরে আসছি, এব্রাহীমের (আ:) এর ধর্ম। মিল্লাতে এব্রাহীম আমরা। এর থেকে মোহম্মদ (দ) বাহির হোয়ে চোলে গেছে, ধর্মত্যাগী হোয়ে গেছে, মুরতাদ হোয়ে গেছে।” আজ হেযবুত তওহীদকেও মুরতাদ বলা হয়। কি বলা হয়? খ্রিস্টান হোয়ে গেছে, বলা হয় না? সর্বত্র, সর্বত্র হেযবুত তওহীদ খ্রিস্টান হোয়ে গেছে, এটা বাংলাদেশের সবজায়গায় একই কথা। সর্বত্র থেকে শুনবেন যে, খ্রিস্টান হোয়ে গেছে অর্থাৎ মুরতাদ হোয়ে গেছে। আর কোনো সংগঠনের এই অপবাদ নাই, হেযবুত তওহীদ ছাড়া। এই অপবাদ সুন্নতে রসুলাল্লাহ। নবীকে এই অপবাদ দেয়া হোয়েছে। তাঁর আসহাবদের এই অপবাদ দেয়া হোয়েছে। সেই অপবাদ আজ হেযবুত তওহীদের। শোকর আলহামদোলেল্লাহ।
পৃথিবীময় অন্যান্য সংগঠন যারা ইসলামের দিকে ডাকছে তাদের থেকে, সেগুলোয় যোগ না দিয়ে হেযবুত তওহীদে কেন যোগদান কোরতে হবে, তার যে কয়টা কারণ আমি দিলাম আশা কোরি আর এর বেশী প্রয়োজন নাই, আর এতে বুঝতে পারবে না, তার আর বোঝার কোন আশা নাই।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...