‘তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উপর মুক্ত আলোচনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

ওবায়দুল হক বাদল:
‘তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উপর মুক্ত আলোচনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক করেছে হেযবুত তওহীদ। শনিবার (১২ জুলাই, ২০২৫) সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করেন হেযবুত তওহীদের শীর্ষ নেতা ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। এসময় তিনি তাঁর রচিত ‘তওহীদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা’ গ্রন্থের আলোকে একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপরেখা তুলে ধরেন।

মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপনকালে হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘গত ৫৩ বছরে ১৭ বার সংবিধানে সংশোধনী আনা হয়েছে, বহু নির্বাচন হয়েছে, নতুন নতুন আইনও প্রণয়ন করা হয়েছে, কিন্তু জাতির একটা সঙ্কটেরও টেকসই সমাধান হয়নি। মূলত মানবরচিত জীবনব্যবস্থা দিয়ে কোনো ব্যক্তি বা দল যতই চেষ্টা করুক সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগের প্রবর্তিত বিধি-বিধান ও সিস্টেমেই আমাদের দেশ চলছে, আর সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অন্যায়, অবিচার, অশান্তি বেড়ে চলেছে। যুগের পর যুগ আমরা মানবরচিত বিধানের মাশুল দিচ্ছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে রসুল (সা.) এমন নিরাপদ সমাজ গঠন করেছিলেন যে, একা একজন নারী রাতের অন্ধকারে নির্ভয়ে শত শত মাইল পথ হেঁটে যেত। মানুষ ঘরের দরজা খুলে ঘুমাতে পারত। স্বর্ণের দোকান খোলা রেখে মসজিদে যেত। আদালতে মাসের পর মাস অপরাধ-সংক্রান্ত মামলা আসত না। আল্লাহর দেওয়া সেই চিরন্তন জীবনব্যবস্থাকেই আধুনিক প্রেক্ষাপটে তুলে ধরেন তিনি। তওহীদের ভিত্তিতে আধুনিক রাষ্ট্রনীতি, রাজনৈতিক দল, বিচারব্যবস্থা, মসজিদ ব্যবস্থা, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যম, মন্ত্রিপরিষদ, নারীর মর্যাদা ও ভূমিকা, আইনসভা, সামাজিক সুরক্ষা ইত্যাদি কেমন হবে তার একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র ফুটে ওঠে তাঁর প্রস্তাবনায়।

হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রকাশ করেন- সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক আজাদ, সাবেক সাংসদ ও বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি এ্যাড. গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরি আলাল, ঢাবির ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়নস ও কালচার বিভাগের প্রফেসর ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. কাজী নুরুল ইসলাম, ঢাবির ফিলোসফি বিভাগের প্রফেসর ও চেয়ারম্যান ড. শাহ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী, ঢাবির নৃত্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান তামান্না রহমান, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় জনতা পার্টির মহাসচিব শওকত মোহাম্মদ, বাংলাদেশ ইসলামী সমন্বয় পরিষদের সহ-সভাপতি কবি সৈয়দ ইসমাইল হোসেন জনি, কুরআন পাঠ আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু সাইদ খান, শাহ মাখদুম ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বিএম শামসুল হক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সেক্রেটারি মো. আসাদুজ্জামান, দৈনিক দেশেরপত্রের সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী, হায়দার আলী খান পন্নী আল আওলাদ ওয়াক্ফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লী উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী, আল মসজিদ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আবুল বাশার নোমানী, সাবেক সেনা কর্মকর্তা (উইং কমান্ডার) মো. আমিনুল ইসলাম, রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের অর্থ সম্পাদক দিদারুল ভূইয়া, বিশ্বমানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ এর গাজী মোশাররফ হোসেন, সাধনা সংসদ এর প্রতিষ্ঠাতা ও মাহসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. দেলোয়ার হোসেন ভুঁইয়া, মেজর আলমগীর হোসেন দেওয়ান, হাফেজ মাওলানা শরীফ শাহরিয়ার প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন, ঢাকা উত্তরের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন রাব্বানি, দৈনিক দেশেরপত্রের সাহিত্য সম্পাদক কবি রিয়াদুল হাসান প্রমুখ।

আলোচকরা তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রায়োগিক দিক, আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ এবং এর বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে মুক্ত আলোচনা করেন ও তাদেও মূল্যবান মতামত তুলে ধরেন।