হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

হেযবুত তওহীদের মূল বক্তব্য

রিয়াদুল হাসান:
বর্তমানে মানবজাতি এক ভয়াবহ দুঃসময় অতিক্রম করছে। সামাজিক অন্যায়, নেতৃবৃন্দের অসততা ও অঙ্গীকারভঙ্গ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক বৈষম্য, অবিশ্বাস ইত্যাদির মধ্যে মানবজাতি আপাদমস্তক নিমজ্জিত হয়ে আছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য মানুষ নানা ধরনের জীবনব্যবস্থা প্রয়োগ করে দেখছে। বিপ্লব হচ্ছে, বার বার শাসক পরিবর্তন করা হচ্ছে। কিন্তু দিন দিন সঙ্কট আরো ঘনীভ‚ত হচ্ছে।
এই অবস্থাটি সৃষ্টির পেছনে দায়ী হচ্ছে আমাদের জীবনব্যবস্থা। স্রষ্টাহীন, বস্তুবাদী সিস্টেমের অধীনে মানুষ যতদিন থাকবে ততদিন কিছুতেই মুক্তি আসবে না। বরং দিন দিন জটিলতা বাড়তে থাকবে। তাই এই মুহূর্তে মানুষের উচিত এই সিদ্ধান্তে আসা যে, মানুষের তৈরি এই সিস্টেমটাকে পাল্টাতে হবে।
কিন্তু এই সিস্টেমকে পরিবর্তন করে মানুষ কোন সিস্টেম গ্রহণ করবে? এর জবাব পেতে হলে আমাদের তাকাতে হবে রসুলাল্লাহর আগমনের সময়টির দিকে। বর্তমানে আমরা যে অবস্থায় বসবাস করছি, এর মতই চরম খারাপ অবস্থা তাদের হয়েছিল। তারা বংশানুক্রমে খুন, লুটপাট, যুদ্ধ-বিগ্রহ, প্রতিশোধ-প্রতিহিংসায় লিপ্ত ছিল। তারা পৃথিবীতে একটি ঘৃণিত, চরম দারিদ্রপীড়িত এবং অবজ্ঞাত জাতি হিসেবে পরিচিত ছিল। এ পশ্চাৎপদ জাতিটাকেই অতি অল্পদিনের ব্যবধানে রসুলাল্লাহ পৃথিবীর বুকে একটি শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে যান। রসুলের আদর্শে গড়া তাঁর উম্মাহ পরবর্তী ৬০/৭০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে শিক্ষা দীক্ষায়, জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, সামরিক শক্তিতে অর্থাৎ সর্বদিক দিয়ে একটি শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হন।
প্রশ্ন হচ্ছে, রসুলাল্লাহ কীসের মাধ্যমে এ অভ‚তপূর্ব পরিবর্তন সাধন করেছিলেন? এর উত্তর হচ্ছে রসুলের উপর আল্লাহ প্রদত্ত ইসলাম কায়েম করার মাধ্যমেই এ পরিবর্তন এসেছিল। আল্লাহর দেওয়া ঐ জীবন-ব্যবস্থা অর্থাৎ সিস্টেমটি প্রয়োগ করার ফলেই আরবের ঐ আত্মকলহে লিপ্ত জাতির সদস্যরা পরবর্তীতে এক একজন সোনার মানুষে রূপান্তরিত হয়ে যান। তাই সুন্দর ও শান্তিময় পৃথিবী গড়তে ইসলামের সিস্টেম প্রয়োগ অপরিহার্য।
দ্বিতীয়ত, বর্তমানে প্রচলিত ইসলামটি আল্লাহ রসুলের সেই প্রকৃত ইসলাম কি না? এর উত্তর হচ্ছে, বর্তমানে পৃথিবীতে ইসলাম নামক যে ধর্মটি চালু আছে সেটি আল্লাহ ও রসুলের প্রকৃত ইসলাম নয়। এ জাতিটি নিজেদেরকে মুসলিম বলে দাবি করে, কিন্তু এরা প্রকৃতপক্ষে মুসলিম ও মো’মেন নয়। বিগত তেরশত বছরে ক্রমাগত বিকৃত হতে হতে সে ইসলাম বর্তমানে ঠিক এর বিপরীত একটি ধর্মবিশ্বাসে পরিবর্তিত হয়ে গেছে। বাহ্যিক দিক থেকে দেখলে অনেকেরই একে আল্লাহ-রসুলের ইসলামের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হতে পারে কিন্তু এ ইসলাম চরিত্রে, আত্মায় আল্লাহ রসুলের ইসলামের ঠিক বিপরীত। অর্থাৎ শেষ রসুল আনীত প্রকৃত ইসলাম মানুষকে দিয়েছিল সর্বরকম মুক্তি ও স্বাধীনতা, নির্মূল করেছিল সমস্ত অন্যায়-অবিচার, সামাজিকভাবে দিয়েছিল পরম নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দূর করেছিল বৈষম্য। কিন্তু বর্তমানে সে ইসলাম আর আমাদের মাঝে নেই। ধর্ম ব্যবসায়ী ও অতি পণ্ডিতদের কবলে পড়ে ইসলাম আজ নামাজ রোজাসর্বস্ব অন্যান্য ধর্মের মত একটি ধর্মে পরিণত হয়ে গেছে।
পাশাপাশি পুরোহিতদের ন্যায় কথিত আলেম মোল্লারা একে জীবিকা নির্বাহের একটি উত্তম হাতিয়ারে পরিণত করেছে। সর্বশেষ ব্রিটিশদের হাতে সামরিকভাবে পরাজিত হওয়ার পর তাদের তৈরি মাদ্রাসা শিক্ষার মাধ্যমে তারা এ জাতির মন মগজে এক মৃত ইসলাম স্থায়ী আসন গেঁড়ে বসে।
এমতাবস্থায় এই জাতিকে যদি পৃথিবীর বুকে আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হয় এবং পরকালে জান্নাতে যেতে হয় তাহলে আল্লাহ ও রসুলের প্রকৃত ইসলাম প্রতিষ্ঠা ছাড়া তাদের সামনে আর কোন পথ অবশিষ্ট নেই।
প্রশ্ন আসতে পারে- তাহলে সেই প্রকৃত ইসলাম কোথায় পাওয়া যাবে? এর উত্তর হচ্ছে- আল্লাহ দয়া করে সেই প্রকৃত ইসলাম হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা, টাঙ্গাইলের করটিয়ার ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সদস্য যামানার এমাম, এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি সে সত্য বোঝার পর বই লিখে, হ্যান্ডবিল ছাপিয়ে মানুষের সামনে তা তুলে ধরেছেন। এখন মানবজাতি যদি তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে আল্লাহর দেওয়া সত্য ইসলামটাকে মেনে নেয় তাহলে তারা বর্তমান সংকট থেকে মুক্তি পাবে। মেনে না নিলে অনিবার্য পরিণতি ভোগ করবে। এ বিষয়টিই আমাদের সমস্ত কথার মূল কথা।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...