শাহাদৎ হোসেন:
একদিকে মানবসৃষ্ট ত্রুটিযুক্ত ব্যবস্থার অনুসরণ অন্যদিকে ধর্মের ভুল ব্যাখ্যার কারণে বিশ্বজুড়ে নারীরা যখন অধিকার, সম্মান ও নিরাপত্তা সংকটে ভুগছে তখন এই সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হিসেবে তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবনা তুলে ধরছে হেযবুত তওহীদ। এই সংগ্রামে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেছেন, পশ্চিমা নীতি আমদানি করে বা প্রচলিত রাজনৈতিক ধারায় আন্দোলন করে নারীর প্রকৃত মুক্তি সম্ভব নয়। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাই পারে নারীকে তার হারানো সম্মান ও মর্যাদার আসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনীয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদ আয়োজিত ‘তওহীদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে নারীদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক নারী সম্মেলনে বক্তারা এই আহ্বান জানান। দিনব্যাপী আয়োজিত এই সম্মেলনে ঢাকা মহানগর থেকে আগত হাজারো নারী নেত্রী ও কর্মীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মিলনায়তন কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। সম্মেলনে বিশ্বজুড়ে চলমান সংকট এবং নারী সমাজের বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে তা থেকে মুক্তির পথনির্দেশ করা হয়।

প্রধান অতিথি হেযবুত তওহীদের শীর্ষ নেতা ও ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেযবুত তওহীদের শীর্ষ নেতা ও ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি আধুনিক, প্রগতিশীল ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ অপরিহার্য। ইতিহাস সাক্ষী, রাসুল (সা.)-এর যুগে নারীরা মসজিদ, বাজার, হাসপাতাল পরিচালনাসহ যুদ্ধের ময়দানেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু ধর্মের অপব্যাখ্যা ও মানবসৃষ্ট ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা নারীদের এই ঐতিহাসিক ভূমিকা থেকে বিচ্যুত করেছে এবং তাদের উপর নানাবিধ সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে।
তিনি বলেন, হেযবুত তওহীদ মানবজাতির সামনে পাশ্চাত্য সভ্যতার ব্যর্থ আদর্শের বিপরীতে একটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ বিকল্প রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রস্তাব করছে, যা তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। আজকের আধুনিক যুগে আল্লাহর দীনকে কীভাবে জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রয়োগ করা যায় তার সুস্পষ্ট রূপরেখা তুলে ধরছে হেযবুত তওহীদ। শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠার নামে আফগানিস্তান, ইরানসহ বিভিন্ন দেশে যা হচ্ছে তা ইসলামের বিরুদ্ধে মানুষের মনে কেবল বিদ্বেষ ও ভয়ভীতি সৃষ্টি করছে। এর অন্যতম কারণ হলো, সেখানে নারীদের উপর বিভিন্ন অমানবিক সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে, যা ইসলামের মূল চেতনার পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রস্তাবিত ব্যবস্থায় নারীদের প্রতিভা, জ্ঞান ও যোগ্যতা বিকাশের ক্ষেত্রে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা হবে। গণমাধ্যম, সেনাবাহিনী, পুলিশ, আদালত, পোশাক শিল্প, কলকারখানার মতো আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার চ্যালেঞ্জিং কর্মক্ষেত্রগুলোতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও প্রতিযোগিতামূলকভাবে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী অংশগ্রহণের সমান সুযোগ পাবে।
নারী নেতৃত্ব হারাম বলে সমাজে যে ভ্রান্ত ধারণা প্রতিষ্ঠিত করে রাখা হয়েছে- সে বিষয়ে তিনি বলেন, এটি এক কথায় রায় দেওয়ার মতো কোনো বিষয় নয়। পবিত্র কোর’আনে পুরুষকে পরিবারের কর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভরণপোষণের কারণে। কিন্তু এটি রাষ্ট্রের কোনো পদে নারীর নেতৃত্বকে নিষিদ্ধ করে না। এর প্রমাণ ইসলামের ইতিহাসেই রয়েছে। আম্মা আয়েশা (রা.)-এর নেতৃত্বে উটের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, ইয়ারমুকের যুদ্ধে খাওলা বিনতে আজওয়ার (রা.) নারী বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে সুলতানা রাজিয়া, সিত্ত উল-মুলক, শাজার আল-দুরের মতো অসংখ্য নারী শাসক হিসেবে নিজেদের যোগ্যতার সাক্ষর রেখেছেন এবং তৎকালীন আলেম সমাজ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর আপত্তি তোলেননি।
নারী নেতৃত্বের বিষয়ে হেযবুত তওহীদের আকিদা তুলে ধরে ইমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম বলেন, যেহেতু সমগ্র মুসলিম একটি উম্মাহ, তাই এই বিশ্বজনীন উম্মাহর সর্বোচ্চ পদের অধিকারী কোনো নারী হবেন না। এর যৌক্তিক কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন যে, আল্লাহ কোনো নারীকে নবী হিসেবে প্রেরণ করেননি এবং খোলাফায়ে রাশেদার সময়েও কোনো নারী খলিফা হননি। নারীর শারীরিক ও মানসিক গঠন, মাতৃত্বকালীন দায়িত্ব এবং পারিবারিক জীবনের বাস্তবতার নিরিখে এই একটি মাত্র পদের জন্য পুরুষকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু এই একটি পদ ব্যতীত রাষ্ট্রের অন্য যেকোনো নেতৃস্থানীয় পদ, যেমন- কোনো প্রদেশের গভর্নর বা প্রধান নির্বাহী পদেও একজন নারী তার যোগ্যতা দিয়ে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন।
ঢাকা মহানগর নারী বিভাগের সম্পাদিকা তাসলিমা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের প্রধান উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নারী বিভাগের প্রধান রুফায়দাহ পন্নী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম সামসুল হুদা, ঢাকা মহানগর সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী, কেন্দ্রীয় নারী বিভাগের যুগ্ম-সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা, কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সুলতানা রাজিয়া, সাহিত্য সম্পাদক রিয়াদুল হাসান, আন্তঃধর্মীয় যোগাযোগ সম্পাদক ইলা ইয়াসমিন, গণমাধ্যম সম্পাদক শারমিন সুলতানা চৈতী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হেযবুত তওহীদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী বলেন, আজ এমন এক সময়ে আমরা সম্মেলন করছি যখন বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা, বিশেষ করে নারীরা নিপীড়িত। বাংলাদেশে অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নারীরাই সামনের সারিতে থাকছেন, কিন্তু দিনশেষে তারাই সহযোদ্ধাদের দ্বারা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই পরিস্থিতি প্রমাণ করে যে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় সংস্কার করে কোনো লাভ হবে না, বরং সম্পূর্ণ ব্যবস্থাটিকেই পরিবর্তন করতে হবে। আল্লাহর দেওয়া তওহীদের ওপর ভিত্তি করে একটি সহজ, সরল ও নিরাপদ জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বক্তব্য রাখছেন হেযবুত তওহীদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী।
তিনি বলেন, আমরা যখনই ইসলামী জীবনব্যবস্থার কথা বলি, তখনই একটি প্রশ্ন উঠে আসে যে, এতে নারীরা অধিকারহারা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তথাকথিত আধুনিক পাশ্চাত্য জীবনব্যবস্থাই নারীদের প্রকৃত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা নারী উদ্যোক্তা তৈরির নামে ঋণের জালে আবদ্ধ করে, কিন্তু নারীরা কর্মক্ষেত্রে বা রাস্তায় নিরাপদে চলাচল করতে পারবে কি না, সেই নিশ্চয়তা দেয় না। নারীর প্রথম প্রয়োজন ক্ষমতায়ন নয়, তার প্রথম প্রয়োজন পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে নিরাপত্তা। ইসলাম দেড় হাজার বছর আগেই সেই নিরাপত্তার বিধান দিয়েছে।
নারী নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক নিয়মেই আল্লাহ নারী ও পুরুষকে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। সমগ্র মানবজাতির সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে একজন পুরুষ হওয়াই যৌক্তিক। যা কোর’আনের ইঙ্গিত ও রাসুলের (সা.) সুন্নাহ দ্বারা সমর্থিত। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, নারীরা অন্য কোনো ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। একজন নারী গভর্নর হতে পারেন, অফিসের প্রধান হতে পারেন, কারখানার পরিচালক হতে পারেন। কেবল পুরো উম্মাহর সর্বোচ্চ ইমামত এবং নামাজের ইমামতি ছাড়া সকল ক্ষেত্রেই নারী তার যোগ্যতা অনুযায়ী নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার রাখেন। তিনি আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নারী হওয়ার কারণে উদ্ধার না পাওয়া এবং সৌদি আরবে অগ্নিকাণ্ডে পর্দার বিধান লঙ্ঘনের আশঙ্কায় নারীদের পুড়ে মরার মতো ঘটনাকে ইসলামের নামে চরমপন্থা ও অমানবিকতার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, যে বিধান মানবতাকে বিসর্জন দেয়, তা কখনো ইসলাম হতে পারে না’ -বলেন হেযবুত তওহীদের এই নারী নেত্রী।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, হেযবুত তওহীদের প্রস্তাবিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় নারীদের কোনো কোটার প্রয়োজন হবে না, তারা যোগ্যতা ও মেধা দিয়েই রাষ্ট্রীয় সকল অঙ্গনে নিজেদের স্থান করে নেবে।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সম্পাদক উম্মুত তিজান মাখদুমা পন্নী
হেযবুত তওহীদের প্রধান উপদেষ্টা খাদিজা খাতুন তাঁর বক্তব্যে নারী সমাজের দ্বিমুখী সংকট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “নারী সমাজ আজ এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। একদিকে তথাকথিত প্রগতি ও স্বাধীনতার নামে পশ্চিমা ভোগবাদী সভ্যতা নারীকে পণ্যে পরিণত করেছে। অন্যদিকে এক শ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী ইসলামের অপব্যাখ্যা করে ফতোয়ার বেড়াজালে নারীকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। তারা নারীর জ্ঞানচর্চা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের পথকে রুদ্ধ করে দিয়ে তাকে কার্যতঃ নিষ্ক্রিয় করে রেখেছে। এই উভয় পথই নারীর জন্য চরম অবমাননাকর এবং সংকটময়।”
তিনি আরও বলেন, “এই দুই প্রান্তিকতার বাইরে ইসলামের সঠিক পথই হলো নারীমুক্তির একমাত্র সমাধান। ইসলামই নারীকে সর্বপ্রথম সর্বোচ্চ সম্মান, অধিকার ও মর্যাদা দিয়েছিল। রসুল (সা.)-এর যুগে নারীরা জ্ঞানচর্চা থেকে শুরু করে রণাঙ্গনে পর্যন্ত পুরুষের পাশাপাশি থেকেছেন। আজ হেযবুত তওহীদের এমামের নেতৃত্বে আমরা ইসলামের সেই হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে নেমেছি। এই সংগ্রামে নারীদের ভূমিকা অপরিহার্য, কারণ আপনারাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নির্মাতা। আপনাদের হাতেই একটি সত্যনিষ্ঠ ও আদর্শবান প্রজন্ম গড়ে উঠবে। তাই সমাজ থেকে সকল অন্যায়, অবিচার ও অধর্মের অন্ধকার দূর করতে আপনাদেরকেই সত্যের মশাল হাতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
সম্মেলনে ঢাকা মহানগর হেযবুত তওহীদের সভাপতি ডা. মাহবুব আলম মাহফুজ বলেন, ঢাকা শহরের মতো আধুনিক নগরীতেও নারীরা পদে পদে লাঞ্ছনা ও নিরাপত্তাহীনতার শিকার। মানবসৃষ্ট আইন নারীর সুরক্ষা দিতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। কেবল আল্লাহর আইনই পারে নারীর জন্য একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক সমাজ বিনির্মাণ করতে। হেযবুত তওহীদ সেই লক্ষ্যেই ঢাকা মহানগরীতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ করে যাচ্ছে।

কেন্দ্রীয় নারী বিভাগের যুগ্ম-সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা
কেন্দ্রীয় নারী বিভাগের যুগ্ম-সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, শতশত বছর ধরে ধর্মব্যবসায়ীরা ইসলামের অপব্যাখ্যা করে নারীদের অধিকার খর্ব করেছে এবং তাদেরকে সমাজের একটি অকার্যকর অংশে পরিণত করেছে। তাদের সৃষ্ট গোঁড়ামি ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আজ নারীদেরকেই সোচ্চার হতে হবে। ইসলাম নারীকে যে সম্মান ও অধিকার দিয়েছে তা পুনরুদ্ধার করার জন্য তওহীদের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বক্তারা একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ইসলামের প্রকৃত আদর্শকে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য রসুলের (সা.) নারী সাহাবীদের মতো বীরাঙ্গনার ভূমিকার অবতীর্ণ হবার আহ্বান জানান।
আন্তঃধর্মীয় যোগাযোগ সম্পাদক ইলা ইয়াসমিন
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- হেযবুত তওহীদের ঢাকা বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন রব্বানী, ঢাকা জেলা সভাপতি ইউনুস মিয়া, ঢাকা বিভাগীয় সহ-সভাপতি আল আমিন সবুজ, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের সভাপতি আরিফ উদ্দিন, উত্তরা-গাজীপুর অঞ্চলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তসলিম উদ্দিন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত নারী নেত্রীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ময়মনসিংহ বিভাগীয় নারী নেত্রী রোজিনা আক্তার, বরিশাল বিভাগীয় নারী নেত্রী খাদিজা আক্তার মুন্নি, রংপুর বিভাগীয় নারী নেত্রী বেবি আক্তার এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় নারী নেত্রী জোবায়দা আক্তার বেবী। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন হেযবুত তওহীদের সদস্য আদিবা ইসলাম, জিনাত ফেরদৌস তাবাসসুম ও জিন্নাত আক্তার।
কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সুলতানা রাজিয়া
এর আগে সকাল ৮টা থেকেই সম্মেলনস্থলে আসতে থাকেন হেযবুত তওহীদের নারী নেত্রী, সদস্য ও শুভাকাক্সক্ষীরা। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই মিলনায়তন মুখরিত হয়ে ওঠে। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। দিনব্যাপী এই আয়োজনটি দুটি পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে অতিথিদের বক্তব্যের পর মধ্যাহ্নভোজের বিরতি দেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর নারী বিভাগের সম্পাদিকা তাসলিমা ইসলাম
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বটি ছিল বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক আয়োজনে পরিপূর্ণ। এই পর্বে হেযবুত তওহীদের কার্যক্রমভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি নারী সদস্যদের অংশগ্রহণে মনোমুগ্ধকর উশু ও বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা প্রদর্শিত হয়, যা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। এছাড়াও ছিল দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা আবৃত্তি। অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল হেযবুত তওহীদের এমামের একটি বিশেষ প্রশ্নোত্তর পর্ব, যেখানে নারীরা বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি প্রশ্ন করার সুযোগ পান। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং সবশেষে সভাপতির সমাপনী বক্তব্যের পর দেশ, জাতি ও মানবতার সার্বিক কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি টানা হয়।