“তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থাই পারে নাগরিকদের গৌরবময় অধিকার ফিরিয়ে দিতে”

তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থাই পারে নাগরিকদের গৌরবময় অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন হেযবুত তওহীদের নারী নেত্রীরা। রবিবার (১৭ আগষ্ট) সকাল ১০টায় গাইবান্ধার শিল্পকলা অডিটরিয়ামে হেযবুত তওহীদের গাইবান্ধা নারী বিভাগ আয়োজিত নারী সম্মেলনে আয়োজিত ‘তওহীদ ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নারীদের অধিকার’ শীর্ষক সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তারা।

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে নানান কারণে নারীরা পিছিয়ে আছে। এখনো নারীদের মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা পুরুষের তুলনায় অনেকগুন কম। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা এবং আদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত করা গেলে নারীরা সমস্ত আবদ্ধতা সমস্ত পশ্চাৎপদতা পেছনে ফেলে তারা সমাজের অগ্রগতি এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিস্ময়কর ভূমিকা রাখতে পারে।

বক্তারা বলেন, আরবের জাহিলি সমাজে নারীদের কোন সম্মান ছিল না, মর্যাদা ছিল না অধিকার ছিল না, ইসলামের আগমনের ফলে তারা অধিকার, সম্মান মর্যাদা ফিরে পেয়েছে। আজ আবারও মানুষের তৈরি বিধান অনুসরণ করার ফলে নারীরা তাদের অধিকার, সম্মান এবং নিরাপত্তা হারাচ্ছে। এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য দেশের নারীদেরকে প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা ধারণ করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে আসতে হবে এই লক্ষ্যেই দেশব্যাপী সংগ্রাম করছে হেযবুত তাওহীদ।

বক্তারা আরও বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালেও হাজার হাজার নারী তারা হেনস্থার শিকার হয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, সংগ্রাম করেছেন কিন্তু আজকের বর্তমান বাস্তবতায় এসে দাঁড়িয়ে তারা অভিযোগ করছেন, তাদের রাজনৈতিক সহকর্মীদের দ্বারাই হেনস্থার শিকার হচ্ছেন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এমন সব অভিযোগ করে তারা নিজেদেরকে গুটিয়ে নিচ্ছেন সুতরাং এটাই প্রমাণিত হয় যে, মানুষের তৈরি ব্যবস্থা নারীদেরকে স্বাধীনতা ও মর্যাদা দিতে পারবে না।

হেযবুত তওহীদ গাইবান্ধা জেলা নারী নেত্রী রহিমা বেগমের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী এই আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচকের বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নারী বিভাগের যুগ্ম সম্পাদক আয়েশা সিদ্দিকা।

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে আইশা সিদ্দিকা বলেন, আজ সমাজের সর্বত্র চলছে অন্যায়, অশান্তি, হানাহানি ও রক্তপাত। এর মধ্যে নারীদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। নারী মুক্তির জন্য দেশে শত শত বছর ধরে নানা সভা-সেমিনার ও আইন প্রণয়ন করা হলেও প্রকৃত মুক্তি তারা পায়নি। তাই একমাত্র তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থাই পারে নারীদের গৌরবময় অধিকার ফিরিয়ে দিতে। সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের নারী বিভাগ।

এসময় তিনি আরও বলেন, শতাব্দীর পর শতাব্দী পশ্চিমা পরাশক্তিদের চাপিয়ে দেওয়া মতবাদ দিয়ে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে। এই নিয়ম-নীতির অধীনে থেকে কোনো অবস্থাতেই শুধু নারী নয়, দেশের সামগ্রিক মুক্তি সম্ভব নয়। এ সভ্যতায় নারীদেরকে যেভাবে ভোগ্যপণ্যে পরিণত করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। একমাত্র তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থাই পারে নারীদের প্রকৃত সম্মান ও অধিকার নিশ্চিত করতে। সে লক্ষ্যেই দেশব্যাপী হেযবুত তওহীদের নারী বিভাগ দুর্বার গতিতে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, হেযবুত তওহীদের এমামের আহ্বানে তওহীদভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করলেই কেবল মুক্তি মিলবে সমস্ত অন্যায় ও অশান্তি থেকে। একই সঙ্গে নারীরাও ফিরে পাবে তাদের প্রাপ্য অধিকার। তাই সকল প্রকার তন্ত্র-মন্ত্র ভুলে উপস্থিত সবাইকে আল্লাহর বিধানের ওপর হেযবুত তওহীদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- সংগঠনটির রংপুর বিভাগীয় সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস শামীম, গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি জাহিদ হাসান মুকুল, সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় নারী নেত্রী তাসলিমা ইসলাম, রংপুর বিভাগীয় নারী নেত্রী উম্মে হানি ইসলাম, বিভাগীয় সহকারী নারী নেত্রী বেবি আক্তার, গাইবান্ধা জেলা সহকারী নারী নেত্রী রুবিনা আক্তারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে হেযবুত তওহীদের প্রস্তাবনার সাথে একমত পোষণ করে বক্তব্য দেন, গাইবান্ধা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আনজুয়ারা বেগম, মাহফুজা খান মিতা, গাইবান্ধা জেলা নারী উন্নয়ন সমঝোতা সংস্থার সম্পাদক বেগম রাবেয়া গিনিসহ স্থানীয় নারী নেতৃবৃন্দ।