Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

ইসলাম দুর্বোধ্য নাকি সহজ-সরল?


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

মোহাম্মদ আসাদ আলী
বর্তমানে লেখাপড়া না জানা সাধারণ একজন মানুষ যদি দ্বীনকে পুরোপুরি বুঝতে চায় তা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তেমন কোনো ইচ্ছা প্রকাশ করলে হয়ত আমাদের আলেমরা, মুফতি মাওলানারা রেগেই যাবেন। কারণ ইসলামের যে রূপরেখাটি তারা গত ১৩০০ বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে দাঁড় করিয়েছেন সেটাকে পূর্ণাঙ্গভাবে আয়ত্বে আনা দূরে থাক, ভাসাভাসাভাবে জানতে গেলেও জীবনের বড় একটি সময় মাদ্রাসায় লেখাপড়া করা ছাড়া উপায় নেই। মাদ্রাসায় লেখাপড়া না করেই, আরবি ভাষা, ব্যাকরণ, মাখরাজ ইত্যাদি না জেনেই, কোর’আন-হাদিসের উল্লেখযোগ্য অংশ মুখস্ত না করেই প্রচলিত এই ইসলামকে পূর্ণাঙ্গভাবে জানা অসম্ভব বলেই সাধারণ ধর্মভীরু মুসলমানরা এমনকি সাধারণ মাধ্যমে শিক্ষিত মুসলমানরাও ধারণা করে নেন যে, ‘ইসলাম তো অনেক জটিল বিষয়, আমাদের পক্ষে সেটা বোঝা সম্ভব নয়। যারা সারাজীবন ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা করেছে তারাই একমাত্র ইসলাম নিয়ে কথা বলার ও মতামত প্রদানের অধিকার রাখেন।’
এই ধারণা সমগ্র মুসলিম বিশ্বেই এমনভাবে প্রচলিত হয়ে গেছে যে, সাধারণ মানুষ এখন আর ধর্ম নিয়ে ভাবেন না, ভাবার প্রয়োজনীয়তাও বোধ করেন না। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, আলেম-ওলামারাও এ বিষয়টিকে এতই স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে নিয়েছেন যেন এটাই হবার কথা ছিল। তারা কোর’আন, হাদিস, তাফসির, ফিকাহ ঘেঁটে পা-িত্য অর্জন করবেন, নতুন নতুন মাসলা-মাসায়েল তৈরি করবেন, আর সাধারণ জনতা তাদের থেকে দ্বীনের মাসলা জেনে নিবেন- এটাই যেন ইসলামের নীতি। আসলেই কি তাই?
সমগ্র কোর’আন খুঁজলে একটি আয়াতও পাওয়া যাবে না যেখানে আল্লাহ কেবল একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষকে দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করতে বলেছেন, আর অন্যদেরকে চোখ-কান বুঁজে সেই শ্রেণির অনুসরণ করতে বলেছেন। একটি হুকুম, বিধানও খুঁজে পাওয়া যাবে না যেটাতে আল্লাহ ‘হে আলেমরা’ ‘হে মুফতিরা’ ‘হে ফকিহরা’ সম্বোধন করেছেন বরং আল্লাহ কোর’আনে যত হুকুম, বিধান দিয়েছেন তার পূর্বে সম্বোধন করেছেন ‘হে মোমেনরা’ অর্থাৎ সমগ্র জাতিকেই বোঝানো হয়েছে, যাদের মধ্যে আমরা ইতিহাসে পাই লেখাপড়া জানা লোক ছিল মাত্র চল্লিশ জন, অনেকে এক হাজারের বেশি যে সংখ্যা থাকতে পারে তাও জানতেন না। কিন্তু তার জন্য দ্বীন বুঝতে ও মানতে তাদের কারো কোনো অসুবিধা হয় নি, বিশেষ কোনো শ্রেণির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকারও দরকার হয় নি এটা ইতিহাস। এর কারণ আজ আমাদের কাছে ইসলামকে যেভাবে জটিল ও দুর্বোধ্যভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে দ্বীন এমন জটিল ও দুর্বোধ্য ছিল না।
একটি জাতির মধ্যে চালাক-বোকা, মুর্খ-জ্ঞানী সব ধরনের মানুষ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সবার বুদ্ধিমত্তা সমান হবে না। কিন্তু আল্লাহর দেওয়া দ্বীন তো সবার জন্য প্রযোজ্য, তাই নয় কি? দ্বীন যদি এমন দুর্বোধ্য হয় যে সমাজের একটি বিশেষ অংশ সেটা বুঝতে পারল কিন্তু অন্যরা প্রখর বুদ্ধিমত্তার অধিকারী না হবার কারণে বুঝতে পারল না তাহলে আখেরাত ও জান্নাত-জাহান্নাম অযৌক্তিক হয়ে যায়। কারণ স্থূলবুদ্ধির ব্যক্তিটি তখন বলার সুযোগ পাবে- ‘আল্লাহ আমি তো এতটা মেধাবী ছিলাম না যে, তোমার দ্বীনকে বুঝতে পারি।’ সহায়সম্বলহীন মানুষটি বলার সুযোগ পাবে, ‘আল্লাহ আমি এতই হতদরিদ্র ছিলাম যে, রিজিক সন্ধান করতেই অধিকাংশ সময় কেটে গেছে, তোমার দ্বীনকে বোঝার জন্য মাদ্রাসা বা ভার্সিটিতে লেখাপড়া করার সুযোগ আমি পাই নি। তাহলে কোন দোষে আমাকে শাস্তি দিচ্ছ?’
কাজেই আল্লাহর প্রেরিত দ্বীন এমন হতে পারে না যেটা কেবল প্রখর বুদ্ধিমত্তার মানুষরা বুঝবে আর অন্যরা বুঝবে না। এমনও হতে পারে না যেটা বোঝার জন্য জীবনের বড় একটি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, অন্য কোনো মাধ্যমে ব্যয় করতে হয়। ইসলাম যে তেমনটা নয় তার সাক্ষ্য আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন। সুরা কামারে অন্তত চারটি জায়গায় তিনি বলেছেন আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। এবং আল্লাহর রসুল বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই দীন হচ্ছে সহজ-সরল’’ (আহমাদ, নাসাই ও ইবনে মাজাহ)। মুয়াজ ও আবু মুসাকে (রা.) ইয়ামানে প্রেরণের প্রাক্কালেও আমরা রসুলকে ঐ সহজ-সরলতার কথাই বলতে শুনি, ‘তোমরা জনগণের কাছে ধর্মীয় বিষয়গুলো সহজ করে তুলে ধরো, কঠিনরূপে নয়।’ প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সহজ-সরল ইসলামটা তাহলে কী যেটা সবধরনের বুদ্ধিমত্তার মানুষ সহজেই বুঝে যাবে?
এর উত্তর পেতে আমাদেরকে দেখতে হবে নবী-রসুলরা যুগে যুগে বিভিন্ন ভাষাভাষী, বিভিন্ন ভৌগোলিক পরিবেশে বসবাসকারী, বিভিন্ন সমস্যা-জটিলতায় আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে কোন সাধারণ কথাটির দিকে আহ্বান করেছেন। আদম (আ.) থেকে শুরু করে শেষনবী (সা.) পর্যন্ত আল্লাহ যে জীবনবিধান মানুষের জন্য পাঠিয়েছেন, স্থান, কাল ভেদে সেগুলোর নিয়ম-কানুনের মধ্যে প্রভেদ থাকলেও সর্বক্ষণ ভিত্তি থেকেছে একটি মাত্র। সেটা হচ্ছে তওহীদ, একমাত্র প্রভু, একমাত্র বিধাতা (বিধানদাতা) আল্লাহ, যার আদেশ নির্দেশ, আইন-কানুন ছাড়া অন্য কারো আদেশ, নির্দেশ, আইন-কানুন কিছুই না মানা। একেই আল্লাহ কোর’আনে বলছেন দীনুল কাইয়্যেমা। আল্লাহ মানুষের কাছে এইটুকুই মাত্র চান। কারণ তিনি জানেন যে, মানুষ যদি সমষ্টিগতভাবে তিনি ছাড়া অন্য কাউকে হুকুমদাতা না মানে, শুধু তারই আইন-কানুন মানে তবে শয়তান তার ঘোষিত উদ্দেশ্য অর্থাৎ মানুষকে দিয়ে অশান্তি, অন্যায় আর রক্তপাত অর্জনে ব্যর্থ হবে এবং মানুষ সুবিচারে, শান্তিতে (ইসলামে) পৃথিবীতে বসবাস করতে পারবে- অর্থাৎ আল্লাহ যা চান। কত সহজ! কাইয়্যেমা শব্দটা এসেছে কায়েম থেকে যার অর্থ চিরন্তন, শাশ্বত, সনাতন। আল্লাহ এই দীনুল কাইয়্যেমার কথা বলে বলছেন- ‘এর বেশি তো আমি আদেশ করিনি (বাইয়্যিনাহ: ৫)।’ ‘এর বেশী তো আমি আদেশ করিনি’ তিনি বলছেন এই জন্য যে, তিনি জানেন যে, ঐটুকু করলেই অর্থাৎ তার বিধান ছাড়া অন্য কোন বিধান মানুষ না মানলেই মানব জাতির মধ্যে পূর্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এই সামান্য দাবীটুকুই তিনি মানুষের কাছে আদম থেকে আজ পর্যন্ত করে আসছেন। পূর্ববর্তী বিকৃত জীবন-ব্যবস্থাগুলিতেও আল্লাহর দাবী ছিল ঐ সহজ সরল দাবি- দীনুল কাইয়্যেমা, তওহীদ। ভারতীয় ধর্মের অনুসারীদের তারা কোন ধর্মে বিশ্বাসী জিজ্ঞাসা করলে তার জবাব দেবেন সনাতন ধর্ম। সনাতন এবং কাইয়্যেমা একার্থবোধক- যা চিরদিন প্রবাহমান, চিরন্তন ও শাশ্বত, এবং তা ঐ তওহীদ। এর গুরুত্ব এত বেশি যে একে আল্লাহ আমাদের জন্য শুধু প্রতি সালাতে নয় প্রতি রাকাতে অবশ্য করে দিয়েছেন সুরা ফাতেহার মধ্যে। “আমাদের সেরাতুল মুস্তাকীমে চালাও” মোস্তাকীম অর্থ সহজ, সরল ও শাশ্বত।
আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা নেই, যে ব্যাপারে আল্লাহর কোনো কথা আছে সেখানে অন্য কারোটা মানব না- ব্যস, এই কথাটি বোঝার জন্য কি মুফতি-মাওলানা হতে হয়? যে কেউ যে কোনো বুদ্ধিমত্তার মানুষই এই সাধারণ অথচ মহাগুরুত্বপূর্ণ কথাটি বুঝতে সক্ষম এবং বুঝতে সক্ষম বলেই আল্লাহ এখানে কোনো ছাড় রাখেন নি, এই সাক্ষ্য না দিলে তার ব্যক্তিজীবনের কোনো আমলই আল্লাহ গ্রহণ করবেন না, অন্যদিকে কেবল এই সাক্ষ্যটুকু দিলেই তার ব্যক্তিজীবনের যত গুনাহই থাকুক তাকে জান্নাতে দাখিল করা হবে যে কথা আল্লাহও বলেছেন, আল্লাহর রসুলও বলেছেন। কোর’আন-হাদিসের সর্বত্র এই প্রতিশ্রুতি ছড়িয়ে আছে।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...