মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া জ্ঞাপন করি, যিনি আজ আমাদের মেয়েদের এত সুন্দর একটি জামায়াতে অংশগ্রহণের তাওফিক দান করেছেন। এমনিতেই আমাদের জাতীয় ও অর্থনৈতিক বহু কাজে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ সীমিত। নানা ধরনের কথা বলে আমাদের অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া হয়। আমরা হেযবুত তাওহীদ আন্দোলনকে ধন্যবাদ জানাই -নারীদের এমন একটি সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
নোয়াখালীর চাষীরহাটে হেযবুত তওহীদের বৃহত্তম ঈদ জামাতে নামাজ আদায় শেষে এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন হেযবুত তওহীদের কেন্দ্রীয় নারী বিষয়ক সম্পাদক রুফায়দাহ পন্নী।
মেয়েরা ঈদের জামাতে বা জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করলে, সন্তানদের নিয়েও সেখানে গেলে, তাদের একটি সামাজিক সংযোগ গড়ে ওঠে। তারা দীনের কথা শুনতে পারে, সাহস ও সংগ্রামী চরিত্র গঠিত হয়। কিন্তু সাধারণত আমরা দেখি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মুসলিম নারীরা সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত। -মন্তব্য করেন তিনি।
‘হজের ময়দানে লক্ষ লক্ষ পুরুষ ও নারী আরবের রুক্ষ মরুভূমি, প্রখর রোদ ও উত্তাপ সহ্য করে একসাথে সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ান, কাবা তাওয়াফ করেন, আরাফাতের ময়দানে একত্রে অবস্থান করেন -সেখানে কেউ আপত্তি করেন না। অথচ আমাদের দেশে ঈদের জামাত ও জুমার নামাজে নারীদের অংশগ্রহণে আপত্তি করা হয়।’
রুফায়দাহ পন্নী বলেন, রাসুল (সা.)-এর যুগের ইতিহাসে দেখা যায়, নারীরা এই স্বাধীনতা পেয়েছেন। হেযবুত তওহীদ সেই স্বাধীনতার ব্যবস্থা করেছে। এজন্য এই আন্দোলনকে বহু হয়রানি, মিথ্যা অপবাদ ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে।
হেযবুত তওহীদের এই নারী নেত্রী বলেন, আমি মনে করি -এটি নারীদের অধিকার, কারও করুণা নয়। আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের অধিকার দিয়েছেন। অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম, লড়াই ও প্রতিবাদ করতে হয়। এতে কোরবানি ও ত্যাগের প্রশ্ন আসে। প্রতিটি আন্দোলনে এটি প্রমাণিত হয়েছে। ২৪-এর আন্দোলনেও প্রমাণিত হয়েছে -অধিকার আদায় কোরবানি ছাড়া সম্ভব নয়।
নারীদেরকে এই অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নামতে হয়েছে। হ্যাঁ, যেকোনো অধিকার অর্জনের জন্য একটি সঠিক কর্মসূচি লাগে। আনন্দের বিষয়, আমরা সেই কর্মসূচি পেয়েছি। প্রয়োজন হয় সঠিক নেতৃত্বের -আমরা সেটিও পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ।
লক্ষ্য অর্জনের জন্য কারও জীবন দিতে হতে পারে, রক্ত দিতে হতে পারে; তবেই চূড়ান্তভাবে নারীরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে ইনশাআল্লাহ। এই অধিকার রক্ষার জন্য যেমন আল্লাহর রাসুলের (সা.) নারী সাহাবীরা লড়াই করেছেন, আজ হেযবুত তওহীদের নারীরাও সেই পথেই লড়াই করছে -বলেন তিনি।
ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারা নারীদের অধিকার অর্জনের একটি ধাপ বা ধাপের সূচনা বলে মনে করেন রুফায়দাহ পন্নী।
তিনি বলেন, আমরা সেদিন বুঝতে পারব যে আমরা সফল হয়েছি, যেদিন একটি নারী একা রাতের অন্ধকারে হাজার মাইল পথ অতিক্রম করবে, কিন্তু কেউ তার প্রতি অশ্লীলতা, ধর্ষণ, ইভটিজিং বা নির্যাতন করার সাহস করবে না। নারীরা নিশ্চিন্তে, নির্ভয়ে জাতীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সব কর্মকাণ্ডে মর্যাদার সঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং তাদের জ্ঞান, যোগ্যতা ও শক্তি সমাজে স্বীকৃতি পাবে।
সেদিন হবে এক নবজাগরণ -এক বিপ্লব। সেই বিপ্লবের প্রথম ধাপ হলো -হেযবুত তওহীদের নারীদের ঈদের জামাতে অংশগ্রহণের স্বাধীনতা।