হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যের আহ্বান

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি

                                                                                    ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যের আহ্বান

 সম্মানীত সুধী,

আজ ভারত উপমহাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক তথা সামগ্রিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলে আমরা দেখতে পাই মানুষে মানুষে দ্বন্দ্ব -সংঘাত, অবিশ্বাস, হিংসা-বিদ্বেষ, যুদ্ধ-রক্তপাত, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক হানাহানি, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি চরম আকার ধারণ করেছে। দুর্বলের উপর চলছে সবলের অত্যাচার, দরিদ্রের উপর চলছে ধনীর বঞ্চনা, শাসিতের উপর চলছে শাসকের জুলুম, ন্যায়ের উপর চলছে অন্যায়ের বিজয় এবং সরলের উপর চলছে ধূর্তের প্রতারণা। এক কথায় মানবাধিকারের লঙ্ঘন চলছে পৃথিবীব্যাপী। এই অন্যায়-অশান্তির বিভীষিকা থেকে মুক্তির উপায় খুঁজে না পেয়ে চিন্তাশীল-বিবেকবান মানুষ আজ দিশেহারা!

অন্যায়-অবিচার নির্মূলের জন্য প্রচেষ্টার অন্ত নেই। আন্তর্জাতিকভাবে, জাতীয়ভাবে ও সামাজিকভাবে হাজার হাজার সংঘ, সংগঠন, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে চলেছে। ধর্মীয় অঙ্গনে ওয়াজ মাহফিল, সভা-সমাবেশ, ওরস, মিলাদ, পূজা, প্রার্থনা ইত্যাদিও কম হচ্ছে না। কিন্তু একটি দিনের জন্যও কি অন্যায়-অপরাধ থেমে আছে? এতটুকু কি কমেছে? কমেনি। অবশেষে বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রগুলো শক্তি প্রয়োগের উপর জোর দিয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্তিশালী করার পথ বেছে নিয়েছে, নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রয়োগ করা শুরু করেছে, অত্যাধুনিক গোলা বারুদ ও মারণাস্ত্র মজুদ করেছে, কঠোর থেকে কঠোরতর আইন প্রণয়ন করেছে। অন্যায় অপরাধ নির্মূলের জন্য রাষ্ট্রগুলো কখনও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, কখনও মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, কখনও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, কখনও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তা সত্তে¡ও দেখা মেলেনি শান্তির শ্বেত কপোতের। আপনি যে কোনো পরিসংখ্যান খুলে দেখুন, দেখবেন আজ থেকে ১০০ বছর আগে যে পরিমাণ অন্যায়, অবিচার, হানাহানি, রক্তপাত, শোষণ, বঞ্চনা, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি হত, এখন তার পরিমাণ বহুগুণে বেড়ে গেছে।

অশান্তির এই দাবানল থেকে বাঁচতে, মানসিক ও আত্মিক শান্তি খুঁজে পেতে মানুষ গির্জায় গিয়ে প্রার্থনা করছে, মন্দিরে গিয়ে পূজা করছে, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ছে! ঘরে ঘরে পাঠ করছে কোর’আন, গীতা, বাইবেল, ত্রিপিটক! ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে যাচ্ছে বিভিন্ন ধর্মের আলেম, পুরোহিত, পণ্ডিত,যাজক শ্রেণির দুয়ারে। আশা করছে এই ধর্মগুরুদের সান্নিধ্যেই মিলবে ঈশ্বর, ভগবান, আল্লাহকে পাওয়ার পথ, দুঃখ মোচনের পথ। ধর্মগুরুতরা একেক জন একেক দিকে পথনির্দেশ (Direction) দিচ্ছে। এক শ্রেণির ধর্মগুরু জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাসকে নিজেদের রুটি-রুজির মাধ্যম বানিয়ে নিয়েছে। কোনো জীবনব্যবস্থা, কোনো আইন-বিধান, কোনো পূজা-প্রার্থনা, কোনো আশ্বাস বিশ্বাস মানুষকে কাক্সিক্ষত শান্তি এনে দিতে পারছে না। এক কথায় আদর্শিকভাবে ও আত্মিকভাবে মানুষ আজ দেউলিয়া। যেন এক হালভাঙা নৌকা তীরহারা সাগরে ভেসে চলেছে ঢেউয়ের তালে তালে। যেদিকে চোখ যায় শুধুই ধ্বংসের হাতছানি! মানুষ এখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়ে আছে। এভাবেই কি ধ্বংস হয়ে যাবে মানবজাতি?

মুক্তির পথ পাওয়া গেছে

আল্লাহর অশেষ করুণায় মানবজাতির এই শোচনীয় পরিণতি এড়ানোর উপায়, সঠিক পথ হেযবুত তওহীদ পেয়েছে। সেই পথ পুরো মানবজাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার পথ, মানবসমাজে বিরাজিত সকল বিভাজনের দেয়াল ভেঙে সকল মানুষকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করার পথ। আমরা যদি সে পথে চলতে পারি, তাহলে শুধু আমাদের দেশ নয়, পুরো দুনিয়াটাই আবারও ন্যায়, সুবিচার ও শান্তিতে ভরপুর হয়ে উঠবে ইনশাল্লাহ। সেই পথের পরিচয় পেতে আমাদেরকে শুরুতেই জানতে হবে আমরা মানবজাতি কোথা থেকে এলাম? কী আমাদের পরিচয়?

সকল মানুষ এক পিতা মাতার সন্তান, এক স্রষ্টার সৃষ্টি।

পৃথিবীর প্রধান প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলো যেমন- কোর’আন, পুরান, বেদ, বাইবেল ইত্যাদির ভাষ্যমতে মানুষ আদিতে ছিল একজাতি এবং এক পিতা-মাতার সন্তান। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে সেই আদি পিতা-মাতার নামেও যথেষ্ট মিল পাওয়া যায়। কোথাও আদম হাওয়া, কোথাও অ্যাডাম ইভ, কোথাও মনু-শতরূপা ইত্যাদি। মানুষ শব্দটিও এসেছে সনাতন ধর্মবিশ্বাসমতে মানুষের আদি পিতা ‘মনু’র নাম অনুযায়ী। মনুর সন্তানরা মনুষ্য, মানুষ। তাহলে দেখা যাচ্ছে মানবজাতি আজকে যদিও ভৌগোলিক ও আবহাওয়া ভেদে সাদা-কালো, লম্বা-খাটো, ইত্যাদি বৈচিত্র্য ধারণ করেছে এবং কৃত্রিমভাবে হাজারও জাত, ধর্ম, বর্ণ, রাষ্ট্র ইত্যাদির প্রাচীর তুলে নিজেরা খন্ড-বিখন্ড হয়েছে, কিন্তু আদিতে পুরো মানবজাতি ছিল এক জাতি, এক পিতা-মাতা আদম-হাওয়ারই সন্তান। অর্থাৎ বাঙালি, ভারতীয়, জাপানি, আমেরিকান, আরবীয়, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান- এরা একে অপরের শত্রু নয়, একে অপরের ভাই।

এর চেয়ে বড় পরিচয় তারা এক স্রষ্টার সৃষ্টি। পবিত্র কোর’আনে বর্ণিত হয়েছে- আল্লাহ মানুষের আদি পিতা আদমকে তৈরির পর তাঁর মধ্যে নিজের রূহ ফুঁকে দিয়েছিলেন (আল কোর’আন, সুরা হিজর ২৯)। কাজেই আদম সন্তানরা কেবল এক পিতা-মাতার সন্তানই নয়, তাদের সবার মাঝে একই ¯স্রষ্টার রূহ (পরমাত্মার অংশ) বিরাজ করছে। তাই কোনো মানুষই ক্ষুদ্র নয়, অবহেলার যোগ্য নয়, হোক সে চন্ডাল বা ব্রাহ্মণের সন্তান, হোক সে মেথর বা মন্ত্রীর সন্তান, হোক সে হিন্দু বা মুসলমানের সন্তান। বরং তাদের আসল পরিচয় হচ্ছে তারা আল্লাহর নিজ হাতে তৈরি করা ও আল্লাহর রূহধারী মানুষ। মানুষ হিসেবে সকলেই এক। তাদের মধ্যে মর্যাদার পার্থক্য করা হবে কেবল তাদের সৎ বা অসৎ কাজের দ্বারা। আল্লাহ বলেন, ‘হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক মুত্তাকি অর্থাৎ ন্যায়-অন্যায় মেনে পথ চলে (আল কোর’আন, সুরা হুজরাত ১৩)।

দুর্ভাগ্যজনক সত্য এই যে, মানুষের এই আদি পরিচয় ভুলিয়ে দিতে পেরেছে ইবলিস (শয়তান)। ফলে এক ¯স্রষ্টার সৃষ্টি ও তাঁর রূহধারী, একই পিতার সন্তান এই মানবজাতি নিজেরাই নিজেদের ধ্বংসের উল্লাসে এমনভাবে মেতে উঠেছে যে, পৃথিবীর প্রচলিত কোনো সংঘ, কোনো নীতি, কোনো উপদেশ, কোনো আইন, কোনো ভয় আর মানুষকে অন্যায়-অবিচার, হানাহানি, যুদ্ধ থেকে ফেরাতে পারছে না। তাদের সম্মিলিত কাজের ফলে এমন পরিস্থিতি অনিবার্য হয়ে উঠছে যে যুদ্ধ-মহাযুদ্ধ সংঘটিত হয়েই যাচ্ছে। এর পরিণাম ভোগ করতে হচ্ছে গোট পৃথিবীর অধিবাসীদেরকে। গোটা মানবজাতি এখন ধ্বংসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে। এমন অবস্থায় আমাদের করণীয় কী?

শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য করণীয়

শান্তিকামী মানুষদেরকে বুঝতে হবে আমরা এমনি এমনিই দুনিয়াতে আসিনি, আমাদের একজন স্রষ্টা আছেন। যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনিই সবচেয়ে ভালো জানবেন আমরা কীভাবে কোন পথে চললে শান্তিতে থাকতে পারব, কোন জীবনবিধান অনুসরণ করলে আমাদের মধ্যে অন্যায়-অবিচার ও যুদ্ধ-রক্তপাত হবে না। এই অকাট্য যুক্তিটিই আল্লাহ কোর’আনে প্রদর্শন করেছেন যে, যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানবেন না? তিনি সূক্ষজ্ঞানী, সম্যক জ্ঞাত (আল কোর’আন, সুরা মুলক ১৪)। সুতরাং, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বপ্রথম আমাদের দেখা উচিত ¯স্রষ্টা আমাদের জন্য কোনো পথ-নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা।

হ্যাঁ, দিয়েছেন এবং দিয়েছেন মানবজাতির ইতিহাস জুড়েই। প্রতি জনপদে, প্রতি যুগে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবী-রসুল পাঠিয়ে মানবজাতিকে সঠিক পথের সন্ধান (হেদায়াহ) দিয়েছেন এবং তারা নিজ নিজ জাতির মধ্যে আল্লাহর দেওয়া সুস্পষ্ট পথ-নির্দেশনা ও জীবনবিধান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শান্তি স্থাপন করেছেন। নবী-রসুলদের আনিত সেই পথ-নির্দেশনা বা হেদায়াহ (Right direction) সর্বযুগে একটাই ছিল, আর তাহলো- আল্লাহকে একমাত্র হুকুমদাতা বিধানদাতা হিসেবে গ্রহণ করা। আমাদের ভারতবর্ষেও প্রাচীনকালে বহু নবী, রসুল ও অবতার এসেছেন, যাদের অনেকের ইতিহাস কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে, অনেকের ইতিহাস অতিরঞ্জিত বা বিকৃত হয়েছে। কিন্তু তারাও ভারতবর্ষের মানুষকে এক ¯স্রষ্টার বিধানের দিকে ডেকেছেন। আল্লাহ বলেন, আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে এ মর্মে রসুল পাঠিয়েছি যে তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো ও অন্য হুকুমদাতাদের বর্জন করো (সুরা নাহল ৩৬)। প্রত্যেক জাতির জন্যই সতর্ককারী আছে।’ (সুরা রাদ, আয়াত : ৭)।

যুগে যুগে যখনই মানুষ ¯স্রষ্টার দেওয়া বিধান নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে বা স্বার্থ হাসিল করতে গিয়ে বিকৃত করে ফেলেছে, ¯স্রষ্টার হুকুম বাদ দিয়ে নিজেদের মনগড়া হুকুম-বিধানকে অনুসরণ করা আরম্ভ করেছে, অনিবার্য ফলস্বরূপ সমাজ অন্যায়-অবিচার ও যুদ্ধ-রক্তপাতে ডুবে গেছে। আর তখনই নবী-রসুল তথা অবতারগণ এসে মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ¯স্রষ্টার বিধানের কথা। তারা পুনরায় মানুষকে একটি চুক্তির মধ্যে আনার চেষ্টা করেছেন যে, মানুষ একমাত্র আল্লাহর (সৃষ্টিকর্তার) হুকুম ছাড়া কারো হুকুম বিধান মানবে না, তার ফলে দুনিয়াতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং পরকালে আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন। আরবি ভাষায় এটাকেই বলে লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ।

বর্তমানে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বাক্যটিকে অনেকে সাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যা দেন। যেহেতু এটি আরবি ভাষার বাক্য, তাই অনেকে মনে করেন এটি শুধু ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের জন্য। প্রকৃতপক্ষে এই ঘোষণা কোনো অঞ্চল, ভাষা ইত্যাদির গন্ডিতে আবদ্ধ নয়, এটি সকল ধর্মের, বর্ণের, গোত্রের, ভাষার, এলাকার মানুষের জন্য ¯স্রষ্টার পক্ষ থেকে মুক্তির সনদ, শান্তি প্রতিষ্ঠার মূলমন্ত্র! বাংলায় এই ঘোষণার অর্থ দাঁড়ায়- আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো হুকুম-বিধান মানবো না। অর্থাৎ আল্লাহর হুকুম পরিপন্থী মানুষের নিজের তৈরি সকল তন্ত্র-মন্ত্র, বাদ-মতবাদ, বিধি-বিধান প্রত্যাখ্যান করে ¯স্রষ্টার দেওয়া জীবনবিধান অনুসরণের অঙ্গীকার করা। ¯স্রষ্টা কি কেবল হিন্দুর? কেবল মুসলমানের? কেবল বৌদ্ধর? কেবল খ্রিস্টানের? না, তিনি সব মানুষের ¯স্রষ্টা। তিনি সকল বর্ণবাদের ঊর্ধ্বে। তিনি ন্যায়বিচারক, তিনি হকের প্রতীক, তিনি চুড়ান্ত সত্য। কাজেই সব মানুষের কাছেই তাঁর দাবি- একমাত্র তাঁকেই হুকুমদাতা, বিধানদাতা হিসেবে গ্রহণ করা এবং তাঁর নিঃশর্ত আনুগত্য করা। শেষ পথপ্রদর্শক হযরত মোহাম্মদ (সা.) আরব সমাজে এসেছেন। তিনি আরবি ভাষায় কথা বলতেন। এজন্যই তিনি আরবিতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলেছেন। কিন্তু তিনি তো কেবল আরববাসীর জন্য আসেননি, তিনি এসেছেন সমগ্র মানবজাতির জন্য। তাই ¯স্রষ্টা আল্লাহকে একমাত্র হুকুমদাতা হিসাবে মেনে নেওয়ার এ দাবি সার্বজনীন। এই একটি ঘোষণাই যাবতীয় অশান্তি থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতে পারে। আমরা যে ধর্মেরই হই না কেন, যে বর্ণেরই হই না কেন, আমাদেরকে ¯স্রষ্টার হুকুমের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

কল্পনা নয়- ইতিহাস

যুগে যুগে ¯স্রষ্টার পক্ষ থেকে সঠিক পথ-নির্দেশনা ও জীবনবিধান নিয়ে অসংখ্য নবী-রসুল পৃথিবীতে এসেছেন। নবী-রসুল আগমনের এই ধারাবাহিকতায় ১৪০০ বছর আগে শেষনবী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন আখেরী নবী, বিশ্বনবী, হযরত মোহাম্মদ (সা.)। তিনি যে সমাজে এসেছিলেন তা ছিল জাহেলি সমাজ। জাহেলিয়াত একটি আরবি শব্দ। জাহেলিয়াত শব্দের অর্থ হচ্ছে অজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। আইয়ামে জাহিলিয়াতের আরব সমাজ ছিল কূপমন্ডূকতা, বর্বরতা, অশিক্ষা, কুশিক্ষা আর কুসংস্কারে পরিপূর্ণ। সমাজের প্রতিটা স্তরে, রন্ধ্রে-রন্ধ্রে অন্যায়, অবিচার, নিরাপত্তাহীনতা, দ্বন্দ্ব, সংঘাত প্রবেশ করেছিল। নারীরা মানবেতর জীবনযাপন করত। কন্যাশিশুর জন্মকে মনে করা হত অকল্যাণকর। সারাজীবন নারীরা ভোগ্যপণ্য বা বিনোদনের সামগ্রী হিসেবে বেঁচে থাকত। ন্যায়ের শাসন বলতে কিছু ছিল না, জোর-জবরদস্তি ও পেশীশক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হত ন্যায়-অন্যায়। সর্বদা যুদ্ধ-সংঘাত লেগেই থাকত। শিক্ষা নেই, দীক্ষা নেই, পেটে খাবার নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে অসভ্য, বর্বর, মূর্খ ও কুসংস্কারে জর্জরিত একটি সমাজ ছিল আরব সমাজ। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, অমন একটি সম্ভাবনাহীন সমাজকে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে সম্পূর্ণভাবে পাল্টে দিয়েছিলেন আখেরি নবী মোহাম্মদ (সা.)। কিছুদিন আগেও যে সমাজটা ছিল অন্যায়-অবিচারে পরিপূর্ণ, রসুলাল্লাহর আনীত আদর্শের ছোঁয়ায় সেই সমাজটিই মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এমন ন্যায়, সুবিচার ও শান্তিতে ভরে উঠল যা আজও অবিশ্বাস্য। অজ্ঞতায় পরিপূর্ণ মানুষগুলোই অল্প সময়ের মধ্যে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে, শিক্ষা-দীক্ষায় শিক্ষকের আসনে আসীন হলো। যে সমাজের মানুষগুলো একসময় ছিল বর্বরতায় আর অজ্ঞতায় পূর্ণ সেই মানুষগুলোই রসুলাল্লাহর (সা.) আদর্শে বলীয়ান হয়ে সোনার মানুষে পরিণত হল। সমাজের শান্তি, সুবিচার, নিরাপত্তা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেল যে, আদালতে মাসের পর মাস অপরাধ সংক্রান্ত মামলা আসা বন্ধ হয়ে গেল। সোনার দোকান খোলা রেখে মানুষ  মসজিদে চলে যেত, কেউ এসে চুরি করে নিত না। মানুষ দরজা খুলে ঘুমাত। মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, মানুষ উটের পিঠে খাবার বোঝাই করে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াত, কিন্তু সেই খাবার গ্রহণ করার মতো মানুষ পাওয়া যেত না। সমাজে এমন নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হলো একা একটি সুন্দরী যুবতী মেয়ে রাতের অন্ধকারে শত শত মাইল পথ স্বর্ণালঙ্কার পরিহিত অবস্থায় হেঁটে যেতে পারত কিন্তু তার মনে আল্লাহ ও বন্য জন্তুর ভয় ছাড়া আর কোন ভয় কাজ করত না। গল্পের মত শোনালেও এটাই ইতিহাস। এমনই অকল্পনীয় সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি আনয়ন করেছিলেন আল্লাহর রসুল। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, এমন স্বর্ণযুগ, এমন অকল্পনীয় সুখ-সমৃদ্ধি, সমাজের এমন পরিবর্তন আল্লাহর শেষ নবী হুজুরে পাক (সা.) কীভাবে ঘটালেন?

কীভাবে ঘটল পরিবর্তন?

একটি মহাবিপ্লবের মাধ্যমে, রেনেসাঁর মাধ্যমে তিনি আইয়ামে জাহিলিয়াতের সমাজকে পরিবর্তন করেন, যার মূলমন্ত্র ছিল- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ! অর্থাৎ তিনি আরবদেরকে শুধু একটি কথার উপর ঐক্যবদ্ধ করেছেন যে, মানুষের মনগড়া জীবনবিধান বাদ দিয়ে আল্লাহর দেওয়া জীবনবিধান মানব। তবে তা মোটেও সহজ কাজ ছিল না। কোনো যুগেই জীবনব্যবস্থা এমনি এমনি পরিবর্তন হয়নি। বহু ঘাত-প্রতিঘাত, কোরবানি, ত্যাগ-তিতিক্ষা, জীবনের বলিদান, রক্ত, অশ্রু, স্বজন হারানোর বেদনা, ক্ষুধা, দারিদ্র, খেয়ে না খেয়ে, গাছের লতাপাতা খেয়ে, শত্রু আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হয়ে, শহীদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে, ধর্মব্যবসায়ী শ্রেণীর অকথ্য গালিগালাজ, অপমান, অপদস্থ, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে আইয়ামে জাহেলিয়াতের সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে।

সেরা জাতি গোলাম হলো

মহানবী মোহাম্মদ (সা.) পুরো আরব উপদ্বীপে সত্যদীন প্রতিষ্ঠার পর আল্লাহর কাছে চলে গেলেন। তাঁর পরলোকগমনের পর সত্যদীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম কিন্তু বন্ধ হয়ে গেল না। কারণ, তখনও তাঁর সাহাবীরা জীবিত আছেন, তাঁর নিজ হাতে তৈরি করা উম্মাহ ভালোভাবেই মনে রেখেছে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা। কাজেই রসুলাল্লাহর পরলোকগমনের সঙ্গে সঙ্গে পুরো উম্মাহ একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ল শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজে। নিজেদের পুত্র-পরিজন, জীবন, সম্পদ উৎসর্গ করে তারা মাতৃভ‚মি থেকে বেরিয়ে পড়লেন। সংগ্রাম করতে করতে রসুলাল্লাহর সাহাবীরাও দুনিয়া থেকে চলে গেলেন। তাদের সংগ্রামের ফলে অর্ধদুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হলো অনাবিল শান্তি।

কিন্তু পরবর্তী কয়েক প্রজন্মকালে জাতি তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পাল্টে যেতে শুরু করল। তারা ভুলে গেল এই উম্মাহর স্রষ্টামহানবী নিজেও সারাজীবন শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে গেছেন এবং তাঁর সাহাবীরাও আমৃত্যু শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। শান্তি প্রতিষ্ঠার এই সংগ্রামের নির্দেশ দিয়েই আল্লাহ ক্ষান্ত হননি, আল্লাহ কোর’আনে বলেছেন, যদি তোমরা এই সংগ্রামে বের না হও তাহলে তোমাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তি দিব (সুরা তওবা ৩৯)। এসবকিছু ভুলে পরবর্তী উম্মাহ ক্রমশই দীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বাদ দিয়ে দীনের অতি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ আরম্ভ করল। তাদের অতি বিশ্লেষণের ফলে একদিকে সহজ-সরল ইসলাম জটিল ও দুর্বোধ্য হয়ে উঠতে লাগলো, জাতিবিনাশী মতভেদ তৈরি হতে লাগলো। অপরদিকে পারস্য থেকে ভারসাম্যহীন মারেফত, বিকৃত সুফিবাদ, সন্ন্যাসবাদ বা বৈরাগ্যবাদ জাতির মধ্যে প্রবেশ করে তাদেরকে অন্তমুর্খী, স্থবির, গতিহীন করে ফেলল। আর জাতির নেতৃত্ব অর্থাৎ সুলতান ও আমির-ওমরাহগণ শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ছেড়ে দিয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক বনে গিয়ে ভোগবিলাসে মত্ত হয়ে গেলেন। ঐক্যহীন, সংগ্রামহীন সেই জাতির পক্ষে আর একবিন্দুও শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করা সম্ভব হলো না, উপরন্তু তারা নিজেরাই বিভিন্ন জাতির আক্রমণে ঘায়েল হতে লাগলো। এক পর্যায়ে দাসত্ব বরণ করতে বাধ্য হল।

আমাদের ভারতবর্ষকে পরাজিত করল ব্রিটিশরা। তারা ভারতবাসীদের উপর কী নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে, কীভাবে আমাদের শোষণ করেছে সেটা কমবেশি সবার জানা। আমাদের গোলাভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ ছিল। আমাদের মসলিন রপ্তানি হতো সারাবিশ্বে, কৃষি, বাণিজ্য, শিল্প, প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলা ছিল আত্মনির্ভরশীল। আমাদের মাটি ছিল উর্বর, আমাদের দেশ ছিল সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা। সে সময় দেশের সম্পদ দেশেই থাকত। বিশেষ করে বঙ্গদেশে কোনো স্বর্ণখনি না-থাকলেও মহাসমৃদ্ধির জন্য এদেশ ‘সোনার বাংলা’ উপাধি পেয়েছিল। ভারতবর্ষ ছিল পৃথিবীর বৃহত্তম পর্যটন ভ‚মি, প্রকৃতির নিবিড় নৈসর্গিক সৌন্দর্য, প্রাকৃতিক সম্পদ ও বৈচিত্র্যের সম্ভার! এখানে পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র, নদ-নদী, মরুভ‚মি কী নেই? সকল জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মিলনস্থল ছিল ভারতবর্ষ। ভারতবর্ষের এমন প্রাচুর্যের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ব্রিটিশদের। তারা তুলাদন্ড হাতে বেনিয়ার বেশে ভারতবর্ষে ঢুকল। তারপর ছলে বলে কৌশলে রাজদন্ড ছিনিয়ে নিয়ে দুইশো বছর আমাদের শাসন করে ভারতবর্ষকে ভিক্ষুক বানাল। তাদের লুটপাটের ফলে দুর্ভিক্ষে মন্বন্তরেই কেবল তিন কোটি ভারতবাসী মৃত্যুবরণ করেছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তারা এদেশ থেকে চলে গেলেও তাদের জুলুম এখনও চলছে। কেননা তারা ভারতবর্ষ থেকে স্বশরীরে বিদায় নিলেও তাদের জীবনব্যবস্থা, রাজনৈতিক দর্শন ঠিকই আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছিল যা আরা আজও অন্ধভাবে মেনে চলছি। ফলাফলস্বরূপ আমরা আর কখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি নাই। তারা আসার পূর্বে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, সহিংসতা, অশান্তি ভারতবর্ষে ছিল না। হিন্দু-মুসলমানরা একই পুকুরে গোসল করত, একই নদীর মাছ খেত, একই গরুর দুধ খেত, তারা একসাথে ব্যবসা করত, এক বিদ্যালয়ে হিন্দু-মুসলমান পড়ালেখা করত। তাদের মধ্যে ছিল আত্মীয়তার সৌহার্দ্য। কিন্তু এই ব্রিটিশরা এসে আমাদেরকে আলাদা করে দেয়। তারা হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে শত্রæতার বীজ বপন করে দেয়। যা ¯স্রষ্টার নীতির সম্পূর্ণ বিপরীত, পরিপন্থী। স্রষ্টাচান তাঁর সৃষ্ট মানুষ যেন দুনিয়াতে একত্রে, মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে, সেখানে কোন অন্যায় হবে না, শোষণ-জুলুম হবে না। কিন্তু ব্রিটিশরা এই শান্তি, ঐক্য থাকতে দেয়নি। তারা ষড়যন্ত্রমূলক ডিভাইড এন্ড রুল (Divide and Rule) নীতি প্রয়োগ করে হিন্দু-মুসলমানদের ঐক্যে ভাঙন ধরিয়েছে। আমরা যখন হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা-শত্রুতা করেছি, তারা তখন নির্বিঘ্নে ভারতবর্ষকে শোষণ করেছে। আমাদের থেকে লুট করা সম্পদ নিয়ে তারা আজ প্রাচুর্যের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে আর আমরা হয়ে গিয়েছি নিঃস্ব, ভিক্ষুক। এখনও আমরা মৌলিক চাহিদাগুলো পুরণের জন্য দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছি।

কিন্তু পরিহাসের বিষয় হচ্ছে, আজও আমরা ভাগ্য পরিবর্তন করতে তাদের কাছেই যাই। তাদের দেওয়া তন্ত্র-মন্ত্র, জীবন-বিধান, আইন-কানুন দিয়েই আমাদের জীবন চলে। কিন্তু তাদের দেওয়া এসব তন্ত্র-মন্ত্র, বাদ-মতবাদ একদিনের জন্যও কি আমাদেরকে শান্তি দিতে পেরেছে? একদিনের জন্যও আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছে? ক্ষুধার যন্ত্রণা দূর করতে পেরেছে? নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছে? বরং বাস্তবতা হলো- ব্রিটিশদের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভের ৭৬ বছর পরও আমাদেরকে এখনও ভাতের জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে! কাজেই এই ব্যবস্থার বিকল্প ভাবতে হবে।

হেযবুত তওহীদ ফাউন্ডেশন: কী, কেন?

ধর্মের মাধ্যমে মানবজাতিকে এক জাতিতে পরিণত করার সুমহান লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে হেযবুত তওহীদ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। হেযবুত তওহীদ নামক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পন্নী পরিবারের সন্তান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। এই পন্নী পরিবারের পূর্বপুরুষ ছিলেন বাংলা বিহার উড়িষ্যার সুলতান দাউদ খান কররানি, যিনি ১৫৭৬ সনে রাজমহলের যুদ্ধে বাংলার স্বাধীনতার জন্য মোঘলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জীবন দিয়েছিলেন। কররানি বংশের রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ এখনও বাংলাদেশের টাঙ্গাইলে ও ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের রাজমহলে টিকে আছে। ভারতীয় উপমহাদেশের মহান সুফি সাধক বন্দে নেওয়াজ গেছুদারাজ মুহাম্মদ বিন ইউসুফ আল হোসাইনি (মৃত্যু ১৪২২ খ্রি.) পন্নী পরিবারেরই একজন মহিমান্বিত পূর্বপুরুষ। ভারতের কর্নাটক রাজ্যের গুলবর্গায় অবস্থিত তাঁর দরগায় হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষ লক্ষ লক্ষ মানুষ ভক্তি নিবেদন করেন।

গৌড়ের সুলতান সোলায়মান খান কররানির ১১তম উত্তরপুরুষ মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। তাঁর পূর্বপুরুষদের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করলে দেখা যায় তারা সর্বদাই তাদের জীবন-সম্পদ মানুষের মুক্তির জন্য আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গ করে গেছেন। হেযবুত তওহীদের প্রতিষ্ঠাতা এমাম মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নীও নিজের সকল উপার্জন ও পূর্ব পুরুষের জমিদারি থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তি আল্লাহর দীনের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি আল্লাহর রসুলের হারিয়ে যাওয়া সেই প্রকৃত ইসলামের সঠিক রূপরেখা পুনরায় জাতির সামনে তুলে ধরেছেন। সেই রূপরেখাকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য অর্থাৎ সমাজে ন্যায়, শান্তি ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের এই আন্দোলন। যারা সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চান এবং পরকালে মুক্তি চান, তাদের প্রতি আমাদের আহ্বান- আসুন,আমরা একটি কথার উপর ঐক্যবদ্ধ হই, আমরা মানুষের মনগড়া তন্ত্র-মন্ত্র, বাদ-মতবাদ, হুকুম-বিধান বাদ দিয়ে ¯স্রষ্টার হুকুম মানব। যদি আমরা এই কথায় ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে আমরা হব ভাই-ভাই, আমাদের জাতি হবে একটি, নেতা হবেন একজন, আমাদের জীবনের লক্ষ্য হবে এক ও অভিন্ন। আমরা একদেহ একপ্রাণ হয়ে সমস্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্যদীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবতীর্ণ হব ইনশাল্লাহ।

 

                    আমাদের এ ডাকে যাদের হৃদয়তন্ত্রীতে আল্লাহর তওহীদের ঝংকার উঠবে, হেদায়াতের জন্য প্রাণ আকুল হবে তাদের যোগাযোগের জন্য-

                                                                          হেযবুত তওহীদ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন

(ID NO-U85300WB2022NPL254079. PAN NO- AAGCH3130B. TAN NO- CALH07493D,

MOB NO- 9734681007)

বোস পাড়া, পোস্ট+থানা: পান্ডূয়া জেলা: হুগলি, পশ্চিম বাংলা।

ফেসবুক:www.facebook.com/emamht ওয়েবসাইট www.hezbuttawheed.org

ইউটিউব: www.youtube.com/@hezbuttawheed

বাংলাদেশের ফোন নম্বর: ০১৭১১-০০৫০২৫, ০১৬৭০-১৭৪৬৪৩, ০১৭১১-৫৭১৫৮১

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...