Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

ইসলামে নারীর মূল্যায়ন


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Eslamer-nari

আরিফুল ইসলাম

আজকের পৃথিবীতে বিভিন্নভাবে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলা হয়, খুটিয়ে খুটিয়ে ইসলামের ত্র“টি বের কোরে এর বদনাম করা হয়। আমরা হেযবুত তওহীদ গোড়া থেকেই বোলে আসছি আজকে যে ইসলামটা দুনিয়াময় চালু আছে, এটা আল্লাহ ও রসুলের (দ:) প্রকৃত ইসলাম নয়। বিগত ১৩০০ বছরের কাল পরিক্রমায় বিকৃত হোতে হোতে ইসলাম আজ চূড়ান্তভাবে বিকৃত। আর এই চূড়ান্ত বিকৃতির সূত্রপাত ঘটায় ব্রিটিশ খ্রিস্টানরা ঔপনিবেশিক আমলে। তারা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা কোরে খ্রিস্টান প্রিন্সিপালদের তত্ত্বাবধানে তাদের নিজেদের তৈরি করা একটা বিকৃত ইসলাম শিক্ষা দেয় এবং জাতির মধ্যে একটি ধর্মব্যবসায়ী আলেম-মোল্লা শ্রেণির উদ্ভব ঘটায়। এই ধর্মব্যবসায়ী মোল্লাহ শ্রেণিটি সেই বিকৃত ইসলামটাই মাদ্রাসা থেকে শিখে এসে মসজিদে, মাদ্রাসায়, খানকায়, ওয়াজ নসীহতে সাধারণ মানুষকে শিক্ষা দেয়। এভাবে গত কয়েক শতাব্দী ধোরে ব্রিটিশদের তৈরি করা বিকৃত ইসলামটিই এই জাতির মধ্যে চর্চা করা হোচ্ছে। আজকে যে বিভিন্ন মহল থেকে ইসলামের বদনাম করা হোচ্ছে, ইসলামকে পশ্চাদপদ, বর্বর ধর্ম বোলে গালি দেওয়া হোচ্ছে সেটা এই বিকৃত ইসলামের রূপটিকে দেখেই করা হোচ্ছে। যারা গালি দিচ্ছেন তারা প্রকৃত ইসলাম দেখেন নি, তারা তাদের সামনে ইসলাম হিসাবে যেটাকে দেখছেন সেটাকেই গালাগালি কোরছেন।
সত্যিকার অর্থেই বিকৃত ইসলামের এই ধারক বাহক তথা আলেম মোল্লা শ্রেণির মনোভাব সাংঘাতিক পশ্চাদপদ, বিকৃত। নারীদের ব্যাপারে তাদের যে দৃষ্টিভঙ্গি আমরা দেখতে পাই তা ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি নয়, এটা তাদের নিজস্ব বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি। এই বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গিকে ইসলাম হিসাবে চালিয়ে দেওয়ার কারণে পশ্চিমা প্রভাবাধীন গণমাধ্যমগুলি বিকৃত ইসলামের কূপমণ্ডূকতার দিকে আঙ্গুল উঁচিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে যে ইসলাম নারীদের অবরুদ্ধ কোরে রাখে, মানুষের বাক-স্বাধীনতায়, চিন্তার স্বাধীনতায়, চলাফেরার স্বাধীনতায় বিঘ্ন ঘটায়, তাই যে কোনভাবেই হোক ইসলামের উত্থানকে রোধ কোরতে হবে।
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ, শাশ্বত ও প্রাকৃতিক দীন। সুতরাং ইসলামের প্রতিটি বিধি-বিধান প্রাকৃতিক, যৌক্তিক ও চিরন্তন। কিন্তু প্রকৃত ইসলামের সাথে বর্তমানের কূপমণ্ডূক ধর্মব্যবসায়ীদের কাছে কুক্ষীগত বিকৃত ও বিপরীতমুখী ইসলামের তুলনা করা নিতান্তই বোকামী হবে। ১৩০০বছর আগে হারিয়ে যাওয়া আল্লাহ রসুলের সেই প্রকৃত ইসলামে নারীদের ক্ষমতায়ন ও বর্তমানে বিকৃত ইসলামের ধ্বজাধারীরা নারীদেরকে কিভাবে গৃহবন্দি কোরে রেখেছে তা তুলে ধরাই আমার আজকের আলোচ্য বিষয়।

বিকৃত ইসলামে নারীদের গৃহবন্দি অবস্থা অযৌক্তিক:

আজকের বিকৃত ইসলামের কূপমণ্ডূক ধর্মজীবী আলেম-মোল্লারা নারীদের ব্যাপারে ইসলামের যে ধারণা প্রচার কোরে থাকে তা প্রকৃত ইসলামের একেবারে বিপরীত। তারা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীকে পুরুষের অধীন কোরে রাখার পক্ষে ফতোয়া দিয়ে থাকেন। তারা এটা বুঝতে সক্ষম নয় যে, যার নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা বেশি সে পুরুষই হোক আর নারীই হোক, তাকেই নেতা মনোনীত করা যাবে। অযোগ্য পুরুষকে নারীর কর্তা কোরতে হবে এমন সিদ্ধান্ত ইসলাম সমর্থন করে না। যেমন একটি প্রতিষ্ঠানে এক হাজার জন কর্মকর্তা, কর্মচারী আছে। সেখানে যদি জ্ঞান, যোগ্যতা, দক্ষতায় কোন নারী অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকে সেখানে সেই নারীকে প্রধান অর্থাৎ নেতৃত্বদানকারী হিসাবে মেনে নিতে বাধা কোথায়? সেই হিসাবে একজন নারী কোন এলাকার রাজনৈতিক প্রশাসকও (Governor) হোতে পারেন। আজকের বিকৃত ইসলামের ধ্বজাধারীরা ইসলামে পুরুষ ও নারীর অবস্থানকে এমনভাবে ভারসাম্যহীন কোরে ফেলেছে যে তারা নতমস্তক নারীদের গায়ে বোরকা চাপিয়ে দিয়েছে, তাদের গৃহবন্দি কোরেছে, অপরদিকে পুরুষকে দিয়েছে স্বৈরশাসকের অধিকার। তারা একবারও ভাবে না যে উম্মতে মোহাম্মদীর নারীরা রসুলের পাশাপাশি থেকে যুদ্ধ কোরলেন, এই রকম তাবুসদৃশ বোরখা গায়ে চাপিয়ে কি যুদ্ধ করা যায়, ঘোড়ায় চড়া যায়? বর্তমানে নারীর দিকে দৃষ্টিপাত করাকেও মারাত্মক গোনাহের কাজ বোলে প্রচার করা হয়। এই সব মনগড়া, বুদ্ধিহীন, জাতিধ্বংসকারী ধারণাকে তারা ইসলামের উপরে চাপিয়ে দিয়েছে এবং এগুলির অনুকূলে হাজার হাজার বই লিখেছে, হাজার হাজার ফতোয়া ও মাসলা মাসায়েল বের কোরেছে। এই অন্ধত্ব আজ সমগ্র জাতির উপর জগদ্দল পাথর হোয়ে চেপে বোসেছে। তথাকথিত প্রগতিশীলরাও মোল্লা শ্রেণির এইসব মুর্খতাকে অসার প্রমাণ কোরতে গিয়ে আল্লাহ-রসুলকেই দোষারোপ কোরছেন। প্রচলিত ইসলামের বোরখা পরিহিতা কিম্ভুতকিমাকার নারীমূর্তি দেখেই তারা ধোরে নিয়েছেন যে ইসলাম নারীকে বুঝি এভাবেই অথর্ব, জড়বুদ্ধি, অচল, বিড়ম্বিত কোরেই রাখতে চায়। তারা নিজেরাও পাশ্চাত্য জড়বাদী ‘সভ্যতা’ দাজ্জালের প্রভাবে অন্ধ হোয়ে আছেন। তাই ইসলামের বিরোধিতা করা তাদের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হোয়েছে। সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করার জ্ঞান তাদের লুপ্ত হোয়ে গেছে। নইলে তারা বুঝতে পারতেন যে – এই ধর্মজীবী, ফতোয়াবাজ মাদ্রাসা শিক্ষিত আলেম মোল্লাদের সঙ্গে আল্লাহ রসুলের ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই, কেবল সম্পর্ক নেই নয়, এই মোল্লারাই ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্র“। তারা যে ইসলামটি বিক্রি কোরে খাচ্ছেন তার প্রতিটি দিক আল্লাহ-রসুলের প্রকৃত ইসলামের বিপরীত দিকে ধাবিত হোচ্ছে। সত্য ইসলামের নারী কেমন ছিলো সেটা তাদের ধারণারও বাইরে।
আজ ইহুদি খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’র গলায় সুর মিলিয়ে নারীবাদীরা হিংস্র মুখভঙ্গি প্রদর্শন কোরে বলেন, নারীকে সর্বক্ষেত্রে পুরুষের সমান অধিকার দিতে হবে। তারা জানেন না যে প্রকৃতপক্ষে ইসলাম নারী ও পুরুষের অধিকার তো দিয়েছেই, তাদেরকে এমন সম্মানিত কোরেছে যে কোন জীবনব্যবস্থাতে এর ভগ্নাংশও দেওয়া হয় নি, অপরদিকে পশ্চিমা সভ্যতা বিজ্ঞাপনী প্রচারণা ও অশ্লীল সংস্কৃতির দ্বারা নারীদেহকে কর্পোরেট পণ্যে পরিণত কোরেছে।

ইসলামে নারীর মূল্যায়ন:

যেহেতু উপার্জন করা পুরুষের কাজ, তাই বলা যায় জীবিকার যুদ্ধক্ষেত্রে মেয়েরা দ্বিতীয় সারির সৈনিক। কখনও কখনও যদি অবস্থার প্রয়োজনে নারীকে প্রথম সারিতে গিয়ে জীবিকার লড়াইতে অবতীর্ণ হোতে হয় সেটার সুযোগ আল্লাহ রেখেছেন। রসুলাল্লাহর অনেক নারী আসহাব পরিবারে পুরুষ সদস্য না থাকায় বা পুরুষ সদস্যরা জেহাদে অধিক ব্যস্ত থাকায় নিজেরাই কৃষিকাজ কোরে, কুটির শিল্পের মাধ্যমে উপার্জন কোরতেন, অনেকে ব্যবসাও কোরতেন।
এবার আসা যাক সত্যিকার যুদ্ধের ক্ষেত্রে। রসুলাল্লাহর সময় নারীরা প্রায় সকল যুদ্ধেই অংশগ্রহণ কোরেছেন। তারা আহতদের চিকিৎসা দিয়েছেন, নিহতদের দাফনে সহায়তা কোরেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে আহত সৈন্যদেরকে পানি পান কোরিয়েছেন। আনাস (রা:) ওহুদ যুদ্ধের স্মৃতি বর্ণনা কোরতে গিয়ে বলেন, “সেদিন আমি আয়েশা বিনতে আবু বকর (রা:) এবং উম্মে সুলাইমকে (রা:) দেখেছি, তাঁরা উভয়েই পায়ের কাপড় গুটিয়ে নিয়েছিলেন। আমি তাদের পায়ের গোছা দেখতে পেয়েছি। তারা মশক ভরে পিঠে বহন করে পানি আনতেন এবং (আহত) লোকদের মুখে ঢেলে দিতেন। আবার চোলে যেতেন এবং মশক ভরে পানি এনে লোকদের মুখে ঢেলে দিতেন (বোখারী শরীফ, হাদিস নং ৩৭৬৭)। এখানে কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রের সবচাইতে বিপদসঙ্কুল পরিবেশের কথা বলা হোয়েছে, বাড়িঘরের স্বাভাবিক পরিস্থিতির কথা বলা হয় নি। তাছাড়া মসজিদে নববীর এক পাশে যুদ্ধাহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোয়েছিল, যার প্রধান ছিলেন একজন নারী রুফায়দাহ (রা:)। কোন যোদ্ধাকে যদি রসদ ও এই সেবাগুলি দিয়ে সাহায্য না করা হয় তবে সে কখনও প্রথম লাইনে থেকে যুদ্ধ কোরতে পারবে না। যে কোন সামরিক বাহিনীর কাছে জিজ্ঞাস করে দেখতে পারেন এই কাজের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
শুধু এটুকুই না, যুদ্ধে এমন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যখন মেয়েদেরকেও অস্ত্র হাতে নিতে হয়, সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হোতে হয় [সংসার সমরাঙ্গণেও এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হোলে নারীকেও প্রথম সারিতে অর্থাৎ উপার্জন ও পরিবার ভরণপোষণের কাজে নামতে হবে]। যুদ্ধক্ষেত্রের এই বিশেষ পরিস্থিতিতে যেন মেয়েরা এগিয়ে আসতে পারে এবং পুরুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমানভাবে যুদ্ধ কোরে যেতে পারে সে সুযোগ আল্লাহ রেখেছেন। তার প্রমাণ ইতিহাস। ওহুদের যুদ্ধে যখন মোসলেম বাহিনী বিরাট বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়, বহু সাহাবী শহীদ হোয়ে যান, স্বয়ং রসুলাল্লাহ মারাত্মকভাবে আহত হন, কাফেররা প্রচার কোরে দেয় যে, রসুলাল্লাহও শহীদ হোয়ে গেছেন এমনই বিপজ্জনক মুহূর্তে মেয়েরা আর দ্বিতীয় সারিতে থাকলেন না, তারা অস্ত্র হাতে নিয়ে রসুলাল্লাহকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কাফের সৈন্যদের বিরুদ্ধে বিপুল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ওহুদ যুদ্ধে নারী সাহাবী উম্মে আম্মারার (রা:) ভূমিকা ছিলো প্রায় অবিশ্বাস্য। এ সম্পর্কে রসুলাল্লাহর (সাঃ) উক্তিই যথেষ্ট। তিনি বলেছিলেন, ‘ওহুদের দিন ডানে-বামে যেদিকেই নজর দিয়েছি, উম্মে আম্মারাহকেই লড়াই কোরতে দেখেছি।’ তিনি যেভাবে যুদ্ধ কোরেছিলেন তা নজিরবিহীন। এক শত্র“ সৈন্যের তরবারির কোপ পোড়ল তার মাথায়। তিনি ঢাল দিয়ে তা প্রতিহত কোরলেন। তিনি আঘাত কোরলেন তার ঘোড়ার পায়ের উপর। অশ্ব ও অশ্বারোহী দুজনেই পড়ে গেল মাটিতে। মহানবী এই দৃশ্য দেখে তার পুত্র আব্দুল্লাহকে (রাঃ) সাহায্যের নির্দেশ দিলেন। তিনি পতিত সৈন্যকে শেষ করলেন। এলো অন্য এক শত্র“। সে আঘাত হানলো আব্দুল্লাহর (রাঃ) বাম বাহুতে। মা পুত্রের ক্ষতস্থান বেঁধে দিলেন। আর ছেলেকে আমৃত্যু লড়াই করার জন্য উদ্দীপ্ত কোরলেন। এই অপূর্ব দৃশ্য দেখে রসুলুল্লাহ (সাঃ) বোললেন, ‘হে উম্মে আম্মারাহ! তোমার মধ্যে যে শক্তি আছে, তা আর কার মধ্যে থাকবে?’
নবী করিম (রাঃ) নিজ হাতে সেদিন এই বীরাঙ্গণার ক্ষতস্থানে পট্টি বেঁধে দিয়েছিলেন। তাঁর কাঁধ থেকে গল গল করে রক্ত গড়িয়ে পোড়ছিল। বেশ কয়েকজন বীর সৈনিকের নাম উল্লেখ করে তিনি মন্তব্য কোরলেন, ‘আল্লাহর কসম! আজ তাদের সবার চেয়ে উম্মে আম্মারাহ বেশি বীরত্ব দেখিয়েছেন। এর অনেক পরে ইয়ারমুকের যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালীদের অন্যতম এক বাহু দেরার বিন আজওয়ার যখন শত্র“র হাতে আটকা পড়েন তখন তারই আপন ভগ্নী খাওলা ঘোড়ায় চড়ে এমন লড়াই শুরু করেন যে স্বয়ং সেনাপ্রধান খালিদ (রাঃ) বার বার জিজ্ঞেস করেন, “কে এই বীর?” খাওলা শত্র“ শিবিরে আক্রমণ চালিয়ে শেষ পর্যন্ত তার ভাইকে উদ্ধার করেই ছাড়েন। পাঠক, এমন অসংখ্য উদাহরণের মধ্য থেকে কয়েকটি মাত্র উল্লেখ কোরলাম, আশা কোরি সত্যপ্রিয় পাঠকের বোঝার জন্য এ ক’টিই যথেষ্ট হবে যে, রসুলাল্লাহর সময়ে নারীরা প্রথম সারির ভূমিকাও কিভাবে পালন কোরেছেন। মাসলা মাসায়েলের জটিল জাল বিস্তার কোরে কোনকাজেই তাদের অংশগ্রহণের বাধা সৃষ্টি করা হয় নি।
একটি জাতির প্রায় অর্ধাংশই নারী। জাতির অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে অচল কোরে রাখা আর এক পায়ে হাঁটার চেষ্টা করা একই কথা। সেই জাতির কোনদিনই উন্নতির কোন সম্ভাবনা নেই। তাই জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলাম নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণের একটি সুন্দর সমন্বয় সাধন কোরেছে। নারীর নেতৃত্ব প্রদানের যোগ্যতাকে ইসলাম মোটেও অস্বীকার করে না। যদি অবস্থার প্রেক্ষাপটে কোন নারীকে দ্বিতীয় সারি থেকে প্রথম সারিতে আসতে হয় এবং সেখানে তিনি যদি তার জ্ঞান, প্রতিভা, যোগ্যতা, দক্ষতা, সামর্থ্যবলে নেতৃত্বদানের উপযুক্ত বোলে সাব্যস্ত হন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই তিনি বহু পুরুষের উপরও নেত্রী হিসাবে নিয়োজিত হোতে পারবেন। প্রকৃত ইসলামের দৃষ্টিতে নারী হওয়া নেতৃত্বলাভের ক্ষেত্রে কোন অযোগ্যতা নয়। ইসলামের ইতিহাসের একটি দুঃখজনক অধ্যায় উটের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন উম্মুল মো’মেনীন আয়েশা (রা:)। বহু সাহাবী তাঁর অধীনে থেকে যুদ্ধ কোরেছেন। যুদ্ধটির বিভিন্ন দিক নিয়ে ঐতিহাসিকরা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ কোরেছেন, কিন্তু “ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম” বোলে তখন তাঁর পক্ষে বিপক্ষে যুদ্ধরত কোন সাহাবী ফতোয়া দিয়েছেন বোলে ইতিহাসে পাওয়া যায় না। এই কথাটি আবিষ্কার কোরেছেন বিকৃত আকিদার মোল্লারা যারা উম্মাহর মূল কাজ, তাকে সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে অন্ধ।
মূল কথা হোচ্ছে, যেখানে যুদ্ধক্ষেত্রের মতো বিপদসঙ্কুল এবং সবচাইতে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে পুরুষ সাহাবীদের পাশাপাশি নারী সাহাবীরা অংশ নিয়েছেন, সেখানে অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় এবং অন্যান্য কাজে যে নারীদের অগ্রণী ভূমিকা ছিলো তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তারা কখনই পুরুষদের চেয়ে কোন অংশে পিছিয়ে ছিলেন না। তারা পূর্ণ সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে জাতীয় ও সামাজিক প্রয়োজনে নিশ্চিন্তে, নির্বিঘেœ যে কোন ভূমিকা রাখতে পারতেন। কেবল একটি মাত্র পদ নারীকে দেওয়া বৈধ নয়, সেটি হোল- উম্মতে মোহাম্মদী নামের যে মহাজাতিটি সৃষ্টি হবে সেই জাতির এমামের পদ। আল্লাহ নারী ও পুরুষের দেহ ও আত্মার স্রষ্টা, সচেতন মন ও অবচেতন মনের স্রষ্টা। এদের উভয়ের দুর্বলতা সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো জানেন মহান আল্লাহ। তিনি জানেন যে নারীর শারীরিক গঠন যেমন পুরুষের তুলনায় কোমল, তার হৃদয়ও পুরুষের তুলনায় কোমল, আবেগপ্রবণ ও সংবেদনশীল। সহজেই তার চিত্তচাঞ্চল্য ঘটে, তার স্থৈর্য্য, দূরদর্শীতা পুরুষের চেয়ে কম, তাকে প্রভাবিত করা সহজতর। এবলিস নারীকেই প্রথম আল্লাহর হুকুম থেকে বিচলিত কোরেছিল। এ কারণেই আল্লাহর অগণ্য নবী-রসুলের মধ্যে একজনও নারী নেই। সুতরাং পৃথিবীময় উম্মতে মোহাম্মদী নামক যে মহাজাতি হবে সেই মহাজাতির এমাম কেবল নারী হোতে পারবেন না, স্বীয় যোগ্যতাবলে অন্যান্য যে কোন পর্যায়ের আমীর বা নেতা সে হোতে পারবে। শুধু নারী হওয়ার কারণে কেউ নেতৃত্ব দিতে পারবে না এটা ইসলামের দৃষ্টিতে যোগ্যতা অযোগ্যতার মাপকাঠি নয়।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ