Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

হেদায়াতের প্রশ্নে সন্দেহই মোনাফেকি নয় কি?


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

মোহাম্মদ আসাদ আলী
একটি প্রশ্ন অনলাইনে প্রায়ই শুনতে হয় যে, ‘আপনারা হেযবুত তওহীদ সন্দেহাতীতভাবে দাবি করেন আপনারা সেরাতুল মোস্তাকীমে আছেন, হেদায়াতে আছেন, এই কথা কীভাবে বলতে পারেন? কে হেদায়াতে আছে আর কে নেই- সেটা তো একমাত্র আল্লাহই জানেন।’
প্রশ্নটি শুনে অবাক না হয়ে পারি না- একজন মানুষ কোন যুক্তিতে এই ধরনের প্রশ্ন করতে পারেন? যে রাস্তাকে আমি সঠিক মনে করব সেই রাস্তা ধরেই তো গন্তব্যে পৌঁছতে চেষ্টা করব, তাই নয় কি? যে রাস্তার ব্যাপারে আমার সন্দেহ থাকবে সেটায় আমি উঠব কেন আর অন্যদেরকেই বা ঐ পথে ডাকব কেন? সেরাতুল মোস্তাকীম মানে সহজ-সরল পথ, আর হেদায়াহ হলো সঠিক পথ। বিষয় একই- আল্লাহ বান্দার সামনে যে গন্তব্যস্থল ঠিক করে দিয়েছেন সেই গন্তব্যে পৌঁছনোর রাস্তাও তিনি যুগে যুগে তাঁর নবী-রসুলদের মাধ্যমে মানুষকে দেখিয়েছেন, সেটাই সঠিক পথ এবং অবশ্যই পথটি বক্র নয়, এবড়োথেবড়ো নয়, ‘সহজ-সরল’ একটি পথ। তাছাড়া এটা তো ইতিহাস যে, ভিন্ন ভিন্ন নবী-রসুল ভিন্ন ভিন্ন দিক-নির্দেশনা নিয়ে আসেন নি, সকল নবী-রসুল একই মূলমন্ত্র নিয়ে আবির্ভুত হয়েছিলেন। কাজেই সাধারণ জ্ঞানেই বোঝা যায় সেরাতুল মোস্তাকীম অর্থাৎ জান্নাতের রাস্তা হাজার হাজার হবে না; হবে মাত্র একটা। আমাদের আখেরী নবীও সারাজীবন অক্লান্ত সংগ্রাম করে এক লক্ষ্য ও এক কর্মসূচির ভিত্তিতে উম্মাহ (জাতি) গঠন করেছিলেন এবং বিদায় গ্রহণের পূর্বে সতর্ক করে দিয়েছিলেন- সেই কর্মসূচি থেকে জাতির কেউ যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায়, এক বিঘতও দূরে সরে না যায়। গেলে তার গলা থেকে ইসলামের রজ্জু খুলে যাবে। যদি আল্লাহর রসুলের দেখানো ঐ নির্দিষ্ট পথনির্দেশ ছাড়া অন্য কোনো পথেও জান্নাতে যাবার সুযোগ থাকত তাহলে রসুল (সা.) কখনই ঐ কথা বলতেন কি?
বিশ্বনবী একদিন সাহাবীদের সামনে একটি সোজা লাইন টানলেন, তারপর বললেন, এই হচ্ছে সহজ সরল পথ, সেরাতুল মোস্তাকীম। তারপর সেই সরলরেখা থেকে ডান দিকে কতকগুলো ও বাম দিকে কতকগুলো রেখা টেনে বললেন এইগুলো সেই সব পথ যেগুলোর দিকে শয়তান তোমাদের ডাকতে থাকবে। এই বলে তিনি কোর’আন থেকে সেই আয়াত পড়লেন যেটায় আল্লাহ বলেছেন- নিশ্চয়ই এই হচ্ছে আমার সহজ সরল পথ। কাজেই এই পথে চল এবং থাক। অন্য কোনো পথে (মহানবী (দ.) ডাইনে বায়ে যে লাইনগুলো টানলেন সেগুলি) যেও না, গেলে তোমরা আমার পথ থেকে বিচ্যুত, বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তিনি (আল্লাহ) তোমাদের আদেশ করছেন যাতে তোমরা অন্যায় থেকে বেঁচে ন্যায়ে থাকতে পারো।’ (হাদিস- আব্দুল্লাহ বিন মাসুদ (রা.) থেকে, আহমদ, নিসায়ী- মেশকাত)
আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আল্লাহর রসুল আমাদেরকে যে সহজ-সরল পথে (তওহীদে) উঠিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন সেই সহজ-সরল পথে আমরা খুব বেশিদিন থাকতে পারি নি। আকীদার বিচ্যুতির কারণে দীন নিয়ে বাড়াবাড়ি ও তার ফলে অনৈক্য করতে করতে এই জাতি সত্যের মহাসড়ক থেকে বহু আগেই বিচ্যুৎ হয়ে মিথ্যার অন্ধকার অলিগলিতে ঢুকে পড়েছে। শয়তান বহু শতাব্দী আগেই আমাদেরকে সেরাতুল মোস্তাকীম ভুলিয়ে দিয়ে ডাইনে-বাঁয়ের লাইনগুলোতে ছিটকে দিয়েছে। আজ এক আল্লাহ, এক রসুল, এক কিতাবে বিশ্বাসী অখণ্ড উম্মতে মোহাম্মদী হাজার হাজার খণ্ডে বিভক্ত এবং এই প্রত্যেকটি খণ্ডের কাছে ইসলাম ভিন্ন ভিন্ন রকম। হাজার হাজার পীর রয়েছেন, তাদের বহু প্রকারের তরিকা। একটির সাথে আরেকটির আকীদাগত, পদ্ধতিগত তফাৎ তো আছেই, পোশাক আশাক খাদ্যাভ্যাস পর্যন্ত আলাদা। হাজার হাজার রাজনৈতিক দল রয়েছে, একটির সাথে আরেকটির আদর্শিক দূরত্ব আকাশ পাতাল। ধর্মভিত্তিক দলের অভাব নেই, যাদের একটির সাথে আরেকটির আকীদা মেলে না। এক আলেম অপর আলেমকে কাফের ফতোয়া দেন, এক দল অপর দলকে গোমরাহ, মুরতাদ, অমুসলিম ঘোষণা দেয়। এছাড়াও মাদ্রাসাভিত্তিক, সংস্থাভিত্তিক, মসজিদভিত্তিক, উদ্দেশ্যভিত্তিক মতপার্থক্য ও বিভক্তির কোনো শেষ নেই। অর্থাৎ একেক জনের একেক রাস্তা। কোনোটা সন্ত্রাসবাদী রাস্তা, কোনোটা সুফিবাদী রাস্তা, কোনোটা গণতান্ত্রিক রাস্তা, কোনোটা সমাজতান্ত্রিক রাস্তা, কোনোটা রাজতান্ত্রিক রাস্তা ইত্যাদি। আবার এই রাস্তাগুলোর মধ্যে গড়ে তুলেছি হাজারো অলি-গলি। একেকভাগ একেক অলিতে গলিতে ঢুকে আছি। এখন যেহেতু প্রত্যেকের রাস্তা আলাদা, প্রত্যেকের দিক ভিন্ন ভিন্ন, কাজেই সবাই সেরাতুল মোস্তাকীমে আছে, সবাই সঠিক পথে আছে সে কথা বলার সুযোগ থাকল কি? বড়জোড় এর মধ্যে একটি রাস্তা সঠিক হতে পারে এবং কোনো রাস্তা সঠিক হবার অর্থই হচ্ছে ঐটা বাদে অন্যান্য যত রাস্তা অর্থাৎ ফেরকা, মাজহাব, দল, উপদল, তরিকা ইত্যাদি আছে সবগুলো বেঠিক, পথভ্রষ্টতা। আমাদের সৌভাগ্য যে, এই গোলকধাঁধার মধ্যে আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদেরকে সেরাতুল মোস্তাকীম বোঝার তওফিক দান করেছেন। আমাদেরকে হেদায়াহ দান করেছেন। আমরা জেনেছি আল্লাহর সত্যদ্বীন কেমন ছিল। আরও জেনেছি এই জাতির মুক্তির উপায় কী। ফলে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই হেযবুত তওহীদ মানুষকে পুনরায় সমষ্টিগত জীবনে আল্লাহকে একমাত্র হুকুমদাতা হিসেবে স্বীকার ও বিশ্বাস করে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে এবং সকল দল-মত-ফেরকা-মাজহাবের মানুষকে আল্লাহর তওহীদের ভিত্তিতে পুনরায় ই¯পাতকঠিন ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।
একজন জন্মান্ধ ব্যক্তির কাছে জোনাকির আলোও যা, সূর্যের আলোও তা, সবই নিকষ কালো অন্ধকার। তার কাছে যদি জানতে চাওয়া হয়- আচ্ছা বলুন তো, সূর্যের আলো আর জোনাকির আলোর মধ্যে কোনটা বেশি জ্যোতির্ময়? তিনি দ্বিধাগ্রস্ত হতেই পারেন। কিন্তু যার দৃষ্টিশক্তি আছে তিনি নিঃসঙ্কচে হাসতে হাসতে জবাব দিবেন সূর্যের সাথে জোনাকির তুলনাই হয় না। এজন্যই আল্লাহ বলেছেন, ‘‘অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে?’’ আল্লাহর অসীম করুণা যে, তিনি আমাদেরকে সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়, হেদায়াহ-দালালত আলাদা করার মত দৃষ্টিশক্তি দান করেছেন। তাই সেরাতুল মোস্তাকীম নিয়ে আমাদের মনে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই, ধোঁয়াশা নেই। সত্য আমাদের কাছে সূর্যের আলোর মতই দীপ্তিময়!
প্রশ্ন হচ্ছে, এই যে নিজেদের হেদায়াতের ব্যাপারে অ¯পষ্ট ধারণা না রাখা, সন্দেহ না রাখা, এটার মধ্যে দোষ কোথায়? সন্দেহ থাকলে সেই রাস্তায় আমি উঠব কেন? যেটাতে নিশ্চিত থাকব যে, এই রাস্তা আমাকে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে আমি সেই রাস্তাতেই উঠব, কেন আমাকে সন্দেহগ্রস্ত দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে থাকতে হবে? সন্দেহগ্রস্ততা তো মোনাফেকের বৈশিষ্ট্য, তাদের ব্যাপারে আল্লাহ কোর’আনে বলেন, তারা দোটানায় দোদুল্যমান, এরা না এদিকে না ওদিকে (নিসা ৪/১৪৩) এবং রসুলাল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘‘মোনাফেকের উদাহরণ দু’টো পাঁঠার মাঝে অবস্থিত একটি কামার্ত বকরির মত, একবার সে এটার কাছে যায়, আরেকবার সে অন্যটার কাছে যায় (মুসলিম/ ২৭৮৪)। আল্লাহ কাকে সঠিক রাস্তা দেখাবেন আর কাকে দেখাবেন না সেইটা আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত বিষয় অবশ্যই, কিন্তু যাকে সঠিক রাস্তা দেখিয়েছেন তিনি তো তার রাস্তাকে সঠিক বলতেই পারেন এবং কেবল পারেন নয়, বলতেই হবে। এটা ঈমানের অংশ। আল্লাহ লক্ষাধিক নবী-রসুল পাঠিয়েছেন, কোনো নবীই তাঁর জাতির লোকদেরকে এভাবে আহ্বান করেন নি যে, ‘হে আমার জাতি, আমি তোমাদের জন্য একটি সহজ-সরল রাস্তা এনেছি, তবে এটাই দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হবার ‘সঠিক পথ’ কিনা সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই! হতেও পারে আবার না-ও হতে পারে! একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন!’ একজন নবীও তাঁর জাতিকে এভাবে আহ্বান করেন নি। তারা বলিষ্ঠ কণ্ঠে দ্বিধাহীনচিত্তে নিজেদের হেদায়াতের ব্যাপারে নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন এবং তাঁদের আনিত ঐ পথ ছাড়া অন্য কোনো পথে জান্নাতে যাওয়া যে সম্ভব নয় এই নিরেট সত্যটিও বলতে সংকোচবোধ করেন নি। তাহলে হেযবুত তওহীদ কেন সত্যকে সত্য বলতে সংকোচবোধ করবে?
লেখক: সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, হেযবুত তওহীদ।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ