Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

শুধুমাত্র শক্তি-প্রয়োগে জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব নয়


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

জঙ্গিবাদ নির্মূলে যামানার এমামের প্রস্তাবনার বিকল্প নেই

Untitled-1গত দেড়যুগ ধরে জঙ্গিবাদ সারা বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রক্তের বন্যায় লাল হয়ে গেছে পৃথিবীর মাটি, ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া। পাকিস্তান, নাইজেরিয়াসহ বিশ্বের প্রায় সকল মুসলিম দেশেই জ্বলছে জঙ্গিবাদ নামক সহিংসতার আগুন। কেবল ইরাকেই মারা গেছে ১০ লক্ষ আদম সন্তান। বিশ্বের সুপার পাওয়ারগুলি তাদের সর্বাত্মক সামরিক শক্তি ও অর্থ বিনিয়োগ করেও এই সমস্যার কোন কূল কিনারা করতে পারে নি। জঙ্গিরা মরছে, বেঁচে থাকছে জঙ্গিবাদ। যতই তাদেরকে জোর করে দমনের চেষ্টা করা হচ্ছে, ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে ততই তাদের উগ্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে, এমন কি তারা আত্মঘাতীও হচ্ছে। এভাবে দিনকেদিন বেড়েই চলেছে ধর্মের নামে সহিংসতা, জনগণের দুর্ভোগ কিন্তু কোন সমাধান আসছে না। দীর্ঘ দেড় যুগের এত অপূরণীয় ক্ষয়ক্ষতির পর অবশ্য এখন জ্ঞানী-গুণীরা একমত হচ্ছেন যে, শক্তিপ্রয়োগে, সামরিক কায়দায় জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব নয়; কারণ জঙ্গিবাদ কোন সাধারণ ও বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নয়, এটি একটি বিকৃত আদর্শ। এই আদর্শ যতদিন টিকে থাকবে, জঙ্গিবাদও ততোদিন টিকে থাকবে। তাই একে মোকাবেলাও করতে হবে আদর্শ দিয়েই।
জঙ্গিবাদের পেছনে কোটি কোটি ডলার ব্যায় করেও মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব হচ্ছে না বরং পাকিস্তানে প্রতিদিনই প্রায় জঙ্গি হামলায় সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে, ইরাক, সিরিয়া প্রায় সম্পূর্ণটায় জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাচ্ছে। অর্থাৎ এটা অনস্বীকার্য যে শক্তি প্রয়োগে জঙ্গিবাদ নির্মূলের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
এবার আসি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। এয়ার কমোডর (অব:) ইশফাক ইলাহী বলেন, “জঙ্গিবাদ দূরীকরণে বাংলাদেশ সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা যথেষ্ট নয়। কারণ জঙ্গিবাদ হচ্ছে একটি আদর্শগত যুদ্ধ। সে হিসেবে বাংলাদেশ সরকার এখনো কিছুই করে নি।”
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে “বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা”-র উপর একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, “জঙ্গি কর্মকাণ্ডের পেছনে একটি আদর্শ থাকে। আদর্শকে আদর্শ দিয়েই মোকাবেলা করতে হবে।”
তাদের বক্তেব্যে একটা বিষয় পরিষ্কার হচ্ছে যে, কোর’আন হাদিসের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে জঙ্গিবাদ নামক যে ভুল মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে সেই আদর্শিক যুদ্ধে জয়ী হতে হলে কোর’আন হাদিসের উক্ত বিষয়গুলির সঠিক ব্যাখ্যা মানুষকে জানাতে হবে।
ঠিক এই কথাটিই কয়েকবছর পূর্বে বলেছিলেন যামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। তিনি ২০০৯ সনে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, “পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সুপার পাওয়ার যুক্তরাষ্ট্র, তারাই সামরিক শক্তি দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করতে পারছে না সেখানে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্রতম একটি দেশের জন্য এটা আরও অসম্ভব”। তিনি সরকারকে আদর্শিক যুদ্ধের মাধ্যমে জঙ্গিদমনে সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কারণ এই আদর্শিক যুদ্ধে জঙ্গিদের পরাজিত করতে হলে তাদের আদর্শের বিপরীতে কোর’আন ও সুন্নাহ ভিত্তিক যে অলঙ্ঘনীয় যুক্তি ও প্রমাণ দরকার, সেই যুক্তি প্রমাণ আল্লাহ তাঁকে দান করেছেন। জঙ্গিদমনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের সরকারগুলি নির্ভর করছে আলেম শ্রেণিটির উপর। আমাদের দেশের সরকার এ ব্যাপারে নির্ভর করছেন মাদ্রাসা শিক্ষিত মসজিদের ইমাম আর বিভিন্ন সরকারি ধর্মীয় গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানের উপর।
কিন্তু জঙ্গিদেরকে আদর্শিক যুদ্ধে পরাজিত করার সামর্থ্য কি এই ধর্মজীবী আলেম শ্রেণির রয়েছে?

এক কথায় এ প্রশ্নের উত্তর হলো: নেই। বাংলাদেশে কেবল নয়, দেড় যুগ আগে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটার পর থেকেই আলেমদেরকে দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণা (Campaign) চালানো হয়েছে। তারা ইতোমধ্যেই অসংখ্য বই লিখেছেন, ওয়াজ করেছেন, টিভি চ্যানেলে সেগুলি বছরের পর বছর প্রচারিত হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এই বাস্তবতা এখন স্বীকার করে নেওয়ার সময় এসেছে যে, এই আলেমদের কাছে এমন কোন যুক্তি প্রমাণ নেই যা দিয়ে তারা জঙ্গিবাদকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে পারেন।
সত্যিকার যুক্তি প্রমাণ না থাকা ছাড়াও তাদের দ্বারা জঙ্গিদমনে কার্যকরী কোন ভূমিকা রাখা সম্ভব নয় কারণ মাদ্রাসা শিক্ষিত এই আলেম নামধারী শ্রেণিটি ধর্মকে তাদের জীবিকার উপকরণ হিসাবে গ্রহণ করেছেন, ইসলামের কাজ করে পার্থিব সম্পদ ও সুখ-সুবিধা হাসিল করছেন যা আল্লাহ পবিত্র কোর’আনে কঠোরভাবে হারাম করেছেন (সুরা বাকারা ১৭৪ সহ বহু আয়াত)। যে তাদেরকে টাকা দেয়, ভাড়াটে আলেমরা তার পক্ষেই কথা বলেন, সামান্য পার্থিব স্বার্থে তারা কোর’আন হাদিসের বিকৃত ব্যাখ্যা করে মিথ্যা ফতোয়া প্রদান করেন। তাদের এসব ব্যাখ্যায় সত্য-মিথ্যার কোন ভেদাভেদ থাকে না। হারাম ভক্ষণকারীর কোন চরিত্র থাকে না, নৈতিক মেরুদণ্ড ও সত্যের প্রতি অটলতা থাকে না, অর্থের লোভে তারা যে কোন মিথ্যার সঙ্গে আপস করে। তাদের এই স্বভাবের কারণে আমাদের সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতা একেবারেই কমে গেছে।
তাঁছাড়া যামানার এমাম প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, এই তথাকথিত আলেমরা প্রকৃত ইসলামের অনুসারী নন। তাদের কাছে যে ইসলামটি আছে সেটা একটি বিকৃত এবং বিপরীতমুখী ইসলাম। যে কোন জিনিস বিকৃত হয়ে গেলে সেটা বিভিন্ন আকৃতি-প্রকৃতি ধারণ করে। এই আলেম-পুরোহিত শ্রেণি হচ্ছে বিকৃত ইসলামের একটি শাখা আর জঙ্গিবাদ হচ্ছে বিকৃত ইসলামের আরেকটি শাখা। এই ধর্মজীবী আলেমদের কাছে সঠিক ইসলাম থাকলে তারা নিজেরা যেমন ধর্মব্যবসা করতেন না, তেমনি এ সমাজে জঙ্গিবাদেরও জন্ম হতো না। জঙ্গিবাদের জন্মও দিচ্ছেন আরেক শ্রেণির আলেম। বিকৃত ইসলামের অনুসারী ধর্মজীবী আলেমরা অন্ধ ও পথভ্রষ্ট, অপরপক্ষে জঙ্গিরাও আরেক দিকে অন্ধ ও পথভ্রষ্ট। একজন পথভ্রষ্ট অন্ধ কি কখনও আরেক পথভ্রষ্ট অন্ধকে পথ দেখাতে পারে? পারে না। তাই ধর্মজীবী, প্রচলিত ইসলামের আলেমদেরকে দিয়ে জঙ্গিবাদের মোকাবেলা করার চেষ্টা কেবল পণ্ডশ্রম; এতে সময় ও সরকারি অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই হবে না।
তাছাড়া পত্রপত্রিকার মাধ্যমে যতটুকু জানা যায়, মাদ্রাসা-শিক্ষিত শ্রেণি থেকেই অধিকাংশ জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থান হচ্ছে। কাজেই মাদ্রাসা-শিক্ষিত আলেমদেরকে দিয়ে জঙ্গিবিরোধী প্রচারণা চালানো একটি স্ববিরোধী সিদ্ধান্ত। তবে মাদ্রাসা থেকেই শুধু জঙ্গি তৈরি হয় তা কিন্তু নয়। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যেও এই প্রবণতা রয়েছে। এই প্রবণতা কেবল গ্রেফতার, রিমান্ড, কারাদণ্ড, ফাঁসি দিয়ে রোধ করা সম্ভব নয়। এরাও একটি ভুল আদর্শকে ইসলাম প্রতিষ্ঠার সঠিক পথ মনে করে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন।
এটাই যদি চূড়ান্ত কথা হয়ে থাকে তবে এ প্রসঙ্গে আমাদের সুস্পষ্ট কথা, যদি মাদ্রাসা শিক্ষিত ও সরকারি আলেমদেরকে দিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আদর্শিক লড়াই চালানো হয় সেটা অতীতে যেমন কোন সুফল বয়ে আনে নি, ভবিষ্যতেও আনবে না। এটা উপলব্ধি করেই মাননীয় এমামুযযামান এগিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, যে আদর্শে দীক্ষিত হয়ে মানুষ নিজের জীবন-সম্পদ সব তুচ্ছ করে অনিশ্চিত জীবন বেছে নেয়, এমন কি বুকে বোমা বেঁধে আত্মঘাতী হয়, ইসলাম প্রতিষ্ঠার সেই পদ্ধতিকে ভুল প্রমাণ করতে যে শক্তিশালী যুক্তি, তথ্য ও প্রমাণ প্রয়োজন তা তাঁর কাছে আছে। তাঁকে যদি সুযোগ দেওয়া হয় তবে তিনি কোর’আন ও হাদিসভিত্তিক সেই যুক্তি ও প্রমাণগুলি তুলে ধরে জঙ্গিদেরকে, ইসলামের নামে সহিংসতা সৃষ্টিকারীদেরকে ভ্রান্তপথ থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন এনশা’আল্লাহ। সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ এ সন্ত্রাসবাদের যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী শুধু ইসলামের নামে বোমাবাজিই কিন্তু জঙ্গিপনা, সন্ত্রাস বা Terrorism নয়, যে কোন কারণেই হোক মানুষের জীবন ও সম্পদের ক্ষতি বা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অস্ত্র বা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করল তারা হচ্ছে সন্ত্রাসী। এই হিসাবে গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী আদর্শের যে দলই হোক না কেন, কেউ যদি বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে, মানুষ হত্যা করে সেটাও সন্ত্রাস। সর্বপ্রকার সন্ত্রাস থেকে আমরা মানবজাতিকে মুক্ত করতে চাই। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি যারা যামানার এমামের শিক্ষা সর্ব রকমের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ থেকে, সর্ব রকম অন্যায় থেকে মানবজাতিকে মুক্তি দিতে পারবে এনশা’আল্লাহ। আজ যখন রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদে আসীন ব্যক্তিগণ অনুভব করছেন যে তাদের আদর্শিক যুদ্ধে অন্যদেরও এগিয়ে আসা, অংশ নেওয়া প্রয়োজন তখন এমামুযযামানের সেই প্রস্তাবনাটি বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পুনর্বিবেচনা করার জন্য প্রস্তাব কোরছি। আমরা আশা কোরব, সরকার যদি সত্যিই জঙ্গিবাদ সমস্যার সমাধান চান তবে আমাদের এই প্রস্তাবনাটি বিবেচনায় রাখবেন।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ