Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

যারা পরাজিত হয় তারা উম্মতে মোহাম্মদী নয় (৪র্থ পর্ব)


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

jara-porajito-hoiযামানার এমাম জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী’র লেখা থেকে

এ জাতির তৈরি ভিত্তির উপর পাশ্চাত্য সভ্যতার সৌধ রচনা

আল্লাহ যে বিরাট, বিশাল বিশ্ব-জগৎ সৃষ্টি কোরেছেন তা তিনি বিজ্ঞানের ওপর ভিত্তি কোরেই কোরেছেন। আদম (আঃ) কে সৃষ্টি কোরে তিনি তাকে সব জিনিসের নাম শেখালেন (কোর’আন- সুরা বাকারা, আয়াত ৩১)। সব জিনিসের নাম শেখানোর অর্থ কি? এর অর্থ হোচ্ছে কোন্ জিনিসের কি কাজ, কোন্ জিনিস দিয়ে কি কাজ হয় তা শেখানো, এক কথায় বিজ্ঞান, কারণ সমস্ত সৃষ্টিটাই বৈজ্ঞানিক। আর আদমকে (আঃ) শেখালেন অর্থ মানুষ জাতিকে শেখালেন। কোর’আনের এই আয়াত এই অর্থ বহন করে যে, মানুষ অনুসন্ধান ও গবেষণার মাধ্যমে এই বৈজ্ঞানিক মহাসৃষ্টির অনেক তথ্য, অনেক রহস্য জানতে পারবে। মানুষ জাতির বিজ্ঞানীরা গবেষণা কোরে আবিষ্কার কোরছেন আল্লাহর সৃষ্ট কোন জিনিস দিয়ে কী হয়, আর তা প্রযুক্তিতে ব্যবহার কোরছেন। আল্লাহ তাঁর কোর’আনে তাঁর বিরাট সৃষ্টি সম্বন্ধে ভাববার, গবেষণা করার জন্য বারবার বোলেছেন, বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে নফল এবাদতের চেয়ে অনেক ঊর্দ্ধে স্থান দিয়েছেন।
আল্লাহর ঐ আদেশ অনুযায়ী কাজ করার ফলে এই মোসলেম জাতিতে অতীতে বিরাট বিরাট জ্ঞানী, বিজ্ঞানীর জন্ম হোয়েছে, যাদের কাজের ওপর, গবেষণার ফলের ওপর ভিত্তি কোরে বর্তমান বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি সম্ভব হোয়েছে। অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী মোসলেম বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে বিজ্ঞানে, চিকিৎসায়, দর্শনে, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে, রসায়নে, এক কথায় বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় বিরাট অগ্রগতি করার পর আকীদার বিকৃতিতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা ছেড়ে, অর্থাৎ আল্লাহর আদেশ অমান্য কোরে এই জাতি যখন ফতোয়াবাজি শুরু কোরলো তখন স্বভাবতঃই সেটা অজ্ঞানতার ও অশিক্ষা-কুশিক্ষার অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত হোল। আর তাদের কাজের, গবেষণার পরিত্যক্ত ভিত্তির ওপর অগ্রগতি কোরে দাজ্জাল অর্থাৎ ইহুদি খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’ তার বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির বিশাল ইমারত গড়ে তুললো। পদার্থ বিজ্ঞানে ইবনে হাইসাম, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ইবনে সিনা, আল নফীস, আল রাজী, অংক শাস্ত্রে আল খাওয়ারিযমী, আলকিন্দী, আল ফরগানী, সাধারণ বিজ্ঞানে ওমর খাইয়াম, বিবর্তনবাদে ইবনে খালদুন প্রমুখ মনীষীরা বিজ্ঞানে প্রতি অঙ্গনে গবেষণা কোরে যে ভিত্তি স্থাপন কোরেছিলেন, আজ পাশ্চাত্য ‘সভ্যতা’র বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির শক্তি তারই ফল।
যেহেতু আল্লাহ তাঁর খলীফা আদমকে (আঃ) নিজ হাতে সৃষ্টি কোরে তাকে জ্ঞান বিজ্ঞান শেখালেন, সেহেতু মনে রাখতে হবে যে জ্ঞান-বিজ্ঞান কোন বিশেষ জাতির বা বিশেষ সভ্যতার সম্পদ নয়। সৃষ্টির পর থেকেই মানবজাতি এই জ্ঞান-বিজ্ঞানে প্রগতি কোরে আসছে। অতীতে যারা জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা, গবেষণা কোরে ভিত্তি স্থাপন কোরে গেছেন তাদের সেই ভিত্তির ওপর বর্তমানের গবেষক, বিজ্ঞানীরা নতুন জ্ঞান-বিজ্ঞান যোগ কোরছেন এবং আজকের বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলকে ভবিষ্যতের বিজ্ঞানীরা আরও সম্মুখে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এতে কোন জাতির, কোন সভ্যতার মালিকানা নেই, এর মালিকানা সমগ্র মানবজাতির। বীজগণিত (Algebra) আল খাওয়ারিযমী এবং ত্রিকোণমিতি (Trigonometry) আল বাত্তানী আবিষ্কার কোরেছেন বোলেই যেমন ঐ বিজ্ঞান মোসলেম জাতির সম্পদ নয় তেমনি আপেক্ষিক তত্ত্ব (Theory of Relativity) অ্যালবার্ট আইনষ্টাইন আবিষ্কার কোরেছেন বোলেই তা ইহুদি জাতির সম্পদ নয়- সবগুলোই সমগ্র মানবজাতির সম্পদ।
মানুষের ইতিহাসে দেখা যায় যে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন জাতি, বিভিন্ন সভ্যতা জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা, গবেষণা কোরে তাকে অগ্রগতির পথে নিয়ে গেছে। যখন যে জাতি বা সভ্যতার প্রাণশক্তি (Dynamism) বৃদ্ধি পেয়েছে সেই জাতি বা সভ্যতা জ্ঞান, বিজ্ঞানকে সমৃদ্ধ কোরেছে এবং সমগ্র মানবজাতি তা থেকে উপকৃত হোয়েছে। এখানে আল্লাহর রসুল একটি হাদিসের উল্লেখ প্রয়োজন। তিনি বোলেছেন- জ্ঞান আহরণের জন্য চীনেও যাও (হাদিস- আনাস (রাঃ) থেকে বায়হাকী, মেশকাত)। বিশ্বনবীর সময় জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তিতে (Science and Technology) চীনদেশ ছিলো পৃথিবীতে সবচেয়ে উন্নত, তাই তিনি তাঁর অনুসারীদের (উম্মাহ) তদানীন্তন পৃথিবীর জ্ঞান বিজ্ঞানের কেন্দ্র চীনে যেয়ে ঐ জ্ঞান আহরণের আদেশ দিয়েছেন।
এ কথা আহাম্মকেও বুঝবে যে এই হাদিসে ‘জ্ঞান’ শব্দ দিয়ে তিনি দীনের জ্ঞান বোঝান নি, কারণ আল্লাহর রসুলকে মদীনায় রেখে দীনের জ্ঞান শেখার জন্য চীনে যাওয়ার, যে চীন তখনও ইসলামের নামই শোনে নি, কোন অর্থই হয় না। বিশ্বনবী এখানে ‘জ্ঞান’ বোলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে বুঝিয়েছেন। মহানবীর ঐ আদেশের সময় এই জাতিটি, যেটা বর্তমানে মোসলেম বোলে পরিচয় দেয়, সেটা জীবিত (Dynamic) ছিলো, এবং জীবিত ছিলো বোলেই সেটা নেতার আদেশ শিরোধার্য কোরে জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে পৃথিবীর শিক্ষকের আসন অধিকার কোরে নিয়েছিলো। তারপর আল্লাহ ও রসুল জ্ঞান বোলতে যা বুঝিয়েছেন তা থেকে ভ্রষ্ট হোয়ে যখন এ জাতি ‘জ্ঞান’ কে শুধু ফতোয়ার জ্ঞানের মধ্যে সীমাবদ্ধ কোরলো তখন এটা অশিক্ষা-কুশিক্ষায় পতিত হোয়ে মৃত হোয়ে গেলো এবং আজও সেই মৃতই আছে।
এই যে লক্ষ্যভ্রষ্ট হোয়ে জাতি কয়েকশ’ বছর কাটালো এই সময়টাতে পণ্ডিতদের ফতোয়াবাজি আর সুফীদের অন্তর্মুখী সাধনা খুব জোরে শোরে চোলছিলো। কাজেই পচনক্রিয়াও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিলো সমস্ত জাতির দেহময়। কিন্তু ওর মধ্যেও দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে যাদের মনে প্রকৃত দীনের আকীদা ঠিক ছিলো তারা তাদের কাজ কোরে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ক্রমে ঐ পচনক্রিয়া জাতিকে এমন অবস্থায় নিয়ে এলো যে এর মধ্যে আর ফতোয়াবাজী ও তসবিহ টপকানো ছাড়া প্রায় আর কিছুই অবশিষ্ট রোইলো না। বিজ্ঞান, চিকিৎসা, রসায়ন, অংক ইত্যাদি সর্বরকম জ্ঞান থেকে এ জাতি বঞ্চিত হোয়ে এক অশিক্ষিত অন্ধ জাতিতে পরিণত হলো। অন্যদিকে জাতির স্রষ্টা বিশ্বনবী (দ:) যে সামরিক প্রেরণায় একে এমন এক দুর্দ্ধর্ষ, অজেয় জাতিতে পরিণত কোরেছিলেন যার সামনে বিশ্ব শক্তিগুলো পর্যন্ত ঝড়ের মুখে শুকনো পাতার মত উড়ে গিয়েছিলো, সে প্রেরণাও কর্পুরের মত উড়ে গিয়ে এক অন্তর্মুখী কাপুরুষ জাতিতে পরিণত হলো। যে বিজ্ঞানের ও প্রযুক্তির চর্চা কোরে, গবেষণা কোরে এই জাতি পৃথিবীর জ্ঞানকে সম্মুখে অগ্রসর করিয়ে দিয়েছিলেন সেই জ্ঞান এই জাতির শত্রু ইউরোপের খ্রিস্টান জাতিগুলি লুফে নিয়ে তার চর্চা ও গবেষণা শুরু করলো আর এই উম্মাহ ওসব ছেড়ে দিয়ে বিবি তালাকের মসলা আর ফতোয়া নিয়ে মহাব্যস্ত হোয়ে পড়লো। এই উম্মাহর আহরিত জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ভিত্তির উপর খ্রিস্টান ইউরোপ তাদের প্রযুক্তির (Tecnology) সৌধ গড়ে তুললো এবং তুলে শক্তিমান হোয়ে এই উম্মাহকে সামরিকভাবে আক্রমণ করলো।
এটা ইতিহাস যে, এই আক্রমণ এই জাতি প্রতিহত কোরতে পারে নি এবং অল্প সময়ের মধ্যে বিরাট জাতি ইউরোপের বিভিন্ন জাতির পদানত দাসে পরিণত হোয়ে যায়। ইউরোপের ছোট বড় রাষ্ট্রগুলি এই উম্মাহকে টুকরো টুকরো কোরে কেটে খণ্ডগুলি নিজেদের মধ্যে ভাগ কোরে নেয়। প্রতিরোধ যে হয় নি, তা নয়, হোয়েছে, কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে। আর যে জাতির ঐক্য নেই সে জাতি শক্তিহীন, পরাজয় তার স্বাভাবিক এবং অবশ্যম্ভাবী। ফকীহ, মোফাস্সের, পণ্ডিতরা পাণ্ডিত্য জাহির কোরতে যেয়ে নানা মাযহাব ফেরকা সৃষ্টি কোরে ঐক্য ধ্বংস কোরে দিয়েছিলেন আর সুফীরা উম্মাহর হাত থেকে তলোয়ার ছিনিয়ে নিয়ে তসবিহ ধরিয়ে দিয়েছিলেন, সংগ্রামী চরিত্রই মিটিয়ে দিয়েছিলেন। কাজেই উম্মাহ আর লড়বে কি দিয়ে ইউরোপের বিরুদ্ধে? সুতরাং যা হবার তাই হলো। যে উম্মাহর উপর বিশ্বনবী (দ:) দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন সশস্ত্র সংগ্রাম কোরে সমস্ত পৃথিবীকে এই জীবন ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে এসে মানব জাতির মধ্যে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কোরতে, সেই জাতি তার সংগ্রামী চরিত্র হারিয়ে নিজেই অন্যের ক্রীতদাসে, গোলামে পরিণত হলো।
এখন দেখা দরকার এই জাতিটিকে পরাজিত কোরে দাসত্ব শৃঙ্খলে আবদ্ধ কোরে তাদের আল্লাহ প্রদত্ত আইন-কানুন নিষিদ্ধ কোরে মোশরেক ও কাফের বানানোর পর ইউরোপীয়ান জাতিগুলি তাদের প্রভুত্ব স্থায়ী করার জন্য কি কি ব্যবস্থা নিলো। এই নতুন প্রভুরা বোকা ছিলো না। তারা ভালোকোরেই জানতো যে, কোন জাতিকে তারা শৃঙ্খলিত কোরতে পেরেছে এবং কেন পেরেছে। বুদ্ধিমান শত্র“ বুঝছিলো যে, যে জাতির সামনে তারা একদিন ঝড়ের মুখে শুকনো পাতার মত উড়ে গিয়েছিলো তাদের তারা আজ পদানত কোরতে পেরেছে, কারণ জাতিটি তাদের জন্য যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট কোরে দেয়া ছিলো তা থেকে ভ্রষ্ট হোয়ে গিয়েছে এবং ঐ লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার ফলশ্র“তিতে তাদের বহির্মূখী ও বিস্ফোরণমুখী চরিত্র পরিবর্তীত হোয়ে অন্তর্মূখী হোয়ে জাতির গতি রুদ্ধ হোয়ে স্থবির হোয়ে গিয়েছে এবং এই গতিহীনতা ও স্থবিরত্বের অবশ্যম্ভাবী ফল জাতির পণ্ডিতরা তাদের জীবন ব্যবস্থা দীনের আদেশ নিষেধ গুলির চুলচেরা সুক্ষ্ম বিশ্লেষণ কোরে নানা রকম মাযহাব ও ফেরকা সৃষ্টি করার সুযোগ পেয়েছিলেন এবং বিকৃত ভারসাম্যহীন সুফীরা আত্মা ঘষামাজার নানা পন্থা তরিকা সৃষ্টি করার সুযোগ ও সময় পেয়েছিলেন। শত্র“ এও বুঝেছিলো যে, যতদিন তারা তাদের দাস জাতিটাকে ঐ লক্ষ্য ভুলিয়ে রাখতে পারবে, যতদিন এই জাতি তাদের দীনের ব্যবহারিক দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি নিয়ম কানুনের মসলা মাসায়েল পালন নিয়ে ব্যস্ত থাকবে, যতদিন তারা তাদের আত্মা পরিষ্কার, ধোয়া মোছায় ব্যাপৃত থাকবে ততদিন তাদের কোন ভয় নাই। কিন্তু একবার যদি এই জাতি কোনও ভাবে আল্লাহ ও তাদের নেতা (দ:) যে লক্ষ্য, যে দিক-নির্দেশনা হেদায়াত তাদের দিয়েছেন তা ফিরে পায় তবে ঠিক আগের মতই তারা আবার এই জাতির সামনে শুকনো পাতার মত উড়ে যাবে এবং তাদের প্রকৃত লক্ষ্যকে যদি তাদের সামনে থেকে আড়াল কোরে রাখতে হয় তবে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ কোরতে হবে। (চোলবে এনশা’ল্লাহ)

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ