Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

পাঠকের প্রশ্নের উত্তর: সনাতন ধর্মেও ধর্মব্যবসা নিষিদ্ধ


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Shonatona-dhormoহুমায়ূন কবির:

“ভারতীয় অবতার শ্রীকৃষ্ণ কে ছিলেন?” এই শিরোনামে আমার একটি গবেষণামূলক লেখা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই পাঠকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে অনেক ফোন পেয়েছি, অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, শ্রীকৃষ্ণ, বুদ্ধ এঁরা নবী ছিলেন এই বিষয়টি প্রকাশ করার উদ্দেশ্য কী? আমি পরবর্তীতে “ভারতীয় অবতারদের প্রসঙ্গে কেন লিখছি” শিরোনামে এর যথাযথ জবাব লেখি যা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
এই লেখাটি যখন শুরু করি তখন আমি জানতাম এই প্রশ্নগুলি আসবে, আমি এটাও জানতাম যে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আল্লাহ রসুলের প্রকৃত শিক্ষা এবং কোর’আনের প্রকৃত শিক্ষা থেকে যোজন যোজন মাইল দূরে সরে যেয়ে ধর্ম ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে ইসলামের এই বিকৃত চর্চা করার কারণে অধিকাংশ জনসংখ্যাই এই বিকৃত ইসলামের চর্চা কোরছে এবং কোরবে। যেটা ইসলাম নয়, যেটা রসুল বলেননি সেটাই তারা ইসলাম মনে কোরে চর্চা কোরছে। সনাতন ধর্মের (হিন্দু) মধ্যেও একই অবস্থা।
আমি যখন কৃষ্ণ (আ:), বুদ্ধ (আ:) এর সম্পর্কে লেখা শুরু কোরলাম তখন এটা আমার আশঙ্কা ছিলো যে মোসলেমদের মধ্য থেকে বিরোধিতা আসবে, সত্য না জানার কারণে। কৃষ্ণ (আ:) অবতার ছিলেন এটার প্রমাণ আমি করি নি, অনেক মনীষী কোরেছেন। আমি শুধু ঐ সকল মনীষীদের রেফারেন্স তুলে ধোরেছি এবং তারা যে বক্তব্য দিয়েছেন ঐ সব মতামত ও বক্তব্য বিচার-বিশ্লেষণ করে, বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ ও ইতিহাস থেকে যথেষ্ট যুক্তি প্রমাণ, তথ্য, উপাত্ত দিয়ে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে ভারতীয় অবতাররাও আল্লাহর প্রেরিত নবী ছিলেন। আমি ভেবেছিলাম সনাতন ধর্মের – হিন্দুরা অন্তত এটা গ্রহণ কোরবে, কিন্তু আমি যখন তাদের কাছ থেকেও ফোন পেলাম যে তাদের অনেকে এর প্রতিবাদ কোরছে, আমার মনে প্রশ্ন আসলো- তাহোলে তারা কারা! আমি আশ্চর্য হোলাম! তারপর আমার এই ধারণার অবসান হোল, যারা ধর্ম ব্যবসায়ী, ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি করে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষদের নানাবিধ কুমন্ত্রণা দিয়ে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য সন্ত্রাসবাদের জন্ম দেয়, প্রকৃত সত্য ঘটনা, প্রকৃত সত্য ইতিহাস প্রকাশ কোরতে দেয় না, দিতে চায় না, এরাই তারা।
সুপ্রিয় পাঠক, আমি প্রথমে শ্রীগীতা (শ্রী জগদীশ চন্দ্র ঘোষ এর সম্পাদনায় প্রেসিডেন্সি লাইব্রেরি, বঙ্কিম চ্যাটার্জি ষ্ট্রীট, কলিকাতা-৭৩ থেকে প্রকাশিত) জ্ঞানযোগ অধ্যায়ের অবতার – তত্ত্ব থেকে কিছু অংশ তুলে ধোরছি, “বেদান্তমতে ঈশ্বর কেবল এক নন, তিনি অদ্বিতীয়, একবেমাদ্বিতীয়ম্, তিঁনিই সমস্ত, তিঁনি ছাড়া আর কিছু নাই, তিঁনি জগদ্রƒপে পরিণত, সকলেই তাঁহার সত্তায় সত্তাবান, সকলেই তাঁহার মধ্যেই আছে, তিঁনি সকলের মধ্যেই আছেন, জীবমাত্রই নারায়ণ। কাজেই হিন্দুর পক্ষে অবতার-বাদ কেবল ভক্তি বিশ্বাসের বিষয়মাত্র নহে, উহা বেদান্তের দৃঢ় ভিত্তির উপরেই প্রতিষ্ঠিত।”
একজন অবতার হিসাবে শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্য ও কার্য্য
শ্রী ভগবান্ বলিতেছেন, “আমার অবতারের উদ্দেশ্য-
১. দুষ্কৃতকারীদিগের বিনাশ,
২. সাধুদিগের পরিত্রাণ ও
৩. ধর্মসংস্থাপন।
দ্বাপরযুগের শেষভাগে ভারতে ধর্মের গ্লানি উপস্থিত হইয়াছিল। সর্বত্র অধর্ম রাজত্ব করিতেছিল। সে সময়ে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ যেরূপ বর্ণনা করিয়াছেন তাহাতে বুঝা যায়, তখন ধর্মদ্রোহী দুর্বৃত্তগণের অত্যাচারে দেশে বিষম আতঙ্ক উপস্থিত হইয়াছিল।”
আল্লাহ কোর’আনে বোলছেন, “তিনিই তাঁহার রসুলকে
১. পথনির্দেশ ও
২. সত্য দীনসহ প্রেরণ করিয়াছেন,
৩. অপর সমস্ত দীনের উপর ইহাকে (আল্লাহর বিধান) জয়যুক্ত করিবার জন্য আর সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। [সুরা ফাতাহ্ – ২৮]
ইহাই আল্লাহ্র বিধান – প্রাচীন কাল হইতে চলিয়া আসিয়াছে, তুমি আল্লাহর বিধানে কোন পরিবর্তন পাইবে না। [সুরা ফাতাহ্ – ২৩]
সৃষ্টিকর্তা এক ও অদ্বিতীয় এ কথা সনাতন ধর্মে যারা বিশ্বাসী তারা শুধু বিশ্বাসই করে না এ মতবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত, অনুরূপভাবে মোসলেমরাও আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয় মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে এবং এর উপর প্রতিষ্ঠিত। চিন্তাশীল পাঠকগণ, যার মন উদার, তিনি একটু চিন্তা করে দেখুন, যিনি ঈশ্বর, সৃষ্টিকর্তা, আল্লাহ্কে আলাদা করে দেখেন না, যা একই সত্তার ভিন্ন নাম। তাহোলে কী দাঁড়ায়! সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ যুগে যুগে মানব

জাতির কল্যাণে, মানব যাতে পৃথিবীতে সুখ, শান্তিতে বসবাস করতে পারে, তাই তিঁনি (সৃষ্টিকর্তা) তাঁর মনোনীত প্রতিনিধির (অবতার, নবী – রসুল) মাধ্যমে দিক নির্দেশনা, জীবন বিধান দিয়ে পঠিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় মনু, যুধিষ্ঠির, কৃষ্ণ, মহাবীর, ঈসা এবং সর্বশেষ মোহাম্মদ (সা:) কে অবতার, নবী – রসুল উপাধি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। প্রত্যেককে পাঠানোর উদ্দেশ্য একই ছিলো, পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত যত মত পথ আছে, সব গুলোকে নির্মূল, উচ্ছেদ কোরে দিয়ে সৃষ্টিকর্তার পাঠানো জীবন বিধান প্রতিষ্ঠিত কোরে তা দিয়ে পৃথিবী পরিচালনা করা। কারণ আল্লাহর বিধানে কোন পরিবর্তন নাই।
তাই সনাতন ধর্মের অনুসারীরা প্রাচীন ভারতীয় সমাজ ধর্মশাস্ত্র (বেদ, গীতা, মনুসংহিতা প্রমুখ) দিয়েই সমাজনীতি, রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিবাহ প্রথা ইত্যাদি পরিচালনা করতো। ঐ সমস্ত ধর্মশাস্ত্রগুলো অবতারের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহই পাঠিয়েছেন। ধর্ম নিয়ে ব্যবসা, সৃষ্টিকর্তা পছন্দ করেন না তাই তিঁনি ধর্ম বাণিজ্য নিষেধ কোরেছেন।
মনুসংহিতা – একাদশ অধ্যায়
ন যজ্ঞার্থং ধনং শূদ্রাদ্ বিপ্রো ভিক্ষেত কর্হিচিৎ।
যজমানো হি ভিক্ষিত্বা চাণ্ডালং প্রেত্য জায়তে।।২৪।।
অনুবাদ: যজ্ঞের জন্য শূদ্রের নিকট ধন ভিক্ষা করা ব্রাহ্মণের কখনও কর্তব্য নয়। কারণ যজ্ঞ করতে মৃত্যুর পর প্রবৃত্ত হ’য়ে ঐভাবে অর্থ ভিক্ষা করলে চণ্ডাল হ’য়ে জন্মাতে হয়।
যজ্ঞার্থমথং ভিক্ষিত্বা যো ন সর্বং প্রয”্ছতি।
স যাতি ভাসতাং বিপ্রঃ কাকতাং বা শতং সমাঃ।।২৫।।
অনুবাদ: যে ব্রাহ্মণ যজ্ঞের জন্য অর্থ ভিক্ষা করে তার সমস্তটা ঐ কাজে ব্যয় করে না, সে শত বৎসর শকুনি অথবা কাক হ’য়ে থাকে।
দেবস্বং ব্রাহ্মণস্বং বা লোভেনোপহিনস্তি যঃ।
স পাপাত্মা পরে লোকে গৃধ্রোচ্ছিষ্টেন জীবতি।।২৬।।
অনুবাদ: যে লোক লোভবশত: দেবস্ব অর্থাৎ দেবতার ধন এবং ব্রহ্মণস্ব অর্থাৎ ব্রাহ্মণের ধন অপহরণ করে, সেই পাপিষ্ঠকে পরলোকে শকুনির উচ্ছিষ্ট ভোজন ক’রে জীবন ধারণ কোরতে হয়।
“নিশ্চয় আল্লাহ যে গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন যারা তা গোপন রাখে ও বিনিময়ে স্বল্পমূল্য গ্রহণ করে, তারা তাদের জঠরে আগুন ব্যতীত আর কিছুই পুরে না। উত্থানদিবসে (কেয়ামতের দিন) আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, এবং তাদের পবিত্র কোরবেন না। তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি আছে।” [কোর’আন সুরা বাকারা – ১৭৪] তারাই সুপথের বিনিময়ে কুপথ, এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করছে, আগুন সহ্যে তারা কতই না ধৈর্যশীল। [কোর’আন সুরা বাকারা – ১৭৫]
লেখক: প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট ও যামানার এমামের অনুসারী
[যোগাযোগ: ০১৭৩০০১৪৩৬১]