Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/og/includes/iworks/class-iworks-opengraph.php on line 331

একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ: বিভিন্ন ধর্মে ফেরেশতা ও দেবদেবীর ধারণা


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36
প্রচলিত ধারণামতে মালায়েক বা ফেরেশতা হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে আগন বিশেষ স্বর্গীয় দূত। কিন্তু আমাদের চারপাশেই যে কত মালায়েক রয়েছে তাদেরকে আমরা চিনিই না। বিভিন্ন প্রকৃতিক শক্তি যেমন- আলো, বাতাস, উত্তাপ ও বিভিন্ন অবুঝ প্রাণীগুলিও যে আল্লাহর মালায়েক তা আমরা অনেকেই জানি না।
প্রচলিত ধারণামতে মালায়েক বা ফেরেশতা হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে আগন বিশেষ স্বর্গীয় দূত। কিন্তু আমাদের চারপাশেই যে কত মালায়েক রয়েছে তাদেরকে আমরা চিনিই না। বিভিন্ন প্রকৃতিক শক্তি যেমন- আলো, বাতাস, উত্তাপ ও বিভিন্ন অবুঝ প্রাণীগুলিও যে আল্লাহর মালায়েক তা আমরা অনেকেই জানি না।

মূল: এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী:

পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থগুলি ও বিজ্ঞান একমত যে মানুষ সৃষ্টির বহু আগে স্রষ্টা এই বিপুল বিশ্ব-জগত সৃষ্টি কোরেছেন। এই বিশাল সৃষ্টিকে তিনি প্রশাসন ও পরিচালনা কোরতেন এবং করেন তাঁর অসংখ্য মালায়েকদের দিয়ে যাদের আমরা বোলি ফেরেশতা-ফারসি ভাষায়, ইংরেজিতে অহমবষ। বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ, প্রচলিত বিশ্বাস, পৌরাণিক মিথ এবং ইতিহাসসহ যাবতীয় তথ্য উপাত্ত ইত্যাদি একত্র কোরে গবেষণা কোরলে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে, ভারতীয়, রোমান এবং গ্রীকরা যে দেব-দেবী মড়ফং, মড়ফফবংং বিশ্বাস করেন সেগুলো এবং মালায়েক বা ফেরেশতা একই জিনিস। সংখ্যায় এরা অগণ্য এবং এরা আসলে প্রাকৃতিক শক্তি, যে শক্তি দিয়ে আল্লাহ তাঁর সমস্ত সৃষ্টিকে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে পরিচালনা করেন এবং এদের কোন ইচ্ছাশক্তি নেই। আল্লাহ যাকে যে নিয়ম বেঁধে দিয়েছেন, যাকে যে কর্তব্য নির্ধারণ কোরে দিয়েছেন; সে ফেরেশতা সামান্যতম বিচ্যুতি না কোরে তা যথাযথ কোরে যাচ্ছেন। আসলে কোন বিচ্যুতি হোতে পারে না- কারণ প্রাকৃতিক শক্তিগুলির কোন স্বাধীন ইচ্ছাই নেই। যেমন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি একটি মালায়েক। এর উপর স্রষ্টা কর্তব্য নির্ধারণ কোরে দিয়েছেন সমস্ত কিছুকে আকর্ষণ কোরে ধরে রাখার। সৃষ্টির প্রথম থেকে এই ফেরেশতা তার কর্তব্য কোরে যাচ্ছেন এবং শেষ পর্যন্ত কোরে যাবেন। তার এতটুকু ইচ্ছা শক্তি নেই যে, এক মুহূর্তের এক ভগ্নাংশের জন্যও তিনি এই কাজের বিরতি দেন, সে ইচ্ছাশক্তি আল্লাহ তাকে দেন নি। এমনি আগুন, বাতাস, পানি, বিদ্যুৎ ইত্যাদি সমস্ত প্রাকৃতিক শক্তিগুলি- ফেরেশতা, দেব-দেবী, অন্যান্য ধর্মে যেমন দেব-দেবীরা কোন না কোন প্রাকৃতিক শক্তির ভারপ্রাপ্ত, যেমন হিন্দু শাস্ত্রে বরুণ বাতাসের দেবতা, সূর্য একটি দেবতা- সূর্যদেব, গ্রীকদের নেপচুন সমুদ্রের, পানির দেবতা, রোমানদের ভালকান হোচ্ছেন আগুনের দেবতা, তেমনি ইসলাম ধর্মেও বিভিন্ন কাজে অসংখ্য ফেরেশতা নিয়োজিত আছেন। আজরাইলকে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন মানুষের মৃত্যুর সময় এলে জান কবজ করার। এই ফেরেশতা ত্র“টিহীনভাবে তার দায়িত্ব পালন কোরে যাচ্ছে, এক মুহূর্তের জন্যও তার সাধ্য নেই এই কাজ থেকে বিরত থাকার। সনাতন ধর্মে এই মৃত্যুদূতকে বলা হয় যমরাজ, জোরাস্ট্রিয়ান ধর্মে বলা হয় মারিয়া। গ্রীক পুরাণে আকাশ ও বজ্রের দেবতা হোচ্ছেন দেবরাজ জিউস, আর বৈদিক ধর্মে দেবরাজ বলা হয় ইন্দ্রকে যার অস্ত্রও সেই বজ্র। ইসলাম ও বাইবেল মতে মিকাইল (মাইকেল) নিয়োজিত বৃষ্টি ঝরানোর কাজে, বজ্রও তার নিয়ন্ত্রণে। এভাবে জিব্রাইল, এস্রাফিল, কেরামান-কাতেবিন তারাও অনবরতভাবে তাদের দায়িত্ব পালন কোরে চোলেছে। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থগুলিতে সংস্কৃত/পালি ভাষায় এদের বোঝাতে শব্দ ব্যবহৃত হোয়েছে দেব (উবাধ), দেবতা, দেবপুত্র ইত্যাদি। আরও ব্যাপারে মিল আছে। সব ধর্ম মতেই এরা সংখ্যায় বিশাল-স্বভাবতঃই, কারণ এই অসীম সৃষ্টিতে প্রাকৃতিক শক্তিও অসংখ্য। ভারতীয় ধর্মগুলিতে এদের সংখ্যা ধরা হয় তেত্রিশ কোটি। সংস্কৃতে কোটি শব্দের সংখ্যাবাচক অর্থ ছাড়াও আরো অনেক অর্থ আছে। সংস্কৃতে কোটি শব্দের অর্থ হোল অনন্ত, চরম, অসংখ্য, অসীম, কল্পনা (বিশাল ধারণা)।
খ্রিস্টানরাও এদের সংখ্যা বলেন কোটির অংকে। ত্রয়োদশ শতাব্দীর যাজক পণ্ডিত এ্যালবার্টাস ম্যাগনাস (অষনবৎঃঁং গধমহঁং) তো হিসেব কোরে (কেমন কোরে হিসাব কোরলেন আল্লাহই জানেন) বের কোরেই ফেললেন যে অহমবষ অর্থাৎ ফেরেশতার সঠিক সংখ্যা হোচ্ছে ঊনচল্লিশ কোটি, নিরানব্বই লক্ষ, বিশ হাজার চার জন- হিন্দুদের চেয়ে সাত কোটির মতো বেশি। জাপানের শিনটো ধর্মে দেব-দেবীর সংখ্যা আশী লক্ষ। মেরাজে যেয়ে বিশ্বনবী মোহাম্মদ (দ:) দেখেছিলেন যে, বায়তুল মামুর মসজিদে হাজার হাজার ফেরেশতারা একদিক দিয়ে ঢুকছেন, সালাহ কায়েম কোরে আরেক দিক দিয়ে বের হোয়ে যাচ্ছেন। তাদের সংখ্যা সম্বন্ধে বোলতে যেয়ে তিনি বোলেছেন একবার যারা সালাহ কায়েম কোরে বের হোয়ে যাচ্ছে তাদের আর দ্বিতীয় বার সালাহ কায়েম করার সুযোগ আসবে না (হাদিস- আনাস (রা:) থেকে সাবেত আল বুতানী, মোসলেম, মেশকাত) অর্থাৎ অসংখ্য। অসীম সময় থেকে আল্লাহ তাঁর বিশাল সৃষ্টিকে তাঁর অসংখ্য মালায়েকদের (প্রাকৃতিক শক্তি) দিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে প্রশাসন ও পরিচালনা কোরে আসছিলেন। তারপর এক সময়ে তাঁর ইচ্ছা হোল মানুষ সৃষ্টির। তাঁর এই ইচ্ছা কেন তা আমার জানা নেই। কারো জানা আছে কিনা তাও জানা নেই। তাঁর বাণীতে তিনি কিছু আভাস মাত্র দিয়েছেন। একবার বোলেছেন- এ সৃষ্টি আমি সময় কাটাবার জন্য কোরি নি (সুরা আল মুল্ক)। অবশ্যই- কারণ সময়ই যার সৃষ্টি তার আবার তা কাটাবার প্রশ্ন কোথায়? আবার বোলেছেন- তিনি পরীক্ষা কোরে দেখতে চান তোমাদের মধ্যে কারা ভালো কাজ করে (সুরা আল মুল্ক)। মোট কথা একমাত্র তিনিই জানেন, কেন তিনি এই বিশ্বজগৎ ও বিশেষ কোরে একাধারে তাঁর শ্রেষ্ঠ ও সর্বনিকৃষ্ট সৃষ্টি মানুষ সৃষ্টি কোরলেন (সুরা আত্ ত্বীন ৪-৫) কিন্তু এ সত্য এড়াবার উপায় নেই যে সৃষ্টি তিনি কোরেছেন। ঐ সময়টার কথা বোলতে যেয়ে তিনি কোর’আনে আমাদের যা বোলেছেন তা এই যে, যখন আল্লাহ তাঁর মালায়েক অর্থাৎ ফেরেশতাদের বোললেন যে আমি পৃথিবীতে আমার প্রতিনিধি সৃষ্টি কোরতে ইচ্ছা কোরেছি তখন তারা বোললেন- কী দরকার তোমার প্রতিভূ সৃষ্টি করার? ওরাতো পৃথিবীতে ফাসাদ, অশান্তি আর রক্তপাত কোরবে (কোর’আন-সুরা আল বাকারা ৩০)। মালায়েকদের এই উত্তরের মধ্যে নিহিত রোয়েছে সৃষ্টি রহস্যের একটা বড় অংশ। কাজেই এটাকে একটু ভালোভাবে বুঝে নেয়া যাক।
ইসলাম, জুডিয় ও খ্রিস্টান ধর্মমতে আদমের (আ:) এক ছেলে কাবিল আরেক ছেলে হাবিলকে হত্যা কোরেছিল। ঐ প্রথম রক্তপাত থেকে যে রক্তপাত মানুষ জাতির মধ্যে শুরু তা আজ পর্যন্ত থামে নি। বরং এই অশান্তি ও রক্তপাত আজ পর্যন্ত মানুষজাতির জন্য সর্বপ্রধান সমস্যা হোয়ে আছে। শত চেষ্টা কোরেও, লীগ অব নেশনস কোরেও, কোটি কোটি মানুষের বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও শুধু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেই প্রায় সাড়ে আট কোটি আদম সন্তান জীবন হারায়। এদের মধ্যে সাড়ে পাঁচ কোটিই হোল বেসামরিক মানুষ। তৎকালীন বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অনুপাতে এই নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় শতকরা ৪ জন। পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ছিল এটি। তবে বর্তমান পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। নতুন এই শতাব্দীতে যুদ্ধ-রক্তপাতহীন একটি দিনও অতিবাহিত হয় নি। এই শতাব্দীর শুরুতে শুধু এক ইরাকেই দশ লক্ষাধিক মানুষ যুদ্ধের বলি হয়। সামান্য পরিমাণ মানবতাবোধ না থাকার দরুন অবুঝ শিশু, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, গর্ভবতী মহিলারা পর্যন্ত এই সকল যুদ্ধের নৃশংসতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। পৃথিবীর এমন কোন জায়গা নেই যেখানে মানুষ শান্তিতে বসবাস কোরছে। যতোই দিন যাচ্ছে মানবজাতি ততোই ফাসাদ-সাফাকুদ্দিমার নতুন নতুন পর্ব অতিক্রম কোরে ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগিয়ে চোলেছে। মালায়েকরা যে দু’টি শব্দ মানুষ সৃষ্টির বিরুদ্ধে ব্যবহার কোরেছিলেন তার একটা ফাসাদ, যার অর্থ অবিচার, অশান্তি, অন্যায় ইত্যাদি। অন্যটি সাফাকুদ্দিমা অর্থাৎ রক্তপাত। দু’টো মিলিয়ে অর্থ দাঁড়ায় মানুষ অন্যায়, অশান্তি আর রক্তপাত কোরবে। সত্যই তাই হোয়েছে, আদমের (আ:) ছেলে থেকে আজ পর্যন্ত শুধু ঐ রক্তপাতই নয়, অশান্তি, অন্যায়, অবিচারও বন্ধ হয় নি, এবং তখন থেকে আজ পর্যন্ত মানব জাতির জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা এই অন্যায়, অশান্তি, অবিচার আর রক্তপাত। শুধু তাই নয়, এই সমস্যাই মানুষ জাতিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে যে আজ তার অস্তিত্বই প্রশ্ন হোয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্বসাকুল্যে একথা বলা যায় যে, মানুষ সৃষ্টির বিরুদ্ধে মালায়েকরা যে যুক্তিগুলো আল্লাহর কাছে পেশ কোরেছিলেন তার প্রত্যেকটি বর্তমানে অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত হোচ্ছে।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ