Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/og/includes/iworks/class-iworks-opengraph.php on line 331

আমার ধর্ম


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36
কাজী নজরুল ইসলাম:

kazi-nazrul-islam_1436779885-259x300দেশে একটা কথা উঠেছে যে, মুক্তির জন্য যে আন্দোলন আমরা চালাচ্ছি আমাদের তা ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত করে নিতে হবে। দেশে যখন মুক্তির জন্যে ভাঙ্গ ভাঙ্গ বলে রব করে লাখ লাখ লোক আগল ভেঙ্গে বেরিয়ে এল, তখন তারা এক নতুনভাবে মাতোয়ারা হয়ে মানুষের মত মানুষ দেখে তার পেছনে পেছনে চলতে লাগল। কিন্তু আজ যখন তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হ’ল তখন তাঁর মতের ব্যাখ্যা নিয়ে তর্ক উঠে সংঘ ভেঙ্গে যাবার যোগাড় হ’ল। এমনি করেই বুদ্ধের পরই সংঘ থেকে জীবন চলে গিয়েছিল, পড়েছিল শুধু বাইরের একটা আচার। ঠিক তেমনি আজ যেন আমাদের ভিতর থেকে প্রাণটুকু বেরিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে তার্কিকেরা তাকে ধরে রাখবার কোন চেষ্টাই করেছেন না। কেউ কেউ এত বেশী গোঁড়া আর সাবধানী হয়ে পড়েছেন, কিন্তু ধ্বংসকে ডেকে আনবার মত সাহস বা ক্ষ মতা তাদের আছে বলে মনে হয় না। কারণ আমাদের মনে তো কই সাড়া খুঁড়ে পাচ্ছি না।
আমরা শুনতে পাচ্ছি যে, আমাদের ধর্মের ভিতর দিয়ে চলতে হবে। কিসের জন্যে আমাদের ধর্মকে আশ্রয় করতে হবে? ওরে শুদ্র, তুই এবার ওঠ। উঠ বল্, ‘আমি ব্রাহ্মণ নয় যে ধর্মের ব্যাখ্যা নিয়ে পড়ে থাকব। আমি তোমার মুখের দিকে চেয়ে থাকব না। আমায় বাঁচতে হবে যেমন করে হোক আমি বাঁচবো।’ ওরে পতিত, ওরে চিরলাঞ্ছিত, তুই দেখ সারা বিশ্ব তোকে ধ্বংস করতে উদ্যত। দেবতা তাঁর জল ঝড় নিয়ে, প্রকৃতি তার রোগ মহামারী নিয়ে তোকে পিষে ফেলতে ব্যস্ত। আচার তার জগদ্দল পাথর তোর বুকে বসিয়ে দিয়েছে সমাজ তোর কণ্ঠরোধ করে ফেলেছে। ধনীর অট্টহাস্য তোর প্রাণের করুণ কাঁদুনী ঢেকেছে।
কিসের ধর্ম? আমার বাঁচাই আমার ধর্ম। দেবতার জল ঝড়কে আমি বাঁধবো, প্রকৃতিকে ধ্বংস করবো। সব ছারেখারে দিয়েও আমি বাঁচবো।
আমার আবার ধর্ম কি? যার ঘরে বসে কথা কইবার অধিকার নেই, দুপুর রাতে দুঃস্বপ্নে যার ঘুম ভেঙ্গে যায়, অত্যাচারকে চোখ রাঙ্গাবার যার শক্তি নেই, তার আবার ধর্ম কি? যাকে নিজের ঘরে পরে এসে অবহেলায় পশুর মত মেরে ফেলতে পারে, যার ভাই বোন বাপ মাকে মেরে ফেললেও বাক্যস্ফুট করবার আশা নাই, তার আবার ধর্ম কি? দু’বেলা দুটি খাবার জন্যই যার বাঁচা, একটু আরাম করে কাল কাটিয়ে দেবার জন্যেই যার থাকা, তার আবার ধর্ম কি?
মানুষের দাস তুমি, তোমার আবার ধর্ম কি? তোমার ধর্মের কথা বলবার অধিকার কি?
ওরে আমার তরুণ, ওরে আমার লক্ষ্মীছাড়ার দল, তোরা আয়, তোরা ছুটে আয় এই ভণ্ডামী থেকে চলে আয়। তোরা বল্, আমাদের আগে বাঁচতে হবে। কিসের শিক্ষা? কে শেখাবে? দাস কখনও দাসকে শেখাতে পারে? আমরা কিছু শিখবো না, আমরা কিছু শুনবো না; আগে বাঁচবো আমরা বাঁচবো।
একবার মনে ভেবে দেখ তাদের কথা ভেবে দেখ। দেশছাড়া লক্ষ্মীছাড়ার দল আজ কোন্ বনে বনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কে জানে তারা কত মরে গেছে, কত ঘা সয়েছে। তারা ত কথাটি কয়নি। সেই কবে গৃহহীন হয়ে প্রবাস বরণ করে, হাটে মাঠে বেড়াচ্ছে, তবু তারা কথাটি কয়নি। তাদের তপ্তশ্বাস আজ কি তোমার বুকে বয়ে যাচ্ছে না? তুমি যে পথ দিয়ে দিনের পর দিন শুধু সুখের সন্ধানে চলে যাও, তারই একপাশে বদ্ধ ঘরে তারা যে দিনের পর দিন তিল তিল করে মরতে চলেছে, সে খবর তুমি রাখ কি? সেই অন্ধকারে সহস্র আঘাত খেয়ে তারা যে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিয়েছে, তাদের ধর্ম কি?
তারা বুঝেছে বাঁচাই তাদের ধর্ম তারা জানে এই তিল তিল করে মরার ভিতরেই জীবন। তাই তারা ঐ মরণের পথ বেছে নিয়েছে।
ওগো তরুণ, আজ কি তুমি ধর্ম নিয়ে পড়ে থাকবে তুমি কি বাঁচবার কথা ভাববে না? ওরে অধীন, ওরে ভণ্ড তোর আবার ধর্ম কি? যারা তোকে ধর্ম শিখিয়েছে, তারা শত্রু এলে বেদ নিয়ে পড়ে থাকতো? তারা কি দুশমন এলে কোরআন পড়তে ব্য থাকতো? তাদের রণ কোলাহলে বেদমস্ত্র ডুবে যেত, দুশমনের খুনে তাদের মসজিদের ধাপ লাল হয়ে যেত।
তারা আগে বাঁচতো।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
জনপ্রিয় পোস্টসমূহ