Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

আমরা শুধু আহ্বান করতে পারি, জোর করতে পারি না


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

রাকীব আল হাসান
প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে মানুষের কষ্টের করুণ চিত্র, অপরাধীদের দৌরাত্ম্য, দুর্বল মানুষের উপর সবলের নির্যাতন, নিপীড়নের হৃদয়বিদারী বর্ণনা। দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্মব্যবসা, অপরাজনীতি, হত্যা, ধর্ষণ, ঘুষ, চাঁদাবাজি, অনিয়ম, সুদ, অর্থনীতিক অবিচার এক কথায় সর্বরকম অপরাধ যেন ধাঁই ধাঁই করে বেড়ে চলেছে। আমরা তো এ সমাজেরই মানুষ, সমাজ যদি ধ্বংস হয়ে যায়, বসবাসের অযোগ্য হয়ে যায় তাহলে আমরাও তো বিপদে পড়ব, আমাদের জীবনও তো সঙ্কটাপন্ন হবে। কাজেই সমাজের এ অসঙ্গতিগুলো দেখে, মানুষের এই কষ্ট দেখে আমরা নিশ্চুপ, নির্বিকার বসে থাকতে পারি না। তা ছাড়া মহান আল্লাহ আদমকে অর্থাৎ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর খলিফা বা প্রতিনিধি হিসাবে (সুরা বাকারা- ৩০), মানুষকে দায়িত্বই দিয়েছেন আল্লাহর পক্ষ থেকে আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী মানবসমাজ পরিচালনার মাধ্যমে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, অশান্তি দূর করা এবং ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এ দায়িত্ব প্রতিটা মানুষের। আমরা যদি এ মহান দায়িত্ব পালন না করি তাহলে অতি অবশ্যই হাশরের দিন মহান আল্লাহর নিকট জবাবদিহি করতে হবে। কাজেই আমরা হেযবুত তওহীদ আন্দোলন এ দায়িত্বটি কাঁধে তুলে নিয়েছি। এটা একদিকে আমাদের উপর আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব অন্যদিকে সমাজের মানুষ হিসাবে সামাজিক কর্তব্য।
আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় সৃষ্টি মানুষ আজ একে অন্যের রক্তে হলি খেলছে, একে অন্যের সাথে প্রতারণা করছে, ক্ষুদ্রস্বার্থে একে অন্যের উপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে, পূর্বপুরুষের আবাস ভূমি থেকে বিতাড়িত করছে, অকথ্য নির্যাতন করছে, কৃত্রিম দুর্ভিক্ষে ফেলে নারী-শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, আগুনে পুড়িয়ে মারছে, বোমার আঘাতে লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে, পানিতে ডুবিয়ে মারছে। যাদের মনে এখনো মায়া আছে, মমতা আছে, করুণা আছে, ধর্ম আছে, মানবতা ও মনুষ্যত্ব আছে তাদের হৃদয় হাহাকার করছে, তাদের মন বিক্ষুব্ধ হচ্ছে, প্রতিবাদে তাদের হস্ত মুষ্টিবদ্ধ হচ্ছে, মানুষের এ দুঃখ-কষ্ট দূর করার জন্য তারা চিন্তা করছে, পথ খুঁজছে কিন্তু এ সমস্যা সমাধানের কোনো উপায় তাদের জানা নেই। অনেকে অনেকভাবে চেষ্টা করছে কিন্তু ফল হচ্ছে উল্টো কারণ পথ ভুল হলে গন্তব্যে পৌঁছানো অসম্ভব। মহান আল্লাহ পাকের অশেষ রহমে সেই সঠিক পথ আমরা পেয়েছি, তিনি আমাদেরকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন।
এই যাবতীয় অশান্তির মূল কারণ হলো আল্লাহর হুকুম, বিধান, আইন, দণ্ডবিধি, অর্থনীতি এক কথায় তাঁর দেওয়া জীবনব্যবস্থা পরিত্যাগ করে পাশ্চাত্য বস্তুবাদী স্রষ্টাহীন ‘সভ্যতা’র তৈরি আইন, বিধান, দণ্ডবিধি, অর্থনীতি তথা সার্বিক জীবনব্যবস্থাকে আলিঙ্গন করে নেওয়া। এখন আমরা যদি আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাজে আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠা করতে পারি, সবাই যদি এই কথার উপর ঐক্যবদ্ধ হতে পারি যে, আমরা আল্লাহর হুকুম ছাড়া কারো হুকুম মানব না তাহলে আবারও সমাজে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। এখন প্রশ্ন হলো এ ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী? আমরা তো আর জোর করে সমাজ পরিবর্তন করতে পারব না, মানুষের উপর আল্লাহর হুকুম চাপিয়ে দিতে পারব না, মনের উপরে জোর চলে না, আমরা কেবল মানুষকে বোঝাতে পারি, মানুষকে আহ্বান করতে পারি। এটাই নবী-রসুলগণের শিক্ষা।
নুহ (আ.)কে আল্লাহ যখন নব্যুয়ত দিয়ে পাঠালেন তখন তিনি মানুষকে এই কথার দিকেই আহ্বান করতে লাগলেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা নেই, তোমরা আল্লাহর হুকুম মেনে নাও। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করল। আল্লাহর নবী নুহ (সা.) অবিশ্রান্তভাবে সবরের সাথে মানুষকে কেবল আল্লাহর পথে ডাকতে লাগলেন। এটা করতে গিয়ে তিনি শত্রুদের দ্বারা কঠিন তিরস্কৃত হলেন, অপমান সহ্য করলেন, লাঞ্ছনা সহ্য করলেন কিন্তু এ পথ পরিত্যাগ করলেন না। এভাবে সাড়ে ৯ শত বছর তিনি বালাগ চালিয়ে গেলেন। অবশেষে আল্লাহর সিদ্ধান্ত এল। আল্লাহ অবাধ্য জাতিকে ধ্বংস করে দিলেন। আবার আমাদের প্রিয় নবী মোহাম্মদ (সা.) যখন মহান আল্লাহর নিকট থেকে নব্যুয়ত প্রাপ্ত হলেন, সত্যপথ প্রাপ্ত হলেন তখন তিনি সাফা পাহাড়ে দাঁড়িয়ে বললেন, “হে মানবসকল, তোমরা বলো- আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা নেই, তাহলে তোমরা সফলকাম হবে।” তাঁর পরিবার থেকেই শুরু হলো বিরোধিতা, তাঁর চাচা আবু লাহাব বলে উঠল “তাব্বালাকা ইয়া মোহাম্মদ- মোহাম্মদ ধ্বংস হোক।” যতদিন রসুলাল্লাহ (সা.) মক্কায় ছিলেন ততদিন রসুলাল্লাহ (সা.) ও তাঁর সঙ্গী-সাথীদের উপর চলেছে অবর্ণনীয় নির্যাতন, নিপীড়ন। তিনি মক্কায় ১৩ বছর শত নির্যাতন সহ্য করে কেবল মানুষকে এই একটি কথাই বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, তোমরা যদি আল্লাহর হুকুম মেনে নাও তাহলে তোমাদের সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং আখেরাতে তোমরা জান্নাত পাবে। তিনি কিন্তু কারো উপর জোর করে এই মতকে চাপিয়ে দেননি, কেবল বুঝিয়ে গিয়েছেন। যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে, বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে, বক্তৃতা করে সর্ব উপায়ে কেবল এই সত্যটি বুঝিয়ে গিয়েছেন। তবু যখন মক্কার মানুষ এটা মেনে নেয়নি তখন তিনি আল্লাহর নির্দেশে মদীনাতে গেলেন, সেখানকার মানুষ তাঁকে গ্রহণ করল, তারা আল্লাহর হুকুমকে মেনে নিল। ফলস্বরূপ তাদের সমাজে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলো। অল্পকিছুদিনের মধ্যে নতুন এক সভ্যতার জন্ম হলো, পৃথিবীর শিক্ষকের জাতিতে পরিণত হলো সেই নবসৃষ্ট উম্মতে মোহাম্মদী। সামরিক শক্তিতে, নতুন নতুন বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে, শিক্ষা-সংস্কৃতি, অর্থনীতি সমস্ত দিক দিয়ে এই জাতি হয়ে গেল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ।
আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই আল্লাহর দেওয়া পদ্ধতি ও রসুলের দেখানো পথ, আদর্শ অনুসরণ করেই সেটা করতে হবে। তাই আমরাও চেষ্টা করে যাচ্ছি বিভিন্নভাবে মানুষকে এই সত্যটি বোঝাতে যে, আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া সমাজে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি আসবে না। এখন মানুষ যদি এই সত্য গ্রহণ করে নেয় তাহলে তারা এই জগতে শান্তিময় সমাজ পাবে ও পরকালে জান্নাত পাবে আর যদি মানুষ প্রত্যাখ্যান করে তাহলে এ জগতে যেমন অন্যায়, অবিচারে নিমজ্জিত আছে তেমনি পরকালেও জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে হবে। আমরা একদল প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন নারী-পুরুষ নিয়ে মাঠে নেমেছি। শত প্রতিবন্ধকতা সত্তে¡ও মানুষকে সত্যের দিকে আহ্বান করে যাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি আজ যেমন মানবজাতি দাজ্জালকে অনুসরণ করে চ‚ড়ান্ত অশান্তিতে নিমজ্জিত হয়েছে, আবারও মানুষ সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে পৃথিবীকে শান্তিতে ভরে তুলবে। এর জন্য একদল নারী-পুরুষকে অকল্পনীয় ত্যাগ-কোরবানি স্বীকার করতে হবে।
আমাদেরকে অনেকেই ভুল বুঝতে পারেন অথবা ধর্মব্যবসায়ীরা আমাদের ব্যাপারে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে ভুল ধারণা তৈরি করতে পারে, সেটা আমরা জানি। সেটার জন্য আমাদেরকে নির্যাতিত হতে হবে, নিপীড়িত হতে হবে, গালি খেতে হবে তাও জানি এবং সেটা আমরা সহ্য করেও যাচ্ছি। কষ্ট লাগে এখানে যে, যাদের জন্য এই কষ্ট করছি তারাই অনেকে গালি দিচ্ছে আবার আনন্দ লাগে এজন্য যে, অতীতে যারাই এ সত্য নিয়ে দাঁড়িয়েছে তারাই এভাবে গালি খেয়েছে, আমরাও তাদের পথে থাকতে পারছি। [লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট; ফেসবুক: https://www.facebook.com/rblee77

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ