Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

অন্যায়ের বিরুদ্ধে আলেমদের নীরবতাই তাদের ধ্বংসের কারণ


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

^80796A0F1443BDF86A9BFF5B167DC1D29088E357B3019BDCC9^pimgpsh_fullsize_distrশফিকুল আলম উখবাহ:

আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে মর্যাদায় সমুন্নত করবেন। আর তোমরা যা কর আল্লাহ সে স¤পর্কে সম্যক অবহিত।’ (সুরা মুজাদালা, আয়াত: ১১)। কিন্তু এ মর্যাদার বেলায় একজন সাধারণ মো’মেনের তুলনায় একজন জ্ঞানী মো’মেনের অর্থাৎ আলেমের মর্যাদা অনেক বেশি এ কথা আল্লাহর রসুল অনেকবার বলে গেছেন। আল্লাহও বলেছেন, ‘যারা জানে (আলেম) এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? (সুরা জুমার: ৯)।
সুতরাং আমরাও সত্যিকার আলেমদের শ্রদ্ধা করি। কিন্তু পেশাদার আলেমগণ অর্থাৎ ধর্মব্যবসায়ীদেরকে আল্লাহ অপবিত্র ও জাহান্নামী বলে ঘোষণা করেছেন বলে আমরাও তাদেরকে বলি, ধর্মব্যবসা পরিহার করে হালাল উপার্জন করার জন্য এবং তাদের জ্ঞানকে মানবতার কল্যাণে ব্যবহার করার জন্য। কারণ এর মধ্যেই আলেমের প্রকৃত মর্যাদা নিহিত। আল্লাহর রসুল বলেছেন, আলেমের কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র। এর কারণ হচ্ছে, ঐ কলমের কালি মানবতার কল্যাণে আত্মোৎসর্গকারী অসংখ্য শহীদের জন্ম দিতে সক্ষম। কোনো আলেম দাবিদার যদি নিজেই নিজের জীবন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় তথা মানুষের কল্যাণে ব্যয় করতে অসম্মত হন, তাহলে তার ঐ জ্ঞানের দ্বারা মানবজাতির কোনো কল্যাণের সম্ভাবনা থাকে না। অমন আলেমকে জ্ঞানী না বলে জ্ঞানপাপী বলা হয়ে থাকে, তাদের এই জ্ঞান তামসিক জ্ঞান ছাড়া কিছুই নয়। আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে ধর্মব্যবসাকে হারাম করা সত্ত্বেও তারা জাহান্নামের আগুনের ব্যাপারে নির্ভীক, আল্লাহর ভাষায়- ‘আগুন সহ্য করতে তারা কতই না ধৈর্যশীল।’ (সুরা বাকারা ১৭৪)। অথচ আলেমদের প্রধান বৈশিষ্টই হচ্ছে তারা আল্লাহকে, তথা আল্লাহর শাস্তিকে, জবাবদিহিকে ভয় করবে। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা আলেম তারাই তাঁকে অধিক ভয় করে (ফাতির : ২৮)।
বর্তমানে আমাদের সমাজে আলেম বলতে তাদেরকেই বোঝানো হয় যারা মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে দাখেল, ফাজেল, কামেল ইত্যাদি সার্টিফিকেট অর্জন করে মসজিদে মাদ্রাসায় চাকুরি করেন, দীনের মাসলা-মাসায়েলের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে জাতির মধ্যে ফেরকা-মাযহাবের বিভক্তি জিইয়ে রাখেন, ফতোয়াবাজির নামে অনধিকারচর্চা করেন, সুন্নতি লেবাসের নামে আরবিয় পোশাক আশাক পরেন, দাড়ি-টুপি ধারণ করেন, ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করেন ইত্যাদি। কিন্তু আল্লাহর দৃষ্টিতে এরা প্রকৃত আলেম নন, তারা ধর্মব্যবসায়ী। সুতরাং সম্মান করার আগে সত্যিকার আলেমদেরকে চিনতে হবে।
বর্তমানে এক শ্রেণির আলেম দাবিদারদের অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না। লেবাস, সুরত ধারণ করে এবং ধর্মগ্রন্থ মুখস্থ করে তারা নিজেদেরকে খুব জ্ঞানী ভাবতে শুরু করেন যা স্পষ্ট অহংকার। হেযবুত তওহীদের এমাম এবং সদস্য সদস্যারা অধিকাংশই মাদ্রাসা শিক্ষিত নন বলে ধর্মব্যবসায়ী আলেমগণ হেযবুত তওহীদের সত্য প্রতিষ্ঠার কাজের বিরোধিতা করেন, অথচ প্রকৃতপক্ষে আমরা যে কাজটি করছি সেই কাজ করার কথা ছিল তাদের। আমরা স্বীকার করি যে, তাদের ধর্মজ্ঞান আছে, কোর’আনের অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ও তাদের নখদর্পণে, হাদিসশাস্ত্রও মুখস্থ। ফিকাহ-তাফসীর সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়েলের জ্ঞানের দিক দিয়েও আমাদের সঙ্গে তাদের তুলনা চলে না। তারা অতি নিষ্ঠাসহকারে নামাজ, রোজা, এবাদত-উপাসনা ইত্যাদি আমল করে থাকেন। কিন্তু আমাদের কথা হলো- এতকিছু সত্ত্বেও তাদের এই এলেম, আমল, এবাদত-উপাসনা অর্থহীন, কারণ মানুষের প্রকৃত এবাদত হচ্ছে মানবজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, সে ব্যাপারে তাদের কোনো অবদান নেই। সমাজে যখন একজন নারীর শ্লীলতাহানি হয়, মানুষ যখন দু®কৃতকারীদের ভয়ে আতঙ্কে ঘরের বাইরে বের হয় না, তখন সেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই মুখ্য এবাদতে পরিণত হয়। এই এবাদত না করে যতই তাহাজ্জুদ পড়া হোক, ঈদ-কোরবানি, তারাবির নামাজ, রোজা, উপাসনা করা হোক তার কোনোই দাম থাকে না। ব্যক্তিগত এবাদত বন্দেগী করে জান্নাতে যাওয়ার তখন কোনো সুযোগ থাকে না। মনে রাখতে হবে, এলেম বা সত্যের জ্ঞান যখন কেউ প্রাপ্ত হয় সে আল্লাহর তরফ থেকেই প্রাপ্ত হয়। আল্লাহ এই জ্ঞান কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে সমগ্র মানবজাতিকেই দান করেন। সৃষ্টির সূচনালগ্নে তিনি আদম (আ.) কে সকল বস্তুর নাম শিক্ষা দিয়েছিলেন মানেই জ্ঞান দান করেছিলেন যে জ্ঞান কেয়ামত পর্যন্ত তাঁর সন্তানদের মস্তিষ্কে একটু একটু করে বিকশিত হবে এবং যার দ্বারা মানবজাতি সমসাময়িক সমস্যার উত্তর খুঁজে পেয়ে কল্যাণপ্রাপ্ত হবে। একটি নদীর প্রবাহে যেমন কোনো ব্যক্তির মালিকানা স্বীকৃত হতে পারে না, তেমনি জ্ঞানও অনুরূপ প্রাকৃতিক তথা আল্লাহপ্রদত্ত সম্পদবিশেষ। এরও কোনো ব্যক্তি মালিকানা হতে পারে না। তাই জ্ঞান মানবজাতির আমানত, এই আমানত কুক্ষিগত করে কবরে চলে যাওয়া বিরাট অন্যায় এবং সে আল্লাহর গজবের পাত্র। তাই আলেমদের প্রধান কর্তব্যই হচ্ছে, তার জ্ঞানকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং তা মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। বর্তমানে জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কল্যাণের চেয়ে ধ্বংসাত্মক কাজেই বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে, আর ধর্মীয় জ্ঞানকে ব্যবহার করা হচ্ছে দাঙ্গা, সাম্প্রদায়িকতা, রঙ-বেরঙের ধর্মব্যবসা, জঙ্গিবাদ, জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি, রাজনীতিক ফায়দা হাসিল করার কাজে। ধর্ম থেকে মানুষ না পাচ্ছে পার্থিব কল্যাণ, না পাবে পরকালীন মুক্তি। এর জন্য প্রধানতই দায়ী এই আলেম নামধারী জনগোষ্ঠী। এজন্যই রসুলাল্লাহ বলেছেন, আলেমদের মধ্যে যারা মুত্তাকী ও সৎ তারা সৃষ্টির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, আর যারা অসৎ ও দুনিয়ার লোভী তারা সৃষ্টির মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট। [কিমিয়ায়ে সা’দাত-ইমাম গাজ্জালী (রহ.)]
আজকে সাধারণ মানুষ বিকৃত আকিদার কারণে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আলেমদের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে। ধর্মীয় জীবনে মানুষের চলার পথ আলেমরাই নির্দেশ করে থাকেন, আলেমরা কী বলেন সেদিকেই মানুষের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে, কেননা আল্লাহই বলেছেন আলেমদের কাছ থেকে অজানা বিষয় জেনে নিতে (নাহল : ৪৩)। সমাজে যখন হাজারো অধর্মের জয়জয়কার, তখন আলেমরাই যদি শত অন্যায় দেখেও নীরবতা পালন করেন, নির্লিপ্ত-নির্বিবাদী জীবনযাপন করেন তাহলে সাধারণ মানুষ তো স্বাভাবিকভাবেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অনুপ্রেরণা ও সাহস পাবে না। বর্তমানে তেমনটাই হয়েছে। আলেমগণ অন্যায়, অবিচার, যুলুম, নির্যাতন হতে দেখেও নীরবতা পালন করে, নির্লিপ্ত-নির্বিবাদী হয়ে বেঁচে থেকে প্রকৃতপক্ষে দু®কৃতকারীদের চেয়েও বেশি পাপ করছেন। এর জন্য আল্লাহর কাছে তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে।
আল্লাহ আখেরি নবীর উম্মাহকে সকল জাতির মধ্যে যে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছেন সেটা শর্তযুক্ত, নিঃশর্ত নয় এবং জন্মগতও নয়। এই মর্যাদার কারণ এই জাতি মানুষকে ন্যায়কার্যের আদেশ করবে এবং অন্যায়কার্য থেকে প্রতিহত করবে (সুরা ইমরান ১১০)। আমাদের সমাজের আলেমরা সমাজের সকল অন্যায়ের প্রতি নীরব সম্মতি প্রদান করে, সকল অন্যায়কারীর কাছে মাথা নত করে, অপশক্তিগুলোর তোষামোদি করে কোনোমতে দাওয়াত খেয়ে, মাসোহারা নিয়ে জীবনযাপন করে যেতে পারলেই খুশি। নিজেদের দাড়ি, টুপি, জোব্বা আর আরবি ভাষার জ্ঞানের প্রদর্শনী করেই তারা সম্মান দাবি করেন, কিন্তু সম্মান পেতে হলে আল্লাহ যে শর্ত উম্মতে মোহাম্মদীকে দিয়েছেন তারা সেই শর্তপূরণের ধারে কাছেও ঘেঁষতে চান না। কারণ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে বিপদ আছে, চাকুরি হারাতে হতে পারে, নিশ্চিন্ত উপার্জন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এভাবে ব্যক্তিস্বার্থের কাছে তারা সমাজের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছেন। এ কারণেই রসুলাল্লাহ তাঁর উম্মাহর আলেমদেরকে আসমানের নীচে নিকৃষ্টতম জীব বলে আখ্যায়িত করেছেন [আলী (রা.) থেকে বায়হাকী, মেশকাত]। সমাজের যখন অশান্তির বিস্তার ঘটে, তা দেখেও যে আলেমরা নীরব থাকেন তাদের সেই নীরবতাকে আল্লাহ ঘৃণা করেন। তিনি সুস্পষ্টভাষায় বলেছেন, আলেমরা কেন তাদেরকে (দুষ্কর্মকারীদের) পাপ কথা বলতে এবং হারাম ভক্ষণ থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করে না? (সুরা মায়েদা: ৬৩)।
আমরা চাই, আলেমরা কেবল ওয়াজের মাধ্যমে নয়, সঠিক কাজের মাধ্যমে, প্রকৃত এবাদতে নিজেদের প্রাপ্য মর্যাদা প্রমাণ করুন। এটা করলেই তারা সত্যিকার অর্থেই ওরাসাতুল আম্বিয়া বা নবীদের উত্তরাধিকারী হতে পারবেন এবং মানবসমাজে ঈর্ষণীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হবেন। মহানবী বলেন, কেবল দুই ব্যক্তির সাথে ঈর্ষা করা যায়। এক. সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ স¤পদ দান করেছেন এবং সে সেই স¤পদ সত্য-ন্যায়ের পথে খরচ করে। দুই. সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তার দীনের গভীর জ্ঞান দান করেছেন এবং তার দ্বারা তিনি রায় প্রদান করেন। (সহি বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি ও ইবনু মাজাহ)। সুতরাং মর্যাদা পেতে হলে জ্ঞানকে কুক্ষিগত করে রাখলে চলবে না, সেটাকে কাজে লাগিয়ে সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলে ঘোষণা করতে হবে এবং মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের পক্ষাবলম্বন করতে হবে। হেযবুত তওহীদ এই আহ্বানই করছে।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ