মানিকগঞ্জে দীর্ঘ নয় বছর আগে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন হেযবুত তওহীদের ৬ সদস্য। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) মানিকগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলার সকল আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। এ সময় তারা সকলে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন, হেযবুত তওহীদ মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মহিদুর রহমান, সদস্য নিয়ামত আলী, মোতালেব হোসেন, কামরুল ইসলাম, আব্দুল হাকিম ও জুয়েল আহমেদ। মামলার রায় ঘোষণার পর তাদেরকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন হেযবুত তওহীদের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। অবসান ঘটে একযুগের হয়রানির।
জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া এলাকায় হেযবুত তওহীদের সাংগঠনিক প্রচারকাজে অংশ নেয়ার সময় কয়েকজন গ্রাম পুলিশের সদস্য তাদেরকে বাধা প্রদান করে থানায় খবর দেয়। পরে সাটুরিয়া থানা পুলিশ তাদের আটক করে প্রথমে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৬/৩, ১৫/২/২৫ ধারায় সন্ত্রাসমূলক ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের একটি সাজানো মামলা দায়ের করা হয়। প্রায় তিন মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন তারা। পরবর্তীতে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে চলা মামলা, আদালতে হাজিরা এবং সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গতকাল মঙ্গলবার আদালত তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় হেযবুত তওহীদ সদস্যদেরকে বেকসুর খালাস দেন বিজ্ঞ আদালত।
মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ বলেন, “হেযবুত তওহীদ একটি আইনসিদ্ধ এবং সরকারের অনুমোদিত সংগঠন। তাদের কার্যক্রমের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল, যা ছিল সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা আদালতে প্রমাণ করতে পেরেছি যে, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ছিল। আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন এবং আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।”
হেযবুত তওহীদের মানিকগঞ্জ জেলা আমির মো. মহিদুর রহমান বলেন, “৯ বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আজ সত্যের জয় দেখেছি। আমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসমূলক ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের মিথ্যা অভিযোগে দায়ের করা মামলা আজ বিজ্ঞ আদালত বাতিল করেছে। আমরা আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানাই এবং কৃতজ্ঞ। তবে এত দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের যেসব যন্ত্রণা এবং হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, সেটি হতাশাজনক।”
তিনি আরও বলেন, “হেযবুত তওহীদ সবসময় আইন মেনে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং কোনো ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে আমাদের সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল, কিন্তু আমরা আদালতে প্রমাণ করেছি যে, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আদালতের রায়ে আমাদের সদস্যদের নির্দোষতা আবারও প্রমাণিত হয়েছে।”
তিনি আরো জানান, “এতদিন ধরে আমাদের সদস্যরা সন্ত্রাসমূলক ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের মিথ্যা অভিযোগে শিকার হয়ে যেভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে আমরা এখন আশা করি, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর ঘটবে না এবং যারা এই ধরনের ষড়যন্ত্র করেছেন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে গত রবিবার (২৬ জানুয়ারি ২০২৫) গাইবান্ধায় হেযবুত তওহীদের ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে একযুগ ধরে চলা সাজানো মামলার রায় দেন বিজ্ঞ আদালত। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ার পর ৫ সদস্যকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।