Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

মানুষের প্রকৃত ধর্ম কী?


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

রাকীব আল হাসান

2013-09-09-depositphotos_8500518BusinessFriendHelpingEachOtherIconSymbolSignPictogram
ধর্ম ও ধারণ একই শব্দ থেকে এসেছে। যে গুণ বা বৈশিষ্ট ধারণ করে কোনো বস্তু তার স্বকীয়তা, নিজস্বতা পায় তাকেই ঐ বস্তুর ধর্ম বলে। যেমন একটি লৌহদণ্ড আকর্ষণ করার গুণ ধারণ করে চুম্বকে পরিণত হয়। এই আকর্ষণ করার গুণটিই হলো ঐ চুম্বকের ধর্ম। যদি কোনো কারণে চুম্বক তার ধর্ম তথা আকর্ষণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তবে সেটি পুনরায় লৌহে পরিণত হয়, সেটি আর চুম্বক থাকে না। একটি লৌহকে চুম্বকে পরিণত করতে হলে নিরন্তর তাকে চুম্বক দিয়ে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ঘর্ষণ করতে হয়, এটি চুম্বকের ধর্ম প্রাপ্ত করার প্রক্রিয়া। আবার পরিপূর্ণ চুম্বকও যদি আগুনে পোড়ানো যায় তবে সে তার ধর্ম হারিয়ে সাধারণ পদার্থে পরিণত হয়।

পানির ধর্ম হলো সে নিজে পবিত্র এবং সমস্ত কিছুকে ধৌত করে পবিত্র করে দেয়, তৃষ্ণার্তের তৃষ্ণা দূর করে নতুন জীবন দান করে। কিন্তু পানি যদি অপবিত্র, বিষাক্ত হয়ে যায় তবে সে অন্যকে না পবিত্র করতে পারে, না কারো তৃষ্ণা দূর করতে পারে। পানিকে পবিত্র করার জন্য, বিষমুক্ত করার জন্য আগুনে ফুটাতে হয়। এটিই পানির প্রকৃত ধর্ম প্রাপ্ত করার প্রক্রিয়া। ধর্মহীন তথা বিষাক্ত, অপবিত্র পানি মানুষের জীবনের কারণ না হয়ে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
মানুষও একটি সাধারণ প্রাণী হিসাবে জন্মগ্রহণ করে আস্তে আস্তে মনুষ্য ধর্ম প্রাপ্ত হয়ে মানুষের স্তরে ওঠে। এই মনুষ্য ধর্ম হলো মানবতা।

এক পিতার মধ্যে সন্তানের প্রতি যে ভালোবাসা থাকে তা পিতৃধর্ম, ছেলে-মেয়ের প্রতি মায়ের মমতা হলো মাতৃধর্ম, ভায়ের প্রতি ভায়ের যে প্রেম তা ভ্রাতৃধর্ম। আর মানুষের প্রতি মানুষের যে প্রেম, ভালোবাসা, মায়া, মমতা সেটি হলো মনুষ্যধর্ম। যার মধ্যে অন্য মানুষের প্রতি যত বেশি ভালোবাসা সে তত বড় ধার্মিক। সন্তান কষ্টে থাকলে মা-বাবার মনেও সুখ থাকে না, সন্তানের কষ্ট দূর করার জন্য সে আপ্রাণ চেষ্টা করে। বাবা-মা হিসাবে এটা তাদের কর্তব্য। মানুষ কষ্টে থাকলে অপর মানুষও কষ্টে থাকবে, অপরের কষ্ট দূর করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে- এটা মানুষ হিসাবে তার কর্তব্য, এটাই তার এবাদত। এই এবাদতের জন্যই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের প্রতি ভালোবাসাই স্রষ্টার প্রতি ভালোবাসা। সন্তানকে কষ্ট দিয়ে কি কখনো তার বাবা-মায়ের ভালোবাসা পাওয়া যায়? ঠিক একইভাবে আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি মানুষকে কষ্টে রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া সম্ভব নয়।

এখন প্রশ্ন হলো- নামাজ, রোজা, পূজা, প্রার্থনা ইত্যাদি যে ধর্মীয় উপাসনাগুলি ধর্ম মনে করে, এবাদত মনে করে করা হয় সেগুলির উদ্দেশ্য কী? একটি লৌহকে যেমন চুম্বকের ধর্ম প্রাপ্ত করার জন্য নিরন্তর চুম্বক দিয়ে ঘর্ষণ করতে হয়, পানিকে যেমন বিশুদ্ধ করার জন্য ফুটাতে হয় ঠিক তেমনই মানুষের আত্মায় সর্বদা মনুষ্য ধর্ম তথা অন্য মানুষের প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত রাখার জন্য নানা উপাসনা করতে হয়। মানুষের সৃষ্টিগত বৈশিষ্টই এমন যে, সে অসচেতনভাবেই নিজ স্বার্থচিন্তায় মগ্ন হয়ে অপরের কল্যাণের চিন্তা ভুলেই যায়। নামাজ, রোজা, পূজা, প্রার্থনার মাধ্যমে সে স্রষ্টার কাছে জবাবদিহি করবে, স্রষ্টাকে স্মরণ করবে, তার কর্তব্য তথা এবাদতের কথা স্মরণ করবে, সে নিজ স্বার্থ ভুলে জগৎসংসারের কল্যাণ চিন্তা করবে।

অর্থাৎ উপাসনাগুলি হলো ধর্ম প্রাপ্ত করার প্রক্রিয়া। যতবেশি উপাসনা করবে তত বেশি ধর্ম প্রাপ্ত হবে। এই উপাসনাগুলি সকল খারাপ কাজ থেকে, অকল্যাণকর কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখবে। এজন্যই আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয় নামাজ সকল প্রকার ফাহেশা তথা অকল্যাণকর কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে।” (সুরা আনকাবুত- ৪৫)। দিনরাত উপাসনায় মগ্ন থেকেও যদি কারো মধ্যে মনুষ্য ধর্ম জাগ্রহ না হয়, মানবতা জাগ্রত না হয়, অকল্যাণকর কাজ থেকে সে বিরত না হয়, মানুষের কষ্ট দূর করার জন্য নিজের জীবন-সম্পদ ব্যয় করার মনোবৃত্তি সৃষ্টি না হয় তবে সকল উপসনালয় ব্যর্থ।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ