Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

দাসপ্রথা বিলুপ্ত করেছে ইসলাম


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Untitled-141-300x286তথাকথিত খেলাফতের সময় তাগুত রাজা-বাদশাহদের মতো ভোগবিলাসে মত্ত শাসকেরা যে জাহেলি ব্যবস্থাগুলিকে কবর থেকে তুলে এনেছিল তার একটি হলো দাসত্ব, আজও তাদের উত্তরসুরী অহঙ্কারী আরব শেখরা সমগ্র দুনিয়া থেকে শ্রমিক আমদানি করে জোর করে শ্রম আদায় করে সে ব্যবস্থাকে জিইয়ে রেখেছে।
যখন কোর’আনের অনুবাদ করা শুরু হয় তখন সেই অনুবাদকদের সামনে আল্লাহ রসুলের প্রকৃত ইসলামটি নেই, আছে আরব শেখদের বিকৃত করা শিয়া, সুন্নী আর উমাইয়া আব্বাসীয় মুফাসসিরদের ইসলাম। সেই বিকৃত ইসলামগুলিই ছিল অনুবাদক-আলেম, মুফাসসিরদের জ্ঞানের পরিসীমা। ফলে তারা যুদ্ধবন্দী, গনিমত, রাকাবাত, মালাকাত আয়মান সব কিছুর একটি অর্থই জানেন, আর সেটা হচ্ছে ‘দাস-দাসী’। অনুবাদকেরা দয়া করে যদি একবার রসুলাল্লাহর জীবনের দিকে তাকান তবে দেখতে পাবেন, আল্লাহর রসুল এই দাসত্ব প্রথাকে নির্মূল করার জন্য আজীবন কী সংগ্রামটাই না করে গেছেন। এই সংগ্রাম কেবল যে কাফেরদের বিরুদ্ধে তা নয়, এটা ছিল বিশ্বময় প্রতিষ্ঠিত একটি সিস্টেমের বিরুদ্ধে, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষের মন-মগজে শেকড় গেঁড়ে বসে ছিল। তিনি ক্রীতদাস যায়েদকে (রা.) মুক্ত করলেন। যায়েদ মুক্তি পেয়েও তাঁর সাথেই রইলেন। এরপর রসুল যায়েদকে নিজের ছেলে বলে ঘোষণা দিলেন, বললেন যায়েদ (রা.) তাঁর সম্পদের উত্তরাধিকার। এটা ছিল কুরাইশদের মিথ্যা আভিজাত্যের দেয়ালে এক প্রচণ্ড আঘাত। চারিদিকে ছি ছি পড়ে গেল, কী! গোলামকে ছেলে বলে ঘোষণা দিল মোহাম্মদ! রসুল বিচলিত হলেন না, নিজ সিদ্ধান্তে অটল রইলেন। এ হলো নবী হওয়ার আগের কথা। নবী হওয়ার পরে তিনি নিজ ফুফাতো বোন জয়নাবের (রা.) সঙ্গে যায়েদকে (রা.) বিয়ে দিলেন। তাদের বিয়ে টিকল না, যার অন্যতম কারণ জয়নাব (রা.) রসুলাল্লাহর ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে যায়েদকে (রা.) স্বামী হিসাবে গ্রহণ করলেও তিনি যায়েদের পূর্ব পরিচয় ভুলতে পারেন নি। রসুলাল্লাহ খেয়াল করেছেন যে, তাঁর উম্মাহর মধ্যে অনেকেই যায়েদকে (রা.) তখনও ভিন্নভাবেই দেখে। এরপর রসুল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি যায়েদকে (রা.) মু’তার যুদ্ধের সেনাপতি নিয়োগ দিলেন। তাঁর অধীনে যুদ্ধে প্রেরণ করলেন পুরো জাতিকে যার মধ্যে কুরাইশসহ বড় বড় সম্ভ্রান্ত বংশীয় অনেক সাহাবীই ছিলেন। যায়েদকে (রা.) সেনাপতি নিয়োগ দেওয়ার পর অনেকেই সন্তুষ্টচিত্তে বিষয়টি মেনে নিতে পারল না, বিশেষ করে মুনাফিকরা জাতির ভিতরে জোর তৎপরতা চালল যে, একজন দাসকে সকলের আমীর করা হলো? এসব কথা শুনে রসুলাল্লাহ প্রচণ্ড রাগ করলেন এবং সবাইকে মসজিদে নববীতে ডেকে সাবধান করে দিলেন।
মু’তা যুদ্ধে যায়েদ (রা.) শহীদ হন। রসুলাল্লাহ তাঁর এন্তেকালের স্বল্পকাল আগে সেই যায়েদ (রা.) এর পুত্র ওসামাকে (রা.) ‘বালকা’ সীমান্ত অঞ্চলে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। এবারও কতিপয় লোক তাঁর নেতৃত্ব সম্পর্কে বিরূপ সমালোচনা করেন। এসব আলোচনা শুনে রসুল মাথায় পট্টি বাঁধা অবস্থায় দু’জনের কাঁধে ভর করে মসজিদে যান এবং সকলকে ডেকে আবারও বলেন, ‘হে সমবেত লোকেরা! তোমরা ওসামার যুদ্ধাভিযান কার্যকর কর। আমার জীবনের শপথ! তোমরা যদি তার নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলে থাক, তবে এর আগে তোমরা তার পিতার নেতৃত্বের ব্যাপারে তো কথা তুলেছিলে। অথচ সে নেতৃত্বের যোগ্যই বটে, যেমন তার পিতাও এর যোগ্য ছিল। সে আমার নিকট অধিকতর পছন্দনীয়; আর তার পরে এই ওসামাও আমার নিকট অধিকতর প্রিয়।’ রসুলের এই কথার পর সব গুঞ্জন থেমে যায়।
এভাবে আল্লাহর রসুল একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাকে উপর্যুপরি আঘাতে চুরমার করে দিয়ে গেছেন। বর্তমান পৃথিবী পাশ্চাত্য সভ্যতার অধীন, পশ্চিমারা এখন বিজয়ী জাতি। যেহেতু বিজয়ীরাই ইতিহাস লেখে তাই যে বিজয়ীদের মধ্যে আল্লাহর ভয় নেই তাদের লেখা ইতিহাস সব সময় সত্য বলে না। এ কারণেই পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুসারীরা আমাদেরকে শেখায় যে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন ১৮৬৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাস প্রথার অবসান ঘটান এবং মুক্তি ঘোষণার (ঊসধহপরঢ়ধঃরড়হ চৎড়পষধসধঃরড়হ) মাধ্যমে দাসদের চিরস্থায়ীভাবে মুক্ত করে দেন। সেই আব্রাহাম লিঙ্কনের স্বপ্নের গণতন্ত্রই আজ পুঁজিবাদী রূপ নিয়েছে যা সৃষ্টি করেছে বিরাট ভারসাম্যহীনতা। গুটিকয়েক লোক অকল্পনীয় অর্থের মালিক হয়ে জঘন্য ভোগবিলাসে লিপ্ত, অর্থ খরচ করার পথ পাচ্ছে না। অপরদিকে বিরাট জনগোষ্ঠী বাধ্য হয়ে জীবন রক্ষার জন্য দাসত্বের অদৃশ্য শৃঙ্খল গলায় পরে আছে। এই দাসত্বের প্রধান একটি রূপ কর্পোরেট দাসত্ব। নিয়োগকর্তা মালিকপক্ষের অন্যায়, জুলুম, বঞ্চনার বিরুদ্ধে শ্রমিক শ্রেণির ক্ষোভ, অসন্তোষ চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে। সুযোগ পেলেই সহিংসতা ও বিক্ষোভের আকারে প্রকাশ ঘটে সেই সঞ্চিত ক্ষোভের। শ্রমিকদের এই বিক্ষোভগুলিকে জোর করে দাবিয়ে রাখা হয়, পেটানো হয়, মেরে ফেলা হয়। কিন্তু ইসলাম এর ঠিক বিপরীত। স্বেচ্ছায়, উভয়পক্ষের সম্মতিতে, সেবা প্রদানের মানসে শ্রম প্রদানই হচ্ছে ইসলামের নীতি। মানবজাতির রহমতস্বরূপ আবির্ভূত মহানবী নিজের জীবনে বাস্তবে প্রয়োগ করে এবং তাঁর অনুসারীরাও তা বাস্তবায়ন করে কিভাবে দাসপ্রথা (জোরপূর্বক শ্রম আদায়) ব্যবস্থা চিরতরে নির্মূল করলেন তা আর এই জাতিকে জানতে দেওয়া হলো না। মক্কা বিজয়ের পর ক্বাবা প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে তিনি দাসপ্রথার বিলুপ্তি ঘোষণা করেন।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ