আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
এমামুযযামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী
(৩য় অংশ)
বর্ত্তমানে বিকৃত ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে প্রচলিত ধারণা ও বিশ্বাস অর্থাৎ আকীদা হোচ্ছে এই যে, বিশ্বনবী মোহাম্মদ (দঃ) যাদের মধ্যে আবির্ভূত হোয়েছিলেন অর্থাৎ তদানিন্তন আরববাসীরা আল্লাহকে বিশ্বাস কোরতো না, তাদের আল্লাহর ওপর ঈমান ছিলো না। এই ধারণা সম্পুর্ণ ভুল। তখনকার আরবরা বিশ্বাস কোরতো যে তারা আল্লাহর নবী এব্রাহীমের (আঃ) উম্মাহ। তারা নিজেদের ‘হানীফ’ বোলতো, হানীফ অর্থ তওহীদ এবং এব্রাহীমের (আঃ) একাগ্র অনুসারী। সুতরাং তদানিন্তন আরববাসীরা আল্লাহকে তেমনই বিশ্বাস কোরতো যেমন বর্ত্তমানের পৃথিবীময় মোসলেম বোলে পরিচিত লোকেরা এবং অন্যান্য ধর্মের লোকেরা বিশ্বাস করে। ঐ আরবরা আল্লাহকে সৃষ্টিকর্ত্তা বোলে, পালনকারী বোলে বিশ্বাস কোরতো, নামাজ পোড়তো, কাবা শরীফকে আল্লাহর ঘর বোলে বিশ্বাস কোরতো, ঐ কাবাকে কেন্দ্র কোরে বাৎসরিক হজ্ব কোরতো, কোরবানী কোরতো, রোযা রাখতো, আল্লাহর নামে কসম কোরতো, এমনকি বর্ত্তমান সময়ের ‘মোসলেমদের’ মতো খাত্নাও কোরতো। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনীয় দলিল, বিয়ে শাদীর কাবিন ইত্যাদি সমস্ত কিছু লেখার আগে আমরা যেমন বিসমেল্লাহ লেখি তেমনি তারাও আল্লাহর নাম লিখতো। তারা লিখতো বেস্মেকা আল্লাহুম্মা, অর্থাৎ তোমার নাম নিয়ে (আরম্ভ কোরছি) হে আল্লাহ। নবুয়াত পাবার আগে মহানবীর সঙ্গে আম্মা খাদীজার (রাঃ) বিয়ের যে কাবিন লেখা হোয়েছিলো তা লিখেছিলো আরবের লোকেরা যাদের আমরা এখন কাফের মোশরেক বলি এবং তা তারা শুরু কোরেছিলো আল্লাহর নাম দিয়ে। তওহীদের ডাক দেবার ‘অপরাধে’ আল্লাহর রসুলকে তাঁর পরিবার পরিজন ও আসহাবসহ মক্কার বাইরে উত্তপ্ত উপত্যকায় নির্বাসন দেবার জন্য যে বিজ্ঞপ্তি মোশরেক কোরায়েশ নেতারা সর্বসাধারণের জানার জন্য পবিত্র কাবার দরজার ওপর ঝুলিয়ে দিয়েছিলো সে বিজ্ঞপ্তির প্রথমেই তারা লিখেছিলো- বিসমেকা আল্লাহুম্মা। হুদায়বিয়ার সন্ধিপত্র লেখার সময় আলী (রাঃ) যখন ‘বিসমিল্লাহির রহমানের রহিম’ দিয়ে আরম্ভ কোরলেন তখন মোশরেক কোরায়েশদের প্রতিনিধি সুহায়েল বিন্ আমর প্রতিবাদ কোরে বোললো, আমরা এ রকম কোরে লেখি না, আমরা যে ভাবে আল্লাহর নাম লেখি ঐ ভাবে লিখতে হবে, অর্থাৎ বেস্মেকা আল্লাহুম্মা। তখন আল্লাহর রসুলের আদেশে আলী (রাঃ) ঐ ভাবেই লিখলেন। এগুলো ঐতিহাসিক প্রমাণ। আরবের মোশরেকরা যে আমাদের মতই আল্লাহয় বিশ্বাসী ছিলো এ কথায় সাক্ষ্য স্বয়ং আল্লাহ। কোর’আনে তিনি তাঁর রসুলকে বোলছেন- তুমি যদি তাদের (আরবের মোশরেক, কাফের অধিবাসীদের) জিজ্ঞাসা করো, আসমান ও যমীন কে সৃষ্টি কোরেছেন? তবে তারা অবশ্যই জবাব দেবে- সেই সর্বশক্তিমান, মহাজ্ঞানী (আল্লাহ) (কোর’আন- সুরা যুখরুফ- ৯)। অন্যত্র বোলেছেন- তুমি যদি তাদের প্রশ্ন করো আসমান ও যমীন কে সৃষ্টি কোরেছেন এবং কে সূর্য্য ও চন্দ্রকে তাদের (কর্ত্তব্য কাজে) নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণ কোরছেন, তবে তারা নিশ্চয়ই জবাব দেবে- আল্লাহ (কোর’আন- সুরা আনকাবুত- ৬১)। আল্লাহ আবার বোলছেন- যদি তাদের প্রশ্ন করো, কে এই মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি কোরেছেন, তবে তারা নিশ্চয়ই জবাব দেবে আল্লাহ (কোর’আন- সুরা লোকমান- ২৫)। আল্লাহ তাঁর নবীকে আবার বোলছেন ঐ মোশরেকদের প্রশ্ন কোরতে (পানির অভাবে শুকিয়ে, ফেটে যেয়ে) মাটি যখন মরে যায়, তখন আকাশ থেকে পানি বর্ষণ কোরে কে তাকে পুণর্জীবন দান করেন- তবে তারা অবশ্যই জবাব দেবে- আল্লাহ (কোর’আন- সুরা আনকাবুত- ৬৩)। ইতিহাস ও আল্লাহর সাক্ষ্য, দু’টো থেকেই দেখা যায় যে, যে মোশরেকদের মধ্যে আল্লাহর রসুল প্রেরিত হোলেন তারা আল্লাহকে গভীর ভাবে বিশ্বাস কোরতো অর্থাৎ আল্লাহর ওপর তাদের ঈমান ছিলো। তারা হাবল লা’ত, মানাতের পূজা কোরতো ঠিকই কিন্তু ওগুলোকে তারা আল্লাহ বোলে বিশ্বাস কোরতো না, ওগুলোকে স্রষ্টা বোলেও মানতো না। তারা বিশ্বাস কোরতো যে হাবল, লা’ত, মানাত, ওজ্জা এরা দেব-দেবী, যারা ওগুলোকে মানবে, পূজা কোরবে তাদের জ
ন্য ঐ দেব-দেবীরা সেই আল্লাহর কাছেই সুপারিশ কোরবে (কোর’আন- সুরা ইউনুস- ১৮, সুরা যুমার ৩)।
এখন বিরাট প্রশ্ন হল এই যে- আল্লাহর কোর’আন মোতাবেকই তদানিন্তন আরবের অধিবাসীরা যদি আল্লাহয় বিশ্বাসী হয়, ইতিহাস যদি সাক্ষ্য দেয় যে তারা কাবাকে আল্লাহর ঘর বোলে বিশ্বাস কোরতো, কাবার দিকে মুখ কোরে নামায পড়তো, রোযা রাখতো, সেই ঘরে এসে হজ্ব কোরতো, কোরবানী কোরতো, আল্লাহর নামে কসম কোরতো, প্রতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আল্লাহর নামে আরম্ভ কোরতো, তবে তাদের মধ্যে নবী পাঠিয়ে তাদের হেদায়েত করার প্রয়োজন হোল কেন? এ প্রশ্নের জবাব হোচ্ছে এই যে, আরবের মোশরেক অধিবাসীরা আল্লাহকে খুবই বিশ্বাস করতো, আজ যেমন আমরা কোরি, কিন্তু আল্লাহর দেয়া দীন, জীবন-বিধান মোতাবেক তাদের সমষ্টিগত জাতীয় জীবন পরিচালনা কোরতো না। তাদের সামাজিক, জাতীয়, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, দণ্ডবিধি এ সমস্তই পরিচালিত হতো হাবল, লা’ত, মানাত ও ওজ্জার কোরায়েশ পুরহিতদের তৈরী করা আইন-কানুন ও নিয়ম দিয়ে। তারা বুঝতো না যে আল্লাহকে যতোই বিশ্বাস করা হোক, ব্যক্তিগতভাবে যতোই কঠিন এবাদত করা হোক, যতোই তাক্ওয়া করা হোক, জাতীয় জীবন আল্লাহর দেওয়া দীন, আইন- কানুন, দণ্ডবিধি অর্থনীতি দিয়ে পরিচালিত না হোলে সেটা আল্লাহর তওহীদ হবে না, সেটা হবে র্শেক ও কুফর। কাজেই আল্লাহর ওপর ও এব্রাহীমের (আঃ) নবুওতের ওপর পূর্ণ ঈমান থাকলেও, কাবাকে আল্লাহর ঘর বোলে বিশ্বাস কোরলেও, সেই কাবার দিকে মুখ কোরে নামায পোড়লেও, হজ্ব কোরলেও, কাবাকে তওয়াফ কোরলেও, আল্লাহর রাস্তায় কোরবাণী কোরলেও, রমাদান মাসে রোযা রাখলেও, খাত্না কোরলেও, প্রতি কাজ আল্লাহর নাম নিয়ে আরম্ভ কোরলেও আরবরা মোশরেক ও কাফের ছিল। তাদের প্রকৃত তওহীদে সর্বব্যাপী তওহীদে আনার জন্যই আল্লাহর রসুল প্রেরিত হোয়েছিলেন। একইভাবে বর্ত্তমানে ‘মোসলেম’ বোলে পরিচিত জনসংখ্যাটি তদানিন্তন আরবের মানুষের মতই আল্লাহকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে, তাকে স্রষ্টা বোলে, জীবন-মরণের প্রভু বোলে মানে, কিন্তু আরবের ঐ মোশরেকদের মতই তাঁর (অর্থাৎ আল্লাহর) দেয়া দীন, জীবন-বিধান মোতাবেক সমষ্টিগত, জাতীয় জীবন পরিচালনা করে না। আরবের মোশরেকরা দেব-দেবীর পুরোহিতদের দেয়া বিধান অনুযায়ী তাদের জাতীয় জীবন পরিচালনা কোরতো, বর্ত্তমানের মোসলেম দুনিয়া নতুন দেব-দেবী গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম-নিরপেক্ষতা, রাজতন্ত্র, একনায়কতন্ত্রের পুরোহিত ইহুদী-খ্রীস্টানদের তৈরী করা জীবন-বিধান অনুযায়ী তাদের জাতীয় জীবন পরিচালনা কোরছে। তফাৎ শুধু এইটুকু যে আরবদের হাবল, লা’ত, মানাতের মূর্ত্তিগুলি ছিল কাঠ এবং পাথর দিয়ে তৈরী, বর্ত্তমানের মূর্ত্তিগুলি কাঠ পাথরের নয়, তন্ত্রের মূর্ত্তি। বরং এই তন্ত্রের মূর্ত্তিগুলোর পুজা ঐ কাঠ পাথরের মূর্ত্তিপূজার চেয়েও বড় র্শেক ও কুফর। কারণ লা’ত, মানাতের পূজা করা হতো আল্লাহর কাছে পুজারীদের জন্য সুপারিশ করার জন্য, এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য (তারা বলে, ‘এইগুলি আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী’ কোর’আন- সুরা ইউনুস- ১৮। আমরা তো এদের পূজা এইজন্যই কোরি যে, এরা আমাদেরকে আল্লাহর সান্নিধ্য এনে দিবে, কোর’আন- সুরা যুমার- ৩)। কিন্তু বর্ত্তমানে যে তন্ত্রগুলির পূজা করা হোচ্ছে এই তন্ত্রগুলির আল্লাহর সাথে কোন সম্পর্ক নেই বরং এগুলো আল্লাহর বিরোধী, আল্লাহর ভাষায় তাগুত। তাহোলে বিশ্বনবী যাদের মধ্যে আবির্ভুত হোয়েছিলেন আরবের সেই আল্লাহয় বিশ্বাসী অথচ মোশরেক কাফেরদের সঙ্গে বর্ত্তমানের আল্লাহয় বিশ্বাসী কিন্তু কার্য্যত মোশরেক ‘মোসলেম’ জনসংখ্যার তফাৎ কোথায়? আল্লাহর ওপর ঈমান নিয়েও যে মোশরেক হওয়া যায় তার প্রমাণ কোর’আন, সুরা ইউসুফ আয়াত ১০৬।
হেজরত শব্দের অর্থ শুধু দেশ ত্যাগ করা নয়। হেজরত ক্রিয়াপদের অর্থঃ- “সম্পর্কচ্ছেদ করা, দল বর্জন করা, স্বদেশ পরিত্যাগ করিয়া ভিন্নদেশে গমন করা” (সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, দ্বিতীয় খন্ড, পৃঃ ৫৬০-৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)। আল্লাহয় বিশ্বাসী অথচ মোশরেক ঐ আরবদের মধ্যে আবির্ভূত হোয়ে বিশ্বনবী যখন প্রকৃত তওহীদের ডাক দিলেন তখন যারা প্রকৃত তওহীদ কী, তা বুঝে আল্লাহর রসুলকে স্বীকার কোরে তাঁর সাথে যোগ দিলেন তারা আরবদের ঐ র্শেক ও কুফর থেকে হেজরত কোরলেন। মক্কা থেকে শারীরিক হেজরত কোরে মদীনায় চোলে যাবার আগে পর্য্যন্ত আল্লাহর রসুল ও তাঁর আসহাব প্রথম দুই প্রকারের হেজরত কোরলেন। তারা মোশরেক কাফেরদের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, ওঠা-বসা সবই কোরতেন কিন্তু তাদের মধ্যে বাস কোরেও হৃদয়ের দিক থেকে তাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ কোরলেন, তাদের দল বর্জন কোরলেন, তাদের সাথে এবাদত করা ছেড়ে দিলেন এবং আল্লাহর রসুলকে কেন্দ্র কোরে তওহীদ ভিত্তিক একটি আলাদা সমাজ, আলাদা ভ্রাতৃত্ব গড়ে তুললেন। তারপর ১৩ বছর পর মক্কা থেকে মদীনায় চোলে যেয়ে তৃতীয় প্রকার হেজরত কোরলেন। এর ৯ বছর পর মক্কা জয়ের পর তৃতীয় প্রকারের হেজরতের আর প্রয়োজন রোইলো না, কিন্তু বাকী দুই প্রকারের হেজরতের প্রয়োজন রোয়ে গেলো এবং আজও আছে। দীন যখনই বিকৃত হোয়ে যাবে, বৃহত্তর জনসংখ্যা যখনই ঐ বিকৃত দীনের ভ্রান্ত পথে চোলবে, তখন আল্লাহ তাঁর অসীম করুণায় যাদের সেরাতুল মুস্তাকীমে হেদায়াত কোরবেন, তাদের ঐ বৃহত্তর জনসংখ্যা থেকে বিশ্বনবী ও তাঁর সাহাবাদের (রাঃ) মতই হেজরত কোরতে হবে। অর্থাৎ ঐ সংখ্যাগরিষ্ঠ পথভ্রান্তদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের দল বর্জন কোরতে হবে। এ হেজরতের প্রয়োজন কোনদিনই শেষ হবে না। চৌদ্দশ’ বছর আগে আল্লাহয় বিশ্বাসী আরবের মোশরেকদের মধ্যে মহানবী ও তাঁর আসহাবদের (রাঃ) যে ভূমিকা ছিলো, আজ আল্লাহ বিশ্বাসী কিন্তু কার্য্যতঃ মোশরেক সমাজের মধ্যে হেযবুত তওহীদের সেই ভূমিকা। সেদিন আল্লাহর রসুল যেমন মানুষকে আল্লাহর প্রকৃত তওহীদে, সর্বব্যাপী তওহীদে আহ্বান কোরেছিলেন, সেই নবীর প্রকৃত উম্মাহ হিসাবে হেযবুত তওহীদ সেই একই আহবান কোরছে। সেদিন আল্লাহর রসুল ও তাঁর সাহাবারা (রাঃ) যেমন দীনের ব্যাপারে ঐ সমাজ থেকে হেজরত কোরেছিলেন, তাদের সাথে এবাদত করা ছেড়ে দিয়েছিলেন, আজ ঠিক তেমনি ভাবে প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী হবার প্রচেষ্টারত হেযবুত তওহীদকেও বর্ত্তমান ‘মোসলেম’ সমাজ থেকে হেজরত কোরতে হবে। নইলে নবীর সুন্নাহ পালন করা হবে না, এবং এই দীনুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আল্লাহর রসুলের সুন্নাহ ত্যাগ কোরলে আল্লাহর সাহায্য ও সাফল্য আসবে না। আল্লাহর রসুল বোলেছেন – হেজরত শেষ হবে না যে পর্য্যন্ত তওবা শেষ হবে না, তওবা শেষ হবে না যে পর্য্যন্ত সূর্য্য তার অস্ত যাবার স্থান থেকে উদয় না হবে [মুয়াবিয়া (রাঃ) থেকে আহমদ, আবু দাউদ ও দারিমী]। কেয়ামতের একটি আলামত হোচ্ছে পশ্চিম থেকে সূর্য্যােদয়। তারপর থেকে আর কারো তওবা কবুল হবে না। অর্থাৎ হেজরতের প্রয়োজন কেয়ামত পর্য্যন্ত থাকবে, যেমন থাকবে জেহাদেরও প্রয়োজন কেয়ামত পর্য্যন্ত (হাদীস)। (চোলবে…)