হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

ধর্মব্যবসায়ী সৃষ্টির শিক্ষাব্যবস্থা

রিয়াদুল হাসান:
আল্লাহর রসুল তেইশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম, অটল অধ্যবসায়ের পরিণতিতে যে ঐক্যবদ্ধ উম্মাহ, জাতির উন্মেষ ঘটল সে জাতির বিনাশ কোন পথে আসবে তাও আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন এই বলে যে, “যদি তোমরা আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রামে বের না হও তাহলে তিনি তোমাদের কঠিন শাস্তি দিবেন এবং তোমাদের উপরে অন্য জাতি চাপিয়ে দেবেন (সুরা তওবা ৩৯)।” ধর্মবিশ্বাস ও সত্যের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ জাতির মধ্যে যে দুঃসাহস সৃষ্টি হয় তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয় তখনই যখন ঐ জাতি অভ্যন্তরীণ বিবাদে লিপ্ত হয়ে নিজেদের ঐক্যকে বিনষ্ট করে ফেলে। এটাও আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছিলেন এই বলে যে, “তোমরা নিজেদের মধ্যে বিবাদ করবে না, তাহলে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হয়ে যাবে (সুরা আনফাল ৪৬)।” ঐক্য ভঙ্গকে রসুলাল্লাহ (সা.) কুফর বলেছেন [হাদিস – আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রা.) থেকে মুসলিম, মেশকাত]। জাতির মূল কাজ পরিত্যাগ করে দীনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করার পরিণতিতে জাতি ভেঙ্গে বহু মাজহাব ফেরকায় বিভক্ত হয়ে দুর্বল হয়ে গেল। শাসকরা বিলাস ব্যাসনে শরীর এলিয়ে দিলেন। ফলে জাতি আর মো’মেন রইল না। ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, ঐ কয়েকশ’ বছরে জাতির মধ্যে হাজার হাজার ফকীহ জন্ম নিলেন, বড় বড় আলেম জন্ম নিলেন, বহু গাউস-কুতুব-পীর-দরবেশ জন্ম নিলেন, ইমাম জন্ম নিলেন, বড় বড় মুফাসসির-মুহাদ্দিস জন্ম নিলেন। একেকজনের ক্ষুরধার লেখনীতে বিরাট বিরাট ভলিউম ভলিউম বই রচিত হলো। কিন্তু সেই আবু বকর (রা.), ওমর (রা.), আলী (রা.), আবু ওবায়দাহ (রা.), খালেদ (রা.), দেরার (রা.), সা’দ (রা.) মুসান্নাদের (রা.) মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে ত্রাস সৃষ্টিকারী দুর্ধর্ষ যোদ্ধা আর কেউ জন্ম নিল না।
আল্লাহর শাস্তি হুট করেই আসে না, তিনি শাস্তি দেওয়ার আগে তাদেরকে সঠিক পথে ফিরে আসার বহু সুযোগ দেন, অবকাশ দেন। মুসলিমরাও প্রায় ৭০০ থেকে ১১০০ বছর সময় পেল। দুর্দান্ত খরস্রোতা নদী যখন গতি হারিয়ে ফেলে তখন তার পানি পঁচে যায়। সংগ্রাম ত্যাগের ফলে জাতির মাথার মধ্যেও পচন ধরেছে।
সমগ্র পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার যে লক্ষ্যকে সামনে রেখে শেষ রসুল (সা.) উম্মতে মোহাম্মদী জাতি গঠন করেছিলেন, সেই কাজের অর্ধেকটা প্রাথমিক যুগের উম্মতে মোহাম্মদী শেষ করে দিয়ে আল্লাহর কাছে চলে গেছেন। পরবর্তী উম্মাহ সেই দায়িত্ব বহন করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলার দরুন বাকি দুনিয়া শেরক আর কুফরের পদানতই রয়ে গেল। এরই মধ্যে তাদের অভ্যন্তরীণ পচনক্রিয়া সমাপ্ত হয়ে পতনের কাল আসলো, আল্লাহর শাস্তি শুরু হলো। আল্লাহ সুরা তওবার ৩৯ নম্বর আয়াতে প্রতিশ্রুত কঠিন শাস্তি দিয়ে এ জাতিকে ইউরোপীয় জাতিগুলোর পায়ের তলার গোলামে পরিণত করে দিলেন। তখন তারা অর্থাৎ ইউরোপের খ্রিষ্টানরা আল্লাহর দেয়া সার্বভৌমত্বকে ছুঁড়ে ফেলে তাদের নিজেদের দেশের জন্য তৈরি জীবনবিধান (দীন), বিভিন্ন রকম তন্ত্রমন্ত্র এ জাতির উপর চাপিয়ে দিল। আমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের জীবনব্যবস্থা থেকে বহিষ্কৃত হয়ে ব্যক্তিগত জীবনের সংকীর্ণ গণ্ডির মধ্যে ঢুকে গেলাম এবং সেখানেই বসে বসে ধর্মচর্চা চালিয়ে যেতে লাগলাম। ব্যক্তিগত ধর্মচর্চায় কে কত নিখুঁত তার প্রতিযোগিতা শুরু করে দিলাম। ফলে পোশাকে-আশাকে আমরা কে কত নিখুঁত সেটাই এখন উত্তম মুসলমান হওয়ার মাপকাঠি হিসাবে বিবেচিত হতে লাগল। ওদিকে মাথার উপর কার তৈরি দীনের শাসন চলছে, কার সার্বভৌমত্ব, হুকুম, বিধান চলছে, কার তৈরি রাষ্ট্রব্যবস্থা, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা, দণ্ডবিধি, শিক্ষাব্যবস্থা চলছে সে বিষয়ে মহা মুসলিম, মহা আবেদদের কোনো খবর নেই! তারা ধরেই নিয়েছেন যে মুসলিম পরিবারে জন্ম নিলেই মুসলিম হওয়া যায়। তারপর নামাজ রোজা করলেই, সৎভাবে জীবনযাপন করলেই আল্লাহর মো’মেন বান্দা অর্থাৎ উত্তম মুসলিম হয়। তাদের জন্যই জান্নাত তৈরি করা হয়েছে।
ইউরোপের খ্রিষ্টান জাতিগুলি সামরিক শক্তিবলে পৃথিবীর প্রায় সবক’টি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ অধিকার করার পর এরা যাতে আর ভবিষ্যতে কোনদিন তাদের ঐ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিল। এই পদক্ষেপগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান পদক্ষেপ হলো শিক্ষা ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করা, কারণ শিক্ষা ব্যবস্থা এমন এক বিষয় যে এর মাধ্যমে মানুষকে যা ইচ্ছা তাই করা যায়; চরিত্রবান মানুষও তৈরি করা যায় আবার দুশ্চরিত্র মানুষেও পরিণত করা যায়; কী শিক্ষা দেয়া হোচ্ছে তারই ওপর নির্ভর করে সে কেমন মানুষ হবে। তারা একই সাথে দুই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা চালু করল- একটি সাধারণ ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা, আরেকটি মাদ্রাসা শিক্ষা। এই দুটো শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে আদর্শ ও চেতনায় মৌলিক বৈপরীত্য রয়েছে। এর দ্বারাই তারা আমাদেরকে মানসিকভাবে ও বাস্তবে বিভক্ত করে দিয়েছে। প্রথমেই মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার প্রসঙ্গে আসি। দখলকারী শক্তিগুলি তাদের অধিকৃত মুসলিম দেশগুলিতে মাদ্রাসা স্থাপন করলো। উদ্দেশ্য- পদানত মুসলিম জাতিটাকে এমন একটা ইসলাম শিক্ষা দেয়া যাতে তাদের চরিত্র প্রকৃত পক্ষেই একটা পরাধীন দাস জাতির চরিত্রে পরিণত হয়, তারা কোনদিন তাদের প্রভুদের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াবার চিন্তাও না করে।
খ্রিষ্টানদের মধ্যে প্রাচ্যবিদ বলে একটা শিক্ষিত শ্রেণি ছিল ও আছে যারা ইসলামসহ প্রাচ্যের বিভিন্ন ধর্ম, কৃষ্টি, ইতিহাস ইত্যাদির ওপর গবেষণা করে থাকেন। উপনিবেশ পরিচালনা করার জন্য এই শ্রেণিটির খুব প্রয়োজন ছিল ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের। এদের সাহায্য নিয়ে খ্রিষ্টানরা মাদ্রাসায় শিক্ষা দেবার জন্য তাদের মন মত কী শিখানো হবে তার তালিকা ও কী প্রক্রিয়ায় শেখানো হবে তা তৈরি করল। তাদের তৈরি সেই ‘ইসলাম’-টিকে জাতির মনে-মগজে গেড়ে দেওয়ার জন্য বড়লাট লর্ড ওয়ারেন হেসটিংস ১৭৮১ সনে ভারতের তদানীন্তন রাজধানী কোলকাতায় আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করল।
মাদ্রাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য কী ছিল তা আলিয়া মাদ্রাসার প্রাক্তন অধ্যক্ষ জনাব ইয়াকুব শরীফ “আলিয়া মাদ্রাসার ইতিহাস” বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন, “মুসলমানরা ছিল বীরের জাতি, ইংরেজ বেনিয়ারা ছলে-বলে-কৌশলে তাদের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে তাদের প্রচলিত ধর্ম, শিক্ষা ও মর্যাদা হরণ করার জন্য পদে পদে যেসব ষড়যন্ত্র আরোপ করেছিল, আলিয়া মাদ্রাসা তারই একটি ফসল। বাহ্যত এই প্রতিষ্ঠানের পত্তন করা হয়েছিল আলাদা জাতি হিসাবে মুসলমানদের স্বার্থ সংরক্ষণের নিমিত্ত, যাতে মুসলমানদের ধর্ম, কৃষ্টি ও আদর্শ রক্ষা পায়। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মুসলমানদের ধোঁকা দেওয়াই ছিল তাদের আসল উদ্দেশ্য।” এই যে ধোঁকাটা দিল, কী সে ধোঁকা? মারটা কোন জায়গায় দিল সেটা বুঝতে হবে।
(ক) খ্রিষ্টান পণ্ডিতরা গবেষণা করে যে বিকৃত ইসলামটি তৈরি করেছিল সেখান থেকে ইসলামের প্রাণ আল্লাহর সার্বভৌমত্ব (তওহীদ) ও উম্মাহর মূল কাজ সত্য প্রতিষ্ঠার জেহাদকে বাদ দেওয়া হলো। মো’মেনের সংজ্ঞায় আল্লাহ ঠিক এই দুটো জিনিসের উল্লেখ করেছেন- তওহীদ ও জেহাদ (সুরা হুজরাত ১৫)। কীভাবে ব্যাখ্যা করছি। প্রথমেই এতে কালেমার অর্থ বিকৃতি করা হলো; লা এলাহা এল্লাল্লাহ-র প্রকৃত অর্থ- ‘আল্লাহ ছাড়া আদেশদাতা নেই’ কে বদলিয়ে করা হলো- আল্লাহ ছাড়া উপাস্য নেই। এটা করা হলো এই জন্য যে, আল্লাহকে একমাত্র আদেশদাতা হিসাবে নিলে এ জাতিতো ব্রিটিশদের আদেশ মানবে না, মুসলিম থাকতে হলে আল্লাহর আদেশ মানতে হবে। আর কালেমার মধ্যে ‘এলাহ’ শব্দের অর্থ বদলিয়ে যদি উপাস্য বা মা’বুদ শেখানো যায় তবে এ জাতির লোকজন ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর উপাসনা, নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, দান-খয়রাত ইত্যাদি নানা উপাসনা করতে থাকবে এবং জাতীয় জীবনে ব্রিটিশ প্রভুদের আদেশ পালন করতে থাকবে; তাদের অধিকার ও শাসন দৃঢ় ও স্থায়ী হবে। এই উদ্দেশ্যে ঐ বিকৃত ইসলামে নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত, আত্মার পরিচ্ছন্নতার জন্য নানারকম ঘষামাজা, আধ্যাত্মিক উন্নতির ওপর গুরুত্ব ও প্রাধান্য দেয়া হলো। কারণ এরা ঐ এবাদত, উপাসনা নিয়ে যত বেশী ব্যস্ত থাকবে ব্রিটিশরা তত নিরাপদ হবে।
(খ) ব্রিটিশ শাসকরা এই মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে প্রধানতঃ বিতর্কিত বিষয়গুলির প্রাধান্য দিল, যেগুলো অতি আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল বিভিন্ন মাজহাব ফেরকার এমামদের এবং তাদের অনুসারীদের মধ্যে, কোর’আনের আয়াতের ব্যাখ্যা নিয়ে। তাদেরকে শেখানো হলো ব্যক্তিগত জীবনের মাসলা-মাসায়েল, ফতোয়া, দোয়া-কালাম, মিলাদের উর্দু-ফার্সি পদ্য ইত্যাদি যেন এই মাদ্রাসায় শিক্ষিতরা যেন ঐগুলি নিয়েই ব্যস্ত থাকে, তর্কাতর্কি, এমনকি মারামারি করতে থাকে, শাসকদের দিকে তাদের দৃষ্টি দেবার সময় না থাকে।
(গ) খ্রিষ্টান প্রাচ্যবিদদের তৈরি ঐ ইসলামে কোর’আনের গুরুত্ব একেবারে কমিয়ে দিয়ে সেখানে হাদিসের প্রবল প্রাধান্য দেয়া হলো। কারণ এই যে কোর’আন চৌদ্দশ’ বছর আগে যা ছিল আজও ঠিক তাই-ই আছে, এর একটা শব্দ নয় একটা অক্ষরও কেউ বদলাতে বা বাদ দিতে পারে নাই, কারণ এর রক্ষা ব্যবস্থা আল্লাহ তার নিজের হাতে রেখেছেন (সুরা হেজর ৯) কিন্তু হাদিস তা নয়। বহু হাদিস মানুষ তার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তৈরি করেছে, খেলাফতের পরে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর উমাইয়া, আব্বাসীয়া, ফাতেমী ইত্যাদি খেলাফতের নামে আসলে রাজতন্ত্রের রাজারা তাদের যার যার সিংহাসন রক্ষার জন্য অজস্র মিথ্যা হাদিস তৈরি করে আল্লাহর রসুলের নামে চালিয়েছে। সুন্নীরা তাদের মতবাদের পক্ষে, শিয়ারা তাদের মতবাদের পক্ষে মিথ্যা হাদিস তৈরি করে নিয়েছে যার যার মতবাদকে শক্তিশালী করার জন্য। আরও বিভিন্নভাবে হাদিস বিকৃত হয়েছে। এক ইমাম বোখারী (র.) সাড়ে ছয় লক্ষ হাদিস সংগ্রহ করেছেন। যাচাই বাছাইয়ের পর তিনি সেখান থেকে মাত্র ৬ হাজার হাদিসকে সহীহ বলে স্বীকৃতি দিলেন। বাকি ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার হাদিস ভুয়া বলে গণ্য হলো। কী সাংঘাতিক বিষয় কল্পনা করা যায়? ইসলামের বিতর্কিত সবগুলো বিষয়ই হাদিসকেন্দ্রিক। মাদ্রাসা শিক্ষার সিলেবাসে কোর’আনের গুরুত্ব কমিয়ে দিয়ে হাদিসের ওপর এত জোর এবং গুরুত্ব দেয়ার উদ্দেশ্য হলো বিতর্ক, বিভেদ শুধু জিইয়ে রাখা নয় ওটাকে শক্তিশালী করা।
(ঘ) তারপর তারা যে কাজটি করলো তা সাংঘাতিক এবং যার ফল সুদূরপ্রসারী। তারা তাদের প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় তাদের তৈরি করা বিকৃত ইসলামে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করলো তাতে মাদ্রাসার শিক্ষা শেষ করে বেরিয়ে এসে তাদের রুজি-রোজগার করে খেয়ে বেঁচে থাকার কোন কর্মমুখী  শিক্ষা দেয়া হলো না। অংক, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ভূগোল, ইতিহাস, বিজ্ঞান, দর্শন, অর্থ-বিজ্ঞান, জীব-বিদ্যা ইত্যাদির কোন কিছুই ঐ সব মাদ্রাসার সিলেবাসে রাখা হলো না। খ্রিষ্টানরা এটা এই উদ্দেশ্যে করলো যে, তাদের মাদ্রাসায় শিক্ষিত এই মানুষগুলো যেন ওখান থেকে বেরিয়ে যেয়ে তাদের শেখানো বিকৃত ইসলামটাকে বিক্রি করে পয়সা উপার্জন করা ছাড়া আর কোন পথে উপার্জন করতে না পারে; কারণ ঐ মানুষগুলির মধ্য থেকে ব্যতিক্রম হিসাবে যদি কেউ বুঝতে পারে যে তাদের শিক্ষা দেয়া ঐ ইসলামটা প্রকৃতপক্ষে নবীর মাধ্যমে আল্লাহর দেয়া সত্য ইসলাম নয়, ওটা বিকৃত, তাহলেও যেন সে বাধ্য হয় ওটাকেই বিক্রি করে উপার্জন করতে, কারণ তাকে এমন আর কিছুই শিক্ষা দেয়া হয়নি যে কাজ করে সে টাকা পয়সা উপার্জন করে খেতে পারে। ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞ জনসাধারণ ধর্ম সম্বন্ধে জানার জন্য, ফতওয়া নেবার জন্য স্বভাবতই এদের কাছেই যেতে বাধ্য এবং তারা অবশ্যই ব্রিটিশ-খ্রিষ্টানদের তৈরি করা ঐ প্রাণহীন, আত্মাহীন, বিতর্ক-সর্বস্ব ইসলামটাই তাদের শিক্ষা দেবে; এবং এই ভাবেই ঐ বিকৃত ইসলামই সর্বত্র গৃহিত হবে, চালু হবে। খ্রিষ্টানরা তাদের অধিকৃত সমস্ত মুসলিম দেশগুলিতে এই নীতিই কার্যকরি করেছে এবং সর্বত্র তারা একশ’ ভাগ (১০০%) সফল হয়েছে।
১৭৮০ সনে কোলকাতায় আলীয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে খ্রিষ্টান শাসকরা এর পরিচালনার ভার অর্পণ করলো মওলানা মাজদুদ্দীন ওরফে মোল্লা মদন নামক এ দেশীয় একজন মওলানার হাতে যিনি খ্রিষ্টানদের বেঁধে দেওয়া শিক্ষাক্রম অনুযায়ী মুসলমান ছাত্রদেরকে তাদেরই বেঁধে দেওয়া পাঠ্যসূচি অর্থাৎ ইসলাম শিক্ষা দিবেন। কে এই মাজদুদ্দীন, তিনি কোথা থেকে এসেছেন এ বিষয়ে কোনো প্রামাণ্য তথ্যই পাওয়া যায় না। তথাপি তিনিই হয়ে গেলেন ব্রিটিশ শাসনাধীন মুসলমান জাতির ধর্মশিক্ষার গুরু। কিন্তু এ মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ তারা সম্পূর্ণভাবে তাদের নিজেদের হাতে রাখলো। তারা অর্ধশতাব্দির অধিক সময় এ পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদান চালু রাখলো। অর্ধশতাব্দীর পর্যবেক্ষণের পর তারা যখন দেখলো যে এ থেকে তাদের আশানুরূপ ফল আসছে না, তখন মুসলিম বোলে পরিচিত এই জাতিটাকে নিজেদের তৈরি বিকৃত ইসলামের মাধ্যমে চিরদিনের জন্য পঙ্গু, অথর্ব করে নিজেদের দুঃশাসনের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার এই জঘন্য পরিকল্পনা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য ১৮৫০ সালে ব্রিটিশ খ্রিষ্টান শাসকরা তাদের প্রতিষ্ঠিত আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ  পদটিও নিজেদের হাতে নিয়ে নিল। প্রথম অধ্যক্ষ নিযুক্ত হলেন ড. এ.এইচ. স্প্রিঙ্গার এম.এ.। তারপর একাধিক্রমে ২৬ জন খ্রিষ্টান ৭৬ বৎসর (১৮৫০-১৯২৭) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে আসীন থেকে এই মুসলিম জাতিকে ইসলাম শিক্ষা দিলেন।
খ্রিষ্টানদের গোলাম, দাস হবার আগেই আল্লাহ-রসুলের প্রকৃত ইসলাম বিকৃত হয়ে গিয়েছিল তা না হলে তো আর গোলাম হতে হতো না, কিন্তু ওটার যা কিছু প্রাণ অবশিষ্ট ছিল খ্রিষ্টানদের তৈরি এই ইসলামে তা শেষ হয়ে গেল এবং এটার শুধু কংকাল ছাড়া আর কিছুই রইল না। দীর্ঘ ১৪৬ বছর (১৭৮০ সালে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে ১৮৫০ সাল পর্যন্ত ৭০ বছর মুসলিম নামধারী মোল্লাদেরকে অধ্যক্ষ পদে রেখে এবং ১৮৫০ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত ৭৬ বছর খ্রিষ্টান পণ্ডিতরা নিজেরা সরাসরি অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত থেকে) এ ‘ইসলাম’ শিক্ষা দেবার পর ব্রিটিশরা যখন নিশ্চিত হলো যে, তাদের তৈরি করা বিকৃত ইসলামটা তারা এ জাতির হাড়-মজ্জায় ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে এবং আর তারা কখনও এটা থেকে বের হতে পারবে না তখন তারা ১৯২৭ সনে তাদের আলীয়া মাদ্রাসা থেকেই শিক্ষিত মওলানা শামসুল ওলামা কামাল উদ্দিন আহমেদ (এম.এ.আই.আই.এস) এর কাছে অধ্যক্ষ পদটি ছেড়ে দিল। তাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠিত আলীয়া মাদ্রাসার শুধু ঐ মাদ্রাসায় সীমিত না রেখে ব্রিটিশ শাসকরা তা বাধ্যতামূলকভাবে এই উপমহাদেশের সর্বত্র বেশীর ভাগ মাদ্রাসায় চালু করলো [দেখুন- আলীয়া মাদ্রাসার ইতিহাস, মূল- আঃ সাত্তার, অনুবাদ- মোস্তফা হারুন, ইসলামী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ]।
যে ২৬ জন খ্রিষ্টান পদ্ধতি অধ্যক্ষ পদে থেকে কোলকাতা আলীয়া মাদ্রাসায় ৭৬ বছর ধোরে মোসলেম দাবিদার ছাত্রদেরকে বিকৃত ইসলাম শিখিয়েছেন তাদের তালিকা:
১. এ.এইচ. স্প্রিঙ্গার এম.এ. (১৮৫০)
২. উইলিয়াম ন্যাসলীজ এল.এল.ডি (১৮৭০)
৩. জে. স্যাটক্লিফ এম.এ. (১৮৭৩)
৪. এইচ.এফ. ব্রকম্যান এম.এ. (১৮৭৩)
৫. এ.ই. গাফ এম.এ. (১৮৭৮)
৬. এ.এফ.আর হোর্নেল (ঈ.ও.চ.ঐ.উ (১৮৮১)
৭. এইচ প্রথেরো এম.এ. (অস্থায়ী) (১৮৯০)
৮. এ.এফ. হোর্নেল (১৮৯১)
৯. এফ.জে. রো এম.এ. (১৮৯১)
১০. এ.এফ. হোর্নেল (১৮৯২)
১১. এফ.জে.রো এম.এ. (১৮৯৫)
১২. এ.এফ. হোর্নেল (১৮৯৭)
১৩. এফ.জে.রো (১৮৯৮)
১৪. এফ.সি.হল (বি.এ.টি.এস.সি) (১৮৯৯)
১৫. স্যার অর‌্যাল স্টেইন পি.এইচ.ডি (১৮৯৯)
১৬. এইচ.এ. স্টার্ক বি.এ. (১৯০০)
১৭. লে. কর্ণেল জি.এস.এ. রেঙ্কিং (১৯০০)
১৮. এইচ.এ. স্টার্ক বি.এ. (১৯০১)
১৯. এডওয়ার্ড ডেনিসন রাস (১৯০৩)
২০. এইচ. ই. স্টেপেল্টন (১৯০৩)
২১. এডওয়ার্ড ডেনিসন রাস (১৯০৪)
২২. এম. চীফম্যান (১৯০৭)
২৩. এডওয়ার্ড ডেনিসন রাস (১৯০৮)
২৪. এ.এইচ. হারলি এম.এ. (১৯১১)
২৫. মি.জে.এম. ব্রটামলি বি.এ (১৯২৩)
২৬. এ.এইচ. হার্টি এম.এ. (১৯২৫)
(সূত্র: ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসা, বকশীবাজার এর ওয়েবসাইট)
উপমহাদেশ ভাগ হয়ে পাকিস্তান হবার পর ঐ আলীয়া মাদ্রাসা উভয় পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পরে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবার পরও খ্রিষ্টানদের তৈরি বিকৃত ইসলামের সেই পাঠ্যক্রমই চালু থাকে। শুধু ইদানিং এতে অংক, ভ‚গোল, ইংরেজিসহ কিছু বিষয় যোগ করার চেষ্টা হচ্ছে তথাপি মাদ্রাসায় শিক্ষিত দাখেল, ফাযেল ও আলেমরা দীন বিক্রী করে খাওয়া ছাড়া আর কিছু করে খাওয়ার যোগ্যতা লাভ করতে পারছেন না।
অর্থাৎ মুসলিম বলে পরিচিত পৃথিবীর জনসংখ্যাটি যাতে কোনদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য খ্রিষ্টানরা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে তাদের তৈরি যে প্রাণহীন, আত্মাহীন বিকৃত ইসলামটা ১৪৬ বৎসর ধরে শিক্ষা দিয়েছিল সেই বিকৃত, আত্মাহীন ইসলামটাকেই প্রকৃত ইসলাম মনে করে আমরা প্রাণপণে তা আমাদের জীবনে কার্য্যকরি করার চেষ্টায় আছি। আজও অসংখ্য মাদ্রাসা থেকে কোর’আন-হাদিসের জ্ঞান নিয়ে লক্ষ লক্ষ আলেম বেরিয়ে আসছেন কিন্তু তাদেরকে জাতির ঐক্য গঠনের গুরুত্ব, জীবন-সম্পদ উৎসর্গ করে সত্যদীন প্রতিষ্ঠার প্রেরণা, সমাজে বিরাজমান অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দেয়া হয় নি। এই ষড়যন্ত্রের পরিণামে তাদের মধ্যে ধর্মীয় জ্ঞানের অহঙ্কার যেমন সৃষ্টি হলো, পাশাপাশি তাদের হৃদয়ে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের গতিশীল ভ‚বন থেকে পিছিয়ে থাকার দরুন একপ্রকার হীনম্মন্যতাও সৃষ্টি হলো। তাদের অন্তর্মুখিতা, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে গোঁড়ামি, বিভক্তি, নিস্পৃহতা, অন্তর্মুখিতা, স্বার্থপরতা ও অন্য ধর্মের অনুসারীদের প্রতি প্রচণ্ড বিদ্বেষের কারণ এই শিক্ষাব্যবস্থার গোড়াতেই গ্রথিত রয়েছে। এ কারণে আমাদের জাতির মধ্যে লক্ষ লক্ষ আলেম থাকা সত্তে¡ও জাতীয়ভাবে আল্লাহর দেওয়া বিধান কার্যকর নেই এবং সেটা করার প্রচেষ্টাও তাদের মধ্যে নেই।
এই মাদ্রাসারই আরেকটি ভাগ উপমহাদেশে চালু রয়েছে যাকে দেওবন্দী বা কওমী মাদ্রাসা বলা হয়ে থাকে। এদের সিলেবাসও সেই তওহীদ, ইসলামের খুটিনাটি মাসলা-মাসায়েল, যে বিধান কোথাও প্রতিষ্ঠিত নেই সেই বিধানের সূক্ষ্ম গবেষণা দিয়ে পূর্ণ। তবে এই মাদ্রাসা থেকে যারা বের হন তারা সেই ব্রিটিশ যুগ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বহীন বিষয় নিয়ে আন্দোলনের নামে তুলকালাম করে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ঈমানী চেতনাকে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এতে ইসলামের কতটুকু উপকার হয়েছে তা এসবের ফলাফলই বলে দেয়। তারা আলীয়া মাদ্রাসা থেকে পাশ করা আলেমদেরকে আলেমই মনে করেন না, আলীয়ার প্রতি অবজ্ঞার ভাব কওমীদের মস্তিকে বদ্ধমূল করে দেওয়া হয়। ঠিক একইভাবে আলীয়া মাদ্রাসার আলেমরাও কওমী আলেমদেরকে ধর্মান্ধ, গোড়াপন্থী বলেই মনে করেন।
এক আল্লাহ, এক রসুল, এক দীন অথচ ইসলামের এমন একটি বিষয় খুঁজে পাওয়া মুশকিল যে বিষয়ে মতবিরোধ নেই। প্রতিটি বিষয় নিয়ে মাসলা মাসায়েল আর ফতোয়ার দুর্বোধ্য জাল সৃষ্টি করেছে এই জনগোষ্ঠীর এমাম, ফকিহ, মুফতি, আলেমগণ। তাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তের সমর্থনে আবার সৃষ্টি হয়েছে সমর্থকগোষ্ঠী বা অনুসারী। এইভাবে বিভক্ত হতে হতে জাতি আজ অসংখ্য মাজহাব, ফেরকা, দল, উপদল, তরিকায় বিভক্ত। এই দলগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে এতটাই শত্রু ভাবাপন্ন যে একদল আরেক দলকে কাফের ফতোয়া দিতে এক মুহূর্ত্ত দ্বিধা করে না। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ করেন, হত্যা করেন, অন্য দলের উপাসনাগৃহে হামলা করেন। এই যে ধর্মীয় কোন্দলে মোসলেম নামক জনগোষ্ঠীটি আজ লিপ্ত হয়ে আছে এর বীজ রোপিত হয়েছে ঔপনিবেশিক আমলের মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সময়। তাদের “ঐক্যহীন করে শাসন করো” নামক শাসননীতির একটি অংশ হিসাবে তারা মাদ্রাসা শিক্ষার সিলেবাসেই রেখে দিয়েছেন মাজহাব, ফেরকা নিয়ে, দীনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মাসলা মাসায়েল নিয়ে তর্ক করার শিক্ষা। এই বিকৃত ইসলাম যতদিন না এই জাতি ত্যাগ করবে এবং প্রকৃত ইসলাম গ্রহণ না করবে ততদিন তারা আর ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থায় দীন সম্পর্কে প্রায় কিছুই শিক্ষা দেওয়া হয় নি। বরং সুদভিত্তিক অংক, ব্রিটিশ রাজা- রানির ইতিহাস, ভ‚গোল, বিজ্ঞান, গণিত, পাশ্চাত্যের ধর্মহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা, পাশ্চাত্য বস্তুবাদী দর্শন ইত্যাদি শিক্ষার পাশাপাশি ধর্ম সম্পর্কে, বিশেষ করে ইসলাম সম্পর্কে একটা বিদ্বেষভাব  শিক্ষার্থীদের মনে প্রবেশ করানো হলো। ওখান থেকে লক্ষ লক্ষ কথিত আধুনিক শিক্ষিত লোক বের হচ্ছেন যারা চরম আত্মকেন্দ্রিক ও স্বার্থপর। নিজেদের বৈষয়িক উন্নতি ছাড়া আর কিছুই তারা ভাবেন না। তারা অধিকাংশই আল্লাহকে মনে করেন প্রাচীন যুগের মানুষদেরকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চতুর প্রকৃতির লোকদের তৈরি করা জুজু, আল্লাহর দীনকে মনে করেন সেকেলে, মধ্যযুগীয় চিন্তাধারা; ধর্মকে মনে করেন কল্পকাহিনী। তাদের দৃষ্টিতে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে ধর্ম অচল। তাদেরকে শেখানো হলো আধুনিক সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পশ্চিমাদের উদ্ভাবন। কিন্তু এই জ্ঞান-বিজ্ঞানের ভিত্তি যে মুসলিমরাই নির্মাণ করেছিল সেটা তাদেরকে শিক্ষা দেওয়া হলো না। এদের মধ্যে অনেকেই আছে প্রচণ্ড ধর্মবিদ্বেষী অথচ মুসলিম পরিবারে তাদের জন্ম। এর মূল কারণ যে বস্তুবাদী ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থা, এ বিষয়টি এখন আমাদের সবাইকে পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে। দুর্ভাগ্য আমাদের জাতির, কারণ আমাদের ধর্মীয় জীবন পরিচালিত হচ্ছে কিছু ব্যক্তিগত আমল করে আর জাতীয় জীবন পরিচালিত হচ্ছে পাশ্চাত্য প্রবর্তিত জীবনব্যবস্থা  দিয়ে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে- একদিকে ইসলামের মূল চেতনাবিহীন আচারসর্বস্ব ধর্মীয় শিক্ষা অপরদিকে একেবারে ধর্মহীন পাশ্চাত্য ধ্যান ধারণার একটি সাধারণ শিক্ষা। এই দুই বিপরীত চেতনায় শিক্ষিত দুটো শ্রেণির আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের মাঝখানে পড়ে বিশাল সংখ্যক ধর্মবিশ্বাসী সাধারণ মানুষ আজ দিগি¦দিক জ্ঞানশূন্য। এই দুটো চেতনার সংঘর্ষে আমাদের সমাজ, দেশ ও জাতি প্রায়ই অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়। এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের রাস্তা একটাই, সেটা হলো- এমন একটা ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা গ্রহণ করা যেটা একাধারে দেহ-আত্মা, দুনিয়া-আখেরাতের সমস্যার সমাধান করবে।
লেখক- সাহিত্য সম্পাদক, হেযবুত তওহীদ।
ফোন- ০১৭১১০০৫০২৫, ০১৯৩৩৭৬৭৭২৫, ০১৭৮২১৮৮২৩৭, ০১৬৭০১৭৪৬৪৩

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...