হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

এত লাশের বোঝা কী করে বইবে মুসলিম নেতৃবৃন্দ?

For Boost2হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম, এমাম, হেযবুত তওহীদ

মিনায় যেভাবে পদপিষ্ঠ হয়ে প্রায় আটশ হাজী মর্মান্তিক ও করুণ মৃত্যু বরণ করলেন তাতে দুঃখ প্রকাশের জন্য কোনো ভাষাই যথেষ্ট নয়। মনের গভীরে শুধু একটি প্রশ্নই আন্দোলিত হচ্ছে, কেন এমন হচ্ছে? মুসলমানের জীবন তো এমন সস্তা হওয়ার কথা না? আল্লাহ বহুবার কোর’আনে বলেছেন যে, তিনি মো’মেনের অভিভাবক, রক্ষাকর্তা। তাহলে কেন তিনি মুসলিমদের এহেন দুর্গতিকে সহ্য করছেন, কেন রক্ষা করছেন না?
গণমাধ্যমগুলোতে হাজীদের লাশের ¯তূপের ছবিগুলো যখন চোখের সামনে আসে তখন মনে পড়ে রসুলাল্লাহর সেই কথা, একজন মো’মেনের সম্মান কাবার ঊর্ধ্বে। সেই মো’মেন দাবিদারদের যখন এই করুণ মৃত্যু দেখে যে কষ্ট হৃদয়ে অনুভব করছি তা পাঠকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করার জন্য লিখার সিদ্ধান্ত নিলাম। শুধু কষ্ট থেকে নয়, আল্লাহর রসুলের একজন গোনাহগার, অধম উম্মত হিসাবে এই ব্যর্থতার দায় ও গ্লানি আমি নিজের আত্মায় অনুভব করছি।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের গোটা জাতির এ পরিস্থিতি কেন হবে? আমরা লাখে লাখে মারা যাচ্ছি বোমার আঘাতে, মরে যাচ্ছি সাগরে ডুবে। এক মুসলিম আরেক মুসলিমকে দেশ থেকে উচ্ছেদ করছে, অন্য মুসলিমরা তাদেরকে ঠাঁই দিচ্ছে না। আমরা লাখে লাখে উদ্বাস্তু হয়ে ইউরোপে আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে করুণাভিক্ষা করছি। এমন কি আমরা হজ্ব করতে গেলাম, সেখানেও পায়ের নিচে চাপা পড়ে মরে যাচ্ছি। রসুল পাক (দ.)-এর জীবনেতো আমরা দেখি না যে উম্মতে মোহাম্মদী একজনের পায়ের নিচে চাপা পড়ে আরেকজন মরে গেছে। তারা জীবন দিয়েছেন যুদ্ধক্ষেত্রে কখনো শত্রুর ঘোড়া বা হাতির পায়ের নিচে পিষ্ট হয়ে। কিন্তু আজ তাদের এমন দুর্ভাগ্য কেন ঘিরে ধরল? এটা নিয়ে আজকে ভাবতে হবে। বিষয়গুলো স্পর্শকাতর বলে এ পর্যন্ত এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, কিন্তু ক্ষতস্থান স্পর্শকাতরই হয়। তাই বলে কি ক্ষত না সারিয়ে রেখে দেওয়া যায়? যায় না। কারণ তাতে সেই ক্ষত এক সময় মৃত্যুর কারণও হয়ে দাঁড়ায়। স্পর্শকাতর বলে কি আমরা চিরটাকাল এভাবেই মৃতের মতো কাটিয়ে যাবো, সংশোধনের চেষ্টা করব না?
না, তা আর হতে পারে না। বিশ্ববাসী হাসবে আমাদের এই বিশৃঙ্খলা দেখে, আমাদের এই লক্ষ্যহীনতা দেখে, আমাদের অব্যবস্থাপনা ও কাজকর্ম দেখে। আমরা নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ উম্মাহ বলে দাবি করি অথচ দুনিয়াতে আমাদের ন্যূনতম সম্মান নেই। আমরা যুগোপযোগী হওয়ার জন্য, আধুনিক জীবন যাপনের প্রতিটি উপাদানের জন্য, শিল্প, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা, জীবনব্যবস্থা, সংস্কৃতি সবকিছুর জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী। মুসলিম উম্মাহর বাৎসরিক সম্মেলনের জন্য আল্লাহ ব্যবস্থা দিয়েছেন পবিত্র হজ্বের। যে বিষয়টি আঞ্চলিকভাবে সমাধান করা যায় না, সেটি জাতীয়ভাবে বসে যেন সমাধান করা যায় সেজন্যই আল্লাহ হজ্বের ব্যবস্থা রেখেছেন। হজ্ব নিছক আধ্যাত্মিক কোনো তীর্থযাত্রা নয়, তীর্থযাত্রার হজ্ব তো রসুলাল্লাহর আগমনের আগেই ছিল। শেষ ইসলাম সেই হজ্বকে আধ্যাত্মিক প্রেরণার পাশাপাশি জাতির সামষ্টিক কল্যাণার্থে কাজের লাগানোর লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছে। হজ্ব ছিল কোরাইশদের ব্যবসার মাধ্যম, সেখান থেকে আল্লাহর রসুল একে নিঃস্বার্থ ও কল্যাণমুখী সম্মেলনের রূপ দিলেন এবং জাহেলিয়াতের চিহ্নমুক্ত করে শালীন করলেন। আল্লাহ এই জাতিকে এমনভাবে ঐক্যবদ্ধ ও সুশৃঙ্খল হওয়ার জন্য রসুলাল্লাহর মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করেছেন যার উপমা আল্লাহ দিয়েছেন গলিত সীসার তৈরি প্রাচীরের সঙ্গে (সুরা সফ ৪)।
হজ্বের সেই উদ্দেশ্য আমাদেরকে বুঝতে হবে। যেমন জামাতে নামাযের উদ্দেশ্য হলো মুসলিম পাঁচবার তাদের স্থানীয় কর্মকা-ের কেন্দ্র মসজিদে একত্র হবে, তাদের স্থানীয় সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা পরামর্শ করবে, সিদ্ধান্ত নেবে, তারপর স্থানীয় ইমামের নেতৃত্বে তার সমাধান করবে। তারপর সপ্তাহে একদিন বৃহত্তর এলাকায় জামে মসজিদে জুমা’র নামাযে একত্র হয়ে ঐ একই কাজ করবে। তারপর বছরে একবার আরাফাতের মাঠে পৃথিবীর সাদা-কালো, তামাটে-বাদামি এক কথায় সমস্ত মুসলিমদের নেতৃস্থানীয়রা একত্র হয়ে জাতির সর্বরকম সমস্যা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ইত্যাদি সর্বরকম সমস্যা, বিষয় নিয়ে আলোচনা করবে, পরামর্শ করবে, সিদ্ধান্ত নেবে। অর্থাৎ স্থানীয় পর্যায় থেকে ক্রমশ বৃহত্তর পর্যায়ে বিকাশ করতে করতে জাতি পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু মক্কায় একত্রিত হবে। একটি মহাজাতিকে ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধনে বেঁধে রাখার কী সুন্দর প্রক্রিয়া। কী অপূর্ব সিস্টেম। আজ এ জাতির মধ্যে জামাতে পাচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমার নামাজ ও হজ্বের এই উদ্দেশ্য কতটুকু স্মরণে আছে? হজ্বের সময় চলছে জাতিসংঘে সম্মেলন। জানি না পশ্চিমারা ইচ্ছা করে এ সময়ে অধিবেশন ডেকেছে কিনা। গণমাধ্যমে পাওয়া তথ্য মোতাবেক প্রায় সকল মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ সফরসঙ্গীরা জাতিসংঘ দফতরে অবস্থান করছেন। তারা ভুলে গেছেন যে তাদের কেবলা নিউ ইয়র্ক নয়, ইংল্যান্ড বা মস্কোও নয়, তাদের কেবলা ক্বাবা শরীফ যেখানে হজ্ব করতে গিয়ে অব্যবস্থার দরুণ পদপিষ্ঠ হয়ে মারা গেছেন প্রায় আটশত হাজী যাদের মতো ধর্মবিশ্বাসী মানুষের ভোটেই নেতৃত্ব উপভোগ করছেন আমাদের নেতারা। এ দুর্ঘটনার দায় তাই কেবল আরব সরকারের নয়, সকল মুসলিম নেতৃবৃন্দের। কেননা হজ্ব নিয়ে চরম অব্যবস্থা, স্বার্থপরতার বাণিজ্য ও হাজীদের ভোগান্তি তো প্রতিটি পর্যায়ে রয়েছে।
যাই হোক, ঘোর সংকটময় সময় পার করছে জাতি। সেই আফ্রিকা থেকে চীন সীমান্ত পর্যন্ত বসবাসকারী সমগ্র মুসলিম জনগোষ্ঠী ভয়াবহ সমস্যায় আক্রান্ত। এই হজ্বের সময় সমগ্র উম্মাহর নেতৃবৃন্দ যদি একত্র হয়ে এই জাতীয় সমস্যাগুলোর সমাধানকল্পে বসতেন তবে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো দিক বেরিয়ে আসতো। কিন্তু তারা চলে গেছেন নিউইয়র্কে। আর এই সাধারণ ধর্মবিশ্বাসী মানুষগুলো লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে আল্লাহর ঘর বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করতে যেয়ে সেখানে নিদারুণ অব্যবস্থাপনার মধ্যে আরব ধনকুবের শেখ আর যুবরাজদের প্রটোকল রক্ষার্থে পদদলিত হয়ে জীবন দিচ্ছে। এদের মৃত্যুর দায় কে নেবে? আরবের গ্র্যান্ড মুফতি যথারীতি তার চাকরির স্বার্থে এ দায় যুবরাজের কাঁধ থেকে সরিয়ে নিয়তির কাঁধে চাপানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, “এ ঘটনা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। কেননা ভাগ্য ও নিয়তি মানুষের অবধারিত বিষয়”। বিবিসির ভাষ্যমতে এই মন্তব্য মুসলিম বিশ্বের সাধারণ মানুষকে আরো বিক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। আমরাও বিশ্বাস করি, এটা মুসলমানদের নিয়তি হতে পারে না। এটা আমাদের বিশৃঙ্খলার পরিণতি তথা কর্মফল মাত্র। কারণ বিদায় হজ্বের ভাষণে আল্লাহর রসুল বলেছিলেন, ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ উদ্দেশ্যে অন্য কোন মুসলিমকে ধাক্কা দেওয়া কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয়। আমি কি বলব মুসলিম কে? মুসলিম ঐ ব্যক্তি, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলিমরা নিরাপদ; মো’মেন ঐ ব্যক্তি, প্রাণ ও সম্পত্তির নিরাপত্তার ব্যাপারে যার উপর মানুষ আস্থা রাখতে পারে। (সিরাত বিশ্বকোষ: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ)। তাহলে সৌদি যুবরাজের নিরাপত্তা রক্ষীরা কীভাবে যুবরাজের চলার পথ করে দেওয়ার জন্য অন্য হাজীদেরকে পিটিয়ে জায়গা করতে পারেন? প্রকৃত ইসলামের সময় কি এমন জাহেলিয়াত কল্পনা করা যেত? অবশ্যই না। রসুলাল্লাহ (দ.) শক্তভাবে বলেছেন, “অনারবের উপর আরবের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই।” অথচ আজকের আরবরা বিশ্বের অন্য দেশের মুসলিমদেরকে মিসকিন মনে করে।
যারা মুসলিম তাদেরকে এই পরিস্থিতি পাল্টানোর ব্যাপারে অবশ্যই সোচ্চার হতে হবে, কারণ আল্লাহর ঘর ক্বাবা তওয়াফ করার অভিলাস সব মুসলিমই পোষণ করেন। আল্লাহ এই গৃহকে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সমগ্র মানবজাতির ঐক্যসূত্র হিসাবে স্থাপন করেছেন কেননা এই গৃহের সঙ্গে আদি পিতা আদমের (আ.) স্মৃতি জড়িত, নূহ (আ.), এব্রাহীম (আ.), ইসমাইল (আ.), শেষ নবী মোহাম্মদ (দ.) এর পবিত্র স্মৃতিও জড়িত। আমরা ক্বাবার অভিমুখে সেজদাহ করি, তাই কাবা প্রাঙ্গণের পবিত্রতা রক্ষা, হজ্ব ব্যবস্থাপনার শৃঙ্খলা, কাবা ও হজ্বের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। এই সমস্যা আমাদের সবার সঙ্গে সম্পর্কিত। মুসলিম উম্মাহর প্রাণকেন্দ্র ক্বাবা এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় রসুল পাক (দ.) এর রওজা মোবারক যথাক্রমে মক্কা ও মদীনায় অবস্থিত। কিন্তু এই পবিত্র স্থানগুলো আরবের নয়, কেননা রসুলাল্লাহ পুরো মানবজাতির রসুল। আল্লাহ বলেন, কুল, ইয়া আইয়্যুহান নাস, ইন্নি রাসুল্লিাহি ইলাইকুম জামিয়া অর্থাৎ “বলে দাও, হে মানব ম-লী। তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রসুল। (সুরা আরাফ ১৫৮)। তাঁকে মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ (রহমাতাল্লিল আলামীন) প্রেরণ করা হয়েছে। কবি নজরুল যে মদীনার ধুলিমাখা পথ হওয়ার জন্য আফসোস করেছেন, কারণ সেই পথে আল্লাহর রসুল হেঁটে গেছেন। সেই পবিত্র মক্কা-মদীনার ইজারাদার সেজে আরব রাজতন্ত্র ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিল করছে।
আমরা যদি এভাবে চিন্তা করি যে, আমরা সত্য কথা বলব না, সত্য বললে অমুক নাখোশ হবে, অমুকে আমার বিরুদ্ধে ফতোয়া দেবে তাহলে এভাবেই জীবন যাবে আমাদের, এভাবেই আমরা ভেসে যাওয়া আবর্জনার মত হয়ে যাব। উম্মাহর ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে বলতে যেয়ে রসুলাল্লাহ (দ:) একদিন বললেন- “শীঘ্রই এমন দিন আসছে যে অন্যান্য জাতিসমূহ এই উম্মাহর বিরুদ্ধে একে অপরকে ডাকবে যেমন করে (খানা পরিবেশন করার পর) একে অন্য সবাইকে খেতে ডাকে।”
তাঁকে প্রশ্ন করা হলো “আমরা কি তখন সংখ্যায় এত নগণ্য থাকবো?” তিনি বোললেন, “না, তখন তোমরা সংখ্যায় অগণিত হবে, কিন্তু হবে স্রোতে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মত। আল্লাহ তোমাদের শত্রুর মন থেকে তোমাদের স¤পর্কে ভয়-ভীতি উঠিয়ে নেবেন এবং তোমাদের হৃদয়ের মধ্যে দুর্বলতা নিক্ষেপ করবেন।”
কেউ প্রশ্ন করলেন, “ইয়া রসুলাল্লাহ! এই দুর্বলতার কারণ কী হবে?” তিনি জবাব দিলেন, “দুনিয়ার প্রতি ভালবাসা ও মৃত্যুর প্রতি অনীহা [হাদীস- সাওবান (রা:) থেকে আবু দাউদ মেশকাত]।
এখন আমাদের, সত্যনিষ্ঠ মো’মেনদের, যারা সত্যিকারভাবে আল্লাহকে পেতে চায়, রসুলকে ভালোবাসে, দীনকে ভালোবাসে, আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনকে উৎসর্গ করতে চায় তাদেরকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হবে। এতগুলো মানুষের মৃত্যু দেখে কষ্ট পেয়ে দু’দিন পর ভুলে গেলে হবে না, এর সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে, অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে মুসলিম উম্মাহর সমস্যা মুসলিম উম্মাহকেই সমাধান করতে হবে। এই উম্মাহ যতদিন না তাদের মূল পরিচয়ে ফিরে যাবে, যতদিন না ঐক্যবদ্ধ হবে, তবে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটতেই থাকবে।
আসুন আমরা সবাই মিলে কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করি, তিনি যেন আমাদের ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য বোঝার জ্ঞান দেন, সত্যের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মেরুদ- সোজা করে দাঁড়ানোর হিম্মত দেন।
আমীন, সুম্মা আমীন।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...