হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

যে দোয়া ধ্বনিত হয় আত্মার গহীনে

প্রভু! লানৎ (অভিশাপ) উঠিয়ে নাও, বোধশক্তি দাও

হে প্রভু! তোমার এক প্রিয় বান্দা যামানার এমাম মানবজাতিকে তওহীদের দিকে আহ্বান কোরেছেন। আমরা অতি সাধারণ গোনাহগার মানুষ। আমাদের অক্ষমতা, সহায়সম্বলহীনতা, দুর্বলতার কথা তুমি জানো। আমরা পথহারা ছিলাম, গোমরাহ ছিলাম। সত্য কি জানতাম না। তোমার অসীম দয়ায় আমরা যামানার এমামের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মহাসত্য গ্রহণ কোরেছি এবং শত দুর্বলতা সত্ত্বেও মানবজাতিকে সেই সত্য গ্রহণের জন্য আহ্বান কোরে যাচ্ছি। তুমি সব দেখ, সব শোন, তুমি সামিউম বাসীর। তুমি দেখতে পাচ্ছো আমাদের শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এ জাতির কালঘুম ভাঙছে না। আমরা মুখে বোলে, বই লিখে, লিফলেট দিয়ে, সিডি দিয়ে অবশেষে পত্রিকার মাধ্যমে তোমার তওহীদের আহ্বান কোরে যাচ্ছি। তাদেরকে বোলছি যে, তোমরা আল্লাহর তওহীদ প্রত্যাখ্যান কোরে বহু আগেই ইসলাম থেকে বেরিয়ে গেছ। তোমাদের ইসব নামায, রোজা, হজ্ব, যাকাতসহ কোন এবাদতই কবুল হোচ্ছে না। তবুও তারা বারবার মসজিদে দৌড়াচ্ছে, তারা লক্ষ কোটি টাকা খরচ কোরে হজ্ব কোরতে যাচ্ছে, লক্ষ টাকা খরচ কোরে গরু কোরবানি দিচ্ছে।
প্রভু, আমরা তাদেরকে শতবার বুঝানোর চেষ্টা কোরছি যে তোমরা এই ইহুদি খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’ দাজ্জালের তৈরি জীবন ব্যবস্থাকে মেনে নিয়ে যতই তোমরা নামাজ পড়, রোযা রাখ আল্লাহ সেটা কবুল কোরবেন না। তোমরা আগে মো’মেন হও, তারপর তোমরা যত ইচ্ছা আমল করো, যত খুশি আমল করো। কিন্তু আমাদের কোন কথাই যেন তাদের কর্ণগোচর হোচ্ছে না। আমাদের আর কি করার আছে প্রভু? আর কোন কথা বললে এরা ঘুরে দাঁড়াবে, তারা তাদের সাংঘাতিক ভুল বুঝতে পারবে? তুমি আমাদের অক্ষমতা ক্ষমা কর।
প্রভু, তুমি দেখতে পাচ্ছ এই সহজ সরল সত্যদীন তোমার প্রিয় নবী এবং তাঁর আসহাবগণ কত নির্যাতন নিপীড়ন সহ্য কোরে, কত রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠা কোরে দিয়ে গেছেন। সমস্ত মানবজাতির মুক্তির জন্য একে প্রতিষ্ঠার ভার দিয়ে গেছেন আমাদের উপর, অথচ সেই মহা দায়িত্ব ত্যাগ কোরে ওরাসাতুল আম্বিয়া সেজে এক শ্রেণির আলেম মোল্লা নামধারী প্রতারক এই ইসলামকে বিক্রি কোরে খাচ্ছে। অপরদিকে পীর ও সুফী তরিকার ধর্মব্যবসায়ীরা মানুষকে ওজিফা, যেকের, মোরাকাবা, মোশাহেদায় ব্যস্ত রেখে আল্লাহর সত্যদীনের সামগ্রিক রূপ আড়াল কোরে রেখেছে। তুমিই বোলেছ যারা তোমার দীনের বিনিময়ে পার্থিব মূল্য হাসিল করে তারা আগুন ছাড়া কিছু খায় না (বাকারা ১৭৪)। তোমার এই কথা মানুষের কাছে প্রকাশ কোরে দেওয়ায় এই দীনব্যবসায়ীরা আগুন খাওয়া থেকে বিরত না হোয়ে উল্টো আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হোয়ে গেছে। আমরা এই জাতিকে যতই সত্য পথের আহ্বান কোরছি, নায়েবে নবীর দাবিদার ধর্মব্যবসায়ী এইসব আলেম ও পীরসাহেবরা ততই তাদেরকে নিবৃত্ত করে রাখছে। আমরা যখন আমাদের বই এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকৃত ইসলামের কথা বোলি, সাধারণ মানুষ দৌড়ে যায় আলেমদের কাছে। ধর্মজীবী আলেমরা জেনে শুনে আমাদের কথাগুলির বিকৃত ব্যাখ্যা করে, সত্য গোপন রাখে, আমাদের কাফের, খ্রিস্টান বোলে অপবাদ দেয়। আমাদের সামর্থ্য তুমি জানো, সবাই আমরা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। সংখ্যায়ও অতি নগণ্য। আমাদের সামান্য যা সহায়-সম্পদ সম্পূর্ণ তোমার রাস্তায় নিয়োগ কোরেছি। তুমি ভুল ত্র“টি ক্ষমা করো। তুমি আমাদের উপর সন্তুষ্ট থাক, খুশি থাক। এই জন্য প্রয়োজনে আমাদের যদি না খেয়ে থাকতে হয় তবুও আমরা প্রস্তুত আছি। আমরা এই জাতির কাল ঘুম ভাঙ্গানোর জন্য নেমে পড়েছি।
প্রভু, তারা আজকে একশ ষাট কোটি। আজকে তারা নিজেরা নিজেরা মারামারি হানাহানিতে লিপ্ত, নিজেদেরকে নিজেরাই হত্যা কোরছে, তাদেরকে যতই বোলছি তোমাদের রসুল বোলেছেন, ‘এক মোসলেম আরেক মোসলেমকে হত্যা কোরলে উভয়েই জাহান্নামী’, কিন্তু তারা কিছুতেই ঐক্যবদ্ধ হোতে রাজি না। কিন্তু তারা অধিকাংশই তোমাকে বিশ্বাস করে। বিশ্বাস না কোরলে তারা এত নামাজ রোজা কোরত না। তাদেরকে আমরা এই যে বোলছি এই বিশ্বাস আর এইসব আমল দিয়ে জান্নাত যাওয়া যাবে না। আল্লাহ যে জীবন বিধান পাঠিয়েছেন তাঁর নবীর মাধ্যমে, এটা যদি তারা কার্যকরী না করে তাহোলে তারা মোসলেমই না, তারা জাহান্নামে যাবে। হে আল্লাহ! আমরা তাদের বোঝাতে পারছি না যে, তোমার সার্বভৌমত্ব না মানলে তাদের কোন আমল যে তুমি দেখবে না, সবকিছু ধূলিকণার মতো বিক্ষিপ্ত করে ফেলে দিবে। তাদের এই সহজ সরল কথাগুলি না বোঝার কারণ তোমার লা’নত (অভিশাপ)। তোমার দেওয়া এই লা’নতের কারণে তারা বুঝতে পারছে না, তাদের বোধশক্তি তুমি উঠিয়ে নিয়েছ কয়েকশ বছর আগে। আমাদের বিনীত আরজ, তুমি দয়া কোরে তোমার লা’নত এই জাতি থেকে উঠিয়ে নাও।
আমরা আমাদের সর্বস্ব দিয়ে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ এই জাতিকে সকল প্রকার অন্যায়-অত্যাচার, অশান্তি ও সহিংস কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য গ্রামে গঞ্জে, হাটে বাজারে, নগরে-বন্দরে ছুটে বেড়াচ্ছি। আমরা সবাইকে বোঝাচ্ছি যে, এই চরম সময়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হোয়ে দাজ্জালীয় বস্তুবাদী জীবনব্যবস্থা এবং ধর্মব্যবসায়ীদের কবল থেকে জাতিকে মুক্ত করতে না পারি তবে আমাদের ধ্বংস অনিবার্য। এই ধ্বংস থেকে মুক্তি পাবার একমাত্র পথ- ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আমরা সবাই মিলে শপথ নিচ্ছি- আমরা আর নিজেদের মধ্যে হানাহানি, মারামারি, জ্বালাও-পোড়াও, অন্যায়-অত্যাচার করবো না। আমরা ঐক্যবদ্ধ হবো ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে, সুন্দরের পক্ষে। এমামুযযামানের মাধ্যমে তুমি আমাদেরকে যে সত্যের আলো দান করেছো, মুক্তির পথ দেখিয়েছ, আমাদেরকে এই শপথ রক্ষা করার ও এই মুক্তির পথে চলার তওফিক দান করো। তুমি আমাদের ঐক্যকে দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করে দাও।
হে প্রভু, মানুষের মনের উপর জোর চলে না, জোর কোরে মানুষের উপর কিছু চাপিয়েও দেওয়া যায় না। তাই বলা ছাড়া আমরা আর কীই বা কোরতে পারি? মানবজাতিকে আমরা যতই বোলছি তোমরা তেহাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হোয়ে, শিয়া হোয়ে, সুন্নি হোয়ে, শাফেয়ী হোয়ে, হাম্বলি হোয়ে, হানাফি হোয়ে আহলে হাদিস হোয়ে কুফরি কোরছ, তোমাদের সমস্ত আমল বরবাদ। তোমরা এক তওহীদের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হও। কিন্তু তারা আমাদের কথা কতটুকু শুনবে সেটা তুমি জান। আজকে তোমার প্রিয় নবীর জন্মভূমি যে আরব, সেখানেই চোলছে ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানি, কাটাকাটি। সেখানে চোলছে ইহুদি-খ্রিস্টানদের ধ্বংসযজ্ঞ। রক্তের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে মোসলেম দুনিয়া। ইহুদি খ্রিস্টানরা এ জাতিকে নিয়ে ইঁদুর বিড়াল খেলছে। এদেরকে আমরা এত বুঝাচ্ছি আসমানের নিচে সব চাইতে বড় নেয়ামত আল কোর’আন এই জাতির কাছে যার মধ্যে মানবজীবনের যাবতীয় সমস্যার সমাধানও তুমি দিয়ে রেখেছো, কিন্তু প্রকৃত আকীদা না থাকার কারণে সেই কোর’আনকে তারা প্রত্যাখ্যান কোরে সমস্যার সমাধানের জন্য দাজ্জালের অনুসরণ কোরছে।
প্রভু, তুমি এদের দৃষ্টিশক্তি, বোধশক্তি ফিরিয়ে দাও। একশ ষাট কোটি জনসংখ্যা বিরাট এক লাশের মতো পড়ে আছে আটলান্টিকের তীর থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত। তুমি যদি এদেরকে না জাগাও কারও পক্ষে সম্ভব না এদের জাগানো। এরা যে কালঘুমে ঘুমিয়েছে এখনই না জাগালে চূড়ান্ত ধ্বংস ছাড়া আর কোন পথ নেই। যখন এই মরা জাতির দিকে তাকাই তখন মনে হয় যেন কোনোই আশা নেই। কারণ যে জাতির উপর ভার ছিল অন্য সমস্ত জীবনবিধান বাতিল কোরে তোমার দেওয়া জীবনবিধান প্রতিষ্ঠা করার, আজ তারাই তোমার বিধান প্রত্যাখ্যান কোরে অন্যসব জীবনবিধান গ্রহণ কোরে দাজ্জালের পায়ে গড়াগড়ি যাচ্ছে। আবার আশাও জাগে যখন তোমার রসুলের কথা মনে পড়ে, যিনি বোলেছেন, ‘সে জাতি কী কোরে ধ্বংস হবে যার প্রথমে আমি, মাঝে মাহদী, শেষে ঈসা (আ:)?’ কাজেই আশাহত হই না। তোমার লা’নৎ উঠিয়ে নিলেই বিশালদেহী এই মরাজাতি আবার উঠে দাঁড়াবে। কাজেই প্রভু, তোমার অভিশাপ তুলে নাও।
আমরা তোমার সেই নূরের আশ্রয় চাই, যে নূর দ্বারা সকল অন্ধকার দূর হোয়ে যায়। এই জাতির প্রতি তুমি রহম করো। আমীন।
[প্রার্থনায়: আখেরী নবীর উম্মত, যামানার এমামের অনুসারী, হেযবুত তওহীদের সদস্য]

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...