হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

তবে কি তোমরা কেতাবের কিছু অংশে বিশ্বাস করো?

মাইন উদ্দীন:

ইসলামের ভিত্তি হোচ্ছে তওহীদ- একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে হুকুমদাতা হিসাবে না মানা। তওহীদের বিপরীত হোচ্ছে শেরক বা অংশীবাদ। আল্লাহ ছাড়া কাউকে হুকুমদাতা হিসাবে গ্রহণ করাই অংশীবাদ। এটা এমন একটি অপরাধ যার ফলে একজন মোসলেম মোশরেক হোয়ে যায়। যতক্ষণ না সে শেরক থেকে মুক্ত হোল, তার সকল এবাদত, আমল ব্যর্থ হবে। কোন কিছুই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। তাই শেরককে কেবল একটি গোনাহ বলা ঠিক হয় না, শেরক হোচ্ছে ইসলাম থেকে বহির্গত হওয়ার প্রথম পথ। আল্লাহ ওয়াদা কোরেছেন – তিনি শেরক ক্ষমা কোরবেন না। এ ছাড়া অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা কোরে দিবেন (সুরা নেসা ৪৮, ১১৬)। তাহোলে আল্লাহর ঘোষণা মোতাবেক বুঝা গেল শেরক ক্ষমার অযোগ্য, এবং এর একমাত্র প্রতিফল স্থায়ী জাহান্নাম। সুতরাং মানুষের একান্ত উচিৎ অন্তত শেরক থেকে মুক্ত হওয়া, শেরক থেকে মুক্ত থাকলেই জান্নাত নিশ্চিত- সেটা ছোট জান্নাত হোক আর বড় জান্নাতই হোক। এখন বোঝা দরকার এই শেরক কী?
বর্তমানের বিকৃত ইসলামে- মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকায়, ওয়াজ মাহফিলে আলোচনায় সর্বত্র অন্যান্য কবীরা ও সগীরা গোনাহ যেমন মিথ্যা বলা, চুরি করা, ব্যভিচার করা, ঘুষ খাওয়া ইত্যাদি না করার জন্য ওয়াজ নসিহত করা হোয়ে থাকে। কিন্তু যে গোনাহটি কোনভাবেই ক্ষমা করা হবে না অর্থাৎ শেরক এই বিষয়টি তেমন কোনই গুরুত্ব পায় না। এর একমাত্র কারণ আকিদার বিকৃতি। বর্তমান ইসলামের ধর্ম ব্যবসায়ী আলেমরা কেবল আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুর সামনে সেজদা করাকেই শেরক বোলে মনে করেন, যেমন মূর্তি পূজা, মাজার পূজা, পীরকে সেজাদা করা ইত্যাদি। তারা আরও প্রচার করে যে, যেহেতু মোসলেম দাবিদার কেউ মূর্তিপূজা করে না তাই তারা শেরকও করে না। মাজার ও পীরপূজার সঙ্গেও অধিকাংশ মোসলেম জনগোষ্ঠী সম্পৃক্ত নয়। তাই তাদেরকে শেরক সম্পর্কে ওয়াজ করার প্রয়োজনও পড়ে না। তাদের প্রায়ন্ধ দৃষ্টিতে ঐ ১৪০০ বছর আগেকার কাঠ পাথরের মূর্তির সামনে মাথা নোয়ানো ছাড়া আর কোন কাজকেই শেরক হিসাবে দেখতে পান না। মূর্তিপূজা, মাজার পূজা শেরক বটে, কিন্তু প্রকৃত শেরক হোচ্ছে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও হুকুম মানা অর্থাৎ অন্যকে এলাহ হিসাবে মানা, যে শেরকে এই জাতি আকণ্ঠ ডুবে আছে। আল্লাহ বলেন, “তবে কি তোমরা কেতাবের কিছু অংশে বিশ্বাস করো এবং কিছু অংশকে প্রত্যাখ্যান করো? সুতরাং তোমাদের যারা এরূপ করে তাহাদের প্রতিফল পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনা, অপমান এবং কেয়ামতের দিন কঠিনতম শাস্তি (সুরা বাকারা ৮৫)” এখানে আল্লাহ পার্থিব জীবনেই যে শাস্তির কথা বোলছেন, আজ মোসলেম বোলে পরিচিত এই জাতির অবস্থা কি ঠিক তাই নয়? আল্লাহর দেওয়া বিধান হোল আল কোর’আন। এই কোর’আনের কিছু মানা, কিছু না মানাই হোল শেরক। এ ব্যাপারে আল্লাহর ঘোষণা হোচ্ছে-“নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করাকে ক্ষমা করেন না; এটা ছাড়া সব কিছু তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন (সুরা নেসা ৪৮, ১১৬)। আল্লাহর দেওয়া বিধান কোর’আন থেকে নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত এই কয়েকটি বিধান এ জাতি ব্যক্তিগতভাবে পালন করে, তাও বিকৃতরূপে কিন্তু জাতীয় ও সমষ্টিগত জীবনে আল্লাহর দেওয়া বিধান যেমন অর্থনীতি, রাজনীতি, বিচার ব্যবস্থা, দণ্ডবিধি, শিক্ষাব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি বাদ দিয়ে মানুষের এবং খ্রিস্টান-ইহুদি খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’ দাজ্জালের তৈরি বিধান মেনে চোলছে। এই শেরকই হোচ্ছে বড় জুলুম (সুরা লোকমান ১৩)। কাজেই এখন এ জাতির জন্য বিভিন্ন গোনাহ সংক্রান্ত ওয়াজ নসিহতের এর চাইতে জরুরি হোচ্ছে শেরক মুক্ত হওয়া আর শেরক মুক্ত হওয়ার প্রথম পদক্ষেপ হলো আল্লাহর তওহীদে আসা, এছাড়া আর কোন পথ নেই।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...