Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

হেযবুত তওহীদ কেন তওহীদের দিকে ডাকে? (১ম পর্ব)


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

মোহাম্মদ আসাদ আলী
পবিত্র কোর’আনের সর্বাধিক আলোচিত বিষয় হচ্ছে তওহীদ। কোর’আন-হাদীসের সর্বত্র তওহীদের যে গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে তা স্বভাবতই অন্য কোনোকিছুতে নেই। শত শত আয়াতে আল্লাহ ঘোষণা করেছেন আসমান জমিনের একমাত্র ইলাহ হচ্ছেন আল্লাহ এবং মানবজাতিকে উপদেশ দিয়েছেন একমাত্র তাঁকেই ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করতে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক সাব্যস্ত করা থেকে বিরত থাকতে। সবগুলো আয়াত উল্লেখ করতে গেলে লেখার কলেবর বড় হয়ে যাবে। আমরা কেবল কয়েকটি আয়াত পাঠকদের সামনে তুলে ধরব, আশা করি চিন্তাশীল ও সত্যনিষ্ঠ পাঠকরা এই কয়টি আয়াতেই চিন্তার খোরাক পেয়ে যাবেন-

  • পবিত্র কোর’আনে আল্লাহ বলেন, ‘যারা তওবা করে (তওহীদে) ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (ফোরকান: ৭০)
  • ‘তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, অতএব তোমরা তাঁকেই ডাকো, তাঁর প্রতি আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে। (মু’মিন: ৬৫)’
  • আপনি তারই অনুসরণ করুন, যা আপনার রবের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি ওহী হয়। তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আর আপনি মুশরিকদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। (আন’আম: ১০৬)
  • তারা তাদের আলেম ও সংসার-বিরাগীদিগকে তাদের প্রভু হিসেবে গ্রহণ করেছে আল্লাহকে বাদ দিয়ে। এবং মরিয়মের পুত্রকেও। অথচ তারা আদিষ্ট ছিল একমাত্র ইলাহর ইবাদতের জন্য। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তারা যে শিরক করে তা থেকে তিনি পবিত্র। (তওবা: ৩১)
  • তোমরা গ্রহণ করো না দুইজন ইলাহকে; তিনিই একমাত্র ইলাহ। (নাহল: ৫১)
    আপনার পূর্বে আমি সকল রসুলকে এই আদেশই প্রেরণ করেছি যে, আমি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। (আম্বিয়া: ২৫)
  • তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ। সুতরাং তাঁরই কাছে আত্মসমর্পণ কর এবং বিনীতদেরকে সুসংবাদ দাও (হাজ্জ: ৩৪)
  • আর তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। দুনিয়া ও আখেরাতে সমস্ত প্রশংসা তাঁরই; আর হুকুমের অধিকার তাঁরই এবং তাঁরই দিকে তোমাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে (কাসাস: ৭০)
  • বলুন হে আহলে-কিতাবগণ! একটি বিষয়ের দিকে এসো, যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সমান, তা এই যে, আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করব না, তাঁর সাথে কোন শরীক সাব্যস্ত করব না এবং একমাত্র আল্লাহকে ছাড়া কাউকে
  • প্রভু বানাব না। তারপর যদি তারা স্বীকার না করে, তাহলে বলে দাও যে, ‘সাক্ষী থাক আমরা তো অনুগত।’ (ইমরান: ৬৪)
  • আর তোমরা ইবাদত কর আল্লাহর, শরীক কর না তাঁর সাথে অন্য কাউকে। (নিসা: ৩৬)
  • যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না। তিনি ক্ষমা করেন এর নি¤œপর্যায়ের সমস্ত পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে তো মহাপাপ করল। (নিসা: ৪৮)
  • নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই। (মায়েদা: ৭২)
  • এসো, আমি তোমাদেরকে ঐসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যেগুলো তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। তা এই যে, আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করো না . . . (আন’আম: ১৫১)

এছাড়া বোখারী, মুসলিমসহ বহু হাদীস পেশ করা যায় যেগুলোতে আল্লাহর রসুল বলেছেন আল্লাহর সার্বভৌমত্বে, সেরাতুল মুস্তাকীমে অর্থাৎ তওহীদে যে ব্যক্তি অটল থাকবে, বিচ্যুত হবে না, তার পৃথিবী ভর্তি গোনাহও তাকে জান্নাত থেকে ফেরাতে পারবে না। আল্লাহর নবী বলেছেন- বান্দাদের সাথে আল্লাহর চুক্তি (Contract) হচ্ছে যে তারা আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে হুকুমদাতা হিসেবে মানবে না, তাহলেই আল্লাহ তাদের কোনো শাস্তি দেবেন না (জান্নাতে প্রবেশ করাবেন) (হাদীস – মো’য়াজ (রা.) থেকে বোখারী, মুসলিম)। তিনি আরও বলেছেন- যে হৃদয়ে বিশ্বাস করে যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং মোহাম্মদ (সা.) তাঁর রসুল, আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন (হাদীস- ওবায়দাহ বিন সোয়ামেত (রা.) ও আনাস (রাঃ) থেকে বোখারী, মুসলিম)। আরেক জায়গায় বলেছেন, জান্নাতের চাবি হচ্ছে তওহীদ (হাদীস- মু’য়ায বিন জাবাল (রাঃ) থেকে আহমদ), যদিও বর্তমানে বিকৃত আকীদার কারণে নামাজকে জান্নাতের চাবি বলে প্রচার করা হয়। আনাস (রা.) বলেন ‘আমি রসুলাল্লাহকে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! যদি তুমি জমিন ভর্তি গুনাহ করে থাক, তারপর যে অবস্থায় তুমি আমার সাথে কাউকে শরিক করোনি সে অবস্থায় তুমি আমার নিকট আসলে, আমি তোমার কাছে জমিন ভর্তি ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হব (আনাস রা. থেকে তিরমিযি)’।
একদিন আবু তালীব শাতবুল মামদুদ (রা.) রসুলাল্লাহর কাছে এলেন অথবা একজন খুবই বৃদ্ধ ব্যক্তি লাঠিতে ভর দিয়ে রসুলাল্লাহর নিকট এলেন যার চোখের পাতা তার চোখের সাথে লেগে গিয়েছিল। তিনি রসুলাল্লাহর সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলেন, যদি কোনো লোক সব ধরনের পাপ করে থাকে, এমন কোনো পাপ নেই যা সে করেনি অর্থাৎ ছোট বড় সব ধরনের পাপই করেছে; তার পাপ যদি দুনিয়াবাসীর উপর বন্টন করে দেয়া হত তাহলে তাদেরকে ধ্বংস করে দিত। এর কি তওবা করার সুযোগ রয়েছে? এই কথা শুনে আল্লাহর রসুল শুধু নিশ্চিত হতে চাইলেন যে, তিনি তওহীদের ঘোষণা দিয়েছেন কিনা। তিনি হ্যাঁসূচক জবাব দিলে রসুল (সা.) তাকে ভালো কাজ করা ও মন্দ কাজ পরিহার করার উপদেশ দিয়ে নিশ্চয়তা দিলেন যে, তার সব পাপকে কেবল ক্ষমা করে দেওয়া হবে তাই নয়, সেগুলোকে পূন্য দ্বারা প্রতিস্থাপিত করে দেওয়া হবে। (তবারানী, বাজ্জার; আল-মুনজেরী তারগীব গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, এর সনদ মজবুত ৪/১১৩; ইবনে হাজার ইসাবা গ্রন্থে বলেন, হাদীসটি শর্ত মোতাবেক রয়েছে ৪/১৪৯)
ইবনে হিববান এবং আল হাকেম আবু সাইদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রসুলাল্লাহ বলেন, ‘মুসা (আ.) একবার আল্লাহকে বললেন, হে আল্লাহ, আমাকে এমন একটি বিষয় শিক্ষা দিন যা দ্বারা আমি আপনাকে সবসময় স্মরণ করব এবং আপনাকে আহ্বান করব। আল্লাহ বললেন, মুসা তুমি বলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। মুসা (আ.) বললেন, এটা তো আপনার সকল বান্দাই বলে থাকে। আল্লাহ বললেন, হে মুসা, আমি ব্যতীত সপ্তাকাশ ও এর মাঝে অবস্থানকারী সকল কিছু এবং সপ্তজমিন যদি এক পাল্লায় রাখা হয় আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’কে আরেক পাল্লায় রাখা হয় তাহলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র পাল্লা বেশি ভারী হবে।’ ঠিক একই ধরনের আরেকটি হাদীস পাই আব্দুল্লাহ বিন আমর (রা.) এর বর্ণনায়। আল্লাহর রসুল বলেন, কেয়ামতের দিন আমার উম্মতের এক ব্যক্তিকে সকল মানুষের সামনে ডাকা হবে, তার সামনে নিরানববইটি (পাপের) পুস্তক রাখা হবে এবং একেকটি পুস্তকের পরিধি হবে চক্ষু দৃষ্টির সীমারেখার সমান। এরপর তাকে বলা হবে, এই পুস্তকে যা কিছু লিপিবদ্ধ হয়েছে তা কি তুমি অস্বীকার কর? উত্তরে ঐ ব্যক্তি বলবে, হে আল্লাহ আমি তা অস্বীকার করি না। তারপর বলা হবে, এর জন্য তোমার কোনো আপত্তি আছে কিনা? অথবা এর পরিবর্তে তোমার কোনো নেক কাজ আছে কিনা? তখন সে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় বলবে, না তাও নেই। অতঃপর বলা হবে, আমার নিকট তোমার কিছু পূন্যের কাজ আছে এবং তোমার উপর কোনো প্রকার অত্যাচার করা হবে না, অতঃপর তার জন্য একখানা কার্ড বের করা হবে তাতে লেখা থাকবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। তখন ঐ ব্যক্তি বিস্ময়ের সাথে বলবে, ‘হে আল্লাহ, এই কার্ড খানা কি নিরানববইটি পুস্তকের সমতুল্য হবে?’ তখন বলা হবে, ‘তোমার উপর কোনো প্রকার অত্যাচার করা হবে না। এরপর ঐ নিরানববইটি পুস্তক এক পাল্লায় রাখা হবে এবং ঐ কার্ড খানা এক পাল্লায় রাখা হবে, তখন ঐ পুস্তকগুলোর ওজন কার্ড খানার তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য হবে এবং কার্ডের পাল্লা ভারী হবে। (আত তিরমিযি, হাদিস নং ২৬৪১। আল হাকেম ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৫-৬)
আরেক বর্ণনায় দাহিয়া কালবী নামের একজন সাহাবীর তওহীদ গ্রহণের ঘটনা পাওয়া যায়। তিনি সত্তরজন জীবন্ত কন্যা সন্তানকে হত্যা করেছিলেন। তিনি যখন আল্লাহর রসুলের কাছে তওহীদের ঘোষণা দিতে আসলেন, আল্লাহর রসুল প্রথমত তাকে নিশ্চয়তা দিলেন যে, তার পূর্বের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে কিন্তু যখন জানতে পারলেন এই লোক এত নির্মম হত্যাকা-গুলো ঘটিয়েছে তখন তিনিও দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লেন, যে এতবড় পাপ আল্লাহ ক্ষমা করবেন কিনা। অতঃপর জিবরাইল (আ.) এসে রসুলকে আশ্বস্ত করলেন যে, যে মুহূর্তে দাহিয়া কালবী ঘোষণা করেছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, সেই মুহূর্তে তার অতীত জীবনের ছোট-বড় সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।’ এভাবে হাদীস দিতে গেলে বহু হাদীস দেখানো যায় যেগুলো থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, তওহীদের ঘোষণা দিলে আর কোনো পাপ, কোনো ব্যক্তিগত অপরাধই মানুষকে জান্নাত থেকে ফেরাতে পারে না। আরও একটি হাদীস বলার লোভ সামলাতে পারছি না। একদিন রসুলাল্লাহ বললেন, ‘যে ব্যক্তি বলল আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই সে জান্নাতে যাবে।’ আবু যার (রা.) বললেন, যদি সে চুরি ও ব্যভিচার করে তবুও জান্নাতে যাবে? আল্লাহর রসুল বললেন তবুও জান্নাতে যাবে। এ কথায় সাহাবী কতটা বিস্মিত হলেন তা বোঝা যায় এ থেকে যে, তিনি বারবার রসুলকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন- চুরি ও ব্যভিচার করার পরও? তখন আল্লাহর রসুল বললেন, হ্যাঁ, সে চুরি করলেও, ব্যভিচার করলেও, এমনকি আবু যরের নাক মাটিতে ঘসে দিলেও (হাদীস: বোখারী ও মুসলিম)।
এভাবে কোর’আনের আয়াত ও হাদীস বহু উল্লেখ করা যায়। কোর’আন হাদিসের সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে আল্লাহর উলুহিয়্যাত ও রবুবিয়্যাতের ঘোষণা। যারা বোঝার সামর্থ্য রাখেন তাদের জন্য সবগুলো উল্লেখের দরকার নেই, উপরোক্ত আয়াত ও হাদিস কয়টিই যথেষ্ট হবে। আর যাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন যে, তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেওয়া হয়েছে, বোঝালেও বুঝবে না, দেখালেও দেখবে না, তারা কোর’আন হাদিসের মহাপ-িত হয়ে গেলেও তওহীদের গুরুত্ব বুঝবেন না। কাজেই তাদের জন্য হেদায়াত কামনা করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই আমাদের। (আগামী পর্বে সমাপ্য)

লেখক: সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, হেযবুত তওহীদ।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ