Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

মুসলিম জাতির এই উদ্ভ্রান্ত অবস্থা কেন?


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

রিয়াদুল হাসান:
একজন পাগলকে দেখুন। তার শরীর আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতই সুস্থ। কিন্তু তাকে মানুষ বলা হয় না, বলা হয় পাগল। তার কোনো অধিকার নেই, সে চিরবঞ্চিত, লাঞ্ছিত। কোনো সংবিধান তাকে নাগরিক বলে স্বীকৃতি দেয় না, তার কাছে কোনো প্রার্থী ভোট চাইতে যায় না। কিন্তু সেও কোনো না কোনো পরিবারেই জন্ম নিয়েছিল। আজ নিয়তি তাকে এই অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। রোদ-ঝড়-জলে সে কোথায় আশ্রয় নেবে, ক্ষুধা লাগলে কী খাবে, কবে কোথায় মরে পড়ে থাকবে সেটাও দেখার কেউ নেই। তাকে নিয়ে কেউ দুই মিনিট চিন্তা করে না, কেউ ভালোবাসে না। শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েও তাকে এই ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে কেন?
একটি মাত্র কারণ- তার মস্তিষ্ক বিকৃত। এই হচ্ছে মস্তিষ্কের গুরুত্ব। ইসলামকে যদি মানবদেহের সাথে তুলনা করা হয় তাহলে তার মস্তিষ্ক হচ্ছে আকিদা যার অর্থ সামগ্রিক ধারণা। একটা হাতির বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ না দেখে পুরো হাতিটাকে এক নজরে দেখতে পাওয়াটা হচ্ছে হাতি সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা। কোনো বিষয় বা বস্তু দিয়ে কী হয়, সেটা কেন সৃষ্টি করা হয়েছে, সেটা কীভাবে ব্যবহার করতে হয় ইত্যাদি ধারণা ভুল হলে ঐ বস্তু বা বিষয়ের প্রয়োগও ভুল হবে। একটি কম্পিউটার কেন, সেটা কীভাবে ব্যবহার করতে হয় এটা জানা থাকলে সেটা দিয়ে একজন মানুষ তা ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা রোজগার করতে পারে। আর ব্যবহার না জানলে সেটা পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাবে, পরে ভাঙাড়ির দোকানে বিক্রি করতে হবে।
তওহীদ হচ্ছে ইসলাম নামক জীবনব্যবস্থার ভিত্তি। আল্লাহ ছাড়া আর কারো হুকুম মানব না এই অঙ্গীকারের নাম তওহীদ। জীবনের প্রতিটি অঙ্গনে যে কোনো সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে আমরা কৃতসংকল্প থাকব যে আল্লাহর দেওয়া নীতি, ন্যায় অন্যায়ের মানদণ্ড মেনেই আমরা সেটার সমাধান করব। এখন মুসলমান সমাজের যাবতীয় বিষয় সমাধান করা হয় পাশ্চাত্যের মূল্যবোধ, বিধি-বিধান, ব্যবস্থার ভিত্তিতে। আর কলেমা তওহীদ পড়ে কেবল তসবিহ গুনে জিকির করা হয়, বিয়ে-শাদি করানো হয়, ভিক্ষা চাওয়া হয়, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা হয়। বাস্তবজীবনে এই অঙ্গীকার অপ্রযোজ্য, অবজ্ঞাত, অজ্ঞাত, উপেক্ষিত। তওহীদ সম্পর্কে আকিদা না থাকার দরুন গোটা জাতি বিকৃত মস্তিষ্কের ন্যায় আচরণ করছে।
উম্মতে মোহাম্মদী জাতিকে গঠন করার উদ্দেশ্য কী ছিল- এ প্রশ্ন যদি আজকে করা হয় তাহলে হাজার রকম উত্তর পাওয়া যাবে। একটি জাতির লক্ষ্য থাকা আবশ্যক, নেতা থাকা আবশ্যক। আজ তাদের কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যও নেই, নেতাও নেই। আল্লাহর রসুল আল্লাহ তওহীদ ও দীন দিয়ে পাঠিয়েছিলেন সেটাকে সর্বাত্মক সংগ্রামের মাধ্যমে মানবজীবনে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। কিন্তু এত বড় কাজ একা মানুষের পক্ষে এক জীবনে করা অসম্ভব বিধায় তিনি অভিন্ন উদ্দেশ্যে একটি জাতি গঠন করলেন। তিনি তাদেরকে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করে গেলেন যেন তাঁর মৃত্যুর পর ঐ জাতি সমগ্র পৃথিবীতে তাঁর আরাধ্য কাজটি করতে পারে। অর্থাৎ প্রাণান্তকর সংগ্রামের (জেহাদ) দ্বারা আল্লাহ প্রদত্ত নিখুঁত একটি জীবনবিধান সমগ্র পৃথিবীর মানবজীবনে প্রতিষ্ঠা করে যাবতীয় অন্যায় অবিচার লুপ্ত করে সেখানে শান্তি, ন্যায়, সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা। প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী এই কাজটি করেছিলেন বলেই অর্ধেক পৃথিবীতে মুসলিম জাতির বিস্তার ঘটেছিল, ইসলামের সোনালি যুগ এসেছিল, শান্তি সমৃদ্ধির অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছিল।
আজ এ জাতির সমানে ইসলামের লক্ষ্য হয়ে গেছে সওয়াব সংগ্রহ। প্রত্যেকটি আমলের একটাই উদ্দেশ্য – সওয়াব কামাই করে মিজানের নিক্তিতে তোলা। তাদের কোনো নেতা নেই, সত্যদীন প্রতিষ্ঠার জন্য কোনো সংগ্রাম নেই। প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদীর সঙ্গে বর্তমান উম্মতে মোহাম্মদীর জীবনযাপনের বিন্দুমাত্রও সামঞ্জস্য নেই। মিল খোঁজার চেষ্টা, মিল রাখার চেষ্টা চলছে কেবল দাড়িতে, টুপিতে, লেবাসে। এখানেও সেই বিকৃত মস্তিষ্কের উদাহরণ। পাগলের জীবনের কোনো লক্ষ্য থাকে না, তাই একশত জন পাগলকে একসঙ্গে রাখলে একেকজন একেকভাবে সময় পার করে, কেউ কাঁদে, কেউ হাসে, কেউ নাচে, কেউ বসে থাকে, কেউ একা একা বক বক করে। সন্দেহ থাকলে হেমায়েতপুর মানসিক হাসপাতালে গিয়ে দেখে আসুন। মুসলিমদের আজ এই অবস্থা। এ কারণেই ঐ পাগলদের মতোই তারা সবার হাসি-তামাশার পাত্র, লাঞ্ছনা-অবমাননার পাত্র, তাদের কোনো অভিভাবক নেই, রক্ষাকর্তা নেই, তাদের কোনো মানবাধিকার নেই, মৌলিক অধিকার নেই, তাদের লক্ষ লক্ষ মানুষকে মেরে ফেললেও কোনো বিচার নেই, জবাবদিহিতাও নেই।
আকিদা হারালে তাই সব শেষ। আজ তাদের ঈমান আছে, আমল আছে কিন্তু আকিদা নেই। হাত-পা, ফুসফুস-হৃৎপিণ্ড সবই আছে কিন্তু আল্লাহর লা’নতের ফলে মস্তিষ্ক নেই।