Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

মুসলমানদের দেশ ধ্বংস করে দিলেও এর বিচার নেই


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

গতকাল রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের মাননীয় এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তাঁর ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশবিশেষ বজ্রশক্তির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
‘‘যারা আমার বক্তব্য শুনছেন কতগুলো বিষয় আপনাদেরকে বুঝতে হবে। আমরা জানি আল্লাহ রব্বুল আলামিন অসংখ্য সৃষ্টি করেছেন, যার মধ্যে মানুষ একটি। পশু খায়, মানুষ খায়। পশু বংশবিস্তার করে মানুষও করে। পশু একটা সময় পার হবার পরে মরে মাটির সাথে মিশে যায়, মানুষও তাই হয়। তবু মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ, তার কারণ হচ্ছে মানুষ আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি। মানুষের মধ্যে আল্লাহর রূহ আছে। মানুষকে আল্লাহ নিজ হাতে বানিয়েছেন। সমস্ত মালায়েককে আল্লাহ মানুষের সেবায় নিয়োজিত করেছেন। মানুষকে আল্লাহ স্বাধীনভাবে চিন্তার শক্তি দিয়েছেন, উপলব্ধির শক্তি দিয়েছেন। এখানেই মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব, বড়ত্ব। মানুষ চিন্তা করবে, নিজেকে জানবে, সমাজকে জানবে, বিশ্বকে জানবে এবং তাঁর সৃষ্টিকর্তাকেও জানার চেষ্টা করবে। এই চিন্তা যদি আমরা না করি তাহলে তো আমরা মানুষই না। কাজেই ভাবুন। পৃথিবীতে এই মুহূর্তে হাজার হাজার পারমাণবিক বোমা তৈরি করে রাখা হয়েছে। সীমান্তে সীমান্তে বিরাজ করছে উত্তেজনা। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখী দাঁড়িয়ে আছি আমরা। যে কোনো যুদ্ধ বেধে গেল পৃথিবীর ভবিষ্যৎ বলে কিছু থাকবে না এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে মুসলিম নামক জনসংখ্যার দিকে দেখুন। সংখ্যায় আমরা কম নই। আটলান্টিক থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত সংখ্যায় আমরা একশ’ পঞ্চাশ কোটি। আমাদের লক্ষ লক্ষ আলেম, মুফতি, মোহাদ্দিস, শায়েখ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাহিত্যিক, বিশেষজ্ঞ আছে। অভাব নেই। কিন্তু অর্ধদুনিয়ায় সাড়ে ছয় কোটি উদ্বাস্তু আমরা। কাশ্মীরে মার খাচ্ছি আমরা, ফিলিস্তিনে মার খাচ্ছি আমরা, চীনে মার খাচ্ছি আমরা, বসনিয়ায় মার খাই আমরা, ইউরোপে মার খাই আমরা, আমেরিকায় মার খাই আমরা, আফ্রিকায় মার খাই আমরা। অন্য জাতির কাছে ভিক্ষা করছি আমরা। দেশ ধ্বংস হচ্ছে আমাদের। ধর্ষিতা হচ্ছে আমাদের মা-বোন। সাগরে ভাসছে আমাদের লাশ। মুসলমানকে যেমন ইচ্ছা হত্যা করা যায় কোনো বিচার নাই। দেশ ধ্বংস করা হয় কোনো বিচার নাই। হোয়াইট হাউজে দাঁড়িয়ে বলা হয় গোয়েন্দা রিপোর্টে ভুল ছিল, কেন ভুল ছিল কোনো বিচার নাই। এমন তো হবার কথা ছিল না। এই অবস্থা নিয়ে ভাবতে হবে। কেবল সোবহানাল্লাহ সোবহানাল্লাহ বলে দুনিয়া পার করে দিতে পারবেন না। আজকে আমাদের বাংলার মাটিকেও তারা টার্গেট করেছে। যে কোনো ইস্যু পেলেই হয়। তারা আসলে টার্গেট করেছে ইসলামকে, টার্গেট করেছে মুসলমানকে। আপনার কোনো অপরাধ থাকতে হবে না, আপনি মুসলমান এটাই যথেষ্ট আপনাকে ধ্বংস করার জন্য, আপনার দেশ দখল করার জন্য। এই অপমানের জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় অনেকে নিজের মুসলিম নাম-পরিচয় মুছে ফেলার চেষ্টাও করছেন। ইউরোপ-আমেরিকার কোনো দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী কাউকে বিয়ে করছেন, এফিডেভিট করে প্রয়োজনে নিজের নাম পরিবর্তন করছেন। তাও যদি মুসলিম হয়ে জন্মগ্রহণের ‘লজ্জা’ থেকে বেরিয়ে আসা যায়! কথা হলো, এভাবে কি জাতির ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব? এতে কি মুক্তি আসবে? আসবে না। আল্লাহর দেওয়া জীবনব্যবস্থা তো বহু আগেই আমরা ত্যাগ করে পশ্চিমাদেরটা গ্রহণ করে নিয়েছি, তাতে কি শেষ রক্ষা হচ্ছে? কাজেই নাম পরিবর্তন করে বাঁচতে পারব না। বাঁচতে হলে মুসলিম হয়েই বাঁচতে হবে। ইসলামকে ধারণ করেই বাঁচতে হবে। ভিন্ন কোনো প্রচেষ্টা আমাদেরকে মুক্তি এনে দিতে পারবে না।
আমরা মুসলমানরা কোথায় ছিলাম আর আজকে কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি। এক আল্লাহ, এক রসুল, এক কিতাব এক উম্মতে মোহাম্মদী আজ আমরা কয়খণ্ড হয়েছি? হাজার হাজার পীর। একেক পীরের একেক তরিকা। একেকজনের টুপি একেকরকম। একেকজনের রীতি-পদ্ধতি একেকরকম। একজন অপরজনকে কাফের বলেন। ধর্মের নামে রাজনীতি করেন এক বাংলাদেশেই শতাধিক দল আছে। একেকদলের একেক আকীদা। আবার জঙ্গিবাদী দলও অসংখ্য। তাদেরও একেক দলের একেক আকীদা। মানুষ কোন দিকে যাবে? মানুষ প্রতারিত হয়েছে, যার যার মত এদিক সেদিক চলে যাচ্ছে। আর এদের এইসমস্ত কাণ্ডকারখানা দেখে চিন্তাশীল মানুষ ধর্মের প্রতিই বীতশ্রদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন। নাস্তিক্যতাবাদের দিকে মানুষকে পা বাড়ানোর জন্য আমাদের এই সমস্ত কর্মকাণ্ড দায়ী নয়? ধর্মের নামে অধর্ম দায়ী নয়?
আজ আমরা পরকালনির্ভর ধর্ম নিয়ে কথা বলি, বাস্তব সমস্যা নিয়ে আমাদের ধর্মের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা অর্থনৈতিক অবিচার নিয়ে কথা বলি না, নির্যাতিত মানুষের হাহাকার নিয়ে কথা বলি না। আমার রসুলের ধর্ম এমন ছিল না। আমার রসুল আইয়্যামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার দূর করে আলোকময় সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পৃথিবীর সেরা বিপ্লব করেছিলেন। সেই ইসলাম হারিয়ে আজকে এই যে আমরা হাজারো দিকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাত্রা করেছি, আপনারাই বলুন, জান্নাতে যাবার জন্য রাস্তা কয়টা হবে? একটা নাকি হাজার হাজার? আমরা প্রতি ওয়াক্ত নামাজে পড়ি- সেরাতুল মুস্তাকীম। সহজ-সরল একটি পথ। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, সেই সহজ-সরল পথে আমরা খুব বেশিদিন থাকতে পারি নি। দ্বীন নিয়ে বাড়াবাড়ি ও তার ফলে অনৈক্য করতে করতে এই জাতি সত্যের মহাসড়ক থেকে বহু আগেই বিচ্যুত হয়ে মিথ্যার অন্ধকার অলিগলিতে ঢুকে পড়েছে, শয়তান বহু শতাব্দী আগেই আমাদেরকে সেরাতুল মোস্তাকীম ভুলিয়ে দিয়ে ডাইনে-বাঁয়ের লাইনগুলোতে ছিটকে দিয়েছে। আজ সৌদি আরবের নেতৃত্বে একদিকে হয়েছে সুন্নি ব্লক, আর ইরানের নেতৃত্বে হয়েছে শিয়া ব্লক। আমার জানামতে আজ পর্যন্ত সুন্নিদের অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে মুসলমানদের বিরুদ্ধেই, শিয়াদের অস্ত্রও ব্যবহৃত হয়েছে মুসলমানদের বিরুদ্ধেই।
সারা পৃথিবীতে ধর্মই এখন নাম্বার ওয়ান ইস্যু। ইউরোপে কয়েক শতাব্দী ধরে ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি হচ্ছে। ভারতে একশ’ বছরের প্রভাবশালী কংগ্রেস ধরাশায়ী ধর্মের কাছে। ট্রাম্পের আমেরিকায় ধর্ম বড় ইস্যু। মধ্যপ্রাচ্যে ধর্মকে কেন্দ্র করে আগুন জ্বলছে। বাংলাদেশও এই সঙ্কটের বাইরে নয়। একাত্তরে আমাদের ইস্যু ছিল অন্য। তখন আমাদের শিল্পি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, রাজনীতিক যারা আছেন তাদের সামনে আজকের মত প্রেক্ষাপট ছিল না। এখন অন্য সঙ্কট। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা এক কথায় ধর্মের অপব্যবহার- কোটি কোটি মানুষের ঈমানকে হাইজ্যাক করে নিয়ে জাতিবিনাশী কর্মকাণ্ড করা হচ্ছে। স্বাধীনতার পর থেকে সাতচল্লিশ বছরে তিনটি শ্রেণি এই কাজ করেছে। ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার করেছে, রাজনীতিতে ব্যবহার করেছে, সন্ত্রাসের পথে ব্যবহার করেছে। যারা ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার করছে তাদেরকে বলতে হবে, ধর্মের কাজ করে কোনো বিনিময় গ্রহণ করতে পারবেন না। আল্লাহ এই কাজ হারাম করেছেন। যারা ধর্ম নিয়ে অপরাজনীতি করছে তাদেরকে বলতে হবে আল্লাহ-রসুলকে নিয়ে রাজনীতি চলে না। এটা অন্যায়। মানুষের ঈমানকে অস্বীকার করা সম্ভব নয়, অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। চেষ্টা হয়েছে কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকা পারে নাই। অবজ্ঞা করা হয়েছে। মনে করা হয়েছে যে, ধর্ম তেমন কিছু না, কৃষক শ্রমিক অশিক্ষিত মূর্খ লোকেরা জানে না তাই ধর্ম মেনে চলে। এই যে অবজ্ঞা করা এতে সাধারণ মানুষের ঈমানকে ছিনতাই করে নিয়ে যাবে স্বার্থান্বেষীরা। একেকজন একেকদিকে ব্যবহার করবে। কাজেই অস্বীকার নয়, অবজ্ঞাও নয়। যারা রাজনীতি করেন তাদের মনের মধ্যে যা-ই থাকুক তারা কিন্তু ধর্মকে ইচ্ছা করলেও ফেলে দিতে পারেন না। কারণ ধর্মবিশ্বাসী জনতাই তাদের ভোটার। এদের ভোটেই সরকার গঠিত হয়। তাই দেখা যায় রাজনৈতিক দলগুলো ধর্মভীরু জনতাকে ম্যানেজ করার নীতি নিয়ে থাকেন। কিন্তু এটা সমাধান নয়। ভুল আদর্শের বিপরীতে আল্লাহ-রসুলের সঠিক আদর্শকে তুলে ধরতে হবে। যারা আল্লাহ-রসুলের জন্য কিছু করতে চায়, তাদেরকে বলতে হবে দুইটি বিষয়- এক. তোমরা অন্যায় দেখে বিক্ষুব্ধ হচ্ছ, সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার দূর করার জন্য কিছু করতে চাচ্ছ? এই যে পথ পাওয়া গেছে। এই বলে তাদের সামনে সঠিক পথ তুলে ধরতে হবে। দুই. তোমরা পরকালে জান্নাতে যেতে চাও? পথ পাওয়া গেছে। এই পথ তার সামনে তুলে ধরতে হবে।
আমি জানি না আমার কথাগুলো আপনারা কতটা বুঝতে পারছেন। প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদীর দিকে কেউ চোখ তুলে তাকানোর সাহাস করত না। সেই জাতি গত কয়েক শতাব্দী ধরে অন্যান্য জাতির গোলামী করে যাচ্ছে- এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এর একটাই অর্থ হতে পারে আমরা প্রকৃত উম্মতে মোহাম্মদী নই। এখন হেযবুত তওহীদের বক্তব্য কী? হেযবুত তওহীদ বলছে, আমাদের মধ্যে আকীদাগত, ফেরকাগত হাজারো মতভেদ আছে। কিন্তু ভাই শিয়া তোমার মসজিদ থাকবে না, ভাই সুন্নি তোমার দেশ থাকবে না, ভাই আহলে হাদিস তোমার ধর্ম থাকবে না, কিছুই থাকবে না যদি ঐক্যবদ্ধ না হও। আমরা এক আল্লাহ, এক রসুল, এক কেতাবের অনুসারী তো? আসুন অন্তত একটি কথায় আমরা ঐক্যবদ্ধ হই যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা নেই, অর্থাৎ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। এই একটিমাত্র ঐক্যসূত্র দিয়ে আল্লাহর রসুল আরবের দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত আইয়্যামে জাহেলিয়াতের মানুষগুলোকে যখন শত্রæতা ভুলিয়ে একে অপরের ভাই বানাতে পেরেছিলেন তখন আমরাও এই আশায় বুক বাঁধতে পারি যে, বর্তমানের অনৈক্য-সংঘাতে জর্জরিত মানুষগুলোও তওহীদের এই বৈপ্লবিক ঘোষণার মধ্য দিয়েই হারিয়ে ফেলা সেরাতুল মোস্তাকীমে ফিরে আসতে সক্ষম হবে ইনশা’আল্লাহ। ভুলে গেলে চলবে না, আমাদের একমাত্র অভিভাবক হচ্ছেন আল্লাহ রব্বুল আলামিন এবং তিনিই যথেষ্ট। কিন্তু আল্লাহ কোনো বিচ্ছিন্ন, খণ্ড-বিখণ্ড, নিজেদের মধ্যে হানাহানি-মারামারিতে লিপ্ত জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করেন না, আল্লাহ কেবল তাদেরকেই সাহায্য করেন যারা আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ করে এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয় না (ইমরান ১০৩)। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, তোমরা হতাশ হইও না, দুঃখ কর না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি মো’মেন হও। (ইমরান: ১৩৯) আমাদেরকে মো’মেন হতে হবে। আর সেই পথটিই তুলে ধরছে হেযবুত তওহীদ।’’

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ