Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

জাতীয় ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/htmain/public_html/wp-content/plugins/elementor-pro/modules/dynamic-tags/tags/post-featured-image.php on line 36

CIMG2780
শি’আবে আবু তালিবে রসুলাল্লাহর ভাষণ:
মহান আল্লাহর তস্বীহ ও পবিত্রতা ঘোষণা করার পর;
হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবের আনুগত্য কর এবং পারস্পরিক ঝগড়া বিবাদ থেকে বিরত থাক। তা না হলে, তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের ভিত্তি দুর্বল হয়ে যাবে। তোমরা কি এ সত্য সম্পর্কে অবগত নও যে, আল্লাহর জমিন যখন চতুর্দিক থেকে অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল, ‘শয়তানের এবাদত’ যখন ‘আল্লাহর এবাদাতের’ স্থান দখল করে নিয়েছিল, তখন মানবীয় নৈতিকতা মুছে গিয়েছিল, সর্বত্র ফেত্না-ফাসাদের তুফান প্রবাহিত ছিল। তোমরা সে যুগ প্রত্যক্ষ করেছ। এখানের বাসিন্দারা শত শত বছর হিংস্র প্রাণীর ন্যায় পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। এ হানাহানি-খুনাখুনির জন্য দুনিয়ার কোথাও আরববাসীর সম্মান ছিল না। প্রত্যেক জাতি-গোষ্ঠী তাদেরকে নিকৃষ্ট ও লাঞ্ছিত মনে করত। যুদ্ধ-বিগ্রহ, শত্রুতা-দুশমনি ও ঘৃণা-বিদ্বেষ ছিল তাদের পরিচয়ের বৈশিষ্ট্য। নিজেদের এ দুর্ভাগ্য সম্পর্কে তারা অজ্ঞ ছিল। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের অবস্থার ওপর রহম করেছেন। তোমাদের অন্তরে মহব্বত সৃষ্টি করেছেন এবং তার ফলে তোমরা ভ্রাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ হয়েছ। অতএব তোমরা এ মেহেরবানীর প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো না। পরস্পর মিলে মিশে থাকো এবং আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা লক্ষ্য (কী লক্ষ্য? সমস্ত মানবজাতির সুখ-শান্তি এবং পরকালে জান্নাত) হাসিল করতে সক্ষম হও।
হে মানুষ! নিঃসন্দেহে সকল মো’মেন পরস্পর ভাই ভাই এবং সকল মো’মেন এক ব্যক্তি সদৃশ। তার শিরঃপীড়া উপস্থিত হলে সারাটা শরীর বেদনায় জর্জরিত হওয়াই বাঞ্ছনীয়। এক মো’মেন অন্য মো’মেনের জন্য এমন এক বুনিয়াদ স্বরূপ, যার এক অংশ অন্য অংশের বোঝা বহনে সাহায্যকারী। আমি তোমাদের নসিহত করছি, প্রত্যেক মো’মেন পরস্পর ভাই, তাই কেউ যেন কারও প্রতি যুলুম (অন্যায় আচরণ) না করে এবং কোন একজনকে যেন একাকী বন্ধুহীন বা সাহায্যহীন ছেড়ে না দেয়া হয়। যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করে দিবেন। যে ব্যক্তি মো’মেনের কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার কষ্ট দূর করে দিবেন। যে ব্যক্তি অন্যের ত্রুটি গোপন করবে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তার ত্রুটিও গোপন রাখবেন।
হে মানুষ! যথাসম্ভব ঐক্যবদ্ধভাবে জীবন যাপন করো। পরস্পর ঝগড়া বিবাদ থেকে বিরত থাকো। তোমাদের রব তোমাদেরকে নিঃস্বার্থ কর্মের হুকুম দিচ্ছেন এবং ফেত্না-ফাসাদ ও খুনোখুনী নিষিদ্ধ করেছেন। যাঁর হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ, তোমরা মো’মেন না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর নিজের জন্য তোমরা যা পছন্দ করো, অপর ভাইয়ের জন্যও তাই পছন্দ না করা পর্যন্ত তোমরা মো’মেন হতে পারবে না।
এবং হে মো’মেনগণ! অবশ্যই মহাপবিত্র আল্লাহ তোমাদের ওপর করুণা করেছেন, তিনি তোমাদের অন্তরে ভালোবাসা সৃষ্টি করে দিয়েছেন এবং তোমাদেরকে হিংসা-বিদ্বেষের অভিশাপ থেকে মুক্ত করেছেন। এ নেয়ামতের সম্মান করা তোমাদের কর্তব্য এবং তোমরা পরস্পরের সুখে দুঃখে অংশগ্রহণ করো। আমি ইতঃপূর্বে বলেছি যে এক মো’মেন অন্য মো’মেনের জন্য বুনিয়াদ স্বরূপ। তার অর্থ হলো; এক মো’মেন অন্য মো’মেনের জন্য দেওয়ালের ইটের মতো, যেন একে অপরকে আঁকড়ে থাকে। যেরূপ দেয়ালের এক ইট অপর ইটকে সংযুক্ত রাখে, সেরূপ পরস্পর ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আমি তোমাদেরকে হেদায়াত করছি। তোমরা যে অবস্থাতেই থাকো না কেন, একে অপরের সাহায্য করবে। আমি তোমাদের হুঁশিয়ার করছি যে, তোমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকো, একে অপরকে সাহায্য করো অর্থাৎ আশ্রয় দান করো, তাহলে তোমরা প্রাচীরের ন্যায় মজবুত থাকবে। অন্যথায় তোমরা স্তুপীকৃত ইটের ন্যায় হবে, কোনো দৃঢ়তা থাকবে না এবং যে কেউ তা উড়িয়ে দিতে পারবে। আর তোমাদের মধ্যে যার সামর্থ্য রয়েছে, সে যেন অবশ্যই তার ভাইয়ের উপকার করে এবং আমি পুনরায় তোমাদেরকে একথা বলছি যে, কোনো লোক ততক্ষণ পর্যন্ত মো’মেন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে, তার ভাই এর জন্যও তাই পছন্দ করে। আমি এ উদ্দেশ্যে বলছি যে, প্রত্যেক মো’মেন যেন লাভ-লোকসানের ব্যাপারে, অপর মো’মেনকে তার নিজের মত মনে করে এবং সে যা নিজের জন্য অপছন্দ করে, তা যেন তার ভাই এর জন্যও অপছন্দ করে। যতদূর সম্ভব এক মো’মেন ভাইকে যেন নিজের সত্ত্বার ন্যায় প্রিয় মনে করে। নিজের সত্ত্বাকে সে যেরূপ প্রিয় মনে করে, সেরূপ তার ভাইকেও প্রিয় মনে করে এবং নিজের সত্ত্বার প্রতি যে আচরণ করে, সেরূপ আচরণ যেন তার ভাইয়ের প্রতিও করে। কথাবার্তায় মোনাফেকও নিজেকে মো’মেন বলে থাকে। কিন্তু মো’মেন তো সেই ব্যক্তি, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মো’মেন নিরাপদ থাকে।
হে মানুষ! মো’মেনের প্রত্যেক জিনিস অপর মো’মেনের জন্য হারাম। পরস্পরের রক্ত, ইজ্জত, আব্রু, সম্পদ এর কোনটারই ক্ষতি সাধন তোমরা করো না। মানুষের চারিত্রিক গুণাবলীর মধ্যে এমন দু’টি গুণ রয়েছে যার চেয়ে উত্তম আর কিছু নেই। এর প্রথমটি হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ঈমান, আর দ্বিতীয়টি মো’মেনদের উপকার সাধন। দোষাবলীর মধ্যেও এমন দু’টি দোষ রয়েছে, যার চেয়ে নিকৃষ্টতম আর কিছুই নেই। প্রথমটি, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা, দ্বিতীয়টি কোন মো’মেনের ক্ষতি সাধন করা। কোন অবস্থাতেই মো’মেন ভাই এর ওপর যুলুম করা অন্য মো’মেনের জন্য বৈধ নয়। বিপদকালে মো’মেন ভাইকে সাধ্যমত সাহায্য করা অবশ্য কর্তব্য।
সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতাল্লাহে ওয়া বারাকাতুহ্।

বিদায় হজ্বে রসুলাল্লার ভাষণে ঐক্যের শিক্ষা:
তোমাদের রবের সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের একের ধন-সম্পদ ও রক্ত অন্যের কাছে আজকের দিন এবং এ মাসের মতই সম্মানিত। শীঘ্র তোমরা তোমাদের রবের সাথে মিলিত হবে এবং তিনি তোমাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন।
জেনে রেখো! নিশ্চয়ই মুসলিমরা পরস্পর ভাই ভাই। নিশ্চয়ই মুসলিমগণ এক অখ- ভ্রাতৃসমাজ। কোন মুসলিমের মাল তার সন্তুষ্টি ব্যতিরেকে গ্রহণ হালাল নয়। তোমরা নিজেদের উপর যুলুম কোর না। হে আল্লাহ! আমি তোমার পয়গাম পৌঁছিয়েছি কি? জনগণ জওয়াবে বললো, হাঁ। রসুলাল্লাহ বললেন, হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাক।
তোমাদের অধীনস্থ সেবকগণ! তোমাদের অধীনস্থ সেবকগণ! তোমরা যা খাও তাদেরকে তা খেতে দাও; তোমরা যেরূপ কাপড় পরিধান করো তাদেরকে সেরূপ কাপড়ই পরিধান করতে দিবে। তারা যদি কোন অপরাধ করে এবং তোমরা তা ক্ষমা না করতে চাও তা’হোলে তাদের কে বিক্রি করে দাও; তাদেরকে শাস্তি দিও না।
হে জনগণ! আল্লাহকে ভয় কর। কোন নাককাটা কাফ্রি গোলাম তোমাদের আমীর নিযুক্ত হলে, এবং সে তোমাদেরকে আল্লাহর কেতাব অনুসারে পরিচালিত করলে তার কথা শুনবে এবং আনুগত্য করবে।
হে জনগণ! নিশ্চয়ই তোমাদের প্রভু এক, তোমাদের পিতা (আদম) এক। তোমাদের প্রত্যেকেই আদমের সন্তান, আর আদমের সৃষ্টি মাটি হতে। সাবধান! অনারবের উপর আরবের কিংবা আরবের উপর অনারবের, কৃষ্ণাঙ্গের উপর শ্বেতাঙ্গের কিংবা শ্বেতাঙ্গের উপর কৃষ্ণাঙ্গের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই। যাহার মধ্যে তাকওয়া আছে সে-ই শ্রেষ্ঠ। আমি পয়গাম পৌঁছিয়াছি কি? জনগণ জওয়াবে বললো, হাঁ। রসুলাল্লাহ বললেন, হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থেকো।
হে মানবম-লী! আমার কথা শুন! নিশ্চয়ই আমি আমার কথা পৌঁছিয়াছি। আমি তোমাদের নিকট দু’টি বস্তু রেখে যাচ্ছি, এগুলি দৃঢ়তার সাথে আঁকড়ে ধরলে (অনুসরন করলে) তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। তাহলো ’আল্লাহর কেতাব’ ও ’আমার সুন্নাহ’ (জীবনাদর্শ), আরেক বর্ণনায় আমার পরিবারবর্গ।
ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ উদ্দেশ্যে অন্য কোন মুসলিমকে ধাক্কা দেওয়া কোন মুসলিমের জন্য বৈধ নয়। আমি শীঘ্রই তোমাদেরকে বলব মুসলিম কে? মুসলিম ঐ ব্যক্তি, যার মুখ ও হাত হতে অন্য মুসলিমরা নিরাপদ; মো’মেন ঐ ব্যক্তি, প্রাণ ও সম্পত্তির নিরাপত্তার ব্যাপারে যার উপর মানুষ আস্থা রাখতে পারে; মোহাজের ঐ ব্যক্তি, যে পাপ পরিত্যাগ করে এবং মোজাহেদ ঐ ব্যক্তি, যে নফসের (কুপ্রবৃত্তি) বিরুদ্ধে জেহাদে লিপ্ত হয়।
পাঠক, লক্ষ করুন- আখেরী নবী, বিশ্বনবী রহমাতাল্লিল আলামিন, মানবজাতির মুকুটমণি মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.) তাঁর অতি কষ্টে গড়া জাতিকে লক্ষ করে বার বার যে আদেশ, উপদেশ, সাবধানবাণী দিচ্ছেন; এই জাতি যেন সর্বদা ঐক্যবদ্ধ থাকে, নিজেরা নিজেরা হানাহানি না করে। অথচ আজ মহা আবেদ, মহা ধার্মিকদের এই কথা মনে নেই। তারা শিয়া, সুন্নী, হানাফি, শাফেয়ী, হাম্বলী, কাদেরিয়া, নকশবন্দীয়া, মোজাদ্দেদীয়া, গণতন্ত্রী, সমাজতন্ত্রী, রাজতন্ত্রী, আবার পারসিয়ান, আফ্রিকান, ভারতীয়, পাকিস্তানি, আফগানি ইত্যাদি পরিচয়ে শত-সহস্র ভাগে বিভক্ত হযে নিজেরা নিজেরা হানা-হানি, রক্তারক্তি, যুদ্ধ-বিগ্রহ করে যাচ্ছে। পরিণামে অন্যান্য জাতিগুলোর লাথি, অপমান, লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে। কাজেই এই জাতি এখন আর আল্লাহর চোখে মো’মেন, মুসলিম না। মহানবীর চোখে আর উম্মতে মোহাম্মদী না। এখন আবার যদি এরা শেষ নবীর প্রকৃত উম্মত হতে হয়, মো’মেন হতে হয় তবে অতি অবশ্যই তওহীদের উপরে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে। আর এই ডাকই দিচ্ছে হেযবুত তওহীদ।

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ