হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

সালাহ (নামাজ) হলো মো’মেনের চরিত্র গঠনের প্রশিক্ষণ

রিয়াদুল হাসান:
সালাহ চরিত্র গঠনের- প্রধানত দুর্ধর্ষ, অপরাজেয় যোদ্ধার চরিত্র গঠনের প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া; এই আকিদা বদলে একে অন্যান্য ধর্মের মতো এবাদতের, উপাসনার শুধু আত্মিক উন্নতির প্রক্রিয়া বলে মনে করার ফলে আজ সেই যোদ্ধার চরিত্র গঠন তো হয়ই না এমন কি সালাতের বাহ্যিক চেহারা পর্যন্ত বদলে গেছে। আল্লাহর রসুলের বহুবারের দেওয়া তাগীদ- সাবধান বাণী- তোমাদের সালাতের লাইন ধনুকের ছিলার মতো সোজা কর, নাহলে আল্লাহ তোমাদের মুখ পেছন দিকে ঘুরিয়ে দেবেন, তাঁর আদেশ- তোমাদের মেরুদণ্ড, ঘাড় সোজা করে সালাতে দাঁড়াও এ সমস্ত কিছুই আজ ভুলে যাওয়া হয়েছে। এসব হুকুম না মুসুল্লীদের মনে আছে, না এমামদের মনে আছে। কাজেই ঐ সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণের সালাহ আজ ন্যুব্জ, বাঁকা লাইনের; বাঁকা পিঠের মুসুল্লী ও এমামদের মরা সালাহ। আল্লাহ কোর’আনে সুরা নেসার ১৪১-১৪২ নং আয়াতে মোনাফেকদের সালাতের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন- মোনাফেকরা শৈথিল্যের সাথে সালাতে দাঁড়ায়। আল্লাহ শব্দ ব্যবহার করেছেন ‘কুসালা’ যার অর্থ সাহস হারিয়ে ফেলা, অলসতা, ঢিলা-ঢালা ভাবে। বর্তমান বিশ্বের মুসলিম নামের এ জাতির সালাতের দিকে তাকালে কুসালা শব্দের অর্থ বুঝতে কারও কষ্ট হবে না। খুশু, খুজুর নামে এ জাতি ‘কুসালা’ শব্দের যথাযথ প্রয়োগ কোরছে। সমস্ত বিশ্বে বর্তমানে এই সাহসহীন সালাহ-ই চলছে। এই মরা প্রাণহীন সালাতের পক্ষে বলা হয়- খুশু-খুজুর সাথে নামাজ পড়া উচিত। এই খুশু-খুজু কী? বর্তমানে বলা হয় সমস্ত কিছু থেকে মন সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহর প্রতি মন নিবিষ্ট করা হচ্ছে খুশু-খুজু; অর্থাৎ এক কথায় ধ্যান করা।
সালাহরত অবস্থায় ধ্যান করা অসম্ভব
প্রশ্ন হচ্ছে, সালাতে আল্লাহকে ধ্যান করাই যদি উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তবে আল্লাহ সালাতের প্রক্রিয়া, নিয়ম-কানুন এমন করে দিলেন কেন যাতে ধ্যান করা অসম্ভব। খুশু-খুজুু অর্থাৎ ধ্যান করাই আল্লাহর উদ্দেশ্য হলে সালাতের নিয়ম হত পাহাড়-পর্বতের গুহায়, কিম্বা খানকা বা হুজরায় অথবা অন্ততপক্ষে কোনো নির্জন স্থানে ধীর-স্থিরভাবে একাকী বসে চোখ বন্ধ করে মন নিবিষ্ট করে আল্লাহর ধ্যান করা। সালাহ কি তাই? অবশ্যই নয়, সালাহ এর ঠিক উল্টো। বহু জনসমাবেশের মধ্যে যেয়ে সেখানে ধনুকের ছিলার মতো সোজা লাইন করে দাঁড়িয়ে সৈনিকের, যোদ্ধার মতো ঘাড়, মেরুদণ্ড লোহার রডের মতো সোজা করে, এমামের তকবিরের (আদেশের) অপেক্ষায় সতর্ক, তটস্থ থাকা তারপর তকবিরের সঙ্গে সঙ্গে সকলে একত্রে রুকু, সাজদায় যাওয়া, ওঠা, সালাম দেয়া অর্থাৎ এমামের (নেতার) আদেশ পালন করা। সালাতের প্রায় ১১৪ টি নিয়ম-পদ্ধতির প্রতি লক্ষ্য রেখে, সেগুলি যথাযথভাবে পালন করে ঐ খুশু-খুজুর সাথে অর্থাৎ ধ্যানের সাথে সালাহ সম্পাদন করা যে অসম্ভব তা সাধারণ জ্ঞানেই (Common sense) বোঝা যায়। অথচ ঐ নিয়ম-পদ্ধতি সঠিকভাবে, যথাযথভাবে পালন না করে যেমন-তেমন ভাবে সালাহ পড়লে তা আল্লাহ গ্রহণ করবেন না। আল্লাহর রসুল বলেছেন- তোমরা পূর্ণভাবে সালাহ কায়েম করো, কেননা আল্লাহ পূর্ণ ব্যতীত সালাহ কবুল করেন না [আবু হোরায়রা (রা.) থেকে]। তিনি আরও বলেছেন- তোমাদের কারও সালাহ পূর্ণ (সঠিক) হবে না, যে পর্যন্ত না তোমরা আল্লাহ যেভাবে আদেশ করেছেন ঠিক সেইভাবে কায়েম করবে (আবু দাউদ)। আল্লাহ-রসুলের আদেশ মোতাবেক সমস্ত নিয়ম-কানুন যথাযথ পালন করে অর্থাৎ পূর্ণ সঠিকভাবে সালাহ কায়েম করলে বর্তমানে মুসুল্লীরা খুশু-খুজু বলতে যা বুঝেন তা অসম্ভব। খুশু-খুজুর প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে- মো’মেন যখন সালাতে দাঁড়াবে তখন তার মন পৃথিবীর সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একাগ্র হবে সালাতে; সে সমস্ত ক্ষণ সচেতন থাকবে যে সে মহামহীম আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে আছে, আল্লাহর বিরাটত্ব ও তার নিজের ক্ষুদ্রতা সম্বন্ধে সে থাকবে সর্বদা সচেতন, আর সেই সঙ্গে একাগ্র হয়ে থাকবে এমামের (নেতার) তকবিরের (আদেশের) প্রতি, সালাহ সঠিকভাবে, নিখুঁতভাবে সম্পাদন করতে। এই হোল খুশু-খুজু।
সালাতে শরীর থাকবে দৃঢ়, হৃদয় থাকবে বিনীত
কিন্তু এই খুশু-খুজু অর্থাৎ একাগ্রতার মানে এই নয় যে সালাতে দাঁড়াবে ন্যুব্জ, সম্মুখে ঝুঁকে, মাথা নত করে। কারণ যিনি আমাদের সালাহ শিখিয়েছেন আল্লাহর রসুল তিনি আদেশ করেছেন- সালাতে দাঁড়াবে সোজা হয়ে, মেরুদণ্ড, ঘাড় সোজা শক্ত করে (সৈনিকের মতো)। আল্লাহ কোর’আনে বলছেন- সালাহ কায়েম কর আনুগত্যের সাথে (কোর’আন- সুরা বাকারা ২৩৮), আল্লাহ আবার বলছেন সালাহ কায়েম কর বিনয়ের সাথে (কোর’আন- সুরা মু’মিনুন ২)। তাঁর রসুুল বলছেন- সোজা, শক্ত, দৃঢ়ভাবে সালাতে দাঁড়াও। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় না কি যে দু’টি আদেশ বিপরীতমুখী? না, মোটেই বিপরীতমুখী নয়; আল্লাহর ও তাঁর রসুলের কথা বিপরীত হতে পারে না। একটা মানসিক আর অন্যটা দৈহিক। সালাতে মন থাকবে বিনয়ী, নম্র, অনুগত আর দেহ থাকবে লোহার রডের মতো দৃঢ়, ঋজু; রুকুতে সাজদায় যেয়েও পিঠ ঘাড় হাত, পা থাকবে সোজা, শক্ত; বিচলন, গতি হবে দ্রুত। এই দুই মিলিয়ে হবে ইসলামের প্রকৃত সালাহ। মো’মেন যখন সালাতে দাঁড়াবে তখন তার মনের অবস্থা হবে এই রকম যে সে সর্বক্ষণ সচেতন থাকবে যে সে এই বিশাল বিরাট সৃষ্টির স্রষ্টা রাব্বুল আলামিনের সামনে দাঁড়িয়েছে। কেন দাঁড়িয়েছে? দাঁড়িয়েছে এই জন্য যে সে ঐ মহান স্রষ্টার খলিফা, প্রতিনিধি, এবং খলিফা হিসাবে তার সর্বপ্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সমস্ত পৃথিবীতে আল্লাহর তওহীদ ভিত্তিক দীন, জীবন-ব্যবস্থা কার্যকরী করে সমস্ত অন্যায়, অত্যাচার-অবিচার, অশান্তি আর রক্তপাত দূর করে শান্তি (ইসলাম) প্রতিষ্ঠা করা। ঐ বিশাল দায়িত্ব পূর্ণ করতে গেলে যে চরিত্র প্রয়োজন, যে চরিত্রে সংকল্পের দৃঢ়তা, ঐক্য, শৃঙ্খলা, আনুগত্যের ও হেজরতের সমাহার সেই চরিত্র সৃষ্টির জন্য সে সালাতে দাঁড়িয়েছে। মনের ভেতরে তার থাকবে বিনয়, সসম্মান-ভক্তি (যারা বিনয়-নম্র নিজেদের সালাতে, সুরা মো’মেনুন- ২) আর শারীরিকভাবে সে দাঁড়াবে আল্লাহর মোজাহেদ (যোদ্ধা), সৈনিকের মতো দৃঢ়, লোহার রডের মতো সোজা হয়ে, তটস্থ হয়ে থাকবে এমামের আদেশের (তাকবিরের) অপেক্ষায় এবং আদেশের সঙ্গে সঙ্গে সকলে একসঙ্গে দ্রুত সে আদেশ পালন করবে (কানেতিন- অনুগত, সুরা বাকারা ২৩৮)। এই হচ্ছে ইসলামের প্রকৃত সালাহ। ইসলামের সালাহ যে অন্যান্য ধর্মের ধ্যান নয় তার প্রমাণ সালাতের পুরো প্রক্রিয়াটাই। তার মধ্যে বিশেষ করে এই নিয়মটি যে সালাতে চোখ বন্ধ করা যাবে না। ধ্যান করতে গেলে তো বটেই, এমন কি কোনো বিষয়ে একটু গভীরভাবে চিন্তা করতে গেলেও মানুষের চোখ বন্ধ হয়ে আসে। সেই চোখ বন্ধ করাকে নিষিদ্ধ করার মানে এই নয় কি যে সালাতে ধ্যান করার জায়গা নেই, আছে সজাগতা, অতন্দ্র সতর্কতা?
সালাহ ও ধ্যান পরস্পরের ঠিক বিপরীত
সালাহ শুধু যে ধ্যান নয়, প্রকৃতপক্ষে ধ্যানের ঠিক বিপরীত তার পক্ষে কয়েকটি কারণ পেশ করছি। ১) সালাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে কোনো বাঁকা-টেরা পদার্থ, জিনিসকে আগুনে পুড়িয়ে, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে কোনো কাজের জিনিস তৈরি করা; আর ধ্যান হচ্ছে নিষ্ক্রিয় হয়ে গভীর চিন্তা করা। ২) সালাহ গতিশীল (Dynamic); ধ্যান স্থিতিশীল, স্থবির (Static)। ৩) তাকবিরের (Command) আনুগত্য করতে হয়; ধ্যানে ঈড়সসধহফ এর কোনো স্থানই নেই। ৪) দলবদ্ধভাবে কায়েম করতে হয়; ধ্যান একা একা করতে হয়। ৫) সালাতে চূড়ান্ত সচেতন ও সতর্ক অবস্থায় থাকতে (Alert) হয়; ধ্যানে ঠিক বিপরীত অর্থাৎ নিথর, অচেতন হয়ে যেতে হয়। ৬) সালাহ ঠিক মতো কায়েম করতে হলে ১০০টির বেশি নিয়ম কানুন মনে রেখে তা পালন করতে হয়; ধ্যানে এই জাতীয় কোনো নিয়ম কানুন নেই। ৭) সালাতে চোখ বন্ধ রাখা যাবে না; চোখ বন্ধ না করে ধ্যান প্রায় অসম্ভব। ৮) সালাহ সক্রিয় (Active); ধ্যান নিষ্ক্রিয় (Inactive)। ৯) অন্ধকারে সালাহ হয় না, পক্ষান্তরে অন্ধকারই ধ্যানের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ, ১০) সালাহ প্রচণ্ড গতিশীল, দুর্বার, বিশ্বজয়ী, মৃত্যুভয়হীন দুর্ধর্ষ যোদ্ধা তৈরি করে; ধ্যান দুনিয়া বিমুখ, অন্তর্মুখী রিপুজয়ী সুফি দরবেশ তৈরি করে।
যদি কাউকে বলা হয় তুমি জনাকীর্ণ রাজপথে দৌড়াবে আর সেই সঙ্গে ধ্যান করবে তাহোলে ব্যাপরটা কি রকম হবে? এটা যেমন হাস্যকর তেমনি হাস্যকর কাউকে বলা যে তুমি সালাহ কায়েম করবে এবং সেই সঙ্গে ধ্যানও করবে। কারণ দৌড়াবার সময় যেমন চোখ খোলা রেখে, কোথায় পা ফেলছে তা দেখে, রাস্তার গাড়ি ঘোড়া দেখে দৌঁড়াতে হবে, তখন ধ্যান অসম্ভব, তেমনি সালাতের সময়ও সালাতের ১১৪টি নিয়ম কানুন মনে রেখে, রাকাতের হিসাব রেখে সেগুলি পালন করার সাথে ধ্যান করাও অসম্ভব। সুতরাং সালাহ ও ধ্যান বিপরীতমুখী দু’টি কাজ যা একত্রে অসম্ভব। অথচ সালাহ সম্বন্ধে আকিদার বিকৃতিতে একে অন্যান্য ধর্মের উপাসনার সাথে এক করার চেষ্টায় এই অসম্ভব আকিদাই আজ মুসলিম হবার দাবিদার এই জনসংখ্যার আকিদা। সালাহর উদ্দেশ্য কী, এ ব্যাপারে আকিদার বিকৃতির পর থেকে গত কয়েক শতাব্দী থেকে মুসলিম নামের এই জনসংখ্যাটি দৌঁড়াবার সঙ্গে সঙ্গে ধ্যান করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে এবং ফলে তাদের না দৌঁড় হচ্ছে না ধ্যান করা হচ্ছে।
সালাহ ও ধ্যান পরস্পর বিপরীত এ কথার মানে এই নয় যে এর মাধ্যমে সালাহর আধ্যাত্মিক দিক অস্বীকার করা হচ্ছে। যেখানে সারা জীবনের ধ্যান ও তাসাউফ সাধনা একজন সুফীকে জীবন ত্যাগ করতে শেখায় না সেখানে সালাহ এমন এক আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ যা সালাহ কায়েমকারীকে এমন মৃত্যুভয়হীন দুর্ধর্ষ যোদ্ধায় পরিণত করে যে, সে নির্দ্বিধায় আল্লাহর দুনিয়ায় আল্লাহর কলেমা প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন ও সম্পদ বিসর্জন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বর্তমান মুসলিম বলে পরিচিত এ জনগোষ্ঠীর পণ্ডিতগণ সালাহকে সামরিক প্রশিক্ষণ হিসাবে তো মানেই না বরং তারা সালাহকে যে ধ্যান বলে প্রচার করে তারা সেই ধ্যানও করে না অর্থাৎ ওরা ট্রেনিংও করে না আবার ধ্যানও করে না। তাদের কোনটাই হয় না। কারণ ধ্যান করলে তো অসংখ্য রিপুজয়ী সুফী দরবেশ তৈরি হতো, সেক্ষেত্রে অপরাধ, অন্যায়, অবিচার কিছুটা হলেও তো কমত। তাও হয়নি। বরং তাদের নামাজ আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় সুরা নিসার ১৪২-১৪৩ নং আয়াত যেখানে আল্লাহ বলছেন “নিশ্চয়ই মোনাফেকরা আল্লাহর সাথে ধোঁকাবাজি করে; বস্তুতঃ তিনি তাদেরকে এর শাস্তি দেন। যখন তারা সালাতে দাঁড়ায়, তখন শৈথিল্যের সাথে দাাঁড়ায় কেবল লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে; তারা থাকে দোটানায় দোদুল্যমান, না এ দিকে, না ওদিকে।
যারা আল্লাহর রসুলের পদতলে বসে ইসলাম শিখেছিলেন এবং তাঁর হাতে বায়াত নেবার পর বহু বছর তাঁর সঙ্গে দিনে পাঁচবার সালাহ কায়েম করেছেন তাদের অন্যতম এবং দ্বিতীয় খলীফা ওমর (রা.) বিন খাত্তাবের আকিদায় সালাহ কী ছিল? একদিন মো’মেন মোজাহেদদের সালাহ পর্যবেক্ষণ করার সময় তিনি দেখলেন একজন ঠিকই দৃঢ় এবং সোজাভাবে দাঁড়িয়েছেন, কিন্তু তার মাথাটা খানিকটা সামনের দিকে ঝোঁকানো। ওমর (রা.) ঐ মোজাহেদের মাথা ধরে উঁচু, সোজা করে দিলেন এবং তারপর তার মাথায় মৃদু আঘাত করে বললেন খুশু এখানে নয়, বলে তার বুকে আঙ্গুল রেখে বললেন- খুশু এখানে।
প্রকৃত তওহীদ ও জেহাদ অর্থাৎ মো’মেন হবার আল্লাহর দেয়া সংজ্ঞা (সুরা হুজরাত- ১৫) থেকে বিচ্যুত, আল্লাহর অভিশপ্ত (লা’নত প্রাপ্ত) এই জাতিকে সালাতের উদ্দেশ্য বোঝাবার চেষ্টায় ইতিহাস (তারিখ) ও হাদিস থেকে দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা.) বিন খাত্তাবের উল্লেখ করা প্রয়োজন। তিনি চাবুক হাতে মুসুল্লীদের লাইনের মধ্য দিয়ে হাটতেন এবং কাউকে ধনুকের ছিলার মতো সোজা লাইন থেকে বা অন্য কোনো বিচ্যুতি দেখলে চাবুক দিয়ে আঘাত করতেন। যারা সালাহ, তাদের ভাষায় নামাজের উদ্দেশ্য ধ্যান করা মনে করেন (এবং এই আকিদাই মুসলিম দুনিয়ায় আজ সর্বব্যাপী), তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- চাবুক মেরে কি মানুষকে ধ্যান করানো যায়? ওমরের (রা.) কাজ কি সৈন্য বাহিনীর প্যারেডের সার্জেন্ট মেজরের (Sergeant Major) কাজের সাথে মিলে না, যে প্যারেডের প্রশিক্ষণে ভুল ত্রুটি হলে গালি দেয়, পিটায়? আর প্রথম সারির আসহাব, ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা জানতেন না সালাহ ধ্যান করার জন্য নাকি সামরিক প্রশিক্ষণ? আল্লাহর লা’নতের ফলে এ জাতির সাধারণ জ্ঞান (Common sense) পর্যন্ত লোপ পেয়েছে।

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...