হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

যারা হেযবুত তওহীদের সাথে কাজ করতে চান তাদের উদ্দেশ্যে

হেযবুত তওহীদ মানবতার কল্যাণে নিবেদিত একটি অরাজনৈতিক আন্দোলন যার প্রতিষ্ঠাতা মাননীয় এমামুয্যামান জনাব মোহাম্মদ বায়াজীদ খান পন্নী। গত ২২ বছর যাবৎ হেযবুত তওহীদের সদস্যরা মাননীয় এমামুয্যামানের অনুপ্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে নিজেদের জীবন-সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় বিসর্জন দিয়ে নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে, মানুষের মুক্তির জন্য, সমাজে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রাজধানী থেকে শুরু করে দেশের সর্বত্র সভা, সেমিনার, আলোচনা অনুষ্ঠান, র‌্যালি, মানববন্ধন, জনসভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠান, পথসভা, আলেম সম্মেলনসহ লক্ষাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের মাধ্যমে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রত্যয়ে ব্রত হয়েছে হেযবুত তওহীদ। আমাদের এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে মহান আল্লাহপাকের দরবারে দুহাত তুলে দোয়া করছে অসংখ্য মানুষ। এছাড়া হেযবুত তওহীদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করে মানবতার কল্যাণে কাজে সম্পৃক্ত হতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বিশাল জনগোষ্ঠি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া, আমাদের মতো অতি তুচ্ছ, সাধারণ, গুনাহগার মানুষের কথায় তারা ঐক্যমত পোষণ করেছে এবং এই কাজে ব্রতী হবার আগ্রহ প্রকাশ করছে। তাই তাদের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন, দোয়া এবং শুকরিয়া জানাচ্ছি।
হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের কিছু নীতিমালা এবং কর্মসূচি রয়েছে। এমামুয্যামান এই নীতিমালাগুলো আন্দোলনের শুরুতেই নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি আমাদের ছেড়ে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। আজও আমরা সেই নীতিমালা থেকে একবিন্দু পরিমাণ বিচ্যুত হইনি। যারা এর বিচ্যুতি ঘটাতে চেয়েছে বা ঘটিয়েছে তারা এই পবিত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারেনি। আলহামদুলিল্লাহ, সর্বময় ক্ষমতার মালিক মহান আল্লাহ তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে নতুন ও উদ্যোমীদের দিয়ে সেই শুন্যস্থান পুরণ করে দিয়েছেন। তাই আমরা সর্বান্তকরণে বলতে পারি আল্লাহর ¯েœহধন্য আন্দোলন হেযবুত তওহীদে কেউ যদি সত্য দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজ ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বা মতলবে এসে থাকেন তবে যথা সময়ে তা অবশ্যই প্রকাশিত হবে। তাই এ যাবত যারা হেযবুত তওহীদের এই মহতী উদ্যোগের সাথে ঐক্যমত পোষণ করেছেন তাদেরকেও এইসব নীতিমালা এবং কর্মসূচি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।
একটি আন্দোলন পরিচালনা করতে কিছু নীতিমালা এবং কর্মসূচি অনুসরণ করতে হয়। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা এবং সুপরিকল্পিত কর্মসূচি ছাড়া কোনো আন্দোলনই তার কাক্সিক্ষত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না। হেযবুত তওহীদের নীতিমালাগুলো হলো:

  • আন্দোলনের কোনো সদস্য-সদস্যা অবৈধ কোনো অস্ত্রের সংষ্পর্শে যাবে না।
  • কোনোরূপ বে-আইনী কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত হবে না।
  • আন্দোলনের কেউ রাজনীতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হবে না।
  • কেউ বেকার থাকতে পারবে না।
  • কর্মক্ষম সবাইকে হালাল উপায়ে রোজগার করতে হবে।
  • দ্বীনের কাজ করে কোনোরূপ বিনিময় গ্রহন করা যাবে না।
  • সকল ধর্ম-বর্ণ-দল-মত, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে, জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ এটা জাতির কাজ, তাই জাতির সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

এই সব নীতিমালা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। যারা বেআইনী কর্মকান্ড করবে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন ব্যবস্থা নিবে। প্রয়োজনে আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করবে না।
মানবজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মহান আল্লাহ তাঁর রাসুল (সা:) কে একটি পরিপূর্ণ কর্মসূচি দান করেছিলেন। যে কর্মসূচি অনুসরণ করে তৎকালীন সর্বদিক দিয়ে পশ্চাদপদ আরবজাতি, ঐক্য, শৃঙ্খলায়, ভ্রাতৃত্বে পৃথিবীর মধ্যে মহান আদর্শ স্থাপন করেছে। সেই কর্মসূচি স্বয়ং আল্লাহর রাসুল তাঁর হাতে গড়া উম্মতে মোহাম্মদীকে দিয়ে গিয়েছিলেন এবং তাঁরা তা অনুসরণ করেছিলেন। সেই একই কর্মসূচি অনুসরণ করেই হেযবুত তওহীদ সত্যদীন, দীনুল হক প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। পাঁচ দফা ভিত্তিক এই কর্মসূচিটি রাসুল (সা:) তাঁর উম্মাহর উপর অর্পণ করার সময় বলেছিলেন- ‘এই কর্মসূচি আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। এখন আমি এই কর্মসূচি তোমাদের হাতে অর্পণ করে চলে যাচ্ছি।’
হাজার বছর ধরে চাপা পড়ে থাকা এই কর্মসূচিটি মহান আল্লাহ আবারও অনুগ্রহ করে হেযবুত তওহীদকে দান করেছেন। সেই কর্মসূচি হলো:
১. সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হবো। (ঐক্য)
২. যিনি নেতা হবেন তার আদেশ শুনবো। (শৃঙ্খলা)
৩. নেতার ঐ আদেশ পালন করবো। (আনুগত্য)
৪. অন্যায়, অসত্য, শিরক-কুফরের সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করবো। (হেজরত)
৫. সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য আল্লাহর রাস্তায় সর্বাত্মক সংগ্রাম করবো। (জেহাদ)
“যে ব্যক্তি এই কর্মসূচির ঐক্যবন্ধনী থেকে এক বিঘত পরিমাণও সরে গেল সে তার গলা থেকে ইসলামের বাঁধন খুলে ফেলল, যদি না সে আবার তওবা করে ফিরে আসে; এবং যে ব্যক্তি অজ্ঞানতার যুগের দিকে আহ্বান করল, সে নিজেকে মুসলিম বলে বিশ্বাস করলেও, নামাজ পড়লেও এবং রোজা রাখলেও সে অবশ্যই জাহান্নামের জ্বালানী পাথর হবে। (আল হারিস আল আশয়ারী রা: থেকে আহমদ, তিরমিযি, বাব উল এমারাত, মেশকাত)।”
যারা হেযবুত তওহীদের সাথে ঐক্যমত পোষণ করেছেন তারা কর্মসূচির প্রথম দফাটি পুরণ করেছেন। সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং ন্যায় ও সত্যের পক্ষে নিজেকে এক আল্লাহর তওহীদের উপর ঐক্যবদ্ধ করেছেন। এরপর এই ঐক্যবদ্ধ জাতির কাজ কী? ঐক্য হওয়ার পর একজন নেতার আদেশ মানতে হবে। কারণ ঐক্য হবার পর যদি আমরা বিচ্ছিন্নভাবে যে যেভাবে পারি কাজ করি, তবে সেটা হবে উদ্দেশ্যহীন, লক্ষ্যহীন, ফলাফলহীন বৃথা কাজ। একটি মালার পুতিঁগুলো যদি পাশাপাশি রাখা হয় তবে যে কোনো মুহূর্তেই পুঁতিগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে হারিয়ে যেতে পারে। তাই তাকে একটি সুতা দিয়ে বেঁধে রাখতে হয়। বর্তমান মুসলিম জাতিটিকে ঐক্যবদ্ধ করে রাখার জন্য কোনো নেতা না থাকায় ঐ ছড়ানো পুতিঁর মতো এক একজন এক এক দিকে হারিয়ে যাচ্ছে। তাই ঐক্য হওয়ার পরের দফা হলো এক নেতার আদেশ শুনতে হবে। তৃতীয় দফা হলো নেতার আদেশ শোনার পর তা জীবন-সম্পদ দিয়ে হলেও পালনের চেষ্টা করতে হবে। চতুর্থ দফাটি হলো যাবতীয় অন্যায়, অসত্য, শিরক-কুফর, আল্লাহ ও রাসুলের নাফরমানি, ধর্মব্যবসা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, অপরাজনীতি, দুর্নীতি ইত্যাদি থেকে হেজরত করলাম অর্থাৎ নিজেদের মুক্ত করলাম। কোনো অবস্থাতেই আমরা কোনো অবৈধ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট হবো না। আর সর্বশেষ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দফা হলো প্রথম চারদফার পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের পর আমরা মানবতার কল্যাণে, মানুষের মুক্তির জন্য, পৃথিবীতে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য, আমাদের জীবন-সম্পদ বিসর্জন দিয়ে নিঃস্বার্থভাবে সংগ্রাম করে যাব।
যারা হেযবুত তওহীদের উপরোক্ত নীতিমালা আর কর্মসূচির সাথে ঐক্যমত পোষণ করবেন তারা একদিকে হবেন ইস্পাতসম ঐক্যবদ্ধ অন্যদিকে সাবের, সংকল্পে দৃঢ়। তাহলে তাদের ঈমান হবে একটা শক্তি। এই ঈমানের শক্তি এবং দেশপ্রেমের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে, যাবতীয় সংকট থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে সক্ষম হবেন।

-মসীহ উর রহমান সাধারণ সম্পাদক, হেযবুত তওহীদ

সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...