হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

গৃহে যখন আগুন লাগে যজ্ঞ তখন নিরর্থক

রাকীব আল হাসান:
মহাভারতে একটি কথা আছে, “গৃহে যখন আগুন লাগে যজ্ঞে আহুতি দিয়ে তখন পুণ্যলাভ হয় না”। অর্থাৎ গৃহে আগুন লাগলে প্রথম কর্তব্য সেই আগুন নিভিয়ে গৃহের সকলকে রক্ষা করা। কেউ যদি আগুন না নিভিয়ে তখন যজ্ঞে বসে থাকে তবে সেটিই হবে বড় অধর্ম। এই বাণীটি একটি সনাতন বাণী। অর্থাৎ এটি সকল ধর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কেউ আগুনে পুড়ছে আর আপনি তখন তাকে উদ্ধার না করে সালাহ (নামাজ) কায়েম করছেন, যজ্ঞ করছেন, জপমালা জপছেন, পূজা করছেন বা অন্য কোনো উপাসনা করছেন- এটা কখনোই ধর্ম হতে পারে না। বরং আপনি চরম অধর্ম করছেন। মানুষের জন্যই ধর্ম এসেছে, ধর্মের জন্য মানুষ নয়। ধর্ম তো মানবতার কল্যাণের জন্য। সুতরাং মানবতার কল্যাণই সবচেয়ে বড় ধর্ম। তৃষ্ণার্তকে পানি পান করানো, ক্ষুধার্তকে অন্ন দেওয়া আর বিপদগ্রস্তকে বিপদ থেকে উদ্ধার করার চেয়ে আর বড় ধর্ম তো কিছু থাকতে পারে না। অসহায় ব্যক্তি নাস্তিক হোক অথবা আস্তিক, বিধর্মী হোক অথবা স্বধর্মী, শত্র“ হোক অথবা বন্ধু তাকে সাহায্য করার মাঝেই তো রয়েছে প্রকৃত ধর্ম তথা সনাতন ধর্ম, মানবতার ধর্ম। ধর্ম কেবল মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা বা সিনাগগে থাকে না, ধর্ম থাকে আর্তপীড়িতের সেবায়, নিরন্ন, নির্বাসন মানুষের অন্ন-বস্ত্র দানের মধ্যে। প্রতিটা ধর্মের মূল উদ্দেশ্যই হলো একমাত্র স্রষ্টার হুকুম বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজ থেকে সকল প্রকার অন্যায়, অবিচার, অশান্তি দূর করে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। যুগে যুগে যখনই সমাজ বর্তমানের মতো অন্যায়, অবিচার আর অধর্মে পরিপূর্ণ হয়েছে তখনই আল্লাহ নবী-রসুল, অবতার পাঠিয়ে সেই অধর্মের বিনাশ করে স্রষ্টার বিধানে পুনরায় শান্তি ফিরিয়ে এনেছেন। নবী-রসুল বা অবতারগণ মসজিদ, মন্দির বা গীর্জায় বসেই জীবন পার করেন নি। যখন স্রষ্টার সবচেয়ে প্রিয় সৃষ্টি মানুষ (সে যে ধর্মেই বিশ্বাসী হোক অথবা ধর্মে অবিশ্বাসীই হোক) স্রষ্টার বিধান, শাস্ত্রের বিধান বাদ দিয়ে ইহুদি-খ্রিস্টান ‘সভ্যতা’ তথা দাজ্জালের বিধান মেনে নেওয়ার ফলে চরম অন্যায়, অবিচার, হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, রক্তপাত, হত্যা, ধর্ষণ তথা চরম অধর্মে লিপ্ত তখন আমাদের প্রধান কর্তব্যই হলো মানবজাতিকে এই চরম অশান্তি থেকে বাঁচানো। মানুষকে এই চরম অশান্তি থেকে বাঁচানোর কোন চেষ্টা না করে নামাজ, রোজা, হজ্ব, যজ্ঞ, আরাধনা, পূজা-আর্চনা এক কথায় কোনো উপাসনাতেই পুণ্য মিলবে না। আর তাছাড়া এটা হবে সকল নবী-রসুল, অবতার, মহামানবদের শিক্ষারও বিপরীত। তাই আসুন আমরা দাজ্জালের তৈরি স্রষ্টাহীন, বস্তুবাদী জীবনব্যবস্থা পরিত্যাগ করে স্রষ্টার বিধান, শাস্ত্রের বিধান অর্থাৎ কোর’আন, বেদ, বাইবেল, তওরাতের প্রকৃত শিক্ষা তথা সনাতন, শাশ্বত, চিরন্তন শিক্ষার উপর ভিত্তি করে আমরা সমগ্র মানবজাতিকে একজাতিতে পরিণত করি। পৃথিবীকে কিংডম অব হ্যাভেনে পরিণত করি, রামরাজত্বে যেরূপ শান্তি ছিল সেই শান্তিময় সত্যযুগ ফিরিয়ে আনি, ১৪০০ বছর পর আবারও স্বর্ণযুগের সূচনা করি।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...