হেযবুত তওহীদ

মানবতার কল্যাণে নিবেদিত

অধর্মের বিরুদ্ধে আদর্শিক লড়াইয়ে আপনিও আমন্ত্রিত

মোহাম্মদ আসাদ আলী:
হেযবুত তওহীদ সম্পর্কে বহু মানুষ ভুল ধারণা পোষণ করেন। এ জন্য প্রথমত দায়ী মিডিয়ার অবিশ্রান্ত মিথ্যা প্রচারণা, দ্বিতীয়ত ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠী। মিডিয়া এখন সত্য বুঝতে পারছে। ওদিকে ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেও ক্রমশই আওয়াজ উঠছে, তাদের অপপ্রচারগুলো মানুষ ধরে ফেলছে। ফলে অপপ্রচারের পর্দা ভেদ করে সাধারণ জনগণ এই প্রথম হেযবুত তওহীদকে সম্যকভাবে দেখার ও জানার সুযোগ পাচ্ছে।
আমাদের আলোচনা অনুষ্ঠান, জনসভা, সেমিনার ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীতে উপস্থিত হয়ে আমাদের বক্তব্য জানার পর অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন, কারণ তারা এতদিন আমাদের সম্পর্কে কিছু না জেনেই মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারণা ও ধর্মব্যবসায়ী গোষ্ঠীর ফতোয়া মোতাবেক আমাদের বিরুদ্ধাচারণ করে গেছেন। আমাদের প্রতিটি উদ্যোগকে ভেস্তে দেওয়ার অপপ্রয়াস চালিয়ে এসেছেন। যখন তারা সত্যটি জানতে পারেন তখন লজ্জিত  না হয়ে আর উপায় থাকে না। কেউ কেউ সেই লজ্জার কথা গোপন না রেখে প্রকাশও করে ফেলেন বোঝাটা হালকা করার জন্য। অনেকে আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য নিশ্চিন্তে মাঠে নেমে পড়ছেন। যে যেভাবে পারছেন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। যুগে যুগে এভাবেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সত্যের বিজয়ের এই লক্ষণ আমাদেরকে প্রেরণা যোগাচ্ছে। এ জাতিকে নিয়ে আমরা প্রবলভাবে আশাবাদী।
মানুষ হেযবুত তওহীদের উপর আস্থা রাখতে শুরু করেছে এমন একটা সময়, যখন সমাজে আস্থাহীনতা একটা মহামারীর রূপ লাভ করেছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আস্থা নেই, পিতা-পুত্রের মধ্যে আস্থা নেই, ভাই-বোনের মধ্যে আস্থা নেই, বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে আস্থা নেই, শিক্ষক-ছাত্রের মধ্যে আস্থা নেই, রাজনীতিক-জনগণের মধ্যে আস্থা নেই। এই আস্থাহীনতার মহামারীর মধ্যে হেযবুত তওহীদকে মানুষ বিশ্বাস করছে, ভরসা করছে, আমাদের শত শত সদস্য-সদস্যার মাথায় হাত রেখে প্রাণখুলে দোয়া করছে- বাবা, আমরা তো কিছু পারলাম না, তবে মনে হচ্ছে তোমরা পারবা, তোমাদের কথায় প্রাণ আছে। প্রাণ আছে বলেই মৃতপ্রায় মানুষগুলোকে জীবিত করার মতো অসাধ্য সাধনে ব্রত হয়েছি আমরা। আমরা জানি মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য যা যা করার দরকার ইনশা’আল্লাহ হেযবুত তওহীদকে দিয়ে আল্লাহ তা করাবেন।
ধানের মধ্যে চিটাও যে নেই তা বলছি না। কেউ কেউ প্রকাশ্যেই বলে দিচ্ছেন- হাতি ঘোড়া গেল তল, চিকা বলে কত জল। আমরা কিছু মনে করি না। এ ধরনের লোক সবযুগেই ছিল। পরে সুবিধা বুঝে ঠিকই সত্যের তোষামোদ করেছে। আরেক দল আছে যাদের অভিযোগ- আপনারা ঐক্যের কথা বলে কার্যত দীনে এলাহী টাইপের কিছু বানাতে চাচ্ছেন, সব ধর্মের মানুষকে এক করে ফেলার প্রচেষ্টা সফল হবে না। এরা হয় আকবরের দীনে এলাহী সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ, নয়তো আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে এদের কোনো ধারণাই নেই। দীনে এলাহী ছিল সম্রাট আকবরের একটি রাজনৈতিক অভিসন্ধী, তাতে সত্যের লেশমাত্র ছিল না। আর হেযবুত তওহীদ কোনো রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক অভিসন্ধীও নেই, হেযবুত তওহীদ কাজ করছে নিঃস্বার্থভাবে মানবতার কল্যাণে। দীনে এলাহীর মত আমরা সব মানুষকে এক ধর্মে আসতে বলছি না। বর্তমানে পৃথিবীতে কোনো ধর্মই অবিকৃত নেই। আমরা মানুষকে ধর্মগুলোর গোড়ার কথা উপলব্ধি করতে আহ্বান জানাচ্ছি, ধর্মের মর্মবাণী বুঝতে বলছি। সব ধর্মই ঐক্যের কথা বলে, শান্তির কথা বলে, মানবতার কথা বলে, সম্পীতির কথা বলে। অনৈক্য, অশান্তি সৃষ্টি করে ধর্মব্যবসায়ীরা। তাই আমরা মানুষকে ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছি। আমাদের কথা হলো- কে কোন ধর্ম মানছে না মানছে সেটা নিয়ে বিতর্ক করে অনৈক্য সৃষ্টি করা আর নয়, জনগণকে কেবল সতর্ক থাকতে হবে কোনো ধর্মকে ব্যবহার করেই যেন কোনো শ্রেণি বা গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে না পারে। ধর্ম এসেছে সমস্ত মানবজাতির শান্তি ও সুখের জন্য, কারও ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত বা দলীয় অভিসন্ধী পূরণের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে নয়।
আমাদের দেশের মানুষ প্রবলভাবে ধর্মবিশ্বাসী। ধর্মবিশ্বাস তাদের রক্তের কণিকায় মিশে আছে। সেই ধর্মীয় আদর্শই হতে পারে আমাদের মুক্তির পথ। তবে তার পূর্বশর্ত হচ্ছে ধর্ম থেকে ধর্মব্যবসাকে পৃথক করে ফেলা। মানুষের সামনে ধর্মের প্রকৃত আদর্শকে উপস্থাপন করে ধর্মের নামে সৃষ্ট অধর্মগুলোর মুখোশ উন্মোচন করা। তারপর মানুষ নিজেই তার গন্তব্য ঠিক করে নেবে। মানুষ যখন জানবে তার ধর্ম হচ্ছে মানবতা, যখন জানবে তার এবাদত হচ্ছে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, যখন জানবে তার জীবনের সার্থকতা নিহিত আছে অপরের কল্যাণে কাজ করার মধ্যে, যখন জানবে ঐক্য সবচেয়ে বড় ধর্ম আর অনৈক্য সবচেয়ে বড় অধর্ম, যখন জানবে ধর্ম কেবল উপাসনা-প্রার্থনা নয়, ধর্ম হচ্ছে জীবনের নাম, ধর্ম জীবনের যে কোনো সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম, যখন জানবে ধর্মের দৃষ্টিতে জঙ্গিবাদ অন্যায়, তখন আর তাদেরকে ব্যবহার করে কেউ স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না, তাদেরকে উপেক্ষা করে রাজনীতিবিদরা স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যেতে পারবে না, তাদের ঈমানকে ভুল পথে পরিচালিত করে সন্ত্রাস সৃষ্টি ও অপরাজনীতি করতে পারবে না।
মানুষকে আদর্শিকভাবে সত্য ও ন্যায়ের পথে ঐক্যবদ্ধ করার এই গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে হেযবুত তওহীদ। এ সংগ্রামে আপনিও আমন্ত্রিত।
লেখক: সহকারী সাহিত্য সম্পাদক, হেযবুত তওহীদ।

লেখাটি শেয়ার করুন আপনার প্রিয়জনের সাথে

Email
Facebook
Twitter
Skype
WhatsApp
সার্চ করুন

যুক্ত হোন আমাদের ফেসবুক পেজের সাথে...